সারাক্ষণ ডেস্ক
‘আজ আমাদের ছুটি – এএসএইচআর ২০২৫’ ছিল এক অবিস্মরণীয় উদযাপন, যেখানে রাজধানীর পূর্বাচল ক্লাবে ৬,০০০-এর বেশি কুমন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও অতিথি একত্রিত হয়েছিলেন। ব্র্যাক কুমন লিমিটেড আয়োজিত এই দিনব্যাপী ইভেন্ট শুধু কৃতী শিক্ষার্থীদের সম্মাননা জানানোর জন্যই ছিল না, বরং সব শিক্ষার্থীর জন্য আনন্দ, শেখা, এবং সংস্কৃতির এক অনন্য অভিজ্ঞতা উপহার দিয়েছিল।
শিক্ষার্থীদের সাফল্যের স্বীকৃতি
আড়ং ডেইরি-এর উপস্থাপনা এবং ব্র্যাক ব্যাংক-এর পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে স্কুল গ্রেডের চেয়ে একাধিক বছর এগিয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের সম্মাননা জানানো হয়।
- মোট ২,৪৮৯ জন শিক্ষার্থী ব্রোঞ্জ, সিলভার, গোল্ড ও প্লাটিনাম সম্মাননা পায়।
- ২৭৭ জন শিক্ষার্থী ৫ বছর এগিয়ে থাকার স্বীকৃতি পায়।
- ২০ জন শিক্ষার্থীকে কুমন প্রোগ্রাম সম্পন্ন করার জন্য বিশেষ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।
মজার, শেখার ও সংস্কৃতির অভিজ্ঞতা
দিনটি ছিল আনন্দময় এবং শিক্ষামূলক কার্যক্রমে ভরপুর:
- টেক এক্টিভিটি: হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ।
- বাংলার ঐতিহ্যবাহী কার্যক্রম: সংস্কৃতির স্পর্শ নিয়ে এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা।
- ফুডি-তে খাবারের উৎসব: আনন্দে ভরা দিনকে আরও রঙিন করে তুলেছে।
অনুপ্রেরণামূলক আলোচনা ও সেশন
পুরো দিনজুড়ে ছিল অনুপ্রেরণামূলক আলোচনা এবং প্যারেন্টিং সেশন:
- ‘জিনিয়াস উইথ হার্টস – স্মার্ট ও উদার সন্তান গড়ার পথে’ সেশন নেন দ্য ডেইলি স্টার-এর প্রধান ব্যবসায়িক কর্মকর্তা তাজদীন হাসান এবং এটেক-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর শুভাশীষ ভৌমিক।
- ‘গ্রোথ মাইন্ডসেট’ শীর্ষক প্যারেন্টিং সেশন পরিচালনা করেন মনের বন্ধু-এর প্রতিষ্ঠাতা তওহিদা শিরোপা।
বিশিষ্ট অতিথিদের উপস্থিতি
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ও জাপানের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানের সম্মানিত প্রতিনিধিবৃন্দ:
- লেডি সৈয়দা সারওয়াত আবেদ, পরিচালক, ব্র্যাক কুমন লিমিটেড
- তামারা হাসান আবেদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ব্র্যাক এন্টারপ্রাইজেস
- রিজওয়ান দাউদ শামস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আইপিডিসি ফাইন্যান্স পিএলসি
- ইউজি আন্দো, কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ, জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো)
- ইয়ামাদা এজি, সিনিয়র রিপ্রেজেন্টেটিভ, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)
- মুনিয়া ইসলাম মুজুমদার, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, টিচ ফর বাংলাদেশ
- মৌটুসী কবির, সিনিয়র ডিরেক্টর (পিপল, কালচার অ্যান্ড কমিউনিকেশনস), ব্র্যাক
স্পন্সর ও সহযোগী প্রতিষ্ঠানের অবদান
এই বৃহৎ আয়োজন সম্ভব হয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সহায়তায়:
- আড়ং ডেইরি, ব্র্যাক ব্যাংক, আইপিডিসি ফাইন্যান্স পিএলসি, কিরন, ব্র্যাক নার্সারি, ব্র্যাক হেলথকেয়ার সহ আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের অবদান শিক্ষার্থীদের জন্য এক সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করেছে।
কুমন শিক্ষার ভবিষ্যত দৃষ্টিভঙ্গি
- তামারা হাসান আবেদ বলেন, “কুমনের মাধ্যমে আমরা এমন একটি প্রজন্ম গড়ে তুলতে চাই, যারা শুধু একাডেমিকভাবে পারদর্শী নয়, বরং দৃঢ় মনোবল, আত্মপ্রেরণা ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকবে।”
- নেহাল বিন হাসান বলেন, “এআই এবং কোয়ান্টাম কম্পিউটার-এর যুগে শিশুদের একাডেমিক এক্সিলেন্সের চেয়েও আরও বেশি দক্ষতার প্রয়োজন।”
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অনুভূতি
- এক শিক্ষার্থী উচ্ছ্বাসের সাথে জানায়, “এত মজা হয়েছে আজকে! সারাদিন অনেক খেলা করেছি, আর বন্ধুরা সবাই একসাথে আনন্দ করায় দিনটা একদম স্পেশাল হয়ে গেছে।”
- এক অভিভাবক আবেগভরে বলেন, “শুধু মঞ্চে স্বীকৃতি নয়, শিশুরা শিখেছে, আনন্দ করেছে, নতুন কিছু আবিষ্কার করেছে—এটাই আসল প্রাপ্তি।”
স্যার ফজলে হাসান আবেদের দূরদর্শী নেতৃত্ব
বাংলাদেশে কুমন পদ্ধতির সূচনা করেছেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ, যার অটুট নিষ্ঠা অসংখ্য শিশুর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা অর্জন এবং প্রচলিত শিক্ষার সীমানা অতিক্রমের পথ উন্মুক্ত করেছে।