মরিয়ম সুলতানা
কয়েকজন কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত ও আরও কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচিতে যায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পবিস)।
দেশের অর্ধেকের বেশি জেলায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করা বন্ধ করে দেয় তারা। এমন অবস্থায় ভোগান্তিতে পড়েন পল্লী বিদ্যুতের আওতাধীন গ্রাহকরা।
ওই শাটডাউনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার দেশব্যাপী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলোর সাথে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তাদের বিরুদ্ধে ‘বিদ্যুৎ খাতকে অস্থিতিশীল’ করার অভিযোগ এনে রাষ্ট্রদ্রোহ ও সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের মাঝে আছেন মুন্সিগঞ্জের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী মহাব্যবস্থাপক রাজন কুমার দাস, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের উপমহাব্যবস্থাপক আসাদুজ্জামান ভূঁইয়া, কুমিল্লার উপমহাব্যবস্থাপক দীপক কুমার সিংহ, মাগুরার শ্রীপুর জোনাল অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক রাহাত, নেত্রকোনার সহকারী মহাব্যবস্থাপক মনির হোসেন ও সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর বেলাল হোসেন।
বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় মোট ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি রয়েছে। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড বলছে, দেশের প্রায় ৬০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়ার সাথে যুক্ত ছিল।
কিন্তু বিদ্যুৎ যেহেতু জরুবি সেবা এবং এ সংক্রান্ত স্থাপনাগুলো কি পয়েন্ট ইন্সটলেশন (কেপিআই)’র আওতায় পড়ে, তাই এভাবে ‘বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়াটা আইনবিরুদ্ধ’ বলে জানান খাত সংশ্লিষ্টরা।
এখন, প্রশ্ন হলো— পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কেন গ্রাহক ভোগান্তি তৈরি করে এমন কর্মসূচিতে গেল? সরকারই বা এ বিষয়টির কী সুরাহা করছে?
গতকাল দেশের অর্ধেকের বেশি জেলার মানুষ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে
যে কারণে এই ‘শাটডাউন’
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড বা আরইবি হলো সরকারের একটি দপ্তর। তাদের অধীনেই পরিচালিত হয় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পবিস)। মোদ্দাকথা, আরইবি হলো রেগুলেটরি বডি বা নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা। পবিসের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীও আরইবি কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত।
আরইবি ও পবিস, উভয়ের সাথে কথা বলে জানা গেছে তাদের মাঝে ‘প্রশাসনিক দ্বন্দ্ব’ দীর্ঘদিনের।
তবে এখন যে গ্রাহকদের বিদ্যুৎ নিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হলো, তা মূলত পবিসের দু’টো দাবিকে ঘিরে। এক, দেশের সব পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সঙ্গে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের একীভূতকরণ। দুই, চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মীদের চাকরি স্থায়ীকরণ।
আরইবি’র সদস্য (প্রশাসন ও সমিতি ব্যবস্থাপনা) মো. আহসানুর রহমান হাসিব বিবিসি বাংলাকে বলেন, “গত জানুয়ারি মাস থেকে তারা বলা শুরু করলো, তাদেরকে হয় পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সাথে একীভূত করতে হবে; অথবা, তারা আলাদা হবে যাবে। এরকম একটা বিষয় তারা শুরু করলো।”
পবিসের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ওই মাসেই নয় সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে বিদ্যুৎ বিভাগ এবং এখন পর্যন্ত কমিটির মোট চারটি সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে। কমিটি গঠনের তথ্য পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পক্ষ থেকে দেয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও উল্লেখ করা হয়েছে।

পবিসের অভিযোগ হলো, দফায় দফায় সভা অনুষ্ঠিত হলেও কমিটি আরইবি’র অসহযোগিতার কারণে চূড়ান্ত সুপারিশ করতে পারেনি। এজন্য গত মে ও জুলাই মাসে মোট ১৫ দিন কর্মবিরতি, অগাস্টে লং মার্চ টু আরইবি, ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটামে গণছুটি ঘোষণা, সারাদেশে একযোগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করে তারা।
এই প্রেক্ষাপটে গত ১৭ই অক্টোবর পবিসের ২০ জন কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। সেইসাথে, ১০ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা ও কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এই ঘটনার প্রতিবাদেই গতকাল দেশের বিভিন্ন জেলায় সাময়িকভাবে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে আন্দোলন শুরু করে সমিতিগুলো। আরইবি চেয়ারম্যানকে অপসারণ, সমিতির কর্মকর্তাদের চাকরি অবসানের আদেশ ও মামলা প্রত্যাহারে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয় তারা।
দাবি মানা না হলে দুই দফা আদায়ে পবিসের ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী রোববার ঢাকা অভিমুখে লং মার্চ করবে বলে জানানো হয়।
এদিকে, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এই শাটডাউন কর্মসূচির কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েন গ্রাহকরা। অনেক দেশের অনেক স্থানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল না। পরিস্থিতি এতটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিলো যে পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে সেনা সদস্য মোতায়েন করা হয়েছিলো। পবিসের কয়েকজন কর্মকর্তাকে হেফাজতে নেয়ার ঘটনাও ঘটে।
তবে ওইদিন বিকালে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে আগামী রোববার পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি স্থগিত করে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় মোট ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি রয়েছে
দুই পক্ষের যুক্তি
আরইবি’র সদস্য মো. আহসানুর রহমান বলেন, তাদের “লাস্ট অ্যাকশন হিসেবে” পবিসের কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে ও কয়েকজনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
“কারণ এটাকে কোনোভাবে থামানো যাচ্ছে না। তারা কারও কথাই শুনছে না,” বলছিলেন তিনি।
পেছনের ঘটনা বর্ণনা করে তিনি বলেন, “গত জুলাই মাসে বিদ্যুৎ সচিবের সভাপতিত্বে পবিস একটি মিটিং করে। সেখানে তাদের মূল দাবি দুটিসহ মোট নয়টি দাবি ছিল। সেগুলোর মাঝে সাতটা দাবি (দুইদিন ছুটি, ৪০০ ইউনিট বিদ্যুৎ সুবিধা দেওয়া ইত্যাদি) পুরোপুরি মানা হয়েছে।”
কিন্তু বাকি দুই সিদ্ধান্ত সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ওই দুই বিষয় নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের তরফ থেকে কমিটি করে দিয়েছে। কিন্তু এটা তো চট করে শেষ হবে না।”
“এই অবস্থায় তারা গত দুই সপ্তাহ ধরে শুরু করেছে— আমরা তাদেরকে (পবিস) মনিটরিং করতে পারবো না, কোনও নীরিক্ষা করা যাবে না, কোনোরকম অডিট করা যাবে না,” তিনি যোগ করেন।
একীভূতকরণ ও চাকরি নিয়মিতকরণ ছাড়া অন্য কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনায় বসতে নারাজ ছিল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলো, এমনটা বলছেন মি. রহমান।
গত কয়েক মাস ধরে পবিসের অসহযোগিতার কারণে “অডিট বা মনিটরং সংক্রান্ত আরইবি’র সকল দৈনন্দিন কার্য বন্ধ” রয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
এর মাঝে দু’দিন আগে, গত ১৬ই অক্টোবর কিছু শিক্ষার্থী পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ঘেরাও করে।
“তারা আরইবিকে বলেছে— আপনারা যদি এদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন না নেন, তাহলে আপনাদের বিরুদ্ধে আমরা…করবো। সেই প্রেক্ষিতে গতকাল তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া হয়েছে,” বলছিলেন মি. রহমান।
“বিদ্যুৎ ইমার্জেন্সি সার্ভিস। ইমার্জেন্সি সার্ভিসকে আপনারা বন্ধ করতে পারেন না। জনগণকে জিম্মি করে আপনি কিছু করতে পারেন না। ওরা ওই কাজটা করে ফেলছিলো,” বিদ্যুৎ বন্ধ করা প্রসঙ্গে যোগ করে আরইবি’র এই সদস্য।
গ্রাহকদের বিদ্যুৎ ভোগান্তিতে ফেলা ও আন্দোলনের বিষয়ে জানতে ‘পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন’-এর চার কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছিলো। কিন্তু তাদের সবার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
বৈদ্যুতিক বাল্ব
এদিকে, বরিশালের স্থানীয় সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ১-এর জিএম মো. হুমায়ুন কবীরকে চাকরিচ্যুত করার প্রতিবাদে দেশের অন্যান্য জেলার মতো ওই জেলারও পাঁচ উপজেলা প্রায় পাঁচ ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন ছিল।
হুমায়ুন কবীরকে কল করা হলে তাকেও ফোনে পাওয়া যায়নি। পরে বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ১-এর জেনারেল ম্যানেজার মো. সাদেকুর রহমানের সাথে কথা হয় বিবিসি বাংলার। তিনি দাবি করেন, তার এলাকায় ঝড়ের কারণে গতকাল বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিলো।
“ঝড় থেমে যাওয়ার পর বরিশাল দুই সমিতির আওতায় কিছু অংশে বিদ্যুৎ বন্ধ ছিল। কিন্তু সেটার কারণ ছিল, কর্তব্যরত কর্মচারীরা আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে কাজে যায়নি। ম্যানুয়ালি কিছু বন্ধ করা হয়নি এখানে।”
একীভূত হতে চাওয়ার দাবির বিষয়ে মো. সাদেকুর রহমান বলেন, “একীভূত বলতে একই সার্ভিস রুলের আওতায় আনা। ওদের জন্য সার্ভিস রুল আলাদা, আমাদের সমিতির জন্য সার্ভিস রুল আলাদা।”
“আমরা ফিল্ডে কাজ করি, ওরা হেড অফিসে কাজ করে। কিন্তু ওরা ফিল্ডের অভিজ্ঞতা নিক। সেক্ষেত্রে ওদের সিদ্ধান্ত নিতে ভালো হবে, সুবিধা হবে; এটা মূল দাবি,” তিনি ব্যাখ্যা করেন।
“আর্থিক কোনও লাভ-ক্ষতির বিষয় নাই এখানে। এটা ডিগনিটির বিষয়,” বলছিলেন এ কর্মকর্তা।
মাঠের অভিজ্ঞতা না থাকায় আরইবি কিছু সিদ্ধান্ত নেয়, যা ফিল্ড ওরিয়েন্টেড হয় না বলে আন্দোলনকারীদের দাবি করছেন।
এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মি. রহমান বলছিলেন, “কিছু দাবি উঠছে যে কেনাকাটা তারাই করে দেয়। আমাদের কিছু বলার থাকে না। যেমন, একটা মিটার কিনে দিল। সেই মিটার ত্রুটিযুক্ত হলে সেটা ফেস করতে হয় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লোকজনকে। কিন্তু এখানে তো সমিতি দায়ী না। সমিতি মিটারটা কিনছে না। কেনার দায়িত্বে তারা। কিন্তু পাবলিকের সাথে যে হিটিংটা হয়, সেটা তারা ফেস করছে না। আমরা করছি।”
পবিসের দ্বিতীয় দাবির বিষয়টিও ব্যাখ্যা করেন তিনি। “নিয়মিত পোস্টের বিপরীতে কিছু লোকবল আছে, যাদেরকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং দীর্ঘদিন ধরেই তারা চুক্তিভিত্তিক কাজ করছে। একই পোস্টের একজন চুক্তিভিত্তিক-কম বেতনের, আরেকজন একই কাজে বেশি বেতনে-রেগুলার।”
“এ দু’টো নিয়েই মূল ঝামেলা। চুক্তিভিত্তিক নিম্ন স্তরের কর্মচারী— লাইনম্যান, মিটার রিডার ও কিছু অফিসার এই আন্দোলন করছে। বরিশালেও আন্দোলনের পক্ষে লোকজন আছে।”
গ্রাহক ভোগান্তি তৈরি করে পবিস বিদ্যুৎ বন্ধ রাখতে পারে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি প্রতিষ্ঠান চালাবো। কিন্তু আন্দোলনরতদের দিয়ে তো চালাতে পারবো না। এখানে আমি অসহায়…আমার দায়িত্ব ছিল কর্তব্যরতদের বোঝানো, আমি সেই চেষ্টা করেছি।”
সরকার কী সুরাহা করছে?
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ মাহফুজ আলম বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লোকজনের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। তাদেরকে আলোচনায় আসার আহ্বান জানিয়েছেন। সেইসাথে, তিনি সমিতির কর্মীদের সমস্যার সমাধান এবং আটকদের ছেড়ে দেওয়া আশ্বাস দিয়েছেন।
মি. আলম বলেন, “তাদের অধিকাংশ ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও বিদ্যুতায়ন বোর্ডের মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব হচ্ছে। আশা করছি ন্যায্যতার ভিত্তিতে যতটুকু সম্ভব প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের পক্ষ থেকে এটা সমাধান করা হবে…আগামী সপ্তাহে আমরা তাদের সঙ্গে বসবো।”
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও কনজ্যুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম বিবিসি বাংলাকে জানান, এর আগে আরইবি “পবিসের বেতন বেআইনিভাবে ১৩০ কোটি টাকা বাড়িয়ে কোম্পানির মতো করেছে। বিইআরসি’র গণশুনানিতে ক্যাব এর বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিল।”
“আরইবি ইতোমধ্যে বেতন বাড়িয়েছে। এটা করার তো এখতিয়ার নাই। এটা একটা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যেতে হবে। আর পবিসের ক্ষেত্রে, অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য আইনানুগ প্রক্রিয়ায় আসতে হবে। তারা (পবিস) যে সমস্ত দাবি উত্থাপন করেছে, সেটা আগের সরকারের আমলের।”
রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র
“তাদের জন্য একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটি এখনও কোনও জবাব দেয়নি। কিন্তু কারও দাবির যৌক্তিকতা থাকলে প্রক্রিয়াগতভাবে, পদ্ধতিগতভাবে, আইনানুগ প্রক্রিয়ায় সমাধান করতে হবে। সেটা করা হচ্ছে না,” যোগ করেন তিনি।
এটা “জোরাজুরির প্রক্রিয়ায় চলে গেছে” উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এতে কারও মঙ্গল হয় না।”
বিদ্যুৎ বিভাগের যে ক্ষমতা নেই, তারা তা অনুশীলন করে; পদ্ধতিগতভাবে চললে এই পরিস্থিতি তৈরি হতো না বলে মনে করেন এই বিশ্লেষক।
“বিদ্যুৎ সচিব ও প্রধান উপদেষ্টা বলেছে, তাদের (পবিস) দাবি ন্যায্য ও যৌক্তিক। আমার বক্তব্য হল, প্রধান উপদেষ্টা, সচিব বা পিডিবি চেয়ারম্যান, আরইবি চেয়ারম্যান কেউ তাদের বেতন বাড়িয়ে দিতে পারে না, চাকরি নিয়মিত করতে পারে না। ন্যায্য নাকি যৌক্তিক তা সচিব বলতে পারে না। প্রধান উপদেষ্টা বলতে পারে না। এগুলো আইনানুগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আসতে হয়,” বলছিলেন এম শামসুল আলম।
পবিস যেভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে আন্দোলন করেছে, সেটিকে “অবুঝপনা কাজ” হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে তিনি বলেন, “তারা বলছে, ২৪ ঘণ্টার মাঝে এটা করে দিতে হবে। কারা করে দিবে? পদ্ধতিগত প্রক্রিয়ায় নিষ্পত্তি না করলে তা আইনে টিকবে না। আজকে জোর করে সই করায়ে নিলেন, কিন্তু তা কোথাও চালাতে পারবেন? আইন বাইপাস করে নেওয়া সিদ্ধান্ত আদালতে বাতিল হবে।”
বিবিসি নিউজ বাংলা