সারাক্ষণ ডেস্ক
প্রথম আলোর একটি শিরোনাম “ক্ষমতায় থাকতে নৃশংস পদক্ষেপ নিয়েছিল শেখ হাসিনা সরকার”
জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় আওয়ামী লীগের সহিংস কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি বিগত সরকার এবং নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো পদ্ধতিগতভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় জড়িত ছিল। ক্ষমতায় থাকার জন্য হাসিনা সরকার ক্রমাগত নৃশংস পদক্ষেপ নিয়ে পদ্ধতিগতভাবে বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা করেছিল।
বাংলাদেশে অভ্যুত্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের তদন্তে এই তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল বুধবার সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জেনেভা থেকে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। এ উপলক্ষে সেখানে এ দিন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশন অনলাইনে ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে।
প্রতিবেদন প্রকাশের শুরুতে বক্তব্য দেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক। তিনি বলেন, গণবিক্ষোভের মুখে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে একটি পরিকল্পিত এবং সুসমন্বিত কৌশল হিসেবে এমন নৃশংস পদক্ষেপ নিয়েছিল বিগত সরকার। বিক্ষোভ দমন করার কৌশলের অংশ হিসেবে রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের জ্ঞাতসারে, তাঁদের সমন্বয় ও নির্দেশনায় শত শত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্বিচার গ্রেপ্তার ও আটক এবং নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে বিশ্বাস করার যুক্তিসংগত কারণ রয়েছে।
ফলকার টুর্ক আরও বলেন, ‘আমরা যে সাক্ষ্য এবং প্রমাণ সংগ্রহ করেছি, তা ব্যাপক রাষ্ট্রীয় সহিংসতা এবং নিশানা করে হত্যার এক উদ্বেগজনক চিত্র তুলে ধরেছে; যা সবচেয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার মধ্যে পড়ে এবং যা আন্তর্জাতিক অপরাধের শামিল বলেও বিবেচিত হতে পারে।’ জাতীয় ক্ষত সারাতে এবং বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য জবাবদিহি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাকে অপরিহার্য বলে মনে করেন তিনি।
দৈনিক ইত্তেফাকের একটি শিরোনাম”আন্দোলনকারী নারীদের ওপর যৌন নিপীড়নও চালিয়েছে আওয়ামী লীগ”
জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া নারীদের অপদস্থ করতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নারী আন্দোলনকারীদের ওপর যৌন নিপীড়ন চালিয়েছে আওয়ামী লীগ।
তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা নারীদের শারীরিক নির্যাতন, ধর্ষণের হুমকি এবং যৌন হয়রানি করেছে।
বুধবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় থেকে প্রকাশিত জুলাই অভ্যুত্থানের সঙ্গে সম্পর্কিত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতন সংক্রান্ত ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে আওয়ামী লীগ সরকার সশস্ত্র কর্মীদের সংগঠিত করতে থাকে। আন্দোলন দমনের প্রাথমিক ধাপে আওয়ামী লীগ নেতাদের উসকানিতে লাঠিসোঁটা, ধারালো অস্ত্র এবং কিছু ক্ষেত্রে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ কর্মীরা।
বণিক বার্তার একটি শিরোনাম”জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা চায় ইসি”
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা সম্ভাব্য ব্যয় ধরেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তুলনায় যা প্রায় ৫০০ কোটি টাকা বেশি। গত বছর অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচনের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ হাজার ২৭৬ কোটি ২২ লাখ টাকা। সরকারের কাছে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এ বরাদ্দ চেয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন ইসি সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব কেএম আলী নেওয়াজ।
নির্বাচন কবে হবে, সে বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সময় ঘোষণা করেনি সরকার। সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, চলতি বছরের ডিসেম্বর অথবা আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। এটি পুরোপুরি নির্ভর করছে সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ওপর। সংস্কার দীর্ঘমেয়াদি হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে আর স্বল্পমেয়াদি হলে চলতি বছরের ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে বলে জানা গেছে। তাই ডিসেম্বর ধরে নিয়েই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি।
কেএম আলী নেওয়াজ জানান, জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এছাড়া অন্য আরো খাত রয়েছে। তাই সরকারের কাছে ২ হাজার ৭৯৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে সংসদ নির্বাচনের জন্য। এটা প্রাথমিক চাহিদা থাকলেও তা যাচাই-বাছাই করা হবে এবং ইসি সচিবালয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর পরিমাণটা চূড়ান্ত হবে।
ইসি সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকারের অন্যান্য নির্বাচন আয়োজন করতে কমিশনের ঘাটতি আছে ৫ হাজার ৮৫৩ কোটি টাকা। তাই আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এ খাতের জন্য ৫ হাজার ৯২১ কোটি ৭২ লাখ ৬০ হাজার টাকা চেয়েছে কমিশন। এছাড়া ২০২৬-২৭ অর্থবছরের জন্য ২ হাজার ৮২৯ কোটি ৪৫ লাখ ৯৭ হাজার এবং ২০২৭-২৮ অর্থবছরে ৭২৪ কোটি ৩ লাখ ৩৭ হাজার টাকা চেয়েছে ইসি।
মানবজমিনের একটি শিরোনাম “আলামত ধ্বংস করলো কারা?”
ছোট ছোট খুপরি। গা ছমছম পরিবেশ। আলোহীন এক একটি কামরা যেন গ্রামের মুরগির খাঁচা। বাইরের জগৎ থেকে পুরাই আলাদা। কোথায় আছেন, দিনের কোন সময় পার করছেন জানারও সুযোগ নেই। কোনো কোনো কক্ষ সাউন্ডপ্রুফ। যেসব কক্ষে থাকতো নির্যাতনের নানা সরঞ্জাম। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে ভিন্নমত দমনে গড়ে ওঠে এসব সেল। যেটি আয়নাঘর বা গোপন বন্দিশালা নামে পরিচিত। বছরের পর বছর আয়নাঘরে বন্দি ছিলেন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে অনেক নিরপরাধ মানুষ। এখান থেকে কেউ কেউ ফিরে এসেছেন, কেউ ফেরেননি। মৃত্যুই যাদের শেষ ঠিকানা হয়েছে। সরকারের নির্দেশে গুম করা অনেক মানুষকে এখানে বন্দি রাখতো আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। বন্দিজীবনের গল্প ফুটে উঠেছে আয়নাঘরের দেয়ালে দেয়ালে। কিন্তু সেই আয়নাঘরের অনেক আলামতই গায়েব হয়ে গেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল পরিদর্শন করেছেন রাজধানীতে থাকা তিন আয়নাঘর। যেগুলো বিগত সরকারের গোপন বন্দিশালা ও টর্চার সেল হিসেবে পরিচিত ছিল। কচুক্ষেত, আগারগাঁও ও উত্তরায় অবস্থিত এসব আয়নাঘরের একটি ডিজিএফআই’র, বাকি দুটো র্যাবের। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সরকারি কর্মকর্তারা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- গুমের শিকার হওয়া একাধিক ব্যক্তি ও গুম কমিশনের সদস্যরা। কিন্তু এ পরিদর্শনের সময় নিজেদের দেয়া প্রতিশ্রুতি রাখেনি সরকার। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমকে আয়নাঘর পরিদর্শনের সুযোগ দেয়ার কথা থাকলেও প্রধান উপদেষ্টার পরিদর্শনের সময় সেটি করা হয়নি। কেবল পছন্দমতো দুইটি গণমাধ্যমকে (আলজাজিরা ও নেত্র নিউজ) এ সুযোগ দিয়েছে সরকার। এ ছাড়া একজন সংবাদকর্মী প্রধান উপদেষ্টার পরিদর্শনের সময় সঙ্গে ছিলেন।