০১:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

ইশকুল (পর্ব-১৮)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪
  • 22
আর্কাদি গাইদার

তৃতীয় পরিচ্ছেদ

ফেক্কা যে সব ব্যাপারে আমার চেয়ে বেশি জানে এতে আমার ভীষণ রাগ হত। পড়াশুনোর ব্যাপার ছাড়া আর যে কোনো বিষয়ে তাকে কিছু জিজ্ঞেস করলে দেখা যেত সে কিছু-না-কিছু জানেই। মনে হত, ওর বাবার কাছ থেকে ও সব জানতে পারত। ওর বাবা ছিলেন পোস্টম্যান, আর পোস্টম্যানরা তো বাড়ি বাড়ি ঘুরে অনেক খবর যোগাড় করতে পারেন।

ইশকুলের হস্তশিল্প-শিক্ষককে ছাত্ররা ভারি পছন্দ করত। তাঁর নাম দিয়েছিল ওরা দাঁড়কাক। যুদ্ধের একেবারে গোড়ার দিকে তিনি আমাদের শহরে এসেছিলেন। বাসা ভাড়া করেছিলেন শহরতলীতে। তখন আমিও কয়েক বার ওঁর কাছে গেছি। উনিও আমাদের ছেলেদের ভালোবাসতেন। ওঁর ছোট্ট কারিগরি-টেবিলে উনি আমাদের খাঁচা, বাক্স, ফাঁদ, এইসব তৈরি করতে শিখিয়েছিলেন।

গ্রীষ্মকালে একদল বাচ্চা জড়ো করে তাদের নিয়ে উনি ঘুরতে যেতেন বনে-জঙ্গলে, কিংবা যেতেন মাছ ধরতে। লোকটি দেখতে ছিলেন কালো আর হাড্ডিসার, আর চলবার সময় পাখির মতো একটু একটু লাফিয়ে লাফিয়ে চলতেন। এই জন্যেই আমরা ওঁর নাম দিয়েছিলুম দাঁড়কাক।

হঠাৎ, আচমকা, উনি একদিন গ্রেপ্তার হয়ে গেলেন। কেন, তা আমরা কখনও জানতে পারি নি। কিছু কিছু ছেলে বলল, উনি নাকি গুপ্তচর ছিলেন আর সৈন্য- চলাচলের ব্যাপারে আমাদের সব গোপন খবর টেলিফোনে জার্মানদের জানিয়ে দিচ্ছিলেন। আবার কেউ দিব্যি গেলে বললে যে আমাদের মাস্টারমশাই নাকি এককালে রাহাজান ছিলেন, রাস্তায় ডাকাতি করে লোকজনের কাছ থেকে যথাসর্বস্ব কেড়ে নিতেন। তবে এখন ব্যাপারটা জানাজানি হয়ে গেছে, এই যা।

২০২৫ সালে ফিলিপাইনের ১২টি প্রধান অবকাঠামো প্রকল্প: রিয়েল এস্টেটের রূপান্তর

ইশকুল (পর্ব-১৮)

০৮:০০:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪
আর্কাদি গাইদার

তৃতীয় পরিচ্ছেদ

ফেক্কা যে সব ব্যাপারে আমার চেয়ে বেশি জানে এতে আমার ভীষণ রাগ হত। পড়াশুনোর ব্যাপার ছাড়া আর যে কোনো বিষয়ে তাকে কিছু জিজ্ঞেস করলে দেখা যেত সে কিছু-না-কিছু জানেই। মনে হত, ওর বাবার কাছ থেকে ও সব জানতে পারত। ওর বাবা ছিলেন পোস্টম্যান, আর পোস্টম্যানরা তো বাড়ি বাড়ি ঘুরে অনেক খবর যোগাড় করতে পারেন।

ইশকুলের হস্তশিল্প-শিক্ষককে ছাত্ররা ভারি পছন্দ করত। তাঁর নাম দিয়েছিল ওরা দাঁড়কাক। যুদ্ধের একেবারে গোড়ার দিকে তিনি আমাদের শহরে এসেছিলেন। বাসা ভাড়া করেছিলেন শহরতলীতে। তখন আমিও কয়েক বার ওঁর কাছে গেছি। উনিও আমাদের ছেলেদের ভালোবাসতেন। ওঁর ছোট্ট কারিগরি-টেবিলে উনি আমাদের খাঁচা, বাক্স, ফাঁদ, এইসব তৈরি করতে শিখিয়েছিলেন।

গ্রীষ্মকালে একদল বাচ্চা জড়ো করে তাদের নিয়ে উনি ঘুরতে যেতেন বনে-জঙ্গলে, কিংবা যেতেন মাছ ধরতে। লোকটি দেখতে ছিলেন কালো আর হাড্ডিসার, আর চলবার সময় পাখির মতো একটু একটু লাফিয়ে লাফিয়ে চলতেন। এই জন্যেই আমরা ওঁর নাম দিয়েছিলুম দাঁড়কাক।

হঠাৎ, আচমকা, উনি একদিন গ্রেপ্তার হয়ে গেলেন। কেন, তা আমরা কখনও জানতে পারি নি। কিছু কিছু ছেলে বলল, উনি নাকি গুপ্তচর ছিলেন আর সৈন্য- চলাচলের ব্যাপারে আমাদের সব গোপন খবর টেলিফোনে জার্মানদের জানিয়ে দিচ্ছিলেন। আবার কেউ দিব্যি গেলে বললে যে আমাদের মাস্টারমশাই নাকি এককালে রাহাজান ছিলেন, রাস্তায় ডাকাতি করে লোকজনের কাছ থেকে যথাসর্বস্ব কেড়ে নিতেন। তবে এখন ব্যাপারটা জানাজানি হয়ে গেছে, এই যা।