আর্কাদি গাইদার
চতুর্থ পরিচ্ছেদ
ড্রেডনট চালাচ্ছিলুম আমি আর ফেক্কা। আমাদের পেছনে সম্ভ্রম নিয়ে বেশ খানিকটা তফাত রেখে ভেসে আসছিল বেড়ার গেটটা। ওটা ছিল আমাদের সাজসরঞ্জাম বইবার জাহাজ।
আমাদের নৌ-বাহিনী নিজেদের শক্তিসামর্থ্য সম্বন্ধে সচেতন থেকে পুকুরের মাঝামাঝি পর্যন্ত এগিয়ে গেল। তারপর শত্রু-তীরভূমির কাছ-ঘে’ষে চলতে লাগল।
কিন্তু চোঙার মধ্যে দিয়ে কথা বলে ও সংকেত দিয়ে মিথ্যেই আমরা শত্রুকে চ্যালেঞ্জ জানাতে লাগলুম- লড়াই করতে রাজি হল না শত্রু; আর কী লজ্জার কথা, একটা আধ-পচা গাছের গুড়ি দিয়ে আড়াল-করা একটা উপসাগরে লুকিয়ে রইল। হঠাৎ ওদের তীরবর্তী কামানশ্রেণী অন্ধ আক্রোশে আমাদের জাহাজের ওপর গোলাবর্ষণ শুরু করল।
কিন্তু আমরা তক্ষুনি জাহাজগুলোকে ওদের কামানের আওতার বাইরে নিয়ে এলুম, তারপর ধীরেসুস্থে, কোনো ক্ষতিস্বীকার না করে জাহাজগুলো ভেড়ালুম বন্দরে। ইয়াঙ্কা সুক্কারন্তেইনের পিঠে অবিশ্যি একটা আন্ত আলু এসে পড়েছিল, কিন্তু তাতে যে সামান্য আঘাত লাগল তাকে আমরা ধর্তব্যের মধ্যেই আনলুম না।
জাহাজ নিয়ে ফিরে আসতে-আসতে আমরা চেচিয়ে বললুম, ‘ও-হো-হো! দুয়ো, দুয়ো! বেরিয়ে এসে লড়াই করার সাহস নেই!’
‘আরে, যা, যা! আমরা ঠিকই বেরিয়ে আসব। অত বড়াই কিসের? তোদের দেখে ভয় পাব, তবেই হয়েছে!’
‘যা, যা, নিজেদের ওই বলে বুঝ দিগে! ভিতু বেড়াল কোথাকার!’
নিরাপদে বন্দরে ঢুকলুম আমরা। নোঙর ফেললুম। তারপর জাহাজগুলোকে শেকল দিয়ে শক্ত করে বেধে লাফিয়ে পাড়ে নামলুম।
সেদিন সন্ধেয় ফেক্কার সঙ্গে আমার প্রায় ঝগড়া বাধার যোগাড়। নৌবহরের কম্যান্ডার কে হবে তা আমরা আগে থেকে ঠিক করে রাখি নি। আমি প্রথমে প্রস্তাব করেছিলুম যে ফেকা সাজসরঞ্জামের জাহাজটা চালাক। অবজ্ঞাভরে একদলা থুথু ফেলে ফেক্কা আমার সে-প্রস্তাব নাকচ করে দিল। তদুপরি আমি ওকে একই সঙ্গে জাহাজঘাটার ক্যাপ্টেন, তীরবর্তী কামানশ্রেণীর পরিচালক, আর আমাদের বিমানবাহিনী হলেই ওকে বিমানবাহিনীরও কর্তা করতে রাজি হয়ে গেলুম। কিন্তু বিমানবাহিনীর কর্তার পদও ফেক্কাকে টলাতে পারল না। ও চাইল নৌবাহিনীর অ্যাডমিরাল হতে। নইলে, ও ভয় দেখাল ও শত্রুপক্ষে যোগ দেবে।
Sarakhon Report 



















