০৮:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫

শিনচাই গ্রামে কফি শিল্পে পরিবর্তন এনেছে যোগাযোগ

  • Sarakhon Report
  • ০৬:২৭:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • 28

ফেব্রুয়ারি ২০, সিএমজি বাংলা ডেস্ক: চীনের ইয়ুননান প্রদেশের বাওশান শহরের সিনচাই গ্রামের কফির সুবাস ছড়িয়েছে গোটা চীনজুড়ে। আগে অবকাঠামো ও অন্যান্য খাতে দুর্বলতা থাকলেও এবার এখানকার কফি চাষে এসেছে দারুণ পরিবর্তন। একসময় কাঁচা রাস্তা আর কম আয়ের গ্রামটি এখন উন্নত সড়ক ও ইন্টারনেট সুবিধার আওতায়। আর এর ফলে চীনে তো বটেই, আন্তর্জাতিক বাজারেও কফি রপ্তানি করছে গ্রামটি।

একসময় বাওশান কফি চাষের জন্য পরিচিত থাকলেও, যোগাযোগ ব্যবস্থার নানা ঘাটতির কারণে কফি ব্যবসার মুনাফা যেত কমে। এখন, আধুনিক সড়ক ও পরিবহন ব্যবস্থার ফলে কৃষকরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলসহ আন্তর্জাতিক বাজারেও কফি সরবরাহ করতে পারছেন।

স্থানীয় কফি চাষি নান মিংছিন তার বাগানের গাছের ডাল ছেঁটে দিচ্ছিলেন, যাতে কফির গাছগুলো আরও পুষ্টি শোষণ করতে পারে।

নান মিংছিন বললেন, ‘আগে রাস্তাগুলো কাদামাটিতে ভরা থাকত। বৃষ্টি হলে চলাচল ছিল কঠিন। তখন ইন্টারনেটও ছিল না। কাঁচা কফি বিন শুধু আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের কাছে বিক্রি করতাম, যা ইনস্ট্যান্ট কফি তৈরিতে ব্যবহৃত হতো। ওটার দাম ছিল খুবই কম, আয়ও ছিল সীমিত।’

এ সমস্যার সমাধানে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অবকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা নেয়।

শিনচাই গ্রামের প্রধান ওয়াং চিয়াওয়েই জানালেন, ‘২০১২ সাল থেকে কফির দাম কমতে থাকে। কৃষকরা লোকসানে পড়ছিল। তাই আমরা টেকসই সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করি, যা ভবিষ্যতে পর্যটনকেও সহায়তা করবে। এখন, উন্নত অবকাঠামোর কারণে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কফিপ্রেমীরা এখানে আসছেন।’

২০১৭ সালে, একটি পুরনো গ্রাম কমিটি ভবনকে গ্রামের প্রথম কফি এস্টেটে পরিণত করেন ওয়াং।

শুরুতে তারা এটি পরিচালনা করতে শুরু করেন শেনচেনের এক ব্যবসায়ীর মাধ্যমে। তিনি প্রতি কেজি কফি বিন ৬০ ইউয়ানে কিনতে শুরু করেন, যা ছিল আগের চেয়ে দশগুণ বেশি। এতে কৃষকদের দৃষ্টিভঙ্গিতে আসে পরিবর্তন। তারা বুঝতে পারেন উচ্চমানের কফি উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থাপনা করতে পারলেই বেশি লাভ করা সম্ভব।

এরপর শিনচাইতে যোগ হয় ইন্টারনেট। যার ফলে কৃষকরা কফির আধুনিক উৎপাদন কৌশল ও বাজারজাতকরণ নিয়ে নতুন করে শেখার সুযোগ পান।

নান মিংছিন বললেন, ‘আমরা এখন বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় কফি বিন প্রস্তুত করছি। ধোয়ার পর এগুলোকে রোদে শুকানো ও মধু দিয়ে প্রক্রিয়াকরণ করা হয়। আমি নিজেও কফি বিন রোস্ট করা শিখছি। কফি এখন শুধু অর্থকরী ফসল নয়, বরং আমার জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ।’

এখন শিনচাইতে অনেক পর্যটক এসে কফি চেখে দেখেন এবং ভালো লাগলে পরবর্তীতে অনলাইনে অর্ডার দেন।

ফয়সল/নাহার

শিনচাই গ্রামে কফি শিল্পে পরিবর্তন এনেছে যোগাযোগ

০৬:২৭:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ফেব্রুয়ারি ২০, সিএমজি বাংলা ডেস্ক: চীনের ইয়ুননান প্রদেশের বাওশান শহরের সিনচাই গ্রামের কফির সুবাস ছড়িয়েছে গোটা চীনজুড়ে। আগে অবকাঠামো ও অন্যান্য খাতে দুর্বলতা থাকলেও এবার এখানকার কফি চাষে এসেছে দারুণ পরিবর্তন। একসময় কাঁচা রাস্তা আর কম আয়ের গ্রামটি এখন উন্নত সড়ক ও ইন্টারনেট সুবিধার আওতায়। আর এর ফলে চীনে তো বটেই, আন্তর্জাতিক বাজারেও কফি রপ্তানি করছে গ্রামটি।

একসময় বাওশান কফি চাষের জন্য পরিচিত থাকলেও, যোগাযোগ ব্যবস্থার নানা ঘাটতির কারণে কফি ব্যবসার মুনাফা যেত কমে। এখন, আধুনিক সড়ক ও পরিবহন ব্যবস্থার ফলে কৃষকরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলসহ আন্তর্জাতিক বাজারেও কফি সরবরাহ করতে পারছেন।

স্থানীয় কফি চাষি নান মিংছিন তার বাগানের গাছের ডাল ছেঁটে দিচ্ছিলেন, যাতে কফির গাছগুলো আরও পুষ্টি শোষণ করতে পারে।

নান মিংছিন বললেন, ‘আগে রাস্তাগুলো কাদামাটিতে ভরা থাকত। বৃষ্টি হলে চলাচল ছিল কঠিন। তখন ইন্টারনেটও ছিল না। কাঁচা কফি বিন শুধু আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের কাছে বিক্রি করতাম, যা ইনস্ট্যান্ট কফি তৈরিতে ব্যবহৃত হতো। ওটার দাম ছিল খুবই কম, আয়ও ছিল সীমিত।’

এ সমস্যার সমাধানে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অবকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা নেয়।

শিনচাই গ্রামের প্রধান ওয়াং চিয়াওয়েই জানালেন, ‘২০১২ সাল থেকে কফির দাম কমতে থাকে। কৃষকরা লোকসানে পড়ছিল। তাই আমরা টেকসই সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করি, যা ভবিষ্যতে পর্যটনকেও সহায়তা করবে। এখন, উন্নত অবকাঠামোর কারণে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কফিপ্রেমীরা এখানে আসছেন।’

২০১৭ সালে, একটি পুরনো গ্রাম কমিটি ভবনকে গ্রামের প্রথম কফি এস্টেটে পরিণত করেন ওয়াং।

শুরুতে তারা এটি পরিচালনা করতে শুরু করেন শেনচেনের এক ব্যবসায়ীর মাধ্যমে। তিনি প্রতি কেজি কফি বিন ৬০ ইউয়ানে কিনতে শুরু করেন, যা ছিল আগের চেয়ে দশগুণ বেশি। এতে কৃষকদের দৃষ্টিভঙ্গিতে আসে পরিবর্তন। তারা বুঝতে পারেন উচ্চমানের কফি উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থাপনা করতে পারলেই বেশি লাভ করা সম্ভব।

এরপর শিনচাইতে যোগ হয় ইন্টারনেট। যার ফলে কৃষকরা কফির আধুনিক উৎপাদন কৌশল ও বাজারজাতকরণ নিয়ে নতুন করে শেখার সুযোগ পান।

নান মিংছিন বললেন, ‘আমরা এখন বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় কফি বিন প্রস্তুত করছি। ধোয়ার পর এগুলোকে রোদে শুকানো ও মধু দিয়ে প্রক্রিয়াকরণ করা হয়। আমি নিজেও কফি বিন রোস্ট করা শিখছি। কফি এখন শুধু অর্থকরী ফসল নয়, বরং আমার জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ।’

এখন শিনচাইতে অনেক পর্যটক এসে কফি চেখে দেখেন এবং ভালো লাগলে পরবর্তীতে অনলাইনে অর্ডার দেন।

ফয়সল/নাহার