আর্কাদি গাইদার
ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ
প্রতিটি কবর, প্রতিটি স্মৃতিফলক তিষ্কার চেনা। পাখির মতো লাফিয়ে- লাফিয়ে চলতে-চলতে ও চিনিয়ে দিতে লাগল।
‘এটা সেই দমকলের লোকটার ওই-যে গত বছর আগুনে পুড়ে যে মারা গেল, তার। আর এটা অন্ধ চুরুবাকিনের। এদিকটায় সব ওই ধরনের লোকের কবর। ব্যবসাদার মহাজনদের এখানে গোর দেয়া হয় না। ওদের জন্যে একটা সরেস জমিতে বিশেষ ব্যবস্থা আছে। ওই যে, দেখতে পাচ্ছিস, সিনিউগিনের ঠাকুরমার কবরের ওপর পাথরের মূর্তি আর কটা দেবদূত।
এদিকে দ্যাখ। কোনোরকমে নজরে পড়ে এমন একটা মাটির ডিবির দিকে বুড়ো আঙুল নাচিয়ে বলল তিমুকা ‘এটা খার কবর সে লোকটা আত্মহত্যা করেছিল। বাবা বলছিল লোকটা নাকি ইচ্ছে করে গলায় দড়ি দিয়ে মরেছিল। লোকটা ডিপো-কারখানায় ফিটার মিস্তির কাজ করত। আমি তো বুঝতেই পারি না ইচ্ছে করে কেউ নিজের গলায় দড়ি দেয় কী করে।’
‘জানিস তিকা, আমার মনে হয় লোকটার নিশ্চয় কষ্টের জীবন ছিল, সুখের জীবন ছিল না। তাই না?’ ‘কী বলতে চাস্ তুই!’ তিকা প্রতিবাদ করল। মনে হল, ও কথাটা শুনে অবাক হয়ে গেছে। ‘এটা নিশ্চয়ই খারাপ নয়?’
‘কোন্টা খারাপ নয়?’
‘জীবনটা। জীবনটা ভারি মজার, ভারি ভালো। মরাটা কী করে আরও ভালো হতে পারে? বে’চে থাকলে ছুটে বেড়াতে পারিস, যা খুশি করতে পারিস। আর এখেনে তোকে তো চুপচাপ শুয়ে পড়ে থাকতে হবে!’
হেসে উঠল তিমুক্কা। রিনরিনে ঢেউ-খেলানো হাসি। তারপর আচমকা হাসি বন্ধ করল। ওর চোখের চাউনিতে কেমন যেন একটা হতবুদ্ধি ভাব। এক মিনিট চুপ করে থেকে ও ফিসফিসিয়ে বলল:
Sarakhon Report 



















