১০:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫

জাপানে ‘ওপেনহেইমার’ মুক্তি: পারমাণবিক হামলায় বেঁচে যাওয়াদের কাছে কেমন লাগছে

  • Sarakhon Report
  • ০৪:১১:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪
  • 29

সারাক্ষণ ডেস্ক

পারমাণবিক বোমার জনক হিসাবে পরিচিত ব্যক্তির উপর একাডেমি পুরস্কার বিজয়ী বায়োপিক “ওপেনহেইমার” জাপানের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে ।  শুক্রবার ২৯ মার্চ অনেক প্রতীক্ষার পর এই বিশেষ সিনেমাটি জাপানে মুক্তি দেয়া হয়।

এই জাপোনেই প্রায় আট দশক আগে দুটি পারমাণবিক বোমা হামলায় কয়েক লক্ষ বেসামরিক মানুষ মারা যায়। পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র যে প্রকল্প হাতে নিয়েছিল তার নাম ছিল ‘ম্যানহাটান প্রজেক্ট’ আর সেই বোমা তৈরির প্রধান বিজ্ঞানী ছিলেন রবার্ট ওপেনহেইমার। তাকে নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘ওপেনহেইমার’ মুভিটি।

 

 

১৯৪৫ সালে আগস্টের ৬ এবং ৯ তারিখে যথাক্রমে জাপানের হিরোশিমা এবং নাগাসাকি শহরে পরমাণু বোমা ফেলেছিল যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বে সেই প্রথম কোন যুদ্ধে ব্যবহার হয়েছিল এই গণবিধ্বংসী মারণাস্ত্র। মারা গিয়েছিল লক্ষাধিক মানুষ। এই বোমার শিকার হয়েও যারা বেঁচে গিয়েছিলেন, তাদের ভয়ংকর শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে বাকী জীবন বাঁচতে হয়েছে।

 

চলচ্চিত্রটি বিশ্বজুড়ে মুক্তি পাওয়ার আট মাসেরও বেশি সময় পরে জাপানে মুক্তি দেয়া হলো।  যখন এটি আমেরকিায় এ প্রথম মুক্তি পায়, তখন চলচ্চিত্রটির প্রচারের বিলবোর্ডগুলো প্রধান শহরগুলোতে দেখা যায়। তবে জাপানের মুক্তির আগে এমন কোনও জাঁকজমক ছিল না। তারপরও টোকিওর শিনজুকে সকাল ৯ টার প্রথম শোতে’ই সিনেমাপ্রেমীরা ভিড় করে।

 

 

 

ক্রিস্টোফার নোলান পরিচালিত এই চলচ্চিত্রটি সেরা ছবিসহ সাতটি অস্কার অর্জন করে। বিশ্বব্যাপী ৯৫০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি আয় করে। ৪৭ বছর বয়সী কেন্টা ইনোবে, একজন আগ্রহী নোলান ভক্ত। তিনি শুক্রবার সকালেই চলচ্চিত্রটি দেখেন।

 

পারমাণবিক বোমা হামলায় বেঁচে যাওয়াদের মতামত

 

পারমাণবিক বোমা হামলায় বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা ‘হিবাকুশা’ নামে পরিচিত। তাদের কাছে চলচ্চিত্রটির আবেদন ছিল ভিন্ন কিছু ।  ৯১ বছরের তেরুমি তানাকা।  যিনি ১৩ বছর বয়সী ছিলেন যখন তার নাগাসাকির বাড়িতে বোমা ফেলা হয়েছিল। তাঁর পরিবারের পাঁচ সদস্যই মারা যায়। তিনি বলেন, “চলচ্চিত্রটি মানুষকে পারমাণবিক অস্ত্র থাকার অর্থ কী তা বিবেচনা করতে সাহায্য করবে। আমি চাই যত বেশি সম্ভব  জাপানীরা যেন এটি দেখতে যান। কারণ আজকের রাজনীতিতে পারমাণবিক অস্ত্র যে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যেতে পারে তা সাধারণ মানুষ বুঝতে পারে না। ”

তানাকা, যিনি দীর্ঘদিন ধরে তরুণ প্রজন্মের কাছে তাঁর অভিজ্ঞতা পৌঁছে দেওয়ার জন্য কাজ করেছেন।

 

 

৭৯ বছর বয়সী কুনিহিকো সাকুমা। তার বয়স যখন মাত্র ৯ মাস, তখন হিরোশিমা প্রদেশে তাঁর বাড়ির কাছে পারমাণবিক বোমা ফেলা হয়েছিল। তিনি শুক্রবার চলচ্চিত্রটি দেখেন। তিনি বলেন, বোমা ফেলার পরে কী ঘটেছিল তা চলচ্চিত্রটিতে দেখানে হয়নি। তবুও এটি তাদের জন্য একটি শেখার সুযোগ হতে পারে যাদের এই  বোমার বিষয়ে কোন ধারণা নেই।

 

 

 

তাঁর নিজেরও কোন ব্যক্তিগত স্মৃতি মনে নেই। তিনি এবং তাঁর মা একটি আশ্রয়কেন্দ্রে পালিয়ে যাওয়ার সময় তেজস্ক্রিয়ার শিকার হন। জাপানে ছবিটি মুক্তি পাওয়ার আগে, সাকুমা জানতেন যে সমালোচকরা বলেছিলেন এটি হিরোশিমা এবং নাগাসাকিকের ঘটনা পুরোপুরি দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে।

 

তারপরও তিনি বলেন, “কিন্তু চলচ্চিত্রটি পারমাণবিক বোমার বিষয়ের ঘটনাগুলোকে বুঝতে সহজ করেছে। তাই মুভিটি সবারই দেখা উচিত।”

 

 

জাপানে ‘ওপেনহেইমার’ মুক্তি: পারমাণবিক হামলায় বেঁচে যাওয়াদের কাছে কেমন লাগছে

০৪:১১:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪

সারাক্ষণ ডেস্ক

পারমাণবিক বোমার জনক হিসাবে পরিচিত ব্যক্তির উপর একাডেমি পুরস্কার বিজয়ী বায়োপিক “ওপেনহেইমার” জাপানের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে ।  শুক্রবার ২৯ মার্চ অনেক প্রতীক্ষার পর এই বিশেষ সিনেমাটি জাপানে মুক্তি দেয়া হয়।

এই জাপোনেই প্রায় আট দশক আগে দুটি পারমাণবিক বোমা হামলায় কয়েক লক্ষ বেসামরিক মানুষ মারা যায়। পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র যে প্রকল্প হাতে নিয়েছিল তার নাম ছিল ‘ম্যানহাটান প্রজেক্ট’ আর সেই বোমা তৈরির প্রধান বিজ্ঞানী ছিলেন রবার্ট ওপেনহেইমার। তাকে নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘ওপেনহেইমার’ মুভিটি।

 

 

১৯৪৫ সালে আগস্টের ৬ এবং ৯ তারিখে যথাক্রমে জাপানের হিরোশিমা এবং নাগাসাকি শহরে পরমাণু বোমা ফেলেছিল যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বে সেই প্রথম কোন যুদ্ধে ব্যবহার হয়েছিল এই গণবিধ্বংসী মারণাস্ত্র। মারা গিয়েছিল লক্ষাধিক মানুষ। এই বোমার শিকার হয়েও যারা বেঁচে গিয়েছিলেন, তাদের ভয়ংকর শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে বাকী জীবন বাঁচতে হয়েছে।

 

চলচ্চিত্রটি বিশ্বজুড়ে মুক্তি পাওয়ার আট মাসেরও বেশি সময় পরে জাপানে মুক্তি দেয়া হলো।  যখন এটি আমেরকিায় এ প্রথম মুক্তি পায়, তখন চলচ্চিত্রটির প্রচারের বিলবোর্ডগুলো প্রধান শহরগুলোতে দেখা যায়। তবে জাপানের মুক্তির আগে এমন কোনও জাঁকজমক ছিল না। তারপরও টোকিওর শিনজুকে সকাল ৯ টার প্রথম শোতে’ই সিনেমাপ্রেমীরা ভিড় করে।

 

 

 

ক্রিস্টোফার নোলান পরিচালিত এই চলচ্চিত্রটি সেরা ছবিসহ সাতটি অস্কার অর্জন করে। বিশ্বব্যাপী ৯৫০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি আয় করে। ৪৭ বছর বয়সী কেন্টা ইনোবে, একজন আগ্রহী নোলান ভক্ত। তিনি শুক্রবার সকালেই চলচ্চিত্রটি দেখেন।

 

পারমাণবিক বোমা হামলায় বেঁচে যাওয়াদের মতামত

 

পারমাণবিক বোমা হামলায় বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা ‘হিবাকুশা’ নামে পরিচিত। তাদের কাছে চলচ্চিত্রটির আবেদন ছিল ভিন্ন কিছু ।  ৯১ বছরের তেরুমি তানাকা।  যিনি ১৩ বছর বয়সী ছিলেন যখন তার নাগাসাকির বাড়িতে বোমা ফেলা হয়েছিল। তাঁর পরিবারের পাঁচ সদস্যই মারা যায়। তিনি বলেন, “চলচ্চিত্রটি মানুষকে পারমাণবিক অস্ত্র থাকার অর্থ কী তা বিবেচনা করতে সাহায্য করবে। আমি চাই যত বেশি সম্ভব  জাপানীরা যেন এটি দেখতে যান। কারণ আজকের রাজনীতিতে পারমাণবিক অস্ত্র যে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যেতে পারে তা সাধারণ মানুষ বুঝতে পারে না। ”

তানাকা, যিনি দীর্ঘদিন ধরে তরুণ প্রজন্মের কাছে তাঁর অভিজ্ঞতা পৌঁছে দেওয়ার জন্য কাজ করেছেন।

 

 

৭৯ বছর বয়সী কুনিহিকো সাকুমা। তার বয়স যখন মাত্র ৯ মাস, তখন হিরোশিমা প্রদেশে তাঁর বাড়ির কাছে পারমাণবিক বোমা ফেলা হয়েছিল। তিনি শুক্রবার চলচ্চিত্রটি দেখেন। তিনি বলেন, বোমা ফেলার পরে কী ঘটেছিল তা চলচ্চিত্রটিতে দেখানে হয়নি। তবুও এটি তাদের জন্য একটি শেখার সুযোগ হতে পারে যাদের এই  বোমার বিষয়ে কোন ধারণা নেই।

 

 

 

তাঁর নিজেরও কোন ব্যক্তিগত স্মৃতি মনে নেই। তিনি এবং তাঁর মা একটি আশ্রয়কেন্দ্রে পালিয়ে যাওয়ার সময় তেজস্ক্রিয়ার শিকার হন। জাপানে ছবিটি মুক্তি পাওয়ার আগে, সাকুমা জানতেন যে সমালোচকরা বলেছিলেন এটি হিরোশিমা এবং নাগাসাকিকের ঘটনা পুরোপুরি দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে।

 

তারপরও তিনি বলেন, “কিন্তু চলচ্চিত্রটি পারমাণবিক বোমার বিষয়ের ঘটনাগুলোকে বুঝতে সহজ করেছে। তাই মুভিটি সবারই দেখা উচিত।”