০১:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩৪৭) আমির খসরুর আসন পরিবর্তন, তার আসনে মনোনয়ন পেলেন সাঈদ নোমান এনসিপি ছাড়লেন তাসনিম জারা থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি চুক্তি সিলেটে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় নিষিদ্ধ বিড়িসহ যুবক গ্রেপ্তার একীভূত পাঁচ ব্যাংকের আমানত উত্তোলনে বিলম্ব, এ বছর অর্থ ছাড়ের সুযোগ নেই নিউ ইয়র্ক টাইমস প্রতিবেদন: ধর্ম অবমাননার অভিযোগে হিন্দু শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা, বাংলাদেশে সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল ৩৫ বস্তা টাকা ও স্বর্ণালংকার ঘন কুয়াশায় ঢাকায় আটটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ঘুরিয়ে দেওয়া হলো ঢাবিতে শরিফ ওসমান হাদির কবরে ফাতেহা দিলেন তারেক রহমান

ইশকুল (পর্ব-৪৪)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪
  • 81

আর্কাদি গাইদার

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

‘এখন চুপ। পাখিটা কাছেই কোথাও আছে। লুকিয়ে আছে দুষ্টু মিন্টু পাখিটা!

যাই হোক, ওকে ধরবই আজ।’

সেদিন সন্ধে পর্যন্ত তিষ্কার সঙ্গে কাটালুম আমি। ভারি মজার ছেলে তিস্কাটা। আমার চেয়ে ও ছিল মোটে দেড় বছরের ছোট, কিন্তু দেখতে এত ছোটখাট ছিল যে বারো কেন ওর বয়েস দশ বছর বলেও মনে হত না। আর এমন সদা-এন্তব্যস্ত ভাব ছিল ওর যে ক্লাসের বন্ধুরা ওকে নিয়ে মজা করার সুযোগ পেলে ছাড়ত না। প্রায়ই ওর মাথার টাকে গাঁট্রটীট্রাও ঝাড়ত দু-চারটে, কিন্তু ও কখনই রাগ করত না, কিংবা করলেও তা বেশিক্ষণ রাখত না।

তিমুক্কা যখন কারো কাছে কিছু চাইত, যেমন, ধরা যাক, পেন্সিল কাটতে বা কলমের নিব সরু করতে একটা ছুরি, কিংবা একটা শক্ত অঙ্ক কষার ব্যাপারে একটু-সাহায্য, ও তখন সেই অন্য ছেলেটার মুখের দিকে ওর বড়-বড় গোল-গোল চোখ মেলে আর মুখে একটা কিন্তু-কিন্তু হাসি নিয়ে সটান চেয়ে থাকত।

তিঙ্কা ছিল ভিতু, কিন্তু ওর ভয়টা ছিল এক বিশেষ ধরনের। ইনস্পেক্টর কিংবা হেডমাস্টার-মশাই আসছেন শুনলে ও যে কী সাংঘাতিক ভয় পেত তা কহতব্য নয়। একবার ক্লাস চলবার সময় ইশকুলের দারোয়ান এসে খবর দিলে টিচার্স’ রুমে তিকার ডাক পড়েছে। আর তিকা!

তিকা তখন জবুথবু হয়ে নিজের সিটে বসে আছে। অনেক কষ্টে যখন সে সিট ছেড়ে উঠল, তখন প্রথমেই আন্তে-আন্তে ঘরের চারদিকে একবার তাকিয়ে নিল। যেন বলতে চাইল: ‘কী করেছি আমি? মাইরি বলছি, আমি কিছু করি নি!’ ওর অল্পস্বল্প বসন্তের দাগওয়ালা মুখ তখন ছাইয়ের মতো শাদা হয়ে গেছে। টলতে-টলতে ও ক্লাস থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩৪৭)

ইশকুল (পর্ব-৪৪)

০৮:০০:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

আর্কাদি গাইদার

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

‘এখন চুপ। পাখিটা কাছেই কোথাও আছে। লুকিয়ে আছে দুষ্টু মিন্টু পাখিটা!

যাই হোক, ওকে ধরবই আজ।’

সেদিন সন্ধে পর্যন্ত তিষ্কার সঙ্গে কাটালুম আমি। ভারি মজার ছেলে তিস্কাটা। আমার চেয়ে ও ছিল মোটে দেড় বছরের ছোট, কিন্তু দেখতে এত ছোটখাট ছিল যে বারো কেন ওর বয়েস দশ বছর বলেও মনে হত না। আর এমন সদা-এন্তব্যস্ত ভাব ছিল ওর যে ক্লাসের বন্ধুরা ওকে নিয়ে মজা করার সুযোগ পেলে ছাড়ত না। প্রায়ই ওর মাথার টাকে গাঁট্রটীট্রাও ঝাড়ত দু-চারটে, কিন্তু ও কখনই রাগ করত না, কিংবা করলেও তা বেশিক্ষণ রাখত না।

তিমুক্কা যখন কারো কাছে কিছু চাইত, যেমন, ধরা যাক, পেন্সিল কাটতে বা কলমের নিব সরু করতে একটা ছুরি, কিংবা একটা শক্ত অঙ্ক কষার ব্যাপারে একটু-সাহায্য, ও তখন সেই অন্য ছেলেটার মুখের দিকে ওর বড়-বড় গোল-গোল চোখ মেলে আর মুখে একটা কিন্তু-কিন্তু হাসি নিয়ে সটান চেয়ে থাকত।

তিঙ্কা ছিল ভিতু, কিন্তু ওর ভয়টা ছিল এক বিশেষ ধরনের। ইনস্পেক্টর কিংবা হেডমাস্টার-মশাই আসছেন শুনলে ও যে কী সাংঘাতিক ভয় পেত তা কহতব্য নয়। একবার ক্লাস চলবার সময় ইশকুলের দারোয়ান এসে খবর দিলে টিচার্স’ রুমে তিকার ডাক পড়েছে। আর তিকা!

তিকা তখন জবুথবু হয়ে নিজের সিটে বসে আছে। অনেক কষ্টে যখন সে সিট ছেড়ে উঠল, তখন প্রথমেই আন্তে-আন্তে ঘরের চারদিকে একবার তাকিয়ে নিল। যেন বলতে চাইল: ‘কী করেছি আমি? মাইরি বলছি, আমি কিছু করি নি!’ ওর অল্পস্বল্প বসন্তের দাগওয়ালা মুখ তখন ছাইয়ের মতো শাদা হয়ে গেছে। টলতে-টলতে ও ক্লাস থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল।