সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারাংশ
রাজনৈতিক অস্থিরতায় নির্মাণ খাত ক্ষতিগ্রস্ত, মেগা প্রকল্প বন্ধ হয়ে রড ও সিমেন্ট শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
চাহিদা কমে রড ও সিমেন্টের দাম হ্রাস, বিক্রয় কমায় ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন।
রাজনৈতিক অস্থিরতা ও তার প্রভাব
- পরিবর্তনের পর অবস্থা:
৫ই আগস্ট সরকারের পরিবর্তনের পর দেশব্যাপী রাজনৈতিক অস্থিরতার ছাপ পড়েছে। এই অবস্থার কারণে বিভিন্ন খাতের ব্যবসা থেমে যাচ্ছে। - পুরনো মেগা প্রকল্পের বন্ধ:
আগের সরকারের বড় মেগা প্রকল্পগুলো বন্ধ হওয়ায়, রড ও সিমেন্ট শিল্পেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। থেমে গেছে গ্রাম এলাকায় বিলাসবহুল বাড়ি নির্মাণ।
২. মেগা প্রকল্প স্থগিত ও বাজারের অবস্থা
- নির্মাণ প্রকল্প বন্ধ:
সরকারি ও বেসরকারি বড় ও মাঝারি নির্মাণ প্রকল্পের স্থগিত থাকার কারণে ক্রেতাদের পক্ষ থেকে প্রত্যাশিত সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। - উৎপাদন ও চাহিদায় হ্রাস:
এই পরিস্থিতিতে উৎপাদন কমে যাওয়ায় চাহিদাও হ্রাস পেয়েছে, যার ফলস্বরূপ ব্যবসায়ীরা বিপর্যস্ত হয়েছেন। - স্পষ্ট চিত্র:
রাজধানীর গ্রীন রোড, কাওরান বাজার ও কাঁঠালবাগানের এলাকায় এই প্রভাব স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।

৩. ব্যবসায়ীদের মতামত
- প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা:
গ্রীন সফট টাইলরে মালিক জানান, পূর্বে রাজনৈতিক দলের নিয়ন্ত্রণে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো এখন আগের মতো কাজ করছে না, যার ফলে রড ও সিমেন্টের বিক্রি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। - ভবিষ্যতের প্রত্যাশা:
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, স্থায়ী সরকার না আসা পর্যন্ত এই অবস্থা পরিবর্তনের সম্ভাবনা কম, তবে নতুন নির্বাচিত সরকার এলে উন্নতি আশা করা যায়।
৪. দাম হ্রাস ও খাতের চ্যালেঞ্জ
- প্রধান প্রকল্পের শেষ:
সরকারি নির্মাণ প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ হওয়ায় সিমেন্ট খাত সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। - মূল্য হ্রাস:
রডের দাম টনপ্রতি ৬,০০০ থেকে ৭,০০০ টাকা এবং ৫০ কেজি সিমেন্টের দাম ১০ থেকে ১৫ টাকা হ্রাস পেয়েছে। - চাহিদা ও সরবরাহের সমস্যা:
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, চাহিদা বাড়তে না পারলে মূল্য আরও নেমে যেতে পারে। অতিরিক্তভাবে, নতুন মেগা প্রকল্পের অভাব, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সংকট এবং সরকারি বিল পরিশোধে বিলম্বের কারণে সরবরাহকারীদেরও সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। - ডলারের প্রভাব:
ক্রমবর্ধমান ডলারের কারণে কাঁচামালের খরচ বেড়ে গেলেও উৎপাদকরা কম দামে পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

৫. স্টিল ও সিমেন্ট খাতে প্রভাব
- বিক্রয়ে ব্যাপক পতন:
গত দুই মাসে কিছু কোম্পানির ক্ষেত্রে ইস্পাতের বিক্রয় প্রায় ৭০% কমে গেছে, আর সিমেন্টের বিক্রয় প্রায় ২০% হ্রাস পেয়েছে। - সরকারি প্রকল্পের নির্ভরশীলতা:
দেশের উৎপাদিত ইস্পাতের প্রায় ৬৫% সরকারি প্রকল্পে ব্যবহৃত হওয়ায়, এই প্রকল্পগুলো স্থগিত হওয়ার ফলে ব্যাপক সমস্যা দেখা দিয়েছে। - চাহিদার অবনতি:
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতায় সিমেন্টের চাহিদা ২০ থেকে ৩০% হ্রাস পেয়েছে। - রড উৎপাদন ও ব্যবহার:
বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স এসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশের কোম্পানিগুলোর রড উৎপাদন ক্ষমতা ১ কোটি ২০ লাখ টন। যদিও সর্বোচ্চ চাহিদা বছরে ৬৫ লাখ টন, তবুও ৬০% সরকারী প্রকল্পে ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে সামগ্রিক চাহিদা ৫০% থেকে নিচে নেমে গেছে এবং সরকারি প্রকল্পে রডের চাহিদা ২০% এর নিচে নেমে থাকায় মূল্য হ্রাস পাচ্ছে।
Sarakhon Report 



















