আর্কাদি গাইদার
চতুর্থ পরিচ্ছেদ
গ্রীষ্মের ছুটি পড়ে গেল আমাদের। ফেঢুকা আর আমার মাথায় তখন ছুটি কাটাবার কত রকম প্ল্যানই যে ঘুরছে। বহু কাজ করবার ছিল সামনে।
প্রথম কথা, একটা ভেলা বানিয়ে আমাদের বাগানের লাগোয়া পুকুরে তা ভাসাতে হবে। তারপর আমাদের নিজেদের ঘোষণা করতে হবে সাত সাগরের অধিশ্বর বলে, আর পুকুরের অপর পারে পানতিউশৃঙ্কিন আর সিমাকভ-বাড়ির ফলবাগানের মুখে পাহারা দিচ্ছে ওদের যে যুক্ত নৌবহর তার সঙ্গে চালাতে হবে লড়াই।
আমাদের নৌবহরটা ছিল ছোট্ট। বাগানের বেড়ার দরজাটা মাত্র সম্বল। কিন্তু শত্রুর নৌ-বলের তুলনায় তা ছিল যৎসামান্য। শত্রুদের ছিল একখানা ভারি ক্রুজার, অর্থাৎ পুরনো একটা গেটের আধখানা, আর একটা হালকা টর্পেডো বোট, অর্থাৎ আগে খামারের জীবজন্তুদের খাওয়ার কাজে লাগত এমন একটা কাঠের তৈরি জাবনার গামলা।
দু-পক্ষের লড়াইয়ের বলাবল স্পষ্টতই সমান ছিল না। কাজেই আমরা ঠিক করলুম এঞ্জিনিয়ারিং-এর একেবারে শেষ কথা একটা প্রকাণ্ড সুপার-ড্রেডনট মানোয়ারী জাহাজ বানিয়ে আমাদের নৌ-বল বাড়াতে হবে।
ঠিক করলুম, ধসে-পড়া স্নানঘরের মোটা মোটা কাঠগুলোকে জাহাজ তৈরির কাজে লাগাব। মা-র কাছে ধমকের হাত থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্যে তাঁকে কথা দিলুম, আমাদের ড্রেডনটটা এমনভাবে তৈরি করব যাতে ওটা সবসময়েই কাপড় কাচার মাচা হিসেবেও ব্যবহার করা চলে।
অপর পারে শত্রুপক্ষও আমাদের অস্ত্রসজ্জার তোড়জোড় লক্ষ্য করে ভয় পেয়ে গেল। ওরাও তাড়াতাড়ি শুরু করে দিল অস্ত্রসজ্জা। কিন্তু আমাদের গোয়েন্দা-বিভাগ খবর দিল যে শত্রুর পক্ষে এ-ব্যাপারে আমাদের সমকক্ষ হয়ে ওঠার কোনো উপায়ই নেই। কারণ ওদের জাহাজ তৈরির মালমশলার একান্ত অভাব। গোলাবাড়ি পোক্ত করে মেরামত করার জন্যে ওদের বাড়ির উঠোনে কিছু কাঠের তক্তা রাখা ছিল, তা থেকে কিছু তক্তা সরাতে গিয়ে আমাদের শত্রুরা ব্যর্থ’ হল। অন্য কাজের জন্যে নির্দিষ্ট মালমশলা এভাবে বিনা অনুমতিতে ওদের কাজে লাগানোর এই চেষ্টা ওদের পারিবারিক পরিষদ মোটেই সমর্থন করল না।
Sarakhon Report 



















