সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারাংশ
-
ক্রেতারা তেল সংগ্রহে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এবং অতিরিক্ত দাম গুনতে বাধ্য হচ্ছেন।
-
তেল মিলাররা সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ায় বাজারে তেলের ঘাটতি তৈরি হয়েছে, যা বিক্রেতাদেরও সমস্যায় ফেলেছে।
-
কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমলেও চাল ও তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ মানুষের ব্যয়ভার বেড়েছে।
প্রায় এক মাস ধরে বোতলযুক্ত সয়াবিন তেলে সংকট দেখা দিয়েছে। ক্রেতাদের তেল সংগ্রহের জন্য অনেক দোকান ঘুরতে হচ্ছে, যার ফলে তারা প্রায় ৫০ টাকার অতিরিক্ত খরচ করতে বাধ্য হচ্ছেন।
সরকারী আশ্বাস বনাম বাস্তবতা
১২ ফেব্রুয়ারিতে বাণিজ্য উপদেষ্টা এস কে বাশির উদ্দিন এক প্রেস কনফারেন্সে জানান যে, আগামী ৭-১০ দিনের মধ্যে খাদ্য তেলের বাজার স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তবে ২২ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে যে, বোতলযুক্ত সয়াবিন তেলের সরবরাহ এখনও প্রত্যাশিত মাত্রায় ফিরে আসেনি।
ক্রেতা ও বিক্রেতাদের অভিজ্ঞতা
ক্রেতাদের বক্তব্য
মীরপুরের এক ক্রেতা মোল্লা জালাল জানান,
“৫ লিটার বোতলের তেল পাওয়ার জন্য ১০টি দোকান ঘুরতে হলো। শেষ পর্যন্ত, ২ লিটার বোতলটি ৪০০ টাকায় কিনতে হলো, যদিও প্রিন্টেড মূল্য ছিল ৩৫০ টাকা।”
বিক্রেতাদের অভিজ্ঞতা
- মালিবাগ সোহাগ বাস স্ট্যান্ডের নিকটবর্তী মুদি দোকানদার বলেন,
“ক্রেতারা রামজানের আগে সয়াবিন তেল চাচ্ছেন, কিন্তু আমরা যথাযথ সরবরাহ করতে পারছি না।”
- ডেইলি সাপ্লাই স্টোরের বিক্রয় সহকারী জানান,
“তেল মিলাররা মূল্য বৃদ্ধির আশঙ্কায় সরবরাহ কমাচ্ছেন। তারা দাবি করলেও, বর্তমানে তেলের সরবরাহ সীমিত।”
সরকার ও শিল্প সমিতির প্রতিক্রিয়া
বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স ও ভানাস্পতী ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন গত রবিবার একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান,
“রামজানের প্রস্তুতির জন্য বাজারে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি ভোজ্য তেল সরবরাহ করা হচ্ছে।”
অন্যান্য খাদ্যপণ্যের মূল্য পরিবর্তন
- পেঁয়াজ: পূর্ব বছরের তুলনায় ৬৪.৫৪% কমে, মূল্য: .৪০-৪৫ টাকা কেজি।
- চিনি ও আলু:
o চিনি: ১৬.৯৫% কমে, মূল্য: ১২০-১২৫ টাকা কেজি।
o আলু: ১৫.১৫% কমে, মূল্য: ২০-৩০ টাকা কেজি।
- চাল:
o সরু চাল (নাজিরশাইল, মিনিকেট): ৯.০৯% বৃদ্ধি, মূল্য:. ৭০-৮৪ টাকা কেজি।
o মিডিয়াম গ্রেড চাল (পাইজাম, আতাশ): ৯.৮২% বৃদ্ধি, মূল্য: ৬০-৬৫ টাকা কেজি।
- তেল:
o খোলা সয়াবিন তেল: ১৯.০৫% বৃদ্ধি, মূল্য:. ১৫৫-১৬০ টাকা লিটার।
o বোতলযুক্ত সয়াবিন তেল: ২.৯২% বৃদ্ধি, মূল্য: ১৭৪-১৭৫ টাকা লিটার।
- ডাল ও ছোলা:
o মসুর ডাল: ১.৮২% কমে, মূল্য: ১৩০-১৪০ টাকা কেজি।
o ছোলা: ৪.৬৫% বৃদ্ধি, মূল্য: ১০৫-১১০ টাকা কেজি।
সারসংক্ষেপ
বোতলযুক্ত সয়াবিন তেলের সংকট ও অতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধির ফলে ক্রেতারা অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। বিক্রেতা ও তেল মিলারদের সরবরাহ কমানোর কারণে বাজারে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। সরকার ও শিল্প সমিতির দ্রুত হস্তক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে বাজারে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসে এবং অপ্রয়োজনীয় আতঙ্ক এড়ানো যায়।