০৮:১৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

সময় যখন নারীকে করে আতঙ্কিত

  • Sarakhon Report
  • ০৪:৪৪:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ মার্চ ২০২৫
  • 21

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ

  • সমাজে নারীদের প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্য বেড়ে চলেছে
  • অনলাইনে নারীরা রাজনৈতিক বিদ্বেষমূলক যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন
  • দেশের ৭০ শতাংশ নারী জীবনের কোনো না কোনো সময়ে সহিংসতার শিকার হয়েছেন
  • সরকার মুখে নারীদের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় দৃঢ় অবস্থানের কথা বললেও, বাস্তবে কার্যকর পদক্ষেপের অভাব দেখা যাচ্ছে

  সময়ই সব থেকে বড় শক্তি। এই সময় সৃষ্টি করে রাষ্ট্র ও সমাজ মিলে। সমাজের সকলে মিলে করে তা নয়, যারা রাষ্ট্রের প্রশ্রয় পায় তারাই সব সময় সমাজের নিয়ামক হয়। আর সেই সময়েরই প্রতিফলন যদি পড়ে প্রতিদিন নারীদের জীবনে বিভিন্ন ধরণের সহিংসতা ও বৈষম্যের ঘটনার ভেতর দিয়ে যেমন রাস্তায় নারীদেরকে যদি  প্রশ্ন করা হয়:

  • রাতে একা বের হয়েছেন কেন?”
  • ওড়না পরেননি কেন?”
  • রাতে চায়ের দোকানে বসে থাকে খারাপ মেয়েরা।

এই প্রশ্ন ও মন্তব্যগুলো কেবল সরাসরি শারীরিক সহিংসতায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং সামাজিক মাধ্যমেও সাইবার বুলিংয়ের মাধ্যমে প্রতিফলিত হচ্ছে।

সরকারের বক্তব্য ও বাস্তবতা

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান:

“মব ভায়োলেন্স বা নৈতিক পুলিশিংয়ের কোনো সুযোগ নেই। সরকার সবসময় দৃঢ় অবস্থায় থাকবে।”

তবে মানবাধিকার ও নারী অধিকারকর্মীদের মতে, মুখে বলার সাথে সাথে বাস্তবে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। এই নিষ্ক্রিয়তা নারীদের নিরাপত্তা ও অধিকারকে মারাত্মকভাবে ক্ষতির মুখে ফেলছে।

পরিসংখ্যান ও জরুরি তথ্য

  • ধর্ষণের ঘটনা:
    আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুসারে, ফেব্রুয়ারিতে ৪৬টি ধর্ষণের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে, যার মধ্যে ২২ জন নাবালক। জানুয়ারিতে এই সংখ্যা ছিল ৩৯টি, যেখানে ১৫ জন নাবালক।

  • সহিংসতার বিস্তার:
    বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জরিপ অনুযায়ী, দেশের ৭০ শতাংশ নারী জীবনের কোনো না কোনো সময়ে সহিংসতার শিকার হয়েছেন। ২০১৫ সালে যৌন সহিংসতার হার ছিল ২৭.২ শতাংশ, যা ২০২৪ সালে বেড়ে ২৮.৫ শতাংশে পৌঁছে গেছে।

অধিকার সংগ্রাম ও সংগঠনের প্রতিক্রিয়া

  • বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিজ্ঞতা:
    এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, প্রাক-উত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে নারীদের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ন, হয়রানি ও সহিংসতার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯ জন ছাত্রীকে অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী নিয়মে বহিষ্কার করা হয়েছে, যা সিস্টেম্যাটিক নিপীড়নের পরিচায়ক।

  • অনলাইন প্রতিবাদ:
    অনলাইনে ৫২ নারী ‘রাজনৈতিক বিদ্বেষমূলক যৌন সহিংস আক্রমণ’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

উপসংহার

নারীদের জীবনে শারীরিক, সামাজিক ও সাইবার সহিংসতার ঘটনা ক্রমাগত বাড়ছে। সরকার বলছেন তারা দৃঢ় অবস্থায় থাকবেন, কিন্তু বাস্তবে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার অভাব স্পষ্ট। সমাজের বিভিন্ন স্তরে নারীদের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় আরও সক্রিয় ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলা হয়েছে সমাজের হচ্ছে। তবে সে স্বর ক্ষীন ও কণ্ঠ ভীত।

সময় যখন নারীকে করে আতঙ্কিত

০৪:৪৪:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ মার্চ ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ

  • সমাজে নারীদের প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্য বেড়ে চলেছে
  • অনলাইনে নারীরা রাজনৈতিক বিদ্বেষমূলক যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন
  • দেশের ৭০ শতাংশ নারী জীবনের কোনো না কোনো সময়ে সহিংসতার শিকার হয়েছেন
  • সরকার মুখে নারীদের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় দৃঢ় অবস্থানের কথা বললেও, বাস্তবে কার্যকর পদক্ষেপের অভাব দেখা যাচ্ছে

  সময়ই সব থেকে বড় শক্তি। এই সময় সৃষ্টি করে রাষ্ট্র ও সমাজ মিলে। সমাজের সকলে মিলে করে তা নয়, যারা রাষ্ট্রের প্রশ্রয় পায় তারাই সব সময় সমাজের নিয়ামক হয়। আর সেই সময়েরই প্রতিফলন যদি পড়ে প্রতিদিন নারীদের জীবনে বিভিন্ন ধরণের সহিংসতা ও বৈষম্যের ঘটনার ভেতর দিয়ে যেমন রাস্তায় নারীদেরকে যদি  প্রশ্ন করা হয়:

  • রাতে একা বের হয়েছেন কেন?”
  • ওড়না পরেননি কেন?”
  • রাতে চায়ের দোকানে বসে থাকে খারাপ মেয়েরা।

এই প্রশ্ন ও মন্তব্যগুলো কেবল সরাসরি শারীরিক সহিংসতায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং সামাজিক মাধ্যমেও সাইবার বুলিংয়ের মাধ্যমে প্রতিফলিত হচ্ছে।

সরকারের বক্তব্য ও বাস্তবতা

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান:

“মব ভায়োলেন্স বা নৈতিক পুলিশিংয়ের কোনো সুযোগ নেই। সরকার সবসময় দৃঢ় অবস্থায় থাকবে।”

তবে মানবাধিকার ও নারী অধিকারকর্মীদের মতে, মুখে বলার সাথে সাথে বাস্তবে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। এই নিষ্ক্রিয়তা নারীদের নিরাপত্তা ও অধিকারকে মারাত্মকভাবে ক্ষতির মুখে ফেলছে।

পরিসংখ্যান ও জরুরি তথ্য

  • ধর্ষণের ঘটনা:
    আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুসারে, ফেব্রুয়ারিতে ৪৬টি ধর্ষণের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে, যার মধ্যে ২২ জন নাবালক। জানুয়ারিতে এই সংখ্যা ছিল ৩৯টি, যেখানে ১৫ জন নাবালক।

  • সহিংসতার বিস্তার:
    বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জরিপ অনুযায়ী, দেশের ৭০ শতাংশ নারী জীবনের কোনো না কোনো সময়ে সহিংসতার শিকার হয়েছেন। ২০১৫ সালে যৌন সহিংসতার হার ছিল ২৭.২ শতাংশ, যা ২০২৪ সালে বেড়ে ২৮.৫ শতাংশে পৌঁছে গেছে।

অধিকার সংগ্রাম ও সংগঠনের প্রতিক্রিয়া

  • বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিজ্ঞতা:
    এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, প্রাক-উত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে নারীদের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ন, হয়রানি ও সহিংসতার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯ জন ছাত্রীকে অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী নিয়মে বহিষ্কার করা হয়েছে, যা সিস্টেম্যাটিক নিপীড়নের পরিচায়ক।

  • অনলাইন প্রতিবাদ:
    অনলাইনে ৫২ নারী ‘রাজনৈতিক বিদ্বেষমূলক যৌন সহিংস আক্রমণ’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

উপসংহার

নারীদের জীবনে শারীরিক, সামাজিক ও সাইবার সহিংসতার ঘটনা ক্রমাগত বাড়ছে। সরকার বলছেন তারা দৃঢ় অবস্থায় থাকবেন, কিন্তু বাস্তবে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার অভাব স্পষ্ট। সমাজের বিভিন্ন স্তরে নারীদের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় আরও সক্রিয় ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলা হয়েছে সমাজের হচ্ছে। তবে সে স্বর ক্ষীন ও কণ্ঠ ভীত।