০৭:০০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৮০) চীন–ভারত সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হওয়ায় উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা নীতি বিকৃত করার অভিযোগ বেইজিংয়ের ভারতের পানি সংকটের ছায়ায় পানীয় শিল্প: রাজস্থানে জল নিয়ে বাড়ছে ঝুঁকি ও অসন্তোষ প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩৪৭) আমির খসরুর আসন পরিবর্তন, তার আসনে মনোনয়ন পেলেন সাঈদ নোমান এনসিপি ছাড়লেন তাসনিম জারা থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি চুক্তি সিলেটে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় নিষিদ্ধ বিড়িসহ যুবক গ্রেপ্তার একীভূত পাঁচ ব্যাংকের আমানত উত্তোলনে বিলম্ব, এ বছর অর্থ ছাড়ের সুযোগ নেই নিউ ইয়র্ক টাইমস প্রতিবেদন: ধর্ম অবমাননার অভিযোগে হিন্দু শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা, বাংলাদেশে সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ

ইশকুল (পর্ব-১৮)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪
  • 90
আর্কাদি গাইদার

তৃতীয় পরিচ্ছেদ

ফেক্কা যে সব ব্যাপারে আমার চেয়ে বেশি জানে এতে আমার ভীষণ রাগ হত। পড়াশুনোর ব্যাপার ছাড়া আর যে কোনো বিষয়ে তাকে কিছু জিজ্ঞেস করলে দেখা যেত সে কিছু-না-কিছু জানেই। মনে হত, ওর বাবার কাছ থেকে ও সব জানতে পারত। ওর বাবা ছিলেন পোস্টম্যান, আর পোস্টম্যানরা তো বাড়ি বাড়ি ঘুরে অনেক খবর যোগাড় করতে পারেন।

ইশকুলের হস্তশিল্প-শিক্ষককে ছাত্ররা ভারি পছন্দ করত। তাঁর নাম দিয়েছিল ওরা দাঁড়কাক। যুদ্ধের একেবারে গোড়ার দিকে তিনি আমাদের শহরে এসেছিলেন। বাসা ভাড়া করেছিলেন শহরতলীতে। তখন আমিও কয়েক বার ওঁর কাছে গেছি। উনিও আমাদের ছেলেদের ভালোবাসতেন। ওঁর ছোট্ট কারিগরি-টেবিলে উনি আমাদের খাঁচা, বাক্স, ফাঁদ, এইসব তৈরি করতে শিখিয়েছিলেন।

গ্রীষ্মকালে একদল বাচ্চা জড়ো করে তাদের নিয়ে উনি ঘুরতে যেতেন বনে-জঙ্গলে, কিংবা যেতেন মাছ ধরতে। লোকটি দেখতে ছিলেন কালো আর হাড্ডিসার, আর চলবার সময় পাখির মতো একটু একটু লাফিয়ে লাফিয়ে চলতেন। এই জন্যেই আমরা ওঁর নাম দিয়েছিলুম দাঁড়কাক।

হঠাৎ, আচমকা, উনি একদিন গ্রেপ্তার হয়ে গেলেন। কেন, তা আমরা কখনও জানতে পারি নি। কিছু কিছু ছেলে বলল, উনি নাকি গুপ্তচর ছিলেন আর সৈন্য- চলাচলের ব্যাপারে আমাদের সব গোপন খবর টেলিফোনে জার্মানদের জানিয়ে দিচ্ছিলেন। আবার কেউ দিব্যি গেলে বললে যে আমাদের মাস্টারমশাই নাকি এককালে রাহাজান ছিলেন, রাস্তায় ডাকাতি করে লোকজনের কাছ থেকে যথাসর্বস্ব কেড়ে নিতেন। তবে এখন ব্যাপারটা জানাজানি হয়ে গেছে, এই যা।

জনপ্রিয় সংবাদ

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৮০)

ইশকুল (পর্ব-১৮)

০৮:০০:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪
আর্কাদি গাইদার

তৃতীয় পরিচ্ছেদ

ফেক্কা যে সব ব্যাপারে আমার চেয়ে বেশি জানে এতে আমার ভীষণ রাগ হত। পড়াশুনোর ব্যাপার ছাড়া আর যে কোনো বিষয়ে তাকে কিছু জিজ্ঞেস করলে দেখা যেত সে কিছু-না-কিছু জানেই। মনে হত, ওর বাবার কাছ থেকে ও সব জানতে পারত। ওর বাবা ছিলেন পোস্টম্যান, আর পোস্টম্যানরা তো বাড়ি বাড়ি ঘুরে অনেক খবর যোগাড় করতে পারেন।

ইশকুলের হস্তশিল্প-শিক্ষককে ছাত্ররা ভারি পছন্দ করত। তাঁর নাম দিয়েছিল ওরা দাঁড়কাক। যুদ্ধের একেবারে গোড়ার দিকে তিনি আমাদের শহরে এসেছিলেন। বাসা ভাড়া করেছিলেন শহরতলীতে। তখন আমিও কয়েক বার ওঁর কাছে গেছি। উনিও আমাদের ছেলেদের ভালোবাসতেন। ওঁর ছোট্ট কারিগরি-টেবিলে উনি আমাদের খাঁচা, বাক্স, ফাঁদ, এইসব তৈরি করতে শিখিয়েছিলেন।

গ্রীষ্মকালে একদল বাচ্চা জড়ো করে তাদের নিয়ে উনি ঘুরতে যেতেন বনে-জঙ্গলে, কিংবা যেতেন মাছ ধরতে। লোকটি দেখতে ছিলেন কালো আর হাড্ডিসার, আর চলবার সময় পাখির মতো একটু একটু লাফিয়ে লাফিয়ে চলতেন। এই জন্যেই আমরা ওঁর নাম দিয়েছিলুম দাঁড়কাক।

হঠাৎ, আচমকা, উনি একদিন গ্রেপ্তার হয়ে গেলেন। কেন, তা আমরা কখনও জানতে পারি নি। কিছু কিছু ছেলে বলল, উনি নাকি গুপ্তচর ছিলেন আর সৈন্য- চলাচলের ব্যাপারে আমাদের সব গোপন খবর টেলিফোনে জার্মানদের জানিয়ে দিচ্ছিলেন। আবার কেউ দিব্যি গেলে বললে যে আমাদের মাস্টারমশাই নাকি এককালে রাহাজান ছিলেন, রাস্তায় ডাকাতি করে লোকজনের কাছ থেকে যথাসর্বস্ব কেড়ে নিতেন। তবে এখন ব্যাপারটা জানাজানি হয়ে গেছে, এই যা।