ড. সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়
পাথরের তল এবং অন্যান্য অংশ মসৃণ করার জন্য ভেজা বালি ব্যবহার করা হত। এছাড়া কখনো কখনো পাথরের ছোট বল-এর মত দিয়ে জোরে জোরে ঘসা হত। কুজকো শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে দেয়াল তৈরির জন্য পাথর কেটে এমন সব সমান সমান সাইজ বার করা হত যার মধ্যে শৈল্পিক ও নান্দনিক বিচার বোধের পরিচয় লক্ষ্য করা যেত।
এই পাথর কাটার বিশেষ দক্ষতাকে ইনকারা নাম দিয়েছিল সেলুলার পরিগোনাল (Cellular Polygonal)। সাপা ইনকা (Sapa Inca) দের মধ্যে শহরের মধ্যে প্রাসাদোপম বাড়ি তৈরী করার প্রথা চালু ছিল। আসলে চারপাশে থাকত বড় খোলা জমি। এই সব বড় বাড়িতে বাস করত সাপা ইনকা এবং তাদের রাণীরা। চারদিকের বাড়িতে থাকত তাদের চাকর চাকরানীরা।
কুজকো: শহর রাজধানী: ইনকা সভ্যতার প্রাণকেন্দ্র হল কুজকো শহর। সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় লোকাচার প্রায় সব দিকেই কুজকো শহরের প্রসঙ্গ ও ভূমিকা উল্লেখ করার মত। খ্রিষ্টীয় দ্বাদশ শতকে মানকো কাপাক এই শহরটির গোড়াপত্তন করেন। এই মানকোকে ইনকারা সূর্যের পুত্র বলে মনে করেন। কুজকো শহরটির শব্দগত উৎপত্তি কেচুয়াভাষায় পাওয়া যায়। কেচুয়াতে শব্দটি কোসকো (Qosqo)। যার অর্থ হল পৃথিবীর নৌসেনাকেন্দ্র (The Earth’s naval)।
এই কুজকো শহরে নাকি মানকো কাপাক একটি সোনার দণ্ড পুঁতে রেখে ছিলেন কুজকো শহরের অগ্রগতিতে নতুনমাত্রা যোগ করেছিলেন নবম ইনকা সম্রাট পাচাকুতেক (Pachacutec)। এই ইনকা সম্রাট শহরটিকে এমন ভৌগোলিক আকার দিতে চেয়েছিলেন যেখানে থাকবে প্রসারিত নদী, পাশেই কৃষিজমি, লম্বা সমতল রাস্তা এবং বেশ কয়েকটি বড় দালান।
(চলবে)
ইনকা সভ্যতার ইতিহাস (পর্ব-৫৩)