সারাক্ষণ ডেস্ক

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভালোবাসেন এমন কয়েক মিলিয়ন মানুষ আছেন, আবার কয়েক মিলিয়ন মানুষ তাকে ঘৃণা করেন। প্রত্যেকেই তাদের মত অনুযায়ী ভোট দেবেন।তবে এমন অনেক মানুষও আছেন, যাদের মিস্টার ট্রাম্প সম্পর্কে মিশ্র অনুভূতি রয়েছে। তারা তাঁর প্রেসিডেন্ট হিসাবে অনেক কাজ পছন্দ করেন এবং তার বেশিরভাগ নীতির সাথে একমত। কিন্তু তারা তাঁর ভঙ্গিমা পছন্দ করেন না এবং জানুয়ারি ৬, ২০২১-এর মতো অতিরিক্ত আচরণকে সমর্থন করতে পারেন না। এই তৃতীয় গ্রুপের আমেরিকানরাই নির্ধারণ করবেন সাবেক প্রেসিডেন্ট হোয়াইট হাউজে ফিরে যাবেন কি না।

এই গ্রুপের জন্য, আমি উল্লেখ করব যে মিস্টার ট্রাম্পই একমাত্র প্রার্থী নন। এই নির্বাচন শুধুমাত্র তাঁর উপর নয়। এটি তাঁর এবং কমলা হ্যারিসের মধ্যে একটি পছন্দের বিষয়।আমি মিস্টার ট্রাম্পের সাথে সবসময় একমত নই। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাঁর সাথে একমত, এবং প্রায় সবসময়ই মিস হ্যারিসের সাথে দ্বিমত পোষণ করি। এটি এই সিদ্ধান্তটিকে সহজ করে দেয়। আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় এখানে তুলে ধরা হলো।

বর্তমানে, আমেরিকানরা চার বছর আগের তুলনায় প্রতি বছর প্রায় $১৩,০০০ বেশি খরচের মুখোমুখি হচ্ছেন। প্রায় সব কিছুর—খাদ্য, গ্যাস, বিদ্যুৎ বিল, বীমা—মূল্য বেড়েছে। এটি বাইডেন-হ্যারিস নীতির সরাসরি ফলাফল, যা মুদ্রাস্ফীতি বাড়িয়েছে এবং পরিবারগুলিকে এর ব্যয়ভার বহন করতে বাধ্য করেছে। আমেরিকানরা জাতীয় ঋণের একটি বিশাল বোঝাও বহন করছেন, যা প্রায় $৩৬ ট্রিলিয়ন ছুঁয়েছে, যার জন্য মিস হ্যারিসের সমতা ভাঙা ভোটের অংশ রয়েছে। মিস হ্যারিস প্রেসিডেন্ট হলে আমেরিকার আর্থিক সংকট আরও প্রকট হবে।

এরপরে আসে জাতীয় নিরাপত্তা। বাইডেন-হ্যারিস নীতি বিশ্বকে অনেক বেশি বিপজ্জনক করে তুলেছে। আমাদের দক্ষিণ সীমান্ত হলো আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা হুমকি; মিস্টার বাইডেন এবং মিস হ্যারিস তা আরও খারাপ করেছেন। আফগানিস্তানে তাদের বিপর্যয় শুধু একটি নতুন সন্ত্রাসী রাষ্ট্র তৈরি করেনি, বরং এটি এমন দুর্বলতার সংকেত দেয় যা রাশিয়াকে ইউক্রেন আক্রমণ করতে উত্সাহিত করেছে। তাদের ইরান নীতিও তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে, যা ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যেতে তাদের উত্সাহিত করেছে। আর চীনের প্রতি প্রশাসনের দুর্বলতা আমাদের ব্যয়ে এই কমিউনিস্ট শক্তির প্রসারকে বাধা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এই চার বছরে বাইডেন-হ্যারিসের ব্যর্থতা আমাদেরকে এই পৃথিবী দিয়েছে।

একটি ট্রাম্প প্রশাসন ভিন্ন হবে। এটি নিখুঁত হবে না। তবে আমি মিস্টার ট্রাম্পের সাথে একমত যে আমাদের কর কমিয়ে রাখতে হবে এবং আরও কমানো উচিত। আমি একমত যে আমাদের বিশেষ স্বার্থের জন্য বরাদ্দ করা ট্রিলিয়ন ডলার কমিয়ে আনা উচিত। আমি একমত যে আমাদের পরিবার এবং চাকরি সৃষ্টিকারীদের শক্তিশালী করতে আমেরিকান জ্বালানী সম্প্রসারণ করা উচিত এবং আমাদের বিদেশী জ্বালানির উপর নির্ভরশীলতা কমানো উচিত।

আমি মিস্টার ট্রাম্পের সাথে একমত যে আমেরিকা শক্তিশালী হওয়া উচিত—আজকের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। তার প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন, রাশিয়া অন্য কোনো দেশে আক্রমণ করেনি, ইরান চাপের মুখে ছিল, চীন কয়েক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো শক্তিশালী প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়েছিল, এবং আমাদের দক্ষিণ সীমান্ত আরও সুরক্ষিত ছিল। বাইডেন-হ্যারিসের অধীনে বিশ্ব অনিরাপদ, এবং হ্যারিস প্রশাসনের অধীনে এর পরিবর্তন আশা করা উচিত নয়।

এই নীতিগত পার্থক্যগুলো প্রতিটি আমেরিকান এবং বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলবে।দ্বিতীয় মেয়াদে মিস্টার ট্রাম্প এমন কিছু করবেন যা আমার পছন্দ হবে না? আমি নিশ্চিত। তবে এটি ভোটারদের জন্য প্রশ্ন নয়। কোনো রাজনীতিবিদ সবকিছু ঠিক করেন না। যারা মিস্টার ট্রাম্পের ত্রুটিগুলি পরিষ্কারভাবে দেখতে পারেন এবং সেগুলি স্বীকার করতে পারেন, তাদের জন্য প্রশ্ন হলো আমরা তার নীতির সাথে ভালো আছি নাকি তার প্রতিপক্ষের সাথে। কর, ব্যয়, মুদ্রাস্ফীতি, অভিবাসন, জ্বালানী এবং জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে প্রার্থীদের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। এবং মিস্টার ট্রাম্প স্পষ্টভাবে সেরা পছন্দ।

 (নিকি হ্যালি ছিলেন জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত (২০১৭-১৯) এবং দক্ষিণ ক্যারোলাইনার গভর্নর (২০১১-১৭), এবং ২০২৪ সালে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ছিলেন।)