০২:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫

হিযবুতের মতো সংগঠন ঠেকাতে পুলিশের গোয়েন্দা সক্ষমতা নেই?

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:১৯:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫
  • ১৫ Time View

আগে থেকে ঘোষণা দিলেও খিলাফতের দাবিতে নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাহরীরের মিছিল ঠেকাতে বাংলাদেশের পুলিশের ব্যর্থতা নিয়ে রয়েছে সমালোচনা

হারুন উর রশীদ স্বপন

নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীর কিভাবে ঢাকায় পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালন করলো, এ নিয়ে রয়েছে ব্যাপক সমালোচনা। ঢাকার পুলিশ বলছে, এমন সংগঠনের কর্মকাণ্ড নজরদারির মতো গোয়েন্দা সামর্থ্য তাদের নেই।

বেশ আগে থেকেই ৭ মার্চ ‘মার্চ ফর খেলাফত’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়ে রেখেছিল বাংলাদেশে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন হিজবুত তাহরীর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা স্থাপনাসহ ঢাকার নানা স্থানে কর্মসূচির প্রচারে লাগানো হয়েছিল পোস্টার-ব্যানারও। কর্মসূচির স্থানও বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেট হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছিল এসব প্রচারে।

কর্মসূচির আগের দিন ডিএমপি বিবৃতি দেয়, সংগঠনটি সভা-সমাবেশ করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু তারপরও পুলিশ অ্যাকশনে যাওয়ার আগে বেশ কিছুক্ষণ পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতেই সংগঠনটির কয়েকশ নেতাকর্মী মিছিল করেন।

ওই ঘটনায় প্রতিবেদনটি প্রকাশের আগ পর্যন্ত হিযবুত তাহরীরের ৩৬ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে ১৭ জনকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। আটকদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা হয়েছে। তবে কর্মসূচি ঠেকাতে না পারায় পুলিশের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এর জবাবে নিজেদের দায় স্বীকার করে নিয়েছে ঢাকার মেট্রোপলিটন পুলিশও।

ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী শনিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “আমার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সেরকম কোনো গোয়েন্দা বাহিনী নেই। ডিবি ওই অর্থে গোয়েন্দা না, গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধান কাজ হচ্ছে অগ্রিম ইন্টেলিজেন্স কালেকশন (গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ)। আমার যে ডিবি মূলত ক্রিমিনালদের নিয়ে কাজ করে। ক্রিমিনাল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে কাজ করে।”

পুলিশ যাদের গ্রেপ্তার করেছে তাদের মধ্যে হিজবুত তাহরীরের মুখপাত্র সাইফুল ইসলামও রয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর জানিয়েছে, সমাবেশে অংশ নেয়া নিষিদ্ধঘোষিত দলটির সদস্যদের ধরতে পুলিশ দেশব্যাপী অভিযান শুরু করেছে। বাংলাদেশের পুলিশপ্রধান বাহারুল আলম জানিয়েছেন, ‘‘আমরা সমাবেশের ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করছি। হিজবুত তাহরীরের অনেক সদস্যকে চিহ্নিত করা হয়েছে। নিষিদ্ধ সংগঠনের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগদানের জন্য তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।”

বাংলাদেশে ২০০৯ সালে হিযবুত তাহরীর নিষিদ্ধ করা হয়। সংগঠনটি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী নয়। তারা মনে করে ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়েই শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে। সংগঠনের প্রধান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর শিক্ষক মহিউদ্দিন আহমেদকে ২০০৯ সালেই বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। এরপর ২০১০ সালের ২০শে এপ্রিল ফার্মগেটে তার বাসভবন থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরের বছর ৩ মে তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান। বাংলাদেশের মতো বিশ্বের আরো অনেক দেশে হিযবুত তাহরীর নিষিদ্ধ।

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এই সংগঠনটির তৎপরতা বাড়তে থাকে। সেই প্রেক্ষাপটে পুলিশ সদর সপ্তর থেকে সংগঠনটি যে এখনও নিষিদ্ধ সেটি আবারও নিশ্চিত করা হয়।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) আ ন ম মুনীরুজ্জামান বলেন, “হিযবুত তাহরীর সব সময়ই তৎপরতা চালানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু এখন যেটা হয়েছে তারা প্রকাশ্যে এসেছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো কাজ করেনি। এমনকি মার্চ ফর খেলাফতের যে কর্মসূচি সেটার জন্য তারা সারা শহরে পোস্টার লাগিয়েছে দুই সপ্তাহ আগে থেকে। ফলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আগে থেকেই তৎপর হওয়া উচিত ছিলো। গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো উচিত ছিলো।”

তিনি বলেন, “৫ আগস্টের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের কোনো বাধা দেয়নি। ফলে তারা প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে। এখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং গোয়েন্দারা ব্যর্থ হয়েছে। এখনই যদি তাদের তৎপরতা বন্ধ না করা যায় তাহলে এটা আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।”

“শুধু বোমা ফাটালেই জঙ্গি হয় না। এর নানা স্তর আছে। তারা (হিযবুত) যেটা করে তা হলো মনস্তাত্বিকভাবে জঙ্গিবাদ ছড়িয়ে দেয়। উগ্র মতবাদ ছড়িয়ে দেয়।

মানুষকে পরিবর্তন করে ফেলে। এটা জঙ্গিবাদের প্রধান একটা স্তর। এটা ভয়াবহ ব্যাপার। মানসিকভাবে তারা এমনভাবে পরিবর্তন করে ফেলে যে তারা যেকোনো কাজ করে ফেলতে পারে।”

তৎপরতা না থাকার অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছে ঢাকার পুলিশ। ডিএমপির ডেপুটি কমিশনার (মিডিয়া) মো. আলেবুর রহমান বলেছেন, “আমরা তৎপর ছিলাম বলেই তো তাদের কর্মসূচি পণ্ড করে দিয়েছি। তারা এাগোতে পারেনি। আর তাদের আমরা গ্রেপ্তারও করেছি।”

বেশ কিছুক্ষণ মিছিল করতে দেয়ার পর কেন পুলিশ অ্যাকশনে গেলো, এমন প্রশ্নের জবাবও দিয়েছে পুলিশ।

ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী গণমাধ্যমকে বলেছেন, “আমরা বায়তুল মেকাররম মসজিদের গেটেই শুক্রবার তাদের ধরতে পারতাম। ছত্রভঙ্গ করতে পারতাম। কিন্তু সেখানে অনেক মুসল্লি ছিলেন তাদের সমস্যা হতে পারতো। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারতো। তাই আমরা পল্টন মোড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করেছি। তাদের কয়েকজনকে অন স্পট আটক করেছি।”

তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম বলেন,“আসলে বিষয়টি ছিলো ওপেন। আগে থেকেই জানা গেছে। পুলিশ চাইলে আগেই তাদের এই কর্মসূচি থেকে বিরত রাখতে পারত। আগেই তাদের আটক করতে পারত। এখানে তাদের সার্ভেলিয়েন্স এবং অপারেশন কোনোটই কার্যকর ছিলো বলে আমার মনে হয় না।”

পর্যাপ্ত নজরদারি থাকলে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না বলে মনে করেন তিনি। এমদাদুল ইসলাম বলেন, “তাহলে পুলিশকে যে প্রটেকটিভ ব্যবস্থা নিতে হয় সেটা নিতে পারত। ফলে এখানে ইন্টেলিজেন্স ফেইলিওরই আমার কাছে বড় মনে হয়।”

“তারা মুভ ফর খেলাফত করার আগে ভিতরে ভিতরে সংগঠিত হয়েছে। প্রচার করেছে। ফলে তাদের এই যে তৎপরতা তা সার্ভেলিয়েন্স করা কোনো কঠিন কাজ ছিলো না। পুলিশ, গোয়েন্দা সবাই ঢিলেঢালা অবস্থায় ছিলো। বলা যায় তাদের মধ্যে ৫ আগস্টের পর যে নিস্পৃহতা তৈরি হয়েছে তাই বহাল আছে,” বলেন তিনি।

এভাবে ছাড় দিয়ে সংগঠিত হওয়ার সুযোগ দিলে পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাবে বলেও মনে করেন তিনি।

ডিডাব্লিউ ডটকম

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

About Author Information

SC1

হিযবুতের মতো সংগঠন ঠেকাতে পুলিশের গোয়েন্দা সক্ষমতা নেই?

Update Time : ০৩:১৯:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫

হারুন উর রশীদ স্বপন

নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীর কিভাবে ঢাকায় পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালন করলো, এ নিয়ে রয়েছে ব্যাপক সমালোচনা। ঢাকার পুলিশ বলছে, এমন সংগঠনের কর্মকাণ্ড নজরদারির মতো গোয়েন্দা সামর্থ্য তাদের নেই।

বেশ আগে থেকেই ৭ মার্চ ‘মার্চ ফর খেলাফত’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়ে রেখেছিল বাংলাদেশে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন হিজবুত তাহরীর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা স্থাপনাসহ ঢাকার নানা স্থানে কর্মসূচির প্রচারে লাগানো হয়েছিল পোস্টার-ব্যানারও। কর্মসূচির স্থানও বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেট হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছিল এসব প্রচারে।

কর্মসূচির আগের দিন ডিএমপি বিবৃতি দেয়, সংগঠনটি সভা-সমাবেশ করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু তারপরও পুলিশ অ্যাকশনে যাওয়ার আগে বেশ কিছুক্ষণ পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতেই সংগঠনটির কয়েকশ নেতাকর্মী মিছিল করেন।

ওই ঘটনায় প্রতিবেদনটি প্রকাশের আগ পর্যন্ত হিযবুত তাহরীরের ৩৬ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে ১৭ জনকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। আটকদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা হয়েছে। তবে কর্মসূচি ঠেকাতে না পারায় পুলিশের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এর জবাবে নিজেদের দায় স্বীকার করে নিয়েছে ঢাকার মেট্রোপলিটন পুলিশও।

ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী শনিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “আমার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সেরকম কোনো গোয়েন্দা বাহিনী নেই। ডিবি ওই অর্থে গোয়েন্দা না, গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধান কাজ হচ্ছে অগ্রিম ইন্টেলিজেন্স কালেকশন (গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ)। আমার যে ডিবি মূলত ক্রিমিনালদের নিয়ে কাজ করে। ক্রিমিনাল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে কাজ করে।”

পুলিশ যাদের গ্রেপ্তার করেছে তাদের মধ্যে হিজবুত তাহরীরের মুখপাত্র সাইফুল ইসলামও রয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর জানিয়েছে, সমাবেশে অংশ নেয়া নিষিদ্ধঘোষিত দলটির সদস্যদের ধরতে পুলিশ দেশব্যাপী অভিযান শুরু করেছে। বাংলাদেশের পুলিশপ্রধান বাহারুল আলম জানিয়েছেন, ‘‘আমরা সমাবেশের ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করছি। হিজবুত তাহরীরের অনেক সদস্যকে চিহ্নিত করা হয়েছে। নিষিদ্ধ সংগঠনের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগদানের জন্য তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।”

বাংলাদেশে ২০০৯ সালে হিযবুত তাহরীর নিষিদ্ধ করা হয়। সংগঠনটি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী নয়। তারা মনে করে ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়েই শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে। সংগঠনের প্রধান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর শিক্ষক মহিউদ্দিন আহমেদকে ২০০৯ সালেই বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। এরপর ২০১০ সালের ২০শে এপ্রিল ফার্মগেটে তার বাসভবন থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরের বছর ৩ মে তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান। বাংলাদেশের মতো বিশ্বের আরো অনেক দেশে হিযবুত তাহরীর নিষিদ্ধ।

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এই সংগঠনটির তৎপরতা বাড়তে থাকে। সেই প্রেক্ষাপটে পুলিশ সদর সপ্তর থেকে সংগঠনটি যে এখনও নিষিদ্ধ সেটি আবারও নিশ্চিত করা হয়।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) আ ন ম মুনীরুজ্জামান বলেন, “হিযবুত তাহরীর সব সময়ই তৎপরতা চালানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু এখন যেটা হয়েছে তারা প্রকাশ্যে এসেছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো কাজ করেনি। এমনকি মার্চ ফর খেলাফতের যে কর্মসূচি সেটার জন্য তারা সারা শহরে পোস্টার লাগিয়েছে দুই সপ্তাহ আগে থেকে। ফলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আগে থেকেই তৎপর হওয়া উচিত ছিলো। গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো উচিত ছিলো।”

তিনি বলেন, “৫ আগস্টের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের কোনো বাধা দেয়নি। ফলে তারা প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে। এখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং গোয়েন্দারা ব্যর্থ হয়েছে। এখনই যদি তাদের তৎপরতা বন্ধ না করা যায় তাহলে এটা আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।”

“শুধু বোমা ফাটালেই জঙ্গি হয় না। এর নানা স্তর আছে। তারা (হিযবুত) যেটা করে তা হলো মনস্তাত্বিকভাবে জঙ্গিবাদ ছড়িয়ে দেয়। উগ্র মতবাদ ছড়িয়ে দেয়।

মানুষকে পরিবর্তন করে ফেলে। এটা জঙ্গিবাদের প্রধান একটা স্তর। এটা ভয়াবহ ব্যাপার। মানসিকভাবে তারা এমনভাবে পরিবর্তন করে ফেলে যে তারা যেকোনো কাজ করে ফেলতে পারে।”

তৎপরতা না থাকার অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছে ঢাকার পুলিশ। ডিএমপির ডেপুটি কমিশনার (মিডিয়া) মো. আলেবুর রহমান বলেছেন, “আমরা তৎপর ছিলাম বলেই তো তাদের কর্মসূচি পণ্ড করে দিয়েছি। তারা এাগোতে পারেনি। আর তাদের আমরা গ্রেপ্তারও করেছি।”

বেশ কিছুক্ষণ মিছিল করতে দেয়ার পর কেন পুলিশ অ্যাকশনে গেলো, এমন প্রশ্নের জবাবও দিয়েছে পুলিশ।

ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী গণমাধ্যমকে বলেছেন, “আমরা বায়তুল মেকাররম মসজিদের গেটেই শুক্রবার তাদের ধরতে পারতাম। ছত্রভঙ্গ করতে পারতাম। কিন্তু সেখানে অনেক মুসল্লি ছিলেন তাদের সমস্যা হতে পারতো। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারতো। তাই আমরা পল্টন মোড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করেছি। তাদের কয়েকজনকে অন স্পট আটক করেছি।”

তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম বলেন,“আসলে বিষয়টি ছিলো ওপেন। আগে থেকেই জানা গেছে। পুলিশ চাইলে আগেই তাদের এই কর্মসূচি থেকে বিরত রাখতে পারত। আগেই তাদের আটক করতে পারত। এখানে তাদের সার্ভেলিয়েন্স এবং অপারেশন কোনোটই কার্যকর ছিলো বলে আমার মনে হয় না।”

পর্যাপ্ত নজরদারি থাকলে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না বলে মনে করেন তিনি। এমদাদুল ইসলাম বলেন, “তাহলে পুলিশকে যে প্রটেকটিভ ব্যবস্থা নিতে হয় সেটা নিতে পারত। ফলে এখানে ইন্টেলিজেন্স ফেইলিওরই আমার কাছে বড় মনে হয়।”

“তারা মুভ ফর খেলাফত করার আগে ভিতরে ভিতরে সংগঠিত হয়েছে। প্রচার করেছে। ফলে তাদের এই যে তৎপরতা তা সার্ভেলিয়েন্স করা কোনো কঠিন কাজ ছিলো না। পুলিশ, গোয়েন্দা সবাই ঢিলেঢালা অবস্থায় ছিলো। বলা যায় তাদের মধ্যে ৫ আগস্টের পর যে নিস্পৃহতা তৈরি হয়েছে তাই বহাল আছে,” বলেন তিনি।

এভাবে ছাড় দিয়ে সংগঠিত হওয়ার সুযোগ দিলে পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাবে বলেও মনে করেন তিনি।

ডিডাব্লিউ ডটকম