১০:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ফুটপাতে শীত কাপড়ের জমজমাট বেচাকেনা

  • Sarakhon Report
  • ০৪:৪০:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪
  • 49
রেজাই রাব্বী

শীতকে বলা হয় ফ্যাশনের ঋতু। রাজধানীতে জেকে বসতে শুরু করেছে শীত। আর শীতকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে গরম কাপড় বেচাকেনার সমাগম ঘটেছে। বড় বড় ব্র্যান্ড শোরুমের পাশাপাশি বিভিন্ন মার্কেট ও রাস্তার ফুটপাতেও দেখা যায় গরম কাপড় বেচাকেনায় চোখে পড়ার মতো ভিড়। রাজধানীর ফুটপাতে বিক্রি করা গরম কাপড় থাকে নিম্ন আয়ের মানুষের পছন্দের শীর্ষে।

তেমনি একটি ফুটপাতের বাজারের দেখা মেলে রাজধানীর গুলশান গুদারাঘাট থেকে বাড্ডা লিংক রোড পর্যন্ত। রাস্তার দু’ধারে বসা দোকানগুলোতে দেখা মিলে নতুন পুরাতন সকল ধরনের পোশাকের সমারহ। শুধু নতুন-পুরাতন জামা কাপড়ই নয় পাশাপাশি রয়েছে জুতার দোকান, খেলনার দোকান, ফলের দোকান, সবজির দোকান, মাছের দোকান, খাবারের দোকান এবং বিভিন্ন প্রকার পন্য নিয়ে হকাররা বসে থাকেন। এই বাজারকে কেন্দ্র করে শীতের পিঠার দোকানগুলো ভালো ব্যবসা করে যাচ্ছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গুদারাঘাটের এই অস্থায়ী বাজার বিকেল থেকে শুরু করে রাত এগারোটা পর্যন্ত অবস্থান করে থাকে।

বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায় সেখানকার ক্রেতারা হলেন নিম্ন আয়ের মানুষ জন বেশি। এর পাশাপাশি গুলশান বনানীতে যারা চাকরি করেন তাদের বেশিরভাগ মানুষজন বাড্ডা গুদারাঘাট এলাকায় ভাড়া থাকেন বেশি, তাই অফিস শেষে ফেরার সময় কেনাকাটায় বড় একটা ভূমিকা পালন করে থাকেন তারা।

মানিক নামে এক পিঠা বিক্রেতার সাথে কথা বলে জানা যায় তিনি সারাদিন রিকশা চালান এবং সন্ধ্যায় তার স্ত্রীকে নিয়ে পিঠা বিক্রি করতে আসেন। তিনি আরো জানান তারা মৌসুমী পিঠা ব্যবসায়ী। সন্ধ্যা থেকে শুরু করে রাত এগারোটা পর্যন্ত ক্রেতার সমাগম থাকায় তারা এই পিঠা বিক্রির উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

কম্বলের দোকান নিয়ে বসে থাকা জমির উদ্দিন সারাক্ষণ প্রতিবেদককে জানান এখনো পুরোপুরি শীত না পড়ায় কম্বল বিক্রি আশানুরূপ হচ্ছে না। কম্বোলের দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ৩০০০ টাকা পর্যন্ত কম্বল পাওয়া যায় এখানে। তিনি আরো জানান দৈনিক এখন তার পনেরো থেকে বিশটি কম্বল বিক্রি হচ্ছে শীত বাড়ার সাথে সাথে কম্বল বিক্রির পরিমাণ আরো বেশি বেড়ে যাবে। তবে আশা রাখছেন গত বছরের চেয়ে এ বছর ভালো বিক্রি করতে পারবেন তিনি।

পুরাতন কাপড় ব্যবসায়ী হোসেন আলী বলেন, ২ বছর ধরে পুরাতন কাপড় বিক্রি করেন তিনি। শীত এলে বিক্রি বাড়ে। প্রতিদিন বিকেলে থেকেই ক্রেতারা আসেন দোকানে।

শীতের জ্যাকেট ও ব্লেজার বিক্রি করা বিক্রেতা নেহাল জানান গত দু’বছর আগে বিয়ে করেছেন সম্প্রতি পরিবার নিয়ে ঢাকায় আসছেন, কি করবেন ভেবে না পেয়ে স্বল্প পুঁজি নিয়ে শুরু করেন পুরাতন শীতের জ্যাকেট ও ব্লেজারের ব্যবসা। তিনি জানান ভালোই বিক্রি হচ্ছে দাম কম হওয়ায় ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। তবে আশা করি জানুয়ারির দিকে আরো ভালো বিক্রি করতে পারব।

এক মোজা বিক্রেতা বলেন, শীত আসায় মোজা বিক্রি দ্বিগুনের চেয়েও বেশি বেড়ে গেছে। তার বিক্রিত মোজার মূল্য একজোড়া ৩০ টাকা চারজোড়া ১০০ টাকা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় অস্থায়ী এসব দোকানে জ্যাকেট পাওয়া যাচ্ছে ২০০ থেকে ৬০০ টাকায়, পুরাতন ব্লেজার পাওয়া যাচ্ছে ৩০০ থেকে ৮০০টাকায়, ফুল হাতা গেঞ্জি ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকায়, শাল ১৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা, ট্রাউজার ১৫০ টাকা পাওয়া যাচ্ছে।

শীতের কাপড় কিনতে আসা সামির সারাক্ষণ প্রতিবেদকে বলেন কম দামে ভালো পণ্য পাওয়া যায় এখানে। তিনি বলেন শীত আসায় কম্বল কিনেছি একটা ৮০০ টাকার যা অন্য কোথাও কিনতে গেলে লাগতো কমপক্ষে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা। একটা জুতা দেখেছি যেটার দাম চেয়েছে ৭০০ টাকা, ভাবছি ৪০০ টাকা হলে নিয়ে নেব। সারাক্ষণ প্রতিবেদকের সাথে আরও কথা হয় গুলশানে চাকরিরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তার সাথে তিনি জানান ফ্যামিলি গ্রামে থাকেন, আমি উত্তর বাড্ডায় ব্যাচেলর থাকি যাওয়া আসার পথে এখানে ভালো ভালো পোশাক, জুতা ও বিভিন্ন ধরনের পণ্য দেখে থাকি। ঢাকায় শীতের প্রকোপ শুরু হচ্ছে কম্বল কেনার প্রয়োজন তাই অফিস থেকে বাসায় যাওয়ার পথে ঘুরে ঘুরে স্বল্প দামে একটি কম্বল কিনলাম। দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে জানান আমাদের পছন্দনীয় পণ্য বাজেট ফ্রেন্ডলি দামেই পাওয়া যায়।

বাড্ডা লিংক রোড গিয়ে দেখা গেল এক রিকশাচালক একটি জ্যাকেট দামাদামি করছেন। যেটা দোকানি দাম বলছেন ৪০০ টাকা রিক্সাচালক সেটি দামাদামি করে ২৫০ টাকা দিয়ে কিনলেন। রিকশা চালক বলেন, রিকশা নিয়ে যাওয়ার সময় চোখের দেখাতে জ্যাকেটটি ভালো লাগে দাম জানতে চাইলে দোকানে ৪০০ টাকা দাম চাইলে আমি সেটা দামাদামি করে আমার বাজেট অনুযায়ী কিনলাম।

শুধু রিক্সাচালক, কর্মজীবী বা ব্যাচেলররাই নন এখানে অনেকে আসছেন ফ্যামিলি নিয়ে তার পরিবারের জন্য বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে। অস্থায়ী এই বাজারে বিভিন্ন শ্রেণী পেশা বিভিন্ন বয়সের মানুষের সমাগম দেখে মনে হয় এ যেন হাজারো মানুষের মিলন মেলা।

ফুটপাতে শীত কাপড়ের জমজমাট বেচাকেনা

০৪:৪০:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪
রেজাই রাব্বী

শীতকে বলা হয় ফ্যাশনের ঋতু। রাজধানীতে জেকে বসতে শুরু করেছে শীত। আর শীতকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে গরম কাপড় বেচাকেনার সমাগম ঘটেছে। বড় বড় ব্র্যান্ড শোরুমের পাশাপাশি বিভিন্ন মার্কেট ও রাস্তার ফুটপাতেও দেখা যায় গরম কাপড় বেচাকেনায় চোখে পড়ার মতো ভিড়। রাজধানীর ফুটপাতে বিক্রি করা গরম কাপড় থাকে নিম্ন আয়ের মানুষের পছন্দের শীর্ষে।

তেমনি একটি ফুটপাতের বাজারের দেখা মেলে রাজধানীর গুলশান গুদারাঘাট থেকে বাড্ডা লিংক রোড পর্যন্ত। রাস্তার দু’ধারে বসা দোকানগুলোতে দেখা মিলে নতুন পুরাতন সকল ধরনের পোশাকের সমারহ। শুধু নতুন-পুরাতন জামা কাপড়ই নয় পাশাপাশি রয়েছে জুতার দোকান, খেলনার দোকান, ফলের দোকান, সবজির দোকান, মাছের দোকান, খাবারের দোকান এবং বিভিন্ন প্রকার পন্য নিয়ে হকাররা বসে থাকেন। এই বাজারকে কেন্দ্র করে শীতের পিঠার দোকানগুলো ভালো ব্যবসা করে যাচ্ছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গুদারাঘাটের এই অস্থায়ী বাজার বিকেল থেকে শুরু করে রাত এগারোটা পর্যন্ত অবস্থান করে থাকে।

বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায় সেখানকার ক্রেতারা হলেন নিম্ন আয়ের মানুষ জন বেশি। এর পাশাপাশি গুলশান বনানীতে যারা চাকরি করেন তাদের বেশিরভাগ মানুষজন বাড্ডা গুদারাঘাট এলাকায় ভাড়া থাকেন বেশি, তাই অফিস শেষে ফেরার সময় কেনাকাটায় বড় একটা ভূমিকা পালন করে থাকেন তারা।

মানিক নামে এক পিঠা বিক্রেতার সাথে কথা বলে জানা যায় তিনি সারাদিন রিকশা চালান এবং সন্ধ্যায় তার স্ত্রীকে নিয়ে পিঠা বিক্রি করতে আসেন। তিনি আরো জানান তারা মৌসুমী পিঠা ব্যবসায়ী। সন্ধ্যা থেকে শুরু করে রাত এগারোটা পর্যন্ত ক্রেতার সমাগম থাকায় তারা এই পিঠা বিক্রির উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

কম্বলের দোকান নিয়ে বসে থাকা জমির উদ্দিন সারাক্ষণ প্রতিবেদককে জানান এখনো পুরোপুরি শীত না পড়ায় কম্বল বিক্রি আশানুরূপ হচ্ছে না। কম্বোলের দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ৩০০০ টাকা পর্যন্ত কম্বল পাওয়া যায় এখানে। তিনি আরো জানান দৈনিক এখন তার পনেরো থেকে বিশটি কম্বল বিক্রি হচ্ছে শীত বাড়ার সাথে সাথে কম্বল বিক্রির পরিমাণ আরো বেশি বেড়ে যাবে। তবে আশা রাখছেন গত বছরের চেয়ে এ বছর ভালো বিক্রি করতে পারবেন তিনি।

পুরাতন কাপড় ব্যবসায়ী হোসেন আলী বলেন, ২ বছর ধরে পুরাতন কাপড় বিক্রি করেন তিনি। শীত এলে বিক্রি বাড়ে। প্রতিদিন বিকেলে থেকেই ক্রেতারা আসেন দোকানে।

শীতের জ্যাকেট ও ব্লেজার বিক্রি করা বিক্রেতা নেহাল জানান গত দু’বছর আগে বিয়ে করেছেন সম্প্রতি পরিবার নিয়ে ঢাকায় আসছেন, কি করবেন ভেবে না পেয়ে স্বল্প পুঁজি নিয়ে শুরু করেন পুরাতন শীতের জ্যাকেট ও ব্লেজারের ব্যবসা। তিনি জানান ভালোই বিক্রি হচ্ছে দাম কম হওয়ায় ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। তবে আশা করি জানুয়ারির দিকে আরো ভালো বিক্রি করতে পারব।

এক মোজা বিক্রেতা বলেন, শীত আসায় মোজা বিক্রি দ্বিগুনের চেয়েও বেশি বেড়ে গেছে। তার বিক্রিত মোজার মূল্য একজোড়া ৩০ টাকা চারজোড়া ১০০ টাকা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় অস্থায়ী এসব দোকানে জ্যাকেট পাওয়া যাচ্ছে ২০০ থেকে ৬০০ টাকায়, পুরাতন ব্লেজার পাওয়া যাচ্ছে ৩০০ থেকে ৮০০টাকায়, ফুল হাতা গেঞ্জি ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকায়, শাল ১৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা, ট্রাউজার ১৫০ টাকা পাওয়া যাচ্ছে।

শীতের কাপড় কিনতে আসা সামির সারাক্ষণ প্রতিবেদকে বলেন কম দামে ভালো পণ্য পাওয়া যায় এখানে। তিনি বলেন শীত আসায় কম্বল কিনেছি একটা ৮০০ টাকার যা অন্য কোথাও কিনতে গেলে লাগতো কমপক্ষে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা। একটা জুতা দেখেছি যেটার দাম চেয়েছে ৭০০ টাকা, ভাবছি ৪০০ টাকা হলে নিয়ে নেব। সারাক্ষণ প্রতিবেদকের সাথে আরও কথা হয় গুলশানে চাকরিরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তার সাথে তিনি জানান ফ্যামিলি গ্রামে থাকেন, আমি উত্তর বাড্ডায় ব্যাচেলর থাকি যাওয়া আসার পথে এখানে ভালো ভালো পোশাক, জুতা ও বিভিন্ন ধরনের পণ্য দেখে থাকি। ঢাকায় শীতের প্রকোপ শুরু হচ্ছে কম্বল কেনার প্রয়োজন তাই অফিস থেকে বাসায় যাওয়ার পথে ঘুরে ঘুরে স্বল্প দামে একটি কম্বল কিনলাম। দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে জানান আমাদের পছন্দনীয় পণ্য বাজেট ফ্রেন্ডলি দামেই পাওয়া যায়।

বাড্ডা লিংক রোড গিয়ে দেখা গেল এক রিকশাচালক একটি জ্যাকেট দামাদামি করছেন। যেটা দোকানি দাম বলছেন ৪০০ টাকা রিক্সাচালক সেটি দামাদামি করে ২৫০ টাকা দিয়ে কিনলেন। রিকশা চালক বলেন, রিকশা নিয়ে যাওয়ার সময় চোখের দেখাতে জ্যাকেটটি ভালো লাগে দাম জানতে চাইলে দোকানে ৪০০ টাকা দাম চাইলে আমি সেটা দামাদামি করে আমার বাজেট অনুযায়ী কিনলাম।

শুধু রিক্সাচালক, কর্মজীবী বা ব্যাচেলররাই নন এখানে অনেকে আসছেন ফ্যামিলি নিয়ে তার পরিবারের জন্য বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে। অস্থায়ী এই বাজারে বিভিন্ন শ্রেণী পেশা বিভিন্ন বয়সের মানুষের সমাগম দেখে মনে হয় এ যেন হাজারো মানুষের মিলন মেলা।