ড. সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়
ইনকাদের বিখ্যাত ক্যালেণ্ডার প্রথা: মায়াদের মত অত সুবিন্যস্ত না হলেও ইনকা সমাজের ক্যালেন্ডার, বা বর্ষপঞ্জী সমসাময়িক কালের এক আশ্চর্য সৃষ্টি। বর্ষপঞ্জী বললেই তাদের জ্যোতির্বিদ্যার কথা উল্লেখ করতে হয়। ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিকগণ মনে করেন ইনকাদের ক্যালেন্ডার তৈরির ভিত্তি হল সূর্য বা চন্দ্রের পর্যবেক্ষণ এবং এই দুই-এর সঙ্গে তারাদের সম্পর্ক।
এই ভাবেই ইনকাদের মধ্যে ১২টি চান্দ্রমাস এবং কৃষিকাজের সময় বিন্যাসের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তবে তথ্য প্রমাণ থেকে বলা যায় সময় হিসাব করার জন্য ইনকাদের মধ্যে নির্দিষ্ট কোন গাণিতিক পদ্ধতি ছিল বলে মনে হয় না। তবে কিছুটা পরিমাণে দশমিক ব্যবস্থা ছিল এবং এইভাবে দশহাজার পর্যন্ত গুণে যাওয়ার ব্যবস্থাও ছিল। এইভাবে নয় দিনের ৬টি সপ্তাহ ছিল এবং এইভাবে গণনা করে ৩০ দিনে একটি মাস তৈরি হত।
এই গণনা পদ্ধতি বা কৌশলের কথা বলেছিলেন আলেক্সান্ডার ভন হুমবল্ট (Alexander Von Humbaladt)। হুমবল্ট-এর এই বর্ণনা (গ্রামের এক পুরোহিতের রচনার উপর ভিত্তি করে করা হয়েছিল। অন্যান্য পণ্ডিত সমালোচক এর সত্যতা অস্বীকার করেছেন। এই ক্যালেন্ডারের সবচেয়ে ছোট একক হল তিন দিনের। এইভাবে দশটি একক এর সমন্বয়ে মোট ত্রিশ দিনের এক মাস।
এই হিসাব ছাড়াও অন্যভাবে বলা হয় যে প্রতি তিন বছরের পরের বছর ১৩টি চাঁদ দিয়ে গড়ে ওঠে, অন্যান্য দুই বছর ১২টি চাঁদ দিয়ে। এইভাবে মোট ৩৭টি চাঁদ হয়। এই হিসেব অনুযায়ী ২০টি চন্দ্র নিয়ে মোট সময়কাল ছাড়ায় ৬০ বছর। এই ৬০ বছরকে চারভাগে ভাগ করে তাকে ১০০ দিয়ে গুণ করার পদ্ধতিও প্রচলিত ছিল। আরেক তথ্য থেকে জানা যায় ইনকা রাজা বীরাকোচা ১২ মাসের বছর তৈরি করেছিলেন কয়েকটি মাস শুরু হত নতুন চাঁদ দিয়ে।
(চলবে)
ইনকা সভ্যতার ইতিহাস (পর্ব-৫৫)