আর্কাদি গাইদার
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ
সুকুমার কুসুমের মতো তোমরা এখানে লালিত হচ্ছ স্নেহশীল মালাকারের যত্নে- রাখা কাচের ঘরে, জীবনের ঝড়ঝাপ্টা, দুঃখ-কষ্ট যে কী তা-ই তোমরা জান না, আন্তে-আন্তে তোমরা ফুটে উঠছ শান্তিতে, আর তাই দেখে তোমাদের শিক্ষকদের চোখ যাচ্ছে জুড়িয়ে। কিন্তু ওরা… জীবনের সব বাধাবিপত্তি অতিক্রম করতে যদি ওরা পারেও, তবু ওরা বেড়ে উঠবে অযত্নে, আগাছার মতো, বাতাসের ঝাপ্টা খেয়ে- খেয়ে, পথের পাশের ধুলোর সঙ্গে মিশে।’
ভবিষ্যদ্বক্তার ঐশ্বরিক মহিমা আর জ্যোতি ছড়াতে-ছড়াতে ফাদার গেন্নাদি যখন ক্লাস ছেড়ে ধীর পায়ে চলে গেলেন, দীর্ঘনিশ্বাস ছেড়ে আমি তখন ভাবনায় ডুবে গেলুম।
বললুম, ‘ফেদুকা!’ ‘উ’?’
‘স্বাভাবিক গুণের বিকাশ সম্বন্ধে তোর কী মনে হয় রে?’
‘কিছু না। তোর?’
‘আমার?’
এক মুহূর্ত আমতা-আমতা করে শেষে নিচু গলায় বললুম:
‘আমার কথা যদি বলিস ফেদ্কা, আমিও গুণগুলোকে পাথর-চাপ্য দিয়ে রাখতে চাই। ব্যবসাদার কিংবা সরকারী কর্মচারী হয়ে লাভ কী?’
অল্প একটুক্ষণ চুপ করে থেকে ফেকাও স্বীকার করল, ‘জানিস, আমিও তাই করতুম রে। কাচের ঘরের ফুল হয়ে বেড়ে উঠে কী হবে? এক দলা থুে ফেললেই তো সে ফুল ঘাড় লটকে পড়বে। আগাছা, আর যাই হোক, বেশ পোক্ত জিনিস- অন্তত রোদবিষ্টি সহ্য করতে পারে তারা।’
Sarakhon Report 



















