০৬:০০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
ইউটিউব থেকে উধাও শত শত এআই–তৈরি বলিউড ভিডিও, নতুন করে আলোচনায় তারকাদের ডিজিটাল অধিকার পানীয়ের সঙ্গে কী খাবেন গ্রে’স অ্যানাটমি’ তারকা জেমস পিকেন্স জুনিয়রের প্রোস্টেট ক্যান্সার ধরা, স্ক্রিনিংয়ের আহ্বান এআই–তৈরি নায়িকা নিয়ে নতুন দুশ্চিন্তায় হলিউড অ্যানিমেটেড কে–পপ মুভিই প্রথমবার নেটফ্লিক্সকে দিল উত্তর আমেরিকার বক্স অফিসে শীর্ষস্থান চীনা অনলাইন সাহিত্য, গেম, অ্যানিমেশন ও পপ কালচারের স্বতঃস্ফূর্ত বিস্তার কীভাবে দেশের সফট পাওয়ারকে বদলে দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের পুনরায় ভারতে কার্যক্রম শুরু করায় শক্তিশালী আয়: সাপ্তাহিক লাভে ভারতীয় শেয়ারবাজার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রায় ঘোষণার দিনে রাস্তায় অবস্থানের ঘোষণা জামায়াতের ওশেনম্যান থাইল্যান্ড ২০২৫–এ ১০ কিলোমিটার সাঁতার সম্পন্ন করলেন বাংলাদেশি সাঁতারু শেখ জামিল সাভারে ইতিহাস পরিবহনের বাসে অগ্নিসংযোগ

৫৩ ফাঁসির আসামীর খোঁজ নেই, কে তাদের জেল থেকে পালাতে সহায়তা করলো

  • Sarakhon Report
  • ০৩:২১:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • 50

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ

  • কারাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বড় ধরনের ত্রুটি ছিল, যা আসামিদের পালানোর সুযোগ করে দেয়
  • এই ঘটনা বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে
  • পালিয়ে যাওয়া আসামিদের মধ্যে বুয়েটের আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুনতাসির আল জেমি রয়েছে
  • ২০২২ সালের ৫ই আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সময় কাশিমপুর কারাগার থেকে ১৫১ জন আসামি পালিয়ে যায়, যার মধ্যে ৫৩ জন ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ছিল

বাংলাদেশের গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে ৫৩ জন ফাঁসির আসামিসহ মোট ১৫১ জন আসামির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। গত বছরের ৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কারাগারে বিদ্রোহ ঘটে, যার পরদিনই তারা পালিয়ে যায়।

পালিয়ে যাওয়া আসামিদের মধ্যে বুয়েটের আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুনতাসির আল জেমিও রয়েছে, যা ঘটনাটিকে নতুন করে আলোচনায় এনেছে। প্রশ্ন উঠছে কে তাদের পালিয়ে যেতে সহায়তা করলো?

কারাগার থেকে পলায়ন: কী ঘটেছিলো

কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারের তথ্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরদিন ৬ই আগস্ট কারাগার থেকে ২০২ জন আসামি পালিয়ে যায়, যাদের মধ্যে ৮৮ জন ফাঁসির আসামি ছিলো। এখন পর্যন্ত ৫১ জনকে পুনরুদ্ধার করা গেলেও ৫৩ জনের খোঁজ পাওয়া যায়নি।

পালিয়ে যাওয়া আসামিদের মধ্যে:

  • ৫৩ জন ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত
  • উল্লেখযোগ্য আসামি: মুনতাসির আল জেমি (আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত)

আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড: সংক্ষিপ্ত বিবরণ

২০১৯ সালের ৬ই অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নির্মম নির্যাতনে নিহত হন আবরার ফাহাদ। ঘটনার পর সারাদেশে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়।

  • দণ্ডাদেশ: ২০২১ সালের ৮ই ডিসেম্বর ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
  • আসামিদের পরিচয়: দণ্ডপ্রাপ্তরা সকলেই নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলো।

মুনতাসির আল জেমির পলায়ন ও বুয়েটে বিক্ষোভ

মুনতাসির আল জেমির কারাগার থেকে পলায়নের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর বুয়েটে একদল শিক্ষার্থী প্রতিবাদ বিক্ষোভ করে। তারা দ্রুত গ্রেফতার ও আইনের আওতায় আনার দাবি জানায়।

আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন, “ফাঁসির আসামি কনডেম সেলে থাকার কথা, সে পালায় কীভাবে!”

কারাগার থেকে পালানোর কারণ ও প্রক্রিয়া

কারাগার কর্তৃপক্ষ জানায়:

  • আন্দোলনের মুখে সরকার পতনের পরদিন ৬ই আগস্ট হাই সিকিউরিটি কারাগারের বন্দিরা বিদ্রোহ করে।
  • বন্দিরা দেয়াল ভেঙ্গে এবং মই ব্যবহার করে পালিয়ে যায়।
  • গুলিতে ৬ জন বন্দি নিহত হয়, যাদের মধ্যে হোলি আর্টিজান মামলার দুই আসামিও ছিলো।

কারাগার থেকে পলায়নের কারণ:

  • কারারক্ষীদের জিম্মি করা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙ্গে ফেলা।
  • সেনাসদস্যদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়া।
  • বিদ্রোহের সময় বিদ্যুতের পোল উপড়ে ফেলে দেয়াল টপকে পালানো।

বর্তমান পরিস্থিতি ও তদন্ত

  • এখনও পালিয়ে থাকা ৫৩ জন আসামিকে ধরতে পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে।
  • গাজীপুরের কোনাবাড়ী থানায় মামলা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও প্রতিক্রিয়া

  • শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশজুড়ে অন্তত ১৭টি কারাগারে হামলা ও বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটে।
  • ৮টি কারাগার ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ৫টি কারাগার থেকে বন্দিরা পালিয়ে যায়।
  • আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড ছাত্রলীগের রাজনীতির সমালোচনার কেন্দ্রে ছিলো।

উপসংহার

এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে এবং পালিয়ে যাওয়া আসামিরা দ্রুত গ্রেফতার হয়, সেজন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থার আরও উন্নতি প্রয়োজন। ঘটনাটি বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলার চ্যালেঞ্জ এবং বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা নিয়ে নতুন প্রশ্ন তৈরি করেছে। প্রশ্ন উঠছে কে তাদের পালিয়ে যেতে সহায়তা করলো?  ইউ এস এইডের ২৯ মিলিয়ন ডলারের বিষয়টি ফাঁস হবার পরে এটাকে অনেকে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেন দেখছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ইউটিউব থেকে উধাও শত শত এআই–তৈরি বলিউড ভিডিও, নতুন করে আলোচনায় তারকাদের ডিজিটাল অধিকার

৫৩ ফাঁসির আসামীর খোঁজ নেই, কে তাদের জেল থেকে পালাতে সহায়তা করলো

০৩:২১:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ

  • কারাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বড় ধরনের ত্রুটি ছিল, যা আসামিদের পালানোর সুযোগ করে দেয়
  • এই ঘটনা বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে
  • পালিয়ে যাওয়া আসামিদের মধ্যে বুয়েটের আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুনতাসির আল জেমি রয়েছে
  • ২০২২ সালের ৫ই আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সময় কাশিমপুর কারাগার থেকে ১৫১ জন আসামি পালিয়ে যায়, যার মধ্যে ৫৩ জন ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ছিল

বাংলাদেশের গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে ৫৩ জন ফাঁসির আসামিসহ মোট ১৫১ জন আসামির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। গত বছরের ৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কারাগারে বিদ্রোহ ঘটে, যার পরদিনই তারা পালিয়ে যায়।

পালিয়ে যাওয়া আসামিদের মধ্যে বুয়েটের আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুনতাসির আল জেমিও রয়েছে, যা ঘটনাটিকে নতুন করে আলোচনায় এনেছে। প্রশ্ন উঠছে কে তাদের পালিয়ে যেতে সহায়তা করলো?

কারাগার থেকে পলায়ন: কী ঘটেছিলো

কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারের তথ্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরদিন ৬ই আগস্ট কারাগার থেকে ২০২ জন আসামি পালিয়ে যায়, যাদের মধ্যে ৮৮ জন ফাঁসির আসামি ছিলো। এখন পর্যন্ত ৫১ জনকে পুনরুদ্ধার করা গেলেও ৫৩ জনের খোঁজ পাওয়া যায়নি।

পালিয়ে যাওয়া আসামিদের মধ্যে:

  • ৫৩ জন ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত
  • উল্লেখযোগ্য আসামি: মুনতাসির আল জেমি (আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত)

আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড: সংক্ষিপ্ত বিবরণ

২০১৯ সালের ৬ই অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নির্মম নির্যাতনে নিহত হন আবরার ফাহাদ। ঘটনার পর সারাদেশে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়।

  • দণ্ডাদেশ: ২০২১ সালের ৮ই ডিসেম্বর ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
  • আসামিদের পরিচয়: দণ্ডপ্রাপ্তরা সকলেই নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলো।

মুনতাসির আল জেমির পলায়ন ও বুয়েটে বিক্ষোভ

মুনতাসির আল জেমির কারাগার থেকে পলায়নের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর বুয়েটে একদল শিক্ষার্থী প্রতিবাদ বিক্ষোভ করে। তারা দ্রুত গ্রেফতার ও আইনের আওতায় আনার দাবি জানায়।

আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন, “ফাঁসির আসামি কনডেম সেলে থাকার কথা, সে পালায় কীভাবে!”

কারাগার থেকে পালানোর কারণ ও প্রক্রিয়া

কারাগার কর্তৃপক্ষ জানায়:

  • আন্দোলনের মুখে সরকার পতনের পরদিন ৬ই আগস্ট হাই সিকিউরিটি কারাগারের বন্দিরা বিদ্রোহ করে।
  • বন্দিরা দেয়াল ভেঙ্গে এবং মই ব্যবহার করে পালিয়ে যায়।
  • গুলিতে ৬ জন বন্দি নিহত হয়, যাদের মধ্যে হোলি আর্টিজান মামলার দুই আসামিও ছিলো।

কারাগার থেকে পলায়নের কারণ:

  • কারারক্ষীদের জিম্মি করা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙ্গে ফেলা।
  • সেনাসদস্যদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়া।
  • বিদ্রোহের সময় বিদ্যুতের পোল উপড়ে ফেলে দেয়াল টপকে পালানো।

বর্তমান পরিস্থিতি ও তদন্ত

  • এখনও পালিয়ে থাকা ৫৩ জন আসামিকে ধরতে পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে।
  • গাজীপুরের কোনাবাড়ী থানায় মামলা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও প্রতিক্রিয়া

  • শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশজুড়ে অন্তত ১৭টি কারাগারে হামলা ও বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটে।
  • ৮টি কারাগার ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ৫টি কারাগার থেকে বন্দিরা পালিয়ে যায়।
  • আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড ছাত্রলীগের রাজনীতির সমালোচনার কেন্দ্রে ছিলো।

উপসংহার

এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে এবং পালিয়ে যাওয়া আসামিরা দ্রুত গ্রেফতার হয়, সেজন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থার আরও উন্নতি প্রয়োজন। ঘটনাটি বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলার চ্যালেঞ্জ এবং বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা নিয়ে নতুন প্রশ্ন তৈরি করেছে। প্রশ্ন উঠছে কে তাদের পালিয়ে যেতে সহায়তা করলো?  ইউ এস এইডের ২৯ মিলিয়ন ডলারের বিষয়টি ফাঁস হবার পরে এটাকে অনেকে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেন দেখছে।