০৯:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
পাকিস্তানের সংবিধানে ২৭তম সংশোধনীর প্রভাব: কারাবন্দি ইমরান খানের ভবিষ্যৎ শেখ হাসিনার মামলার রায় আজ ইউটিউব থেকে উধাও শত শত এআই–তৈরি বলিউড ভিডিও, নতুন করে আলোচনায় তারকাদের ডিজিটাল অধিকার পানীয়ের সঙ্গে কী খাবেন গ্রে’স অ্যানাটমি’ তারকা জেমস পিকেন্স জুনিয়রের প্রোস্টেট ক্যান্সার ধরা, স্ক্রিনিংয়ের আহ্বান এআই–তৈরি নায়িকা নিয়ে নতুন দুশ্চিন্তায় হলিউড অ্যানিমেটেড কে–পপ মুভিই প্রথমবার নেটফ্লিক্সকে দিল উত্তর আমেরিকার বক্স অফিসে শীর্ষস্থান চীনা অনলাইন সাহিত্য, গেম, অ্যানিমেশন ও পপ কালচারের স্বতঃস্ফূর্ত বিস্তার কীভাবে দেশের সফট পাওয়ারকে বদলে দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের পুনরায় ভারতে কার্যক্রম শুরু করায় শক্তিশালী আয়: সাপ্তাহিক লাভে ভারতীয় শেয়ারবাজার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রায় ঘোষণার দিনে রাস্তায় অবস্থানের ঘোষণা জামায়াতের

কিশোর গ্যাং এখন ঘরের দুয়ারে

  • Sarakhon Report
  • ০৪:২৯:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • 56

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ

  •  ঢাকার প্রায় সব এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের উপস্থিতি বেড়েছে, যারা প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন, খুন, ছিনতাই, মাদক ব্যবসা ও জমি দখলের মতো অপরাধে লিপ্ত।
  • বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা ও অপরাধজগতের ব্যক্তিরা গ্যাংগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে, যার ফলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছে না।
  • পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গডফাদারদের প্রভাব ও রাজনৈতিক চাপে গ্যাং দমনে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হচ্ছে, ফলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তাহীনতা বাড়ছে।

ঢাকার প্রায় সব এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের হুমকি ও অপরাধের ছাপ ক্রমশ গভীর হচ্ছে।বাস্তবে  এরা এখন প্রতিটি ঘরের দুয়ারে।  এরা প্রকাশ্যে অস্ত্র তোলা, হুমকি-ধমকি, এবং বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।

কিশোর গ্যাংয়ের উৎপত্তি ও বিস্তার

  • শুরুর দিনগুলো:
    এক সময় ঢাকার অলিগলিতে ছোট ছোট কিশোর গ্রুপিং শুরু হয়। পাড়া ভিত্তিক এই গ্রুপগুলো ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এবং তাদের নামকরণ ও পরিচিতি অর্জন করে।
  • বিস্তৃত সমর্থন:
    বিভিন্ন এলাকার কাউন্সিলর, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও অপরাধজগতের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা এদের পৃষ্ঠপোষকতা শুরু করে। শুরুতে শুধু ছোট অপরাধের জন্য জড়ো হয় এই গ্যাংগুলো, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এদের সংখ্যা ও ক্ষমতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়।

অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ও ব্যবহারিক হাতিয়ার

  • প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া:
    গ্যাং সদস্যরা প্রকাশ্যে অস্ত্র তুলে হুমকি দেয়, অপরাধের আক্রমণে অংশ নেয় এবং প্রতিপক্ষকে আঘাত করে। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও আপলোড করে ভয় সৃষ্টি করে।
  • বহুমুখী অপরাধ:
    খুনখারাবি, ছিনতাই, ডাকাতি, মাদক ব্যবসা, জমি দখল, এবং অন্যান্য সবধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত।
  • আধুনিক যোগাযোগ:
    ইন্টারনেট ও স্মার্টফোনের সহজলভ্যতার কারণে ফেসবুক, হোয়াট্‌সঅ্যাপ, ভাইভার ইমো ইত্যাদিতে গ্রুপ করে অপরাধ পরিকল্পনা ও হুমকি আদান প্রদান করছে।

সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাব

  • বয়সের বিভাজন:
    সাধারণ সদস্যদের বয়স ১২ থেকে ১৮, যেখানে লিডারদের বয়স সাধারণত ২০ বছরের উপরে।
  • নামকরা গ্যাং:
    ঢাকায় প্রচুর নামকরা কিশোর গ্যাং রয়েছে – যেমন পাওয়ার বয়েজ, ডিসকো বয়েজ, বিগ বস, নাইন স্টার, নাইন এমএম বয়েজ ইত্যাদি।
  • রাজনৈতিক আঙুল:
    আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এসব গ্যাংয়ের হাতে ঢাকার অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রণের প্রবণতা দেখা দিয়েছে। পৃষ্ঠপোষকদের প্রভাব ও গোপনীয় চাপের কারণে আইন প্রয়োগকারী বাহিনী কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হচ্ছে।

সম্প্রতিক সংঘটিত ঘটনার ঝলক

  • আতঙ্কের প্রকাশ:
    বিভিন্ন এলাকায় সন্ধ্যা-বেলায় বাসা থেকে বাইরে বের হতে ভয় পাওয়ার ঘটনা।
  • নির্দিষ্ট অপরাধ ঘটনা:
    • রায়েরবাজারে এক কিশোরকে গোষ্ঠী হিসেবে চাপাতি দিয়ে প্রকাশ্যে কোপানো।
    • মোহাম্মদপুরে পথচারীর থেকে ছিনতাইয়ের সময় ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া।
    • রিকশায় যাত্রীর কাছ থেকে মালামাল ছিনিয়ে নেওয়া ও হুমকির আক্রমণ।
  • গুরুতর ঘটনাবলী:
    কিছু সংঘাতে হত্যা, গুলিবিনিময় ও বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

আইন প্রয়োগ ও রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ

  • থানা পুলিশ ও দুর্বলতা:
    গ্যাংয়ের শেল্টারদাতা বা পৃষ্ঠপোষকদের দ্বারা থানা পুলিশের তৎপরতা প্রায়ই নিয়ন্ত্রিত হয়।
  • রাজনৈতিক চাপ:
    অনেকেই রাজনৈতিকভাবে জড়িত হওয়ার কারণে, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারছে না।
  • প্রভাবশালী ব্যক্তিরা:
    “গড ফাদার” হিসেবে পরিচিত এই নেতাদের আইন মারপ্যাঁচে ধরতে সমস্যায় পড়ছে পুলিশ।

উপসংহার
ঢাকার প্রায় সব এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের ক্রমবর্ধমান কার্যক্রম সাধারণ মানুষের জীবনে ভয় ও আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। ছোট বয়সে শুরু হলেও এই গ্যাংগুলো বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়িত হয়ে অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আইন প্রয়োগে রাজনৈতিক ও গোপনীয় চাপ থাকায় এর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থতা দেখা দিয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

পাকিস্তানের সংবিধানে ২৭তম সংশোধনীর প্রভাব: কারাবন্দি ইমরান খানের ভবিষ্যৎ

কিশোর গ্যাং এখন ঘরের দুয়ারে

০৪:২৯:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ

  •  ঢাকার প্রায় সব এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের উপস্থিতি বেড়েছে, যারা প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন, খুন, ছিনতাই, মাদক ব্যবসা ও জমি দখলের মতো অপরাধে লিপ্ত।
  • বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা ও অপরাধজগতের ব্যক্তিরা গ্যাংগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে, যার ফলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছে না।
  • পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গডফাদারদের প্রভাব ও রাজনৈতিক চাপে গ্যাং দমনে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হচ্ছে, ফলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তাহীনতা বাড়ছে।

ঢাকার প্রায় সব এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের হুমকি ও অপরাধের ছাপ ক্রমশ গভীর হচ্ছে।বাস্তবে  এরা এখন প্রতিটি ঘরের দুয়ারে।  এরা প্রকাশ্যে অস্ত্র তোলা, হুমকি-ধমকি, এবং বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।

কিশোর গ্যাংয়ের উৎপত্তি ও বিস্তার

  • শুরুর দিনগুলো:
    এক সময় ঢাকার অলিগলিতে ছোট ছোট কিশোর গ্রুপিং শুরু হয়। পাড়া ভিত্তিক এই গ্রুপগুলো ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এবং তাদের নামকরণ ও পরিচিতি অর্জন করে।
  • বিস্তৃত সমর্থন:
    বিভিন্ন এলাকার কাউন্সিলর, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও অপরাধজগতের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা এদের পৃষ্ঠপোষকতা শুরু করে। শুরুতে শুধু ছোট অপরাধের জন্য জড়ো হয় এই গ্যাংগুলো, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এদের সংখ্যা ও ক্ষমতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়।

অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ও ব্যবহারিক হাতিয়ার

  • প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া:
    গ্যাং সদস্যরা প্রকাশ্যে অস্ত্র তুলে হুমকি দেয়, অপরাধের আক্রমণে অংশ নেয় এবং প্রতিপক্ষকে আঘাত করে। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও আপলোড করে ভয় সৃষ্টি করে।
  • বহুমুখী অপরাধ:
    খুনখারাবি, ছিনতাই, ডাকাতি, মাদক ব্যবসা, জমি দখল, এবং অন্যান্য সবধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত।
  • আধুনিক যোগাযোগ:
    ইন্টারনেট ও স্মার্টফোনের সহজলভ্যতার কারণে ফেসবুক, হোয়াট্‌সঅ্যাপ, ভাইভার ইমো ইত্যাদিতে গ্রুপ করে অপরাধ পরিকল্পনা ও হুমকি আদান প্রদান করছে।

সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাব

  • বয়সের বিভাজন:
    সাধারণ সদস্যদের বয়স ১২ থেকে ১৮, যেখানে লিডারদের বয়স সাধারণত ২০ বছরের উপরে।
  • নামকরা গ্যাং:
    ঢাকায় প্রচুর নামকরা কিশোর গ্যাং রয়েছে – যেমন পাওয়ার বয়েজ, ডিসকো বয়েজ, বিগ বস, নাইন স্টার, নাইন এমএম বয়েজ ইত্যাদি।
  • রাজনৈতিক আঙুল:
    আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এসব গ্যাংয়ের হাতে ঢাকার অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রণের প্রবণতা দেখা দিয়েছে। পৃষ্ঠপোষকদের প্রভাব ও গোপনীয় চাপের কারণে আইন প্রয়োগকারী বাহিনী কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হচ্ছে।

সম্প্রতিক সংঘটিত ঘটনার ঝলক

  • আতঙ্কের প্রকাশ:
    বিভিন্ন এলাকায় সন্ধ্যা-বেলায় বাসা থেকে বাইরে বের হতে ভয় পাওয়ার ঘটনা।
  • নির্দিষ্ট অপরাধ ঘটনা:
    • রায়েরবাজারে এক কিশোরকে গোষ্ঠী হিসেবে চাপাতি দিয়ে প্রকাশ্যে কোপানো।
    • মোহাম্মদপুরে পথচারীর থেকে ছিনতাইয়ের সময় ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া।
    • রিকশায় যাত্রীর কাছ থেকে মালামাল ছিনিয়ে নেওয়া ও হুমকির আক্রমণ।
  • গুরুতর ঘটনাবলী:
    কিছু সংঘাতে হত্যা, গুলিবিনিময় ও বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

আইন প্রয়োগ ও রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ

  • থানা পুলিশ ও দুর্বলতা:
    গ্যাংয়ের শেল্টারদাতা বা পৃষ্ঠপোষকদের দ্বারা থানা পুলিশের তৎপরতা প্রায়ই নিয়ন্ত্রিত হয়।
  • রাজনৈতিক চাপ:
    অনেকেই রাজনৈতিকভাবে জড়িত হওয়ার কারণে, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারছে না।
  • প্রভাবশালী ব্যক্তিরা:
    “গড ফাদার” হিসেবে পরিচিত এই নেতাদের আইন মারপ্যাঁচে ধরতে সমস্যায় পড়ছে পুলিশ।

উপসংহার
ঢাকার প্রায় সব এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের ক্রমবর্ধমান কার্যক্রম সাধারণ মানুষের জীবনে ভয় ও আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। ছোট বয়সে শুরু হলেও এই গ্যাংগুলো বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়িত হয়ে অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আইন প্রয়োগে রাজনৈতিক ও গোপনীয় চাপ থাকায় এর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থতা দেখা দিয়েছে।