সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারাংশ
-
রাজনৈতিক অস্থিরতা ও প্রযুক্তির বিকাশের ফলে বইমেলার বিক্রি ধারাবাহিকভাবে কমছে, কারণ পাঠকরা বইয়ের পরিবর্তে অনলাইন ও বিনোদনমূলক মাধ্যমের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে।
-
মেট্রোরেল স্টেশনের কারণে প্রবেশপথ সামান্য পরিবর্তন করা হয়েছে, এবং চারটি নির্ধারিত প্রবেশ ও বাহির পথসহ ২৪ ঘণ্টার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।
একুশে ফেব্রুয়ারি ও শুক্রবার একই দিনে মিলনের কারণে একটি প্রকাশনীর স্টলের বিক্রয় প্রতিনিধি আশা করেছিলেন, দীর্ঘ ২০ দিনের মন্দের পর আজকের দিনটি কিছুটা ভালো বিক্রয়ের সূচনা করবে। তবে দিনের শেষের দিকে তার কণ্ঠে হতাশার ছাপ ছিল, যা দেখা যায় অংশগ্রহণকারী বেশিরভাগ স্টলের বিক্রয়কর্মীদের মধ্যে।
বিক্রির অবস্থা
- হ্রাসের প্রবণতা:
বিগত কয়েক বছরে মিলায় বিক্রির পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে কমে এসেছে। - মূল কারণ:
রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ক্রমাগত পাঠক হ্রাসকে বিক্রির পতনের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। - আশার বিপরীতে বাস্তবতা:
কেউ কেউ জানান, কিছুদিন ভালো বিক্রির আশা থাকলেও আজকের বিক্রয় আগের তুলনায় মারাত্মকভাবে কম।
প্রযুক্তি ও পাঠক পরিবর্তন
- পাঠক অভ্যাসে পরিবর্তন:
মোবাইল ও অনলাইন মাধ্যমের সহজলভ্যতার ফলে মানুষ বই পড়ার তুলনায় অন্যান্য বিনোদনমূলক মাধ্যমের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। - বিনোদনের প্রতিযোগিতা:
ভিডিও, রিল ও অন্যান্য বিনোদনের প্রতি মানুষের আগ্রহ বৃদ্ধির কারণে বইয়ের চাহিদা হ্রাস পাচ্ছে। - বিক্রিতে পতন:
মৌসুমী পরিবর্তনের সাথে সাথে, গত বছরের তুলনায় এ বছর বিক্রির পরিমাণ অর্ধেকেরও কম হয়ে গেছে।
বইমেলার বৈচিত্র্য ও পরিবেশ
- নতুন কার্যক্রম:
এখন মিলায় সেলফি তোলা, ফুল কেনা ও খাবারের দোকানের ভিড়সহ নানা কার্যক্রম দেখা যায়। - বিনোদনের কেন্দ্র:
খিলগাঁও এর দিলরুবা আক্তার জানান, খাবারের দোকান ও বিনোদনের সুযোগ বৃদ্ধি পাওয়ায় মিলা শুধু বই কেনার স্থান নয়, বরং বিনোদনের একটি উৎস হিসেবেও জনপ্রিয় হয়েছে।
নতুন ধারার লেখক – প্রকাশক
- নতুন অংশগ্রহণ:
যদিও পাঠকের সংখ্যা কমছে, তা সম্পূর্ণ অর্ধেক হারে নেমে যায়নি; পরিবর্তে, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনের সঙ্গে নতুন ধারার লেখক-প্রকাশকরা মিলায় অংশ নিচ্ছেন।
স্টল ও প্যাভিলিয়নের বরাদ্দ
- প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান:
এ বছর মিলায় ৭০৮টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে, যা গত বছরের ৬৪২টির তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। - স্টল বরাদ্দ:
মোট ১,৮৪০ স্টল বরাদ্দ করা হয়েছে – বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ৯৯টি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৬০৯টি স্টল প্রদান করা হয়েছে। - প্যাভিলিয়ন সংখ্যা:
মোট ৩৭টি প্যাভিলিয়ন অপরিবর্তিত রেখে বরাদ্দ করা হয়েছে (বাংলা একাডেমিতে ১টি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৩৬টি)। - বিশেষ বরাদ্দ:
লিটল ম্যাগাজিন ও শিশু চত্বরের জন্যও আলাদা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
বিন্যাস ও নিরাপত্তা
- পরিবর্তিত বিন্যাস:
মেলার মূল বিন্যাস বজায় রেখে কিছু আঙ্গিকগত পরিবর্তন আনা হয়েছে; বিশেষ করে, মেট্রোরেল স্টেশনের কারণে প্রাঙ্গণের পথচলা সামান্য সরিয়ে মন্দির গেটের নিকটস্থ করা হয়েছে। - প্রবেশ ও বাহির পথ:
টিএসসি, দোয়েল চত্বর, এমআরটি বেসিং প্লান্ট ও ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন এলাকায় চারটি প্রবেশ ও বাহির পথ নির্ধারণ করা হয়েছে। - নিরাপত্তা ব্যবস্থা:
মিলার নিরাপত্তার জন্য ২৪ ঘণ্টা সতর্ক থাকার নির্দেশনা রয়েছে।
বইমেলার সময়সূচী
- পর্বকাল:
একুশে বইমেলা ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। - সাধারণ দিন:
সাধারণ দিনে মেলা সকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে; রাত সাড়ে ৮টার পর নতুন প্রবেশ নিষিদ্ধ। - ছুটির দিন:
ছুটির দিনে মেলা সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত পরিচালিত হবে।