১১:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

মোদির সফরের আগে ট্রাম্পের এফসিপি বন্ধের নির্বাহী আদেশ: কী সুবিধা পাবেন আদানী?

  • Sarakhon Report
  • ০৫:৫১:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • 19

সারাক্ষণ ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেনযেখানে তিনি বিচার বিভাগকে (ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস) নির্দেশ দিয়েছেন যেবিদেশি সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে যেসব আমেরিকানের বিরুদ্ধে মামলা চলছে বা চলার কথাসেগুলো আপাতত স্থগিত রাখতে হবে। ব্যবসায়িক সুবিধা লাভ বা রক্ষা করতে গিয়ে বিদেশে ঘুষ দেওয়া সংক্রান্ত এই মামলাগুলোর আইনি প্রক্রিয়া এই নির্বাহী আদেশ অনুযায়ী আটকে থাকবে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই আদেশ প্রায় অর্ধ-শতাব্দী পুরনো ফরেন করাপ্ট প্র্যাকটিসেস অ্যাক্ট (এফসিপিএ) প্রয়োগ স্থগিত করছে। একই সঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল প্যাম বন্ডিকে নির্দেশ দিচ্ছে যে তিনি এ সংক্রান্ত বর্তমান ও অতীত কার্যক্রম পর্যালোচনা করে প্রয়োগের নতুন নির্দেশিকা প্রস্তুত করবেন।

এই পদক্ষেপটি এসেছে এমন এক সময়েযখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ১২ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন। দুই দিনের এই সফরে মোদি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করবেন। এর আগে সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের আমলে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ (ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস) মিলিয়নিয়ার গৌতম আদানিকে প্রতারণা” ও ঘুষ-সংক্রান্ত ষড়যন্ত্রের অভিযোগে অভিযুক্ত করেছিল।

ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে এফসিপিএ-র অধীনে মামলাগুলোর প্রয়োগ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। এর ফলে গৌতম আদানি সংক্রান্ত মামলার উপর কী প্রভাব পড়বেতা অনেকাংশেই নির্ভর করবে এই আদেশের সীমা ও প্রয়োগ-নির্দেশিকার উপর।

মার্কিন তদন্ত থেকে সাময়িক স্বস্তিশোনা যাচ্ছিল যে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ আদানি গ্রুপ এফসিপিএ লঙ্ঘন করেছে কি নাতা খতিয়ে দেখছে। এই আইনে আমেরিকান সত্ত্বা বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বিদেশি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে পারেন না। এখন ট্রাম্পের আদেশে এই আইন কার্যকর করার প্রক্রিয়া থেমে গেলে গৌতম আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে চলমান বা সম্ভাব্য কোনো তদন্ত পিছিয়ে যেতে পারেএমনকি দুর্বলও হয়ে যেতে পারে।

হিনডেনবার্গ রিসার্চের অভিযোগের প্রভাব হিনডেনবার্গ রিসার্চ আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে শেয়ার-মূল্য কারসাজি ও কর্পোরেট প্রতারণার অভিযোগ করেছিল এবং সম্ভাব্য বিদেশি কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুর্নীতির ইঙ্গিতও দিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র যদি এই বিষয়গুলো এফসিপিএ অনুসারে তদন্তের পরিকল্পনা করে থাকেতবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত সেই আইনি পদক্ষেপকে সাময়িকভাবে স্থগিত বা বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

এবার ভারত কী করবেযুক্তরাষ্ট্র যদি পেছনে সরে যায়তাহলে প্রকৃত অনুসন্ধানের দায়ভার ভারতে সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থাযেমন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া (সেবি) এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)এর উপরই বর্তাবে। এই সংস্থাগুলো যদি গভীরভাবে অনুসন্ধান না চালায়তবে গৌতম আদানি অবিলম্বে কোনো গুরুতর আইনি ঝামেলায় পড়বেন না।

বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের প্রতিক্রিয়া কী হতে পারেডোনাল্ড ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত গৌতম আদানিকে আপাতত যুক্তরাষ্ট্রের আইনি ঝামেলা থেকে দূরে রাখলেও এর ফলে আন্তর্জাতিক নজরদারি কমে যাবেএমনটা ভাবার কারণ নেই। যুক্তরাজ্যইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যান্য দেশের বিনিয়োগকারী ও তদারক সংস্থাগুলো আদানি গ্রুপের ব্যবসায়িক পদ্ধতির দিকে নজর রেখে চলবে।

গৌতম আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানিতাঁর ভাতিজা সাগর আদানি ও আদানি গ্রিনের অন্যান্য শীর্ষ নির্বাহীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে যেতাঁরা ২৬৫ মিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ ঘুষ হয় দিয়েছেন বা দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সোলার পাওয়ার চুক্তি পেতে এবং সেই প্রকল্পগুলোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রে অর্থ সংগ্রহের সময় দাবি করেছিলেন যে তাঁদের কোম্পানি ঘুষবিরোধী সব আইনের প্রতি সম্পূর্ণভাবে অনুগত।

এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সিকিউরিটিজ আইনের অধীনে প্রতারণার শামিল হতে পারে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁরা অপরাধমূলক দায়ভারেও পড়তে পারেন। এই মামলায় মূল প্রসঙ্গ হল আদানি গ্রুপ ও আদানি গ্রিন কতিপয় ভারতীয় রাজ্যওড়িশাঅন্ধ্রপ্রদেশসম্ভবত তামিলনাড়ুছত্তিশগড় ও জম্মু ও কাশ্মীরেসরকারি বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলোকে (ডিসকম) বাজারদরের চেয়ে বেশি মূল্যে সৌরবিদ্যুৎ কিনতে বাধ্য করতে ঘুষ দিয়েছে কি না।

অভিযুক্ত ঘুষ দেওয়ার সময়সীমা ২০২১ সালের মাঝামাঝি থেকে ২০২১ সালের শেষ নাগাদ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই সময় ওড়িশায় বিজু জনতা দলঅন্ধ্রপ্রদেশে ওয়াইএসআর কংগ্রেসতামিলনাড়ুতে ডিএমকেছত্তিশগড়ে কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল। আর জম্মু ও কাশ্মীর কার্যত কেন্দ্রীয় বিজেপি শাসনের অধীনে ছিল। আদানি গ্রুপ অবশ্য এই অভিযোগগুলোকে ভিত্তিহীন বলে অস্বীকার করেছে এবং দাবি করেছে যে তারা সব আইনের প্রতি সম্পূর্ণভাবে অনুগত।

এফসিপিএ কীফরেন করাপ্ট প্র্যাকটিসেস অ্যাক্ট বা এফসিপিএ যুক্তরাষ্ট্রের একটি আইনযা আমেরিকান কোম্পানিব্যক্তি এবং যুক্তরাষ্ট্রে তালিকাভুক্ত বিদেশি সংস্থাগুলোকে বিদেশি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে নিষেধ করে। এছাড়া আর্থিক হিসাবে যথাযথ স্বচ্ছতা ও নির্ভুলতা বজায় রাখার কথাও বলেযাতে প্রতারণা ঠেকানো যায়। এই আইনের আওতায় অনেক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যাপক তদন্ত হয়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতামত কীডোনাল্ড ট্রাম্প অ্যাটর্নি জেনারেল প্যাম বন্ডিকে নির্দেশ দিয়েছেন যেএফসিপিএ-র অধীনে চলমান সব কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হোকযতদিন না তিনি নতুন প্রয়োগ-নির্দেশিকা জারি করছেন। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়েছে, “অতিমাত্রায় এফসিপিএ প্রয়োগের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো অন্য আন্তর্জাতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ অবস্থায় পড়ে এবং মার্কিন বাণিজ্যের ক্ষতি হয়।

সোমবার ওভাল অফিসে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “বাস্তবে দেখা যাচ্ছে এটি (এফসিপিএ) একটা বড় ধরনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেউই মার্কিনিদের সঙ্গে ব্যবসা করতে আগ্রহী নয়।” অন্যদিকে এই পদক্ষেপের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন অনেকে। কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির গবেষক ও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সাবেক দুর্নীতিবিরোধী সমন্বয়কারী রিচার্ড নেফিউ মন্তব্য করেন, “এটি খুবই খারাপ ধারণা। বেশিরভাগ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ঘুষকে অনুৎপাদনশীল ব্যয় হিসেবে দেখে বলে তারা এফসিপিএ-এর কঠোরতা সমর্থন করে। এতে ঘুষ নেওয়া-দেওয়া দৃঢ়ভাবে প্রতিহত করা যায়।

মোদির সফরের আগে ট্রাম্পের এফসিপি বন্ধের নির্বাহী আদেশ: কী সুবিধা পাবেন আদানী?

০৫:৫১:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সারাক্ষণ ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেনযেখানে তিনি বিচার বিভাগকে (ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস) নির্দেশ দিয়েছেন যেবিদেশি সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে যেসব আমেরিকানের বিরুদ্ধে মামলা চলছে বা চলার কথাসেগুলো আপাতত স্থগিত রাখতে হবে। ব্যবসায়িক সুবিধা লাভ বা রক্ষা করতে গিয়ে বিদেশে ঘুষ দেওয়া সংক্রান্ত এই মামলাগুলোর আইনি প্রক্রিয়া এই নির্বাহী আদেশ অনুযায়ী আটকে থাকবে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই আদেশ প্রায় অর্ধ-শতাব্দী পুরনো ফরেন করাপ্ট প্র্যাকটিসেস অ্যাক্ট (এফসিপিএ) প্রয়োগ স্থগিত করছে। একই সঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল প্যাম বন্ডিকে নির্দেশ দিচ্ছে যে তিনি এ সংক্রান্ত বর্তমান ও অতীত কার্যক্রম পর্যালোচনা করে প্রয়োগের নতুন নির্দেশিকা প্রস্তুত করবেন।

এই পদক্ষেপটি এসেছে এমন এক সময়েযখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ১২ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন। দুই দিনের এই সফরে মোদি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করবেন। এর আগে সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের আমলে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ (ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস) মিলিয়নিয়ার গৌতম আদানিকে প্রতারণা” ও ঘুষ-সংক্রান্ত ষড়যন্ত্রের অভিযোগে অভিযুক্ত করেছিল।

ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে এফসিপিএ-র অধীনে মামলাগুলোর প্রয়োগ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। এর ফলে গৌতম আদানি সংক্রান্ত মামলার উপর কী প্রভাব পড়বেতা অনেকাংশেই নির্ভর করবে এই আদেশের সীমা ও প্রয়োগ-নির্দেশিকার উপর।

মার্কিন তদন্ত থেকে সাময়িক স্বস্তিশোনা যাচ্ছিল যে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ আদানি গ্রুপ এফসিপিএ লঙ্ঘন করেছে কি নাতা খতিয়ে দেখছে। এই আইনে আমেরিকান সত্ত্বা বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বিদেশি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে পারেন না। এখন ট্রাম্পের আদেশে এই আইন কার্যকর করার প্রক্রিয়া থেমে গেলে গৌতম আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে চলমান বা সম্ভাব্য কোনো তদন্ত পিছিয়ে যেতে পারেএমনকি দুর্বলও হয়ে যেতে পারে।

হিনডেনবার্গ রিসার্চের অভিযোগের প্রভাব হিনডেনবার্গ রিসার্চ আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে শেয়ার-মূল্য কারসাজি ও কর্পোরেট প্রতারণার অভিযোগ করেছিল এবং সম্ভাব্য বিদেশি কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুর্নীতির ইঙ্গিতও দিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র যদি এই বিষয়গুলো এফসিপিএ অনুসারে তদন্তের পরিকল্পনা করে থাকেতবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত সেই আইনি পদক্ষেপকে সাময়িকভাবে স্থগিত বা বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

এবার ভারত কী করবেযুক্তরাষ্ট্র যদি পেছনে সরে যায়তাহলে প্রকৃত অনুসন্ধানের দায়ভার ভারতে সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থাযেমন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া (সেবি) এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)এর উপরই বর্তাবে। এই সংস্থাগুলো যদি গভীরভাবে অনুসন্ধান না চালায়তবে গৌতম আদানি অবিলম্বে কোনো গুরুতর আইনি ঝামেলায় পড়বেন না।

বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের প্রতিক্রিয়া কী হতে পারেডোনাল্ড ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত গৌতম আদানিকে আপাতত যুক্তরাষ্ট্রের আইনি ঝামেলা থেকে দূরে রাখলেও এর ফলে আন্তর্জাতিক নজরদারি কমে যাবেএমনটা ভাবার কারণ নেই। যুক্তরাজ্যইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যান্য দেশের বিনিয়োগকারী ও তদারক সংস্থাগুলো আদানি গ্রুপের ব্যবসায়িক পদ্ধতির দিকে নজর রেখে চলবে।

গৌতম আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানিতাঁর ভাতিজা সাগর আদানি ও আদানি গ্রিনের অন্যান্য শীর্ষ নির্বাহীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে যেতাঁরা ২৬৫ মিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ ঘুষ হয় দিয়েছেন বা দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সোলার পাওয়ার চুক্তি পেতে এবং সেই প্রকল্পগুলোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রে অর্থ সংগ্রহের সময় দাবি করেছিলেন যে তাঁদের কোম্পানি ঘুষবিরোধী সব আইনের প্রতি সম্পূর্ণভাবে অনুগত।

এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সিকিউরিটিজ আইনের অধীনে প্রতারণার শামিল হতে পারে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁরা অপরাধমূলক দায়ভারেও পড়তে পারেন। এই মামলায় মূল প্রসঙ্গ হল আদানি গ্রুপ ও আদানি গ্রিন কতিপয় ভারতীয় রাজ্যওড়িশাঅন্ধ্রপ্রদেশসম্ভবত তামিলনাড়ুছত্তিশগড় ও জম্মু ও কাশ্মীরেসরকারি বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলোকে (ডিসকম) বাজারদরের চেয়ে বেশি মূল্যে সৌরবিদ্যুৎ কিনতে বাধ্য করতে ঘুষ দিয়েছে কি না।

অভিযুক্ত ঘুষ দেওয়ার সময়সীমা ২০২১ সালের মাঝামাঝি থেকে ২০২১ সালের শেষ নাগাদ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই সময় ওড়িশায় বিজু জনতা দলঅন্ধ্রপ্রদেশে ওয়াইএসআর কংগ্রেসতামিলনাড়ুতে ডিএমকেছত্তিশগড়ে কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল। আর জম্মু ও কাশ্মীর কার্যত কেন্দ্রীয় বিজেপি শাসনের অধীনে ছিল। আদানি গ্রুপ অবশ্য এই অভিযোগগুলোকে ভিত্তিহীন বলে অস্বীকার করেছে এবং দাবি করেছে যে তারা সব আইনের প্রতি সম্পূর্ণভাবে অনুগত।

এফসিপিএ কীফরেন করাপ্ট প্র্যাকটিসেস অ্যাক্ট বা এফসিপিএ যুক্তরাষ্ট্রের একটি আইনযা আমেরিকান কোম্পানিব্যক্তি এবং যুক্তরাষ্ট্রে তালিকাভুক্ত বিদেশি সংস্থাগুলোকে বিদেশি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে নিষেধ করে। এছাড়া আর্থিক হিসাবে যথাযথ স্বচ্ছতা ও নির্ভুলতা বজায় রাখার কথাও বলেযাতে প্রতারণা ঠেকানো যায়। এই আইনের আওতায় অনেক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যাপক তদন্ত হয়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতামত কীডোনাল্ড ট্রাম্প অ্যাটর্নি জেনারেল প্যাম বন্ডিকে নির্দেশ দিয়েছেন যেএফসিপিএ-র অধীনে চলমান সব কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হোকযতদিন না তিনি নতুন প্রয়োগ-নির্দেশিকা জারি করছেন। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়েছে, “অতিমাত্রায় এফসিপিএ প্রয়োগের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো অন্য আন্তর্জাতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ অবস্থায় পড়ে এবং মার্কিন বাণিজ্যের ক্ষতি হয়।

সোমবার ওভাল অফিসে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “বাস্তবে দেখা যাচ্ছে এটি (এফসিপিএ) একটা বড় ধরনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেউই মার্কিনিদের সঙ্গে ব্যবসা করতে আগ্রহী নয়।” অন্যদিকে এই পদক্ষেপের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন অনেকে। কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির গবেষক ও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সাবেক দুর্নীতিবিরোধী সমন্বয়কারী রিচার্ড নেফিউ মন্তব্য করেন, “এটি খুবই খারাপ ধারণা। বেশিরভাগ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ঘুষকে অনুৎপাদনশীল ব্যয় হিসেবে দেখে বলে তারা এফসিপিএ-এর কঠোরতা সমর্থন করে। এতে ঘুষ নেওয়া-দেওয়া দৃঢ়ভাবে প্রতিহত করা যায়।