সারাক্ষণ ডেস্ক
প্রথম আলোর একটি শিরোনাম “গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র: প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে সর্বদলীয় বৈঠক আজ”
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দল ও অন্য অংশীজনদের সঙ্গে আজ বৃহস্পতিবার বিকেল চারটায় একটি সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং চারজন উপদেষ্টা উপস্থিত থাকবেন বলে সরকারি সূত্রে জানা গেছে।
সর্বদলীয় এই বৈঠকের সময় ও স্থানের কথা জানিয়ে গতকাল বুধবার রাতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে। গতকাল রাত সোয়া আটটার দিকে প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার এই বৈঠক আহ্বান করেছে। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ বিকেল চারটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
তবে গতকাল রাত নয়টা পর্যন্ত বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণতন্ত্র মঞ্চসহ বিভিন্ন দল ও জোটের নেতারা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, সর্বদলীয় এ বৈঠকের ব্যাপারে তাঁদের আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। রাত ১০টার পর বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের কাছে হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠিয়ে সর্বদলীয় এ বৈঠকের আমন্ত্রণ জানানো হয়। উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এই খুদে বার্তা পাঠিয়েছেন বলে কয়েকটি দলের নেতারা জানিয়েছেন। এখন বৈঠকে অংশ নেওয়া না-নেওয়ার ব্যাপারে নিজেরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলছে দলগুলো।
দেশের অন্যতম প্রধান দল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, দলে আলোচনা করে ওই বৈঠকে যাওয়া না-যাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন তাঁরা। অন্য দল ও জোটগুলোর নেতাদের কাছ থেকেও একই রকম তথ্য পাওয়া গেছে। গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা জোনায়েদ সাকী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার যে বৈঠক ডেকেছে, সে ব্যাপারে রাত ১০টার পর আমন্ত্রণ পেয়েছেন তিনি।
গণতন্ত্র মঞ্চের আরেক নেতা সাইফুল হক বলেন, হঠাৎ আলোচনায় বসে ঘোষণাপত্র তৈরি করা যায় না। এ জন্য বিস্তৃত আলোচনা প্রয়োজন। কিন্তু অল্প সময়ের নোটিশে কোনো বৈঠক ডাকা হলে তাতে আলোচনায় তেমন ফল হবে না। তিনি জানান, আজ বেলা ১১টায় গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাদের একটি বৈঠক রয়েছে। সরকারের সর্বদলীয় বৈঠকের ব্যাপারে অংশ নেওয়া না-নেওয়ার ব্যাপারে গণতন্ত্র মঞ্চের আজকের সভায় তাঁরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।
দৈনিক ইত্তেফাকের একটি শিরোনাম “গ্যাস-সংকটে চট্টগ্রামে দেশি বিদেশি বিনিয়োগে স্থবিরতা”
চট্টগ্রামে শিল্পে গ্যাসের নতুন সংযোগ হচ্ছে না। গত এক বছরে শিল্পে চার-পাঁচটির বেশি নতুন সংযোগ হয়নি। শিল্প ছাড়া অন্যান্য খাতেও নতুন সংযোগ হচ্ছে না। মূলত গ্যাস সংকটই শিল্পে গ্যাস-সংযোগ হচ্ছে না। চট্টগ্রামে শিল্পে ১ হাজার ২০০ গ্যাস-সংযোগ রয়েছে। তার মধ্যে প্রায় ৩০০ শিল্পকারখানা ব্যাংক ঋণ, আর্থিক সংকটসহ নানা কারণে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। নতুন সংযোগের জন্য প্রায় ১৩০টি আবেদন জমা পড়ে রয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই ডিমান্ড নোটের টাকাও জমা দিয়েছে।
চট্টগ্রামে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর। বন্দরের অবস্থানের কারণে দেশি বিদেশি বিনিয়োগকারী চট্টগ্রামকে বেছে নেয়। বন্দর দিয়ে পণ্য খালাস ও রপ্তানি সহজে করা যায়। চট্টগ্রামে জায়গা না পেলে বিনিয়োগকারীরা দেশের অন্য অঞ্চলে বিনিয়োগ করেন। কিন্তু চরম গ্যাস সংকট চট্টগ্রামে বিনিয়োগ মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার শিল্পে গ্যাসের মূল্য দ্বিগুণ বৃদ্ধি করে এক লাফে প্রতি ইউনিট ৩০ টাকা করেছে। এই মূল্য বৃদ্ধির কারণে রপ্তানিজাত শিল্পকারখানায় বিরূপ প্রভাব পড়ে। বর্তমানে শিল্পে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি আবার দ্বিগুণ করার প্রস্তাব নিয়ে শিল্পকারখানার মালিকরা শঙ্কার মধ্যে রয়েছে। তারা শিল্পে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি না করার দাবি জানাচ্ছে।
কেজিডিসিএলর এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান বর্তমানে মহেষখালী এলএনজি টার্মিনাল থেকে দৈনিক প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে। তার থেকে চট্টগ্রামে দৈনিক ২৬০ থেকে ২৭০ মিলিয়ন গ্যাস বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে। চট্টগ্রামে দৈনিক ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস বরাদ্দ দিলে নতুন পুরোনো শিল্পে প্রাণ ফিরে আসবে। কিন্তু চট্টগ্রামে গ্যাস বরাদ্দ নিয়ে চাপাচাপি হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যার কারণে গ্যাস সংকটে চট্টগ্রামে বিনিয়োগে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, এলএনজি চালু হওয়ার পর থেকে চট্টগ্রামে জাতীয় গ্রিড থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এমনকি কোন কারণে মহেষখালী এলএনজি টার্মিনালে অচলাবস্থা সৃষ্টি হলে চট্টগ্রামে গ্যাসের হাহাকার শুরু হয়। অথচ এলএনজি চালু হওয়ার সময় বলা হয়েছিল চট্টগ্রামের চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি এলএনজি চট্টগ্রামে বাইরে সরবরাহ দেওয়া হবে।
বণিক বার্তার একটি শিরোনাম”গণতন্ত্র বহাল রেখে রাষ্ট্র পরিচালনার তিন মূলনীতি বাদ নতুন চার নীতির সুপারিশ”
দেশের বিদ্যমান সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূল স্তম্ভ হিসেবে চার মূলনীতি অনুসরণের কথা বলা হয়েছে। এগুলো হলো জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা। এর মধ্যে শুধু ‘গণতন্ত্র’ বহাল রেখে বাকিগুলো বাদ দেয়ার সুপারিশ করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। এজন্য সংবিধানের এ সংশ্লিষ্ট ৮, ৯, ১০ ও ১২ অনুচ্ছেদও বাদ দেয়ার কথা বলা হয়েছে কমিশনের প্রতিবেদনে।
এর পরিবর্তে নতুন চারটি মূলনীতি যুক্ত করার প্রস্তাব দিয়ে সুপারিশে বলা হয়েছে, সংস্কারকৃত সংবিধানের মূলনীতি হবে পাঁচটি। এগুলো হলো সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ ও গণতন্ত্র। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের আদর্শ এবং ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হিসেবে সংবিধান ও রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে এ পাঁচ নীতি গ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে বলে কমিশনের সুপারিশে উল্লেখ করা হয়।
অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বে সংবিধান সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে গতকালই প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে সংস্কারের সুপারিশসংবলিত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়। প্রতিবেদনে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ পরিবর্তন করে ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ করার সুপারিশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে সংবিধান ও রাষ্ট্র পরিচালনার প্রযোজ্য সব ক্ষেত্রে রাষ্ট্রকে ‘প্রজাতন্ত্রের’ পরিবর্তে ‘নাগরিকতন্ত্র’ হিসেবে উল্লেখেরও প্রস্তাব করা হয়েছে।
দেশের বিদ্যমান সংবিধানে বলা আছে ‘বাংলাদেশ একটি একক, স্বাধীন ও সার্বভৌম প্রজাতন্ত্র, যা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ নামে পরিচিত হবে।’ আর কমিশন সুপারিশ করেছে, সংবিধানের প্রযোজ্য সব ক্ষেত্রে ‘প্রজাতন্ত্র’ এবং ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ শব্দের পরিবর্তে ‘নাগরিকতন্ত্র’ এবং ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ শব্দ ব্যবহৃত হবে। তবে ইংরেজি সংস্করণে ‘রিপাবলিক’ ও ‘পিপলস রিপাবলিক অব বাংলাদেশ’ অপরিবর্তিত থাকবে।
মানবজমিনের একটি শিরোনাম “ঐকমত্যে গণ-অভ্যুত্থানের সনদ তার ভিত্তিতে নির্বাচন”
রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত ৪টি সংস্কার কমিশন প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। গতকাল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে এই প্রতিবেদন তুলে দেন সংশ্লিষ্ট কমিশন প্রধানরা। এদিন জানানো হয়েছে আরও ৬টি কমিশন প্রতিবেদন
জমা দিতে এক মাস সময় পেয়েছে। তাদের রিপোর্ট জমা হলে ফেব্রুয়ারিতে পুরো সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ হবে। আলোচনার মাধ্যমে তৈরি হবে গণ- অভ্যুত্থানের সনদ। যার ভিত্তিতে হবে জাতীয় নির্বাচন। চার কমিশনের প্রতিবেদন গ্রহণের পর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এমন তথ্য জানিয়ে বলেন, সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের মাধ্যমে গণ-অভ্যুত্থানের স্বপ্নের যাত্রা শুরু হলো।
বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ, সংবিধান এবং দুদক সংস্কার কমিশন প্রতিবেদন জমা দেয়। এরপর সেখানে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হয়।
প্রতিবেদন জমা হওয়ার মধ্যদিয়ে নতুন অধ্যায় শুরু হলো মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এটার মাধ্যমে আমরা আলোচনা শুরু করবো সবার সঙ্গে যে, সবার মন এর মধ্যে সায় দিচ্ছে কিনা; অঙ্গীকারগুলো পূরণ হচ্ছে কিনা- সেটার আলোচনা।
আলোচনার রসদ আপনারা (সংস্কার কমিশন) তৈরি করে দিয়েছেন। সে আলোচনার পরবর্তী অধ্যায়টা কী হবে- সেটাও আমরা জেনে রাখি- একটা মতৈক্য প্রতিষ্ঠা হবে। সবাই একমত হবে না। কিছু অংশে একদম একমত হবেন। আমরা কী স্বপ্ন দেখলাম যে- একা একা স্বপ্ন দেখলাম? মানুষের স্বপ্নের অংশ নেই, সেটা তো হতে পারে না। আমরা কতোটুকু সে (গণ-অভ্যুত্থানের) স্বপ্ন নিয়ে আসছি সেটার জন্যই এই আলোচনা। এটা বাইরে থেকে চাপানো জিনিস না; ভেতর থেকে উদ্ভূত একটা জিনিস।
তিনি বলেন, যে আলোচনা হবে, সে আলোচনার নেতৃত্ব দেবেন আপনারা (সংস্কার কমিশন) মতৈক্য প্রতিষ্ঠার জন্য। যেহেতু আপনারাই তাদের পক্ষ থেকে স্বপ্ন দেখেছেন, কীভাবে তাদের স্বপ্ন আপনাদের স্বপ্ন একাকার হয়ে যাবে, তার মাধ্যমে গণ-অভ্যুত্থানের একটা চার্টার তৈরি হবে। এই সনদের ভিত্তিতেই ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন হবে। তিনি বলেন, ওই যে নতুন বাংলাদেশের চার্টার, সেই চার্টারটা মতৈক্যের ভিত্তিতে হবে। নির্বাচন হবে, সবকিছু হবে; কিন্তু চার্টার হারিয়ে যাবে না। এ চার্টার থেকে যাবে ইতিহাসের অংশ হয়ে। এটা আমাদের জাতীয় কমিটমেন্ট। এটা কোনো দলীয় কমিটমেন্ট না। আমরা চাচ্ছি সব দল এই চার্টারে সাইন অন করবে।
সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনকে ‘ঐতিহাসিক নোট’ বর্ণনা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এটা শুধু আনুষ্ঠানিকতা না, এটা একটা ঐতিহাসিক নোট। এ ঘটনাটা, ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে।
Sarakhon Report 



















