১২:১৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫
আলোকে শিল্পে রূপ দেওয়া লিন্ডসি অ্যাডেলম্যান পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত সাপ ‘ইনল্যান্ড টাইপ্যান’: প্রাণঘাতী বিষ, শান্ত স্বভাবের এই সরীসৃপের অজানা বিস্ময় কুমিল্লায় দায়িত্ব পালনকালে অসুস্থ হয়ে পুলিশের মৃত্যু রবিবার থেকে কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন প্রাথমিক শিক্ষকরা ভিয়েতনামী ঔপন্যাসিক ড. ফান কুয়ে মাই শারজাহ বইমেলায় পাঠকদের মুগ্ধ করলেন মংলায় নৌকাডুবিতে নিখোঁজ প্রবাসী নারী পর্যটক ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও ৮৩৪ জন পাকিস্তানের দুর্ভিক্ষের বছর? প্রতিবন্ধী চাকরিপ্রত্যাশীদের আমরণ অনশন ৬৫ ঘণ্টা অতিক্রম, সরকারের নীরবতা অব্যাহত গণভোটের কোনো সাংবিধানিক ভিত্তি নেই: বিএনপি নেতা আমীর খসরু

ব্রিটিশ রাজত্বে সুন্দরবন (পর্ব-৩০)

  • Sarakhon Report
  • ০৪:১৪:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • 48

শশাঙ্ক মণ্ডল

দ্বিতীয় অধ্যায়

খিদিরপুরের তুলনায় ডায়মন্ডহারবারে অনেক বেশি স্থান পাওয়া যাবে, মাল তোলা ও নামানোর, মাল গুদামজাত করা, নাবিকদের স্থান সংকুলানের প্রশ্নে ডায়মন্ডহারবারে ডক তেরি করলে অনেক বেশি সুবিধা পাওয়া যাবে। কলকাতা-আগত বিদেশি জাহাজগুলি ডায়মন্ডহারবারে মাল খালাস করলে বেশ কয়েকদিন তাদের সময় বাঁচবে। হুগলী নদীর বিখ্যাত চড়াগুলি পার হবার ঝুঁ কি নিতে হবে না। কলকাতা থেকে ডায়মন্ডহারবার পর্যন্ত ২৭ মাইল সরাসরি দূরত্ব অনুযায়ী রেল লাইন এবং ডক তৈরির জন্য ১০ লক্ষ স্টার্লিং- এর পরিকল্পনা সরকারের নিকট পেশ করা হল।

কিন্তু এই পরিকল্পনা কার্যকরী করা গেল না।(৩০) কলকাতার বণিক সভা বিকল্প বন্দরের ব্যবস্থা করতে গিয়ে মাতলা নদীর তীরে পোর্ট ক্যানিং তৈরিতে উৎসাহিত হয়ে উঠেছেন। সুন্দরবনের অভ্যন্তরে রেল পরিবহণের ব্যাপারে পোর্ট ক্যানিং কোম্পানিকে কেন্দ্র করে মাতলা বন্দরের প্রয়োজনে সর্বপ্রথম রেল লাইন তৈরির প্রয়োজন দেখা দেয়। ১৮৬২ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে বেলেঘাটা থেকে চম্পাহাটি পর্যন্ত রেল চলাচল শুরু হয় এবং ক্যানিং পর্যন্ত রেল চলাচল শুরু করে ১৮৬৩ খ্রীঃ। মাতলা ক্যানিং লাইনকে কেন্দ্র করে শিয়ালদহ স্টেশনের সূত্রপাত। এবং এই রেলপথ ভারতের তৃতীয় রেলপথ হবার গৌরব অর্জন করেছে।

ক্যানিং বন্দরের সম্ভাবনা লুপ্ত হওয়ায় বেসরকারি কোম্পানির কাছ থেকে সরকার রেলপথের দায়িত্ব গ্রহণ করেন ১৮৬৮ খ্রীষ্টাব্দে। ডায়মন্ডহারবার পর্যন্ত পরবর্তীকালে রেলপথ সম্প্রসারিত হল ক্যানিং রেলপথ সোনারপুর থেকে সম্প্রসারিত করে ডায়মন্ডহারবার পর্যন্ত রেলপথ প্রতিষ্ঠা করা হল। ১৮৮৩ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে ডায়মন্ডহারবার এর কাজ শেষ করা হল। বেলেঘাটা থেকে বারাসাত হয়ে হাবড়া গোবরডাঙ্গা পর্যন্ত রেল চলাচল শুরু হয় ১৮৮৩ খ্রীষ্টাব্দে এবং এই লাইনকে আরও সম্প্রসারিত করে খুলনা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হল ঊনিশ শতকের শেষ দশকের মধ্যে।

বারাসাত বসিরহাট এর মধ্যে মার্টিন কোম্পানি ছোট ট্রেন চালাত সে যুগে। দমদম পাতিপুকুর থেকে হাসনাবাদের চিঙড়িঘাট পর্যন্ত ৪৩ মাইল পথ অতিক্রম করত এই ট্রেন।

পাতিপুকুর থেকে শুরু করে রাজারহাট দেগঙ্গার মধ্য দিয়ে বসিরহাট শহরের ওপর দিয়ে হাসনাবাদে ট্রেন আসত। এই রেলপথের মধ্য দিয়ে সুন্দরবনের কাঠ, মোম, মধু, মাছ, ধান ও অন্যান্য জিনিস-পত্রাদি কলকাতায় নিয়ে আসা হত। ১৯০৫ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে বসিরহাট- বারাসাত ২৬ মাইল ট্রেন চলাচল শুরু হল- পরবর্তী কালে ১৯০৮ খ্রীষ্টাব্দে বসিরহাট- হাসনাবাদ পর্যন্ত আরও ৮ মাইল যোগ করা হল। ১৯১০ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে পাতিপুকুর থেকে হাসনাবাদ পর্যন্ত রেল চলাচল শুরু হয়। সমগ্র ব্রিটিশ রাজত্ব জুড়ে অবৈজ্ঞানিকনদীপরিকল্পনা এবং নদীগুলিকে অবহেলার পরিণতি ব্রিটিশ রাজত্বের শেষ ভাগে চরম আকার ধারণ করে।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

আলোকে শিল্পে রূপ দেওয়া লিন্ডসি অ্যাডেলম্যান

ব্রিটিশ রাজত্বে সুন্দরবন (পর্ব-৩০)

০৪:১৪:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শশাঙ্ক মণ্ডল

দ্বিতীয় অধ্যায়

খিদিরপুরের তুলনায় ডায়মন্ডহারবারে অনেক বেশি স্থান পাওয়া যাবে, মাল তোলা ও নামানোর, মাল গুদামজাত করা, নাবিকদের স্থান সংকুলানের প্রশ্নে ডায়মন্ডহারবারে ডক তেরি করলে অনেক বেশি সুবিধা পাওয়া যাবে। কলকাতা-আগত বিদেশি জাহাজগুলি ডায়মন্ডহারবারে মাল খালাস করলে বেশ কয়েকদিন তাদের সময় বাঁচবে। হুগলী নদীর বিখ্যাত চড়াগুলি পার হবার ঝুঁ কি নিতে হবে না। কলকাতা থেকে ডায়মন্ডহারবার পর্যন্ত ২৭ মাইল সরাসরি দূরত্ব অনুযায়ী রেল লাইন এবং ডক তৈরির জন্য ১০ লক্ষ স্টার্লিং- এর পরিকল্পনা সরকারের নিকট পেশ করা হল।

কিন্তু এই পরিকল্পনা কার্যকরী করা গেল না।(৩০) কলকাতার বণিক সভা বিকল্প বন্দরের ব্যবস্থা করতে গিয়ে মাতলা নদীর তীরে পোর্ট ক্যানিং তৈরিতে উৎসাহিত হয়ে উঠেছেন। সুন্দরবনের অভ্যন্তরে রেল পরিবহণের ব্যাপারে পোর্ট ক্যানিং কোম্পানিকে কেন্দ্র করে মাতলা বন্দরের প্রয়োজনে সর্বপ্রথম রেল লাইন তৈরির প্রয়োজন দেখা দেয়। ১৮৬২ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে বেলেঘাটা থেকে চম্পাহাটি পর্যন্ত রেল চলাচল শুরু হয় এবং ক্যানিং পর্যন্ত রেল চলাচল শুরু করে ১৮৬৩ খ্রীঃ। মাতলা ক্যানিং লাইনকে কেন্দ্র করে শিয়ালদহ স্টেশনের সূত্রপাত। এবং এই রেলপথ ভারতের তৃতীয় রেলপথ হবার গৌরব অর্জন করেছে।

ক্যানিং বন্দরের সম্ভাবনা লুপ্ত হওয়ায় বেসরকারি কোম্পানির কাছ থেকে সরকার রেলপথের দায়িত্ব গ্রহণ করেন ১৮৬৮ খ্রীষ্টাব্দে। ডায়মন্ডহারবার পর্যন্ত পরবর্তীকালে রেলপথ সম্প্রসারিত হল ক্যানিং রেলপথ সোনারপুর থেকে সম্প্রসারিত করে ডায়মন্ডহারবার পর্যন্ত রেলপথ প্রতিষ্ঠা করা হল। ১৮৮৩ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে ডায়মন্ডহারবার এর কাজ শেষ করা হল। বেলেঘাটা থেকে বারাসাত হয়ে হাবড়া গোবরডাঙ্গা পর্যন্ত রেল চলাচল শুরু হয় ১৮৮৩ খ্রীষ্টাব্দে এবং এই লাইনকে আরও সম্প্রসারিত করে খুলনা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হল ঊনিশ শতকের শেষ দশকের মধ্যে।

বারাসাত বসিরহাট এর মধ্যে মার্টিন কোম্পানি ছোট ট্রেন চালাত সে যুগে। দমদম পাতিপুকুর থেকে হাসনাবাদের চিঙড়িঘাট পর্যন্ত ৪৩ মাইল পথ অতিক্রম করত এই ট্রেন।

পাতিপুকুর থেকে শুরু করে রাজারহাট দেগঙ্গার মধ্য দিয়ে বসিরহাট শহরের ওপর দিয়ে হাসনাবাদে ট্রেন আসত। এই রেলপথের মধ্য দিয়ে সুন্দরবনের কাঠ, মোম, মধু, মাছ, ধান ও অন্যান্য জিনিস-পত্রাদি কলকাতায় নিয়ে আসা হত। ১৯০৫ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে বসিরহাট- বারাসাত ২৬ মাইল ট্রেন চলাচল শুরু হল- পরবর্তী কালে ১৯০৮ খ্রীষ্টাব্দে বসিরহাট- হাসনাবাদ পর্যন্ত আরও ৮ মাইল যোগ করা হল। ১৯১০ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে পাতিপুকুর থেকে হাসনাবাদ পর্যন্ত রেল চলাচল শুরু হয়। সমগ্র ব্রিটিশ রাজত্ব জুড়ে অবৈজ্ঞানিকনদীপরিকল্পনা এবং নদীগুলিকে অবহেলার পরিণতি ব্রিটিশ রাজত্বের শেষ ভাগে চরম আকার ধারণ করে।