১০:০০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
পাকিস্তানের সংবিধানে ২৭তম সংশোধনীর প্রভাব: কারাবন্দি ইমরান খানের ভবিষ্যৎ শেখ হাসিনার মামলার রায় আজ ইউটিউব থেকে উধাও শত শত এআই–তৈরি বলিউড ভিডিও, নতুন করে আলোচনায় তারকাদের ডিজিটাল অধিকার পানীয়ের সঙ্গে কী খাবেন গ্রে’স অ্যানাটমি’ তারকা জেমস পিকেন্স জুনিয়রের প্রোস্টেট ক্যান্সার ধরা, স্ক্রিনিংয়ের আহ্বান এআই–তৈরি নায়িকা নিয়ে নতুন দুশ্চিন্তায় হলিউড অ্যানিমেটেড কে–পপ মুভিই প্রথমবার নেটফ্লিক্সকে দিল উত্তর আমেরিকার বক্স অফিসে শীর্ষস্থান চীনা অনলাইন সাহিত্য, গেম, অ্যানিমেশন ও পপ কালচারের স্বতঃস্ফূর্ত বিস্তার কীভাবে দেশের সফট পাওয়ারকে বদলে দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের পুনরায় ভারতে কার্যক্রম শুরু করায় শক্তিশালী আয়: সাপ্তাহিক লাভে ভারতীয় শেয়ারবাজার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রায় ঘোষণার দিনে রাস্তায় অবস্থানের ঘোষণা জামায়াতের

বিদেশী ফলের দাম বাড়ায় মানুষ কিনছে কম, যে কারণে কমে যাচ্ছে আমদানী

  • Sarakhon Report
  • ০৩:৫৮:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • 18

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ

১. চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ফল আমদানির পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, যার মূল কারণ উচ্চ শুল্ক, মুদ্রার অবমূল্যায়ন ও ক্রয়ক্ষমতার হ্রাস।

২. আমদানিকৃত ফলের উপর অতিরিক্ত শুল্ক ও কর আরোপের ফলে দাম বেড়েছে, যা বৈধ আমদানিকে নিরুৎসাহিত করছে এবং অবৈধভাবে ফল আনানোর প্রবণতা বাড়াচ্ছে।

৩. ফল আমদানি হ্রাসের ফলে ব্যবসায়ীরা আর্থিক চাপের মধ্যে পড়ছে, রাজস্ব আদায় জটিল হচ্ছে এবং উচ্চ খরচের কারণে ভোক্তাদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।


বাংলাদেশে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে তাজা ফল আমদানিতে মারাত্মক হ্রাস লক্ষ্য করা গেছে। মুদ্রার অবমূল্যায়ন এবং উচ্চ আমদানি শুল্কের কারণে আমদানির খরচ বেড়ে যাওয়া ফলে আমদানীকৃত ফলের দাম বেড়ে যাওয়ায়, মধ্যবিত্তের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় বাজারে এর চাহিদা কমে গেছে।

২. আমদানির পরিসংখ্যান ও বর্তমান অবস্থা

  • পরিসংখ্যান:
    চলতি সময়ে তাজা ফল আমদানির মোট মূল্য প্রায় ১২৮.৫১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা গত তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
  • বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য:
    এফওয়াই২৫ এর জুলাই-ডিসেম্বর সময়কালে ফল আমদানির জন্য এলসি খোলার পরিমাণ গত বছরের তুলনায় ৩.২৯% হ্রাস পেয়ে ১৪০.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে নেমে গেছে।

৩. শুল্ক ও করের প্রভাব

  • মুদ্রা ও শুল্কের প্রভাব:
    ডলারের অবমূল্যায়ন, উচ্চ শুল্ক ও করের কারণে আমদানিকৃত তাজা ফলের দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে।
  • উদাহরণ:
    ৮৬ টাকার মূল্যমানের ফল আমদানিতে আমদানিকারককে ১২০ টাকা কর দিতে হয়।
  • প্রভাব:
    এই পরিস্থিতি বৈধ আমদানিকে কমিয়ে দেয়, অবৈধ স্মাগলিং বাড়ায় এবং ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত সংরক্ষণ ব্যবস্থার প্রয়োগে বাধ্য করে, যা ভোক্তা ও সরকারের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

৪. সরকারি পদক্ষেপ ও কর ব্যবস্থার পরিবর্তন

  • বিদেশী মুদ্রার অভাব:
    অপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি সীমিত করতে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে।
  • বিটিটির নোটিশ:
    বিটিটি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করেছে যে, আমদানিকৃত তাজা ফল সরাসরি বাজারে পৌঁছে যাচ্ছে – কোনো প্রক্রিয়াজাতকরণ বা মূল্য সংযোজন ছাড়াই।
  • কর ব্যবস্থার সমস্যা:
    স্থানীয় ৫% অ্যাডভান্স ভ্যাটসহ অগ্রিম কর আরোপের ফলে ব্যবসায়ীরা রিফান্ডের জন্য আবেদন করতে হচ্ছে, যার ফলে অনুমোদনে বিলম্ব ও আর্থিক চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।
  • পরামর্শ ও পরিবর্তন:
    সম্প্রতি এনবিআরের অতিরিক্ত শুল্কের হার ২০% থেকে ৩০% পর্যন্ত বাড়ানো হলেও তা পূর্বের মাত্রায় ফেরানোর প্রস্তাব এসেছে। পাশাপাশি, অগ্রিম কর ১০% থেকে ২% এবং নিয়ন্ত্রক শুল্ক ২০% কমানোর সুপারিশ করা হয়েছে।

৫. ফল আমদানিতে হ্রাস ও তার প্রভাব

  • হ্রাসের পরিমাণ:
    এফওয়াই২৪ এ আপেলের আমদানিতে ৫১%, কমলার আমদানিতে ৭০% এবং আঙ্গুরের আমদানিতে ২৯% হ্রাস লক্ষ্য করা গেছে।
  • আরো কিছু ফলের আমদানিতে হ্রাস:
    জানুয়ারিতে অতিরিক্ত শুল্ক বৃদ্ধির কারণে ম্যান্ডারিন, আঙ্গুর, আপেল, নাশপাতি ও দানাদার ফল ও ড্রাগন ফলের আমদানিতে যথাক্রমে ৫১%, ২১%, ৩.৫%, ৪৫% ও ৩২% হ্রাস হয়েছে।
  • অর্থনৈতিক প্রভাব:
    এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, এফওয়াই২৪ এ বিদেশী ফল আমদানিতে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় হয়েছে, যা ১ মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ১১৭ টাকার হারে প্রায় ৩,৫০০ কোটি টাকার সমান। শিপিং, বীমা ও অন্যান্য খরচসহ মোট ব্যয় ৪,৬৬৪ কোটি টাকা হয়ে উঠেছে এবং সরকারের রাজস্ব সংগ্রহ হয়েছে ৫,১৩৯ কোটি টাকা।
জনপ্রিয় সংবাদ

পাকিস্তানের সংবিধানে ২৭তম সংশোধনীর প্রভাব: কারাবন্দি ইমরান খানের ভবিষ্যৎ

বিদেশী ফলের দাম বাড়ায় মানুষ কিনছে কম, যে কারণে কমে যাচ্ছে আমদানী

০৩:৫৮:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ

১. চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ফল আমদানির পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, যার মূল কারণ উচ্চ শুল্ক, মুদ্রার অবমূল্যায়ন ও ক্রয়ক্ষমতার হ্রাস।

২. আমদানিকৃত ফলের উপর অতিরিক্ত শুল্ক ও কর আরোপের ফলে দাম বেড়েছে, যা বৈধ আমদানিকে নিরুৎসাহিত করছে এবং অবৈধভাবে ফল আনানোর প্রবণতা বাড়াচ্ছে।

৩. ফল আমদানি হ্রাসের ফলে ব্যবসায়ীরা আর্থিক চাপের মধ্যে পড়ছে, রাজস্ব আদায় জটিল হচ্ছে এবং উচ্চ খরচের কারণে ভোক্তাদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।


বাংলাদেশে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে তাজা ফল আমদানিতে মারাত্মক হ্রাস লক্ষ্য করা গেছে। মুদ্রার অবমূল্যায়ন এবং উচ্চ আমদানি শুল্কের কারণে আমদানির খরচ বেড়ে যাওয়া ফলে আমদানীকৃত ফলের দাম বেড়ে যাওয়ায়, মধ্যবিত্তের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় বাজারে এর চাহিদা কমে গেছে।

২. আমদানির পরিসংখ্যান ও বর্তমান অবস্থা

  • পরিসংখ্যান:
    চলতি সময়ে তাজা ফল আমদানির মোট মূল্য প্রায় ১২৮.৫১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা গত তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
  • বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য:
    এফওয়াই২৫ এর জুলাই-ডিসেম্বর সময়কালে ফল আমদানির জন্য এলসি খোলার পরিমাণ গত বছরের তুলনায় ৩.২৯% হ্রাস পেয়ে ১৪০.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে নেমে গেছে।

৩. শুল্ক ও করের প্রভাব

  • মুদ্রা ও শুল্কের প্রভাব:
    ডলারের অবমূল্যায়ন, উচ্চ শুল্ক ও করের কারণে আমদানিকৃত তাজা ফলের দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে।
  • উদাহরণ:
    ৮৬ টাকার মূল্যমানের ফল আমদানিতে আমদানিকারককে ১২০ টাকা কর দিতে হয়।
  • প্রভাব:
    এই পরিস্থিতি বৈধ আমদানিকে কমিয়ে দেয়, অবৈধ স্মাগলিং বাড়ায় এবং ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত সংরক্ষণ ব্যবস্থার প্রয়োগে বাধ্য করে, যা ভোক্তা ও সরকারের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

৪. সরকারি পদক্ষেপ ও কর ব্যবস্থার পরিবর্তন

  • বিদেশী মুদ্রার অভাব:
    অপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি সীমিত করতে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে।
  • বিটিটির নোটিশ:
    বিটিটি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করেছে যে, আমদানিকৃত তাজা ফল সরাসরি বাজারে পৌঁছে যাচ্ছে – কোনো প্রক্রিয়াজাতকরণ বা মূল্য সংযোজন ছাড়াই।
  • কর ব্যবস্থার সমস্যা:
    স্থানীয় ৫% অ্যাডভান্স ভ্যাটসহ অগ্রিম কর আরোপের ফলে ব্যবসায়ীরা রিফান্ডের জন্য আবেদন করতে হচ্ছে, যার ফলে অনুমোদনে বিলম্ব ও আর্থিক চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।
  • পরামর্শ ও পরিবর্তন:
    সম্প্রতি এনবিআরের অতিরিক্ত শুল্কের হার ২০% থেকে ৩০% পর্যন্ত বাড়ানো হলেও তা পূর্বের মাত্রায় ফেরানোর প্রস্তাব এসেছে। পাশাপাশি, অগ্রিম কর ১০% থেকে ২% এবং নিয়ন্ত্রক শুল্ক ২০% কমানোর সুপারিশ করা হয়েছে।

৫. ফল আমদানিতে হ্রাস ও তার প্রভাব

  • হ্রাসের পরিমাণ:
    এফওয়াই২৪ এ আপেলের আমদানিতে ৫১%, কমলার আমদানিতে ৭০% এবং আঙ্গুরের আমদানিতে ২৯% হ্রাস লক্ষ্য করা গেছে।
  • আরো কিছু ফলের আমদানিতে হ্রাস:
    জানুয়ারিতে অতিরিক্ত শুল্ক বৃদ্ধির কারণে ম্যান্ডারিন, আঙ্গুর, আপেল, নাশপাতি ও দানাদার ফল ও ড্রাগন ফলের আমদানিতে যথাক্রমে ৫১%, ২১%, ৩.৫%, ৪৫% ও ৩২% হ্রাস হয়েছে।
  • অর্থনৈতিক প্রভাব:
    এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, এফওয়াই২৪ এ বিদেশী ফল আমদানিতে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় হয়েছে, যা ১ মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ১১৭ টাকার হারে প্রায় ৩,৫০০ কোটি টাকার সমান। শিপিং, বীমা ও অন্যান্য খরচসহ মোট ব্যয় ৪,৬৬৪ কোটি টাকা হয়ে উঠেছে এবং সরকারের রাজস্ব সংগ্রহ হয়েছে ৫,১৩৯ কোটি টাকা।