আর্কাদি গাইদার
ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ
তিনজন সশস্ত্র মজুরকে সঙ্গে নিয়ে কোরচাগিন আবার ওখানে এলেন।
ওদের বললেন, ‘তাড়াতাড়ি চলি যাও ভাই। ওখেনে থাকতি হবে। কমিটির কাছ-থেকে-পাওয়া পাশ ছাড়া কাউরে ওখেনে ঢুকতে দেবে না, বুয়েছ? আর কাজকম্ম সব ঠিক-ঠিক হল কিনা কাউরে দিয়ে খবরটা পাঠিও।’
‘কারে পাঠাব, কন?’
‘আরে, কাছেপিঠে আমাদের নোক যারে পাও তারেই পাঠাবে।’
প্রবল একটা উত্তেজনা আর অন্য সকলের সঙ্গে সঙ্গে থাকার ইচ্ছে পেয়ে বসল আমাকে। চে’চিয়ে বললুম, ‘আমিই না হয় কাছেপিঠে থাকব’খন!’
‘ঠিক আছে, ওরেই লাও। ও খুব দৌড়তে পারে।’
হঠাৎ আমি লক্ষ্য করলুম, কমিটির অফিস থেকে যারা বেরিয়ে আসছে তাদের মধ্যে প্রায় সকলেই ভাঙা প্যাকিং বাক্সটা থেকে একটা করে রাইফেল তুলে নিচ্ছে।
বললুম, ‘কমরেড কোরচাগিন, প্রত্যেকেই রাইফেল নিচ্ছে। আমিও একটা নেব?’
সারা-গায়ে-উল্কি-আঁকা একজন নৌ-সেনার সঙ্গে কোরচাগিন তখন কথায় ব্যস্ত ছিলেন। কথা থামিয়ে বিরক্তভাবে বললেন, ‘অ্যাঁ, কী?’
‘একটা রাইফেল চাই। আমি তো যে-কোনো সাবালকেরই সমান, তাই না?’
এমন সময় পাশের ঘর থেকে জোর গলায় কে যেন কোরচাগিনকে ডাকলে।
তাড়াতাড়ি চলে যেতে-যেতে কোনো কথা না বলে কোরচাগিন শুধু আমার দিকে হাত নাড়লেন।
হয়তো উনি আমার অনুরোধ উড়িয়ে দেয়ার ভঙ্গি করলেন। আমি কিন্তু হাত-
নাড়ার অর্থ করলুম, উনি আমায় অনুমতি দিয়ে গেলেন। সঙ্গে সঙ্গে বাক্স থেকে একটা রাইফেল উঠিয়ে নিয়ে দেহের সঙ্গে সেটাকে চেপে ধরে সশস্ত্র প্রহরীদের পিছ
পিছু ছুটলুম। ওঁরা তখন রাস্তা ধরে হাঁটা শুরু করেছেন।
আর দৌড়ে সামনের উঠোনটা পার হতে হতে তখুনি-পাওয়া সর্বশেষ খবরটা আমার কানে এল: পেত্রোগ্রাদে সোভিয়েত রাজ ঘোষিত হয়েছে, কেরেনিষ্ক পালিয়েছে, আর মস্কোয় সামরিক কাদেতদের সঙ্গে লড়াই চলছে।