০১:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫
শিক্ষার্থী-শিক্ষকের প্রেমের গল্প নিয়ে বিতর্কে বন্ধ হলো দক্ষিণ কোরিয়ার কে-ড্রামা পাকিস্তানে সীমাহীন শ্রমিক শোষণ আলেকজান্দ্রিয়ার প্রাসাদে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠক: ক্লিওপেট্রা ও সিজারের কথোপকথন হিউএনচাঙ (পর্ব-১৪৯) বাংলাদেশে ইভ টিজিং- নারী মানসিক স্বাস্থ্য ও সামাজিক স্থিতিশীলতার সংকট এপি’র প্রতিবেদন: হাসিনা-বিরোধী বিদ্রোহের পরিণতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশ মধুমতী নদী: দক্ষিনের যোগাযোগ পথ মধ্যপন্থী রাজনৈতিক দল ধ্বংস করা রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর চিরসবুজ নায়িকা মৌসুমী: রূপালী পর্দার এক যুগের প্রতীক কাপ্তাই লেকের মাছের বৈচিত্র্য ও মাছ ধরার রীতি – পার্বত্য চট্টগ্রামের জলে জীবনের গল্প

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ২৮)

রমজানের সেহেরির সময় ঢাকায় মহল্লায় মহল্লায় কয়েকজনের দল ধর্মীয় গান গেয়ে রোজাদারদের ঘুম ভাঙ্গাতেন

কাসিদা টুপি

বিশ শতকের প্রথম থেকে চার দশক পর্যন্ত ঢাকায় জনপ্রিয় ছিল কাসিদা টুপি। হাকিম হাবিবুর লিখেছেন, “আমার সময় কাসিদা করা টুপিও তৈরি হতে লাগল। গোলাকার এবং কিস্তির মতো… যা ধোলাই করলে পরিষ্কার হয়ে যেত এবং কাঠামোতে রেখে লোকেরা পরে আবার তা পরতো। এভাবে অনেকদিন পর্যন্ত ব্যবহারযোগ্য থাকত।”

ক্বাসিদা

আরবি ক্লাসাদ থেকে এসেছে ক্বাসিদা শব্দটি। আমাদের এখানে ক্বাসিদা হলো প্রিয় নবীর গুণগান করে গাওয়া গান। রমজানের সেহেরির সময় ঢাকায় মহল্লায় মহল্লায় কয়েকজনের দল ধর্মীয় গান গেয়ে রোজাদারদের ঘুম ভাঙ্গাতেন। ক্বাসিদার বিষয় ছিল আল্লাহ রসুল (দ:) কে স্মরণ। রোজার ফজিলত বর্ণনা ইত্যাদি। আমার এখনও মনে পড়ে, ইসলামপুরে আশেক লেনের গলিতে নানাবাড়িতে ছেলেবেলায় ক্বাসিদার সুরে জেগে ওঠা। তবে, ঢাকায় নয়, সারা দেশে অনেকখানে এর চল ছিল।

রমজানের ভোর রাতে ক্বাসিদা

ঢাকায় ক্বাসিদার চল কবে হয়েছিল জানি না। চল হলেও তা ছিল সীমিতাকারে। কারণ, মুসলমানের সংখ্যা ছিল কম। বিকাশ আরো পড়ে। হাকিম হাবিবুর লিখছেন, বিশ শতকের শুরুতে, গরিব ও বৃদ্ধ কয়েজন এক হাতে লাঠি আরেক হাতে লণ্ঠন নিয়ে মহল্লায় বেরুতেন ও হাঁক দিতেন, ‘রোজাদারো উঠঠো, সেহেরী খাও, ওয়াক্ত হো গিয়া।” এদের বলা হলো সেহেরীওয়ালা। কিন্তু এটি ক্বাসিদা নয়।

আরো পরে হতে পারে মহল্লার সর্দাররা ক্বাসিদা শুরু করেন তবে তা বিকশিত হয় ১৯৪৭-এর পর, যখন প্রচুর উর্দুভাষী ঢাকায় ও পূর্ববঙ্গের নানা জায়গায় আশ্রয় নেন। শায়েলা লিখছেন, তারা “ঢাকার বিশেষ বিশেষ উর্দু সঙ্গীতের রচনাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিল। তারা রজ্জব মাসে কাওয়ালি, রামজান মাসে ক্বাসিদা, রবিউল আউয়াল মাসে নওজ-এ রাসুল ছাড়াও ওলাদান, শের ও শায়নী রচনা করতেন। ফলে সীমিতাকারে খেলাফত কাঠামোর মধ্যে দিয়ে ক্বাসিদা আরো জনপ্রিয়তা অর্জন করে।”

(চলবে)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ২৭)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ২৭)

শিক্ষার্থী-শিক্ষকের প্রেমের গল্প নিয়ে বিতর্কে বন্ধ হলো দক্ষিণ কোরিয়ার কে-ড্রামা

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ২৮)

০৭:০০:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫

রমজানের সেহেরির সময় ঢাকায় মহল্লায় মহল্লায় কয়েকজনের দল ধর্মীয় গান গেয়ে রোজাদারদের ঘুম ভাঙ্গাতেন

কাসিদা টুপি

বিশ শতকের প্রথম থেকে চার দশক পর্যন্ত ঢাকায় জনপ্রিয় ছিল কাসিদা টুপি। হাকিম হাবিবুর লিখেছেন, “আমার সময় কাসিদা করা টুপিও তৈরি হতে লাগল। গোলাকার এবং কিস্তির মতো… যা ধোলাই করলে পরিষ্কার হয়ে যেত এবং কাঠামোতে রেখে লোকেরা পরে আবার তা পরতো। এভাবে অনেকদিন পর্যন্ত ব্যবহারযোগ্য থাকত।”

ক্বাসিদা

আরবি ক্লাসাদ থেকে এসেছে ক্বাসিদা শব্দটি। আমাদের এখানে ক্বাসিদা হলো প্রিয় নবীর গুণগান করে গাওয়া গান। রমজানের সেহেরির সময় ঢাকায় মহল্লায় মহল্লায় কয়েকজনের দল ধর্মীয় গান গেয়ে রোজাদারদের ঘুম ভাঙ্গাতেন। ক্বাসিদার বিষয় ছিল আল্লাহ রসুল (দ:) কে স্মরণ। রোজার ফজিলত বর্ণনা ইত্যাদি। আমার এখনও মনে পড়ে, ইসলামপুরে আশেক লেনের গলিতে নানাবাড়িতে ছেলেবেলায় ক্বাসিদার সুরে জেগে ওঠা। তবে, ঢাকায় নয়, সারা দেশে অনেকখানে এর চল ছিল।

রমজানের ভোর রাতে ক্বাসিদা

ঢাকায় ক্বাসিদার চল কবে হয়েছিল জানি না। চল হলেও তা ছিল সীমিতাকারে। কারণ, মুসলমানের সংখ্যা ছিল কম। বিকাশ আরো পড়ে। হাকিম হাবিবুর লিখছেন, বিশ শতকের শুরুতে, গরিব ও বৃদ্ধ কয়েজন এক হাতে লাঠি আরেক হাতে লণ্ঠন নিয়ে মহল্লায় বেরুতেন ও হাঁক দিতেন, ‘রোজাদারো উঠঠো, সেহেরী খাও, ওয়াক্ত হো গিয়া।” এদের বলা হলো সেহেরীওয়ালা। কিন্তু এটি ক্বাসিদা নয়।

আরো পরে হতে পারে মহল্লার সর্দাররা ক্বাসিদা শুরু করেন তবে তা বিকশিত হয় ১৯৪৭-এর পর, যখন প্রচুর উর্দুভাষী ঢাকায় ও পূর্ববঙ্গের নানা জায়গায় আশ্রয় নেন। শায়েলা লিখছেন, তারা “ঢাকার বিশেষ বিশেষ উর্দু সঙ্গীতের রচনাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিল। তারা রজ্জব মাসে কাওয়ালি, রামজান মাসে ক্বাসিদা, রবিউল আউয়াল মাসে নওজ-এ রাসুল ছাড়াও ওলাদান, শের ও শায়নী রচনা করতেন। ফলে সীমিতাকারে খেলাফত কাঠামোর মধ্যে দিয়ে ক্বাসিদা আরো জনপ্রিয়তা অর্জন করে।”

(চলবে)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ২৭)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ২৭)