সারাক্ষণ রিপোর্ট
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে অধিভুক্ত সাত কলেজকে আনুষ্ঠানিকভাবে পৃথক করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে এসব কলেজের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর কার্যক্রম নতুন ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হবে।
এই পরিবর্তনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করবে, যার নেতৃত্বে থাকবেন সাত কলেজের একজন অধ্যক্ষ। এছাড়া, ঢাবির প্রশাসনিক শাখার প্রতিনিধিরাও কমিটিতে যুক্ত থাকবেন। তবে বর্তমানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের জন্য পূর্ববর্তী ব্যবস্থাই বহাল থাকবে।
প্রশাসনিক জটিলতা ও শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি
২০১৭ সালে সাত কলেজ ঢাবির অধিভুক্ত হওয়ার পর থেকে শিক্ষার্থীরা নানা প্রশাসনিক সমস্যার সম্মুখীন হন। পরীক্ষার বিলম্ব, শিক্ষা কার্যক্রমের সমন্বয়হীনতা এবং শিক্ষার মান বজায় না থাকায় তারা একাধিকবার আন্দোলন করেছেন।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শিক্ষার্থীরা স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানান। এর ধারাবাহিকতায় ২০২৫ সালের ২৫ জানুয়ারি, ঢাবি কর্তৃপক্ষ সাত কলেজকে পৃথক করার সিদ্ধান্ত নেয়।
সাত কলেজ পরিচালনার জন্য ইউজিসির নতুন উদ্যোগ
ঢাবি থেকে পৃথক হওয়ার পর সাত কলেজের শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ইউজিসি একটি সাময়িক ব্যবস্থাপনা কাঠামো সুপারিশ করেছে। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে কলেজগুলো নতুন কাঠামোর আওতায় পরিচালিত হবে।
নতুন পরিচালনা কাঠামো: কী থাকছে?
ইউজিসির সুপারিশ অনুযায়ী, একটি অন্তর্বর্তী পরিচালনা কাঠামো গঠন করা হবে, যা কার্যকর থাকবে যতদিন না সাত কলেজ পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় বা সমমানের প্রতিষ্ঠানের আওতায় আসে।
- পরিচালনা কমিটির প্রধান থাকবেন সাত কলেজের একজন অধ্যক্ষ।
- সাত কলেজের অর্থ ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্বতন্ত্র ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পরিচালিত হবে।
- নতুন ব্যবস্থার অনুমোদনের জন্য এটি ঢাবির একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটে উপস্থাপন করা হবে।
সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মতামত
ঢাবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান মিডিয়াকে বলেন, “আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সাত কলেজের বিষয়ে একটি চিঠি পেয়েছি। পরিচালনা কমিটি অনুমোদিত হলে এটি আইনগত বৈধতা পাবে।”
সাত কলেজের জন্য পৃথক বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রগতি
শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সাত কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে ইউজিসি।
ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ জানিয়েছেন, “সাত কলেজের জন্য পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের পরিকল্পনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম প্রস্তাবের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে এবং প্রশাসনিক কাঠামো তৈরির কাজ চলছে।”
শেষ কথা
সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের পর অবশেষে একটি স্থায়ী সমাধানের দিকে এগোচ্ছে প্রশাসন। যদিও প্রাথমিকভাবে পরিচালনা কমিটি গঠন করা হচ্ছে, শিক্ষার্থীরা আশা করছেন, খুব শিগগিরই তাদের জন্য একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে।