সারাক্ষণ ডেস্ক
চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে
ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে, যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে। ৪ ফেব্রুয়ারি, ট্রাম্প চীন থেকে আমদানির ওপর আরও ১০% শুল্ক আরোপ করেন, যা ভবিষ্যতে আরও বাড়ানো হতে পারে।
চীনের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের কৌশল
ট্রাম্পের চীনকে নিয়ে কৌশল শুধুমাত্র বাণিজ্য বিষয়ক বিরোধের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। তিনি চীনের পানামা খাল সংক্রান্ত প্রভাবকে একটি কৌশলগত হুমকি হিসেবে দেখছেন এবং এর জন্য চীনের প্রভাব হ্রাস করতে পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।
৭ ফেব্রুয়ারি, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা-র সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প জানিয়েছেন যে যুক্তরাষ্ট্র চীনকে “অর্থনৈতিক আগ্রাসন” মোকাবিলা করার জন্য জাপানের সঙ্গে আরও জোরালোভাবে সহযোগিতা করবে। তিনি ভবিষ্যতে জাপানকে পুরোপুরি রক্ষা করার জন্য “যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরোধ ক্ষমতার পূর্ণ শক্তি” ব্যবহার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ট্রাম্পের উদ্দেশ্য: চুক্তি না কি সংঘর্ষ?
এটা স্পষ্ট যে ট্রাম্প চীনের শক্তির প্রতি উদ্বিগ্ন, কিন্তু তার কৌশল বেশিরভাগ সময়ে চীনের সঙ্গে একটি বড়, সুন্দর চুক্তির জন্য আলোচনার দিকে মনোনিবেশ করেছে। দুইটি বিরোধী ধারণা রয়েছে যে ট্রাম্প আসলে কী করতে চান: প্রথমটি বলছে, ট্রাম্প চীনকে একটি শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখছেন এবং বাণিজ্য ও কূটনীতি উভয় ক্ষেত্রেই চাপ সৃষ্টি করতে চান। দ্বিতীয়টি বলে, ট্রাম্প চীন থেকে লাভজনক কনসেশন পেতে চাইছেন, এবং এটি কেবল একটি আলোচনা কৌশল।
ট্রাম্পের চীনের প্রতি মনোভাব
যদিও ট্রাম্প চীনকে নিয়ে কঠোর ভাষায় সমালোচনা করেছেন, তবে তিনি চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং-কে নিয়ে কখনও নেতিবাচক মন্তব্য করেননি। বরং, তিনি তাকে “মহান নেতা” হিসেবে প্রশংসা করেছেন। এর মাধ্যমে বোঝা যায় যে ট্রাম্প চীনের সঙ্গে একটি সফল চুক্তি করতে শি জিনপিংকে একজন গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করছেন।
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক: সম্ভাব্য পরিণতি
চীন যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে পরিহার করতে চাইলেও, তারা একটি পূর্ণাঙ্গ সংঘর্ষ এড়াতে চায়। চীনের দৃষ্টি ২০৫০ সালের মধ্যে সুপারপাওয়ার হওয়ার দিকে, এবং এর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অযথা সংঘর্ষ বাড়ানো বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।
সম্ভাব্য পরিস্থিতি
এখন তিনটি সম্ভাব্য দৃশ্যমান পরিণতি রয়েছে: ১. যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন একটি বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছাবে, যা কিছু কূটনৈতিক সমঝোতার সাথে আসবে। ২. প্রথম বাণিজ্য চুক্তি ভেঙে যাবে এবং নিরাপত্তা ইস্যুতে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাবে। ৩. একটি মাঝারি পরিস্থিতি, যেখানে কিছু সমঝোতা থাকবে তবে সংঘর্ষ এড়ানো যাবে।
এই তিনটির মধ্যে দ্বিতীয়টি — নিরাপত্তা ইস্যুতে তীব্র উত্তেজনা — সবচেয়ে বেশি সম্ভাব্য বলে মনে হচ্ছে।
ট্রাম্পের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পাঠ
ট্রাম্প যদি তার আলোচনা দক্ষতা প্রমাণ করতে চান, তবে তাকে চীনের সাথে কোনও ‘অলঙ্কৃত’ চুক্তি করতে প্রতিহত হতে হবে। নিরাপত্তা ইস্যুতে তাড়াহুড়া করে সমঝোতা করা কেবল তার চুক্তি তৈরির ক্ষমতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে।