১২:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
সপ্তাহের প্রথম দিনে পুঁজিবাজারে মিশ্র চিত্র, ডিএসইতে সূচক কমেছে, সিএসইতে বেড়েছে সোমবার মনোনয়ন জমার শেষ দিন, জমা দিয়েছে মাত্র ১ শতাংশ প্রার্থী  ঢাকা-১৭ ও বগুড়া-৬ আসনে মনোনয়নপত্রে স্বাক্ষর করলেন তারেক রহমান বৃহত্তর ঐক্যের স্বার্থে জামায়াতের নেতৃত্বাধীন জোটে এনসিপি: নাহিদ ইসলাম ভারতে সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতায় গভীর উদ্বেগ ঢাকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য থেকে সরে গেলেও এনসিপি ছাড়ছি না: সামান্থা শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ভয়াবহ ঊর্ধ্বগতি, ৬৩ শতাংশ সংবাদ নেতিবাচক: গবেষণা জানুয়ারি ৩-এর মহাসমাবেশ স্থগিত করল জামায়াতে ইসলামী ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ–পাকিস্তান সম্পর্ক জোরদারে বাড়তি যোগাযোগ ও বিনিয়োগের আহ্বান রাজনৈতিক দলের ভেতরে ফ্যাসিবাদী সহযোগী ও সন্ত্রাসীদের অনুপ্রবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

আজ বাংলাদেশ স্রষ্টার জম্মদিন

  • Sarakhon Report
  • ০৫:৪৮:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫
  • 124

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ যমজ শব্দ। পৃথিবীর আরো হাজারটি চিরন্তন সত্য’র মতো এই সত্য চিরকালই বাঙালির ইতিহাসে বহমান থাকবে।পান্ডব বর্জিত এদেশ, বারো ভূইয়ার দেশ নামে খ্যাত একটি দেশ ও একটি নরগোষ্টিকে প্রথমবারের মতো একত্র করে, একটি স্বাধীন আধুনিক রাষ্ট্র যেমন সৃষ্টি করেছিলেন বঙ্গবন্ধু তেমনি এ ভূখন্ডের সংস্কৃতিকে অখন্ডভাবে বেড়ে ওঠার সুযোগ তৈরি করেন তিনি।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব সম্পর্কে ঐতিহাসিক সাইদুর রহমান তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছেন, “ ইতিহাসের ছাত্র হিসেবে বলতে পারি, হাজার বছরে এ্ বাঙালি জাতিকে শেখ মুজিব ছাড়া আর কেউ এক করতে পারেনি”। সাইদুর রহমানের এ কথা যে কতটা নিখাদ সত্য তা বাঙালির ইতিহাসে একটু পেছন ফিরে তাকালে বোঝা যায়। রূপকথার হিরোর থেকেও দু:সাহসী হিরো বাঙালি ঘরে জম্মেছিলেন, তিনি সুভাষ চন্দ্র বোস। দেশ মাতৃকার মুক্তিপথে তার সংগ্রাম যে কোন কল্পকাহিনীকেও হার মানায়। তার পরেও ইতিহাসের দিক তাকালে পাওয়া যায়, সুভাষ বোসের নেতৃত্ব প্রশ্নে পাঞ্জাব থেকে মনিপুর অবধি এক হয়েছিলো, বাঙালি ছিলো চারভাগে বিভক্ত। এমনই চরিত্রের এই বাঙালি জাতিকে একত্র করে স্বাধীনতা সংগ্রামে নামিয়েছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। আজ এমন অনেক মানুষ দেখা যাচ্ছে, যারা স্বাধীনতার আদর্শগুলো ভাঙার জন্যে হাতুড়ি হাতে বৃদ্ধ বয়সেও ছুটে বেড়াচ্ছেন। অথচ আশ্চর্য হতে হয়, এই মানুষগুলোও ১৯৭১ সালে সমস্ত লোভ লালসার উর্ধে উঠে বঙ্গবন্ধুর ডাকে দেশ-মাতৃকার মুক্তির সংগ্রামে সামিল হয়েছিলেন।

বাস্তবে এই গাঙ্গেয় বঙ্গে, এই কৃষি নির্ভর পূর্ববঙ্গে শেখ মুজিবুর রহমানের মতো এক অসম্ভবকে সম্ভব করার স্বপ্নচারী শুধু নয়, বাস্তবে সমর্থ বীরের জম্ম না হলে আমাদের কোন পরিচয় হতো না। ষাটের দশকের পূর্ব পাকিস্তানেও আমরা দেখেছি,  নাম গ্রোত্রহীন অন্য অনেক দরিদ্র জনগোষ্টির মতো মতোই আমরা একটি জনগোষ্টি। অথচ সেই জনগোষ্টির এখন নিজস্ব ভূমি, নিজস্ব পতাকা, নিজস্ব পাসপোর্ট সর্বোপরি, উচ্চারণ করতে পারি “আই এম ফোরাম বাংলাদেশ” এই শব্দটি পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে গিয়ে। এমনকি এই দেশ সৃষ্টির ইতিহাস এমন বীরত্বের ভেতর দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৈরি করে দিয়ে গেছেন  যে এদেশে বসে মরতেও ভালো লাগে। সহস্র বিপদের মাঝে বসেও যেন মনে হয়, সেই দেশ মাতার কোলে বসে আছি -যা আমার লক্ষ ভাইও বোনের রক্তে সৃষ্টি। যা আমাদের সেই পিতার সৃষ্টি,  যার আহবানকে কবি আল মাহমুদ এর ভাষায় এমনি- তুমি ভাইয়েরা আমার বলতেই আকাশের এলো মেলো পাখির ঝাক সারিবদ্ধ হয়ে গেলো। জঙ্গলের গাছ গুলো সারি সারি দাঁড়িয়ে গেলো। কবিরা বন্দুক আর কলমের পার্থক্য ভুলে গেলো।

তাই জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর ১০৫তম জম্মদিনে শুধু এটুকুই বলা যায়, বাঙালি জাতি চিরকালই তার জম্মদিন পালন করবে তার আপন অন্তরে। আর সে পালন হবে, আল মামুদের এই কবিতার বক্তব্যগুলোই মনে রেখে, বঙ্গবন্ধুকে প্রকৃত স্মরণ করতে হলে, বাঙালিকে সারিবদ্ধ পাখির মতো, সারি সারি দাঁড়ানো গাছের মতো ঐক্যবদ্ধ হতে হবে বাঙালিত্ব’র প্রশ্নে। কবিকে ভুলে যেতে হবে কলম আর বন্দুকে পার্থক্য।

 

সর্বোপরি মনে রাখতে হবে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধুমাত্র একজন রাজনৈতিক নেতা নন, শুধু একটি দেশের স্রষ্টা নন। তিনি একটি নরগোষ্টির গেইম চেঞ্জার। তাই সেই নরগোষ্টি অর্থাত বাঙালিকে রবীন্দ্রনাথের সেই অমোঘ উক্তিকে প্রাণে ধারণ করতে হবে, আমার জীবনে লভিয়া জীবন জাগরে সকল দেশ। অথাত্‌ বাঙালিকে সব সময়ই মনে রাখতে হবে, সে হাজার হাজার বছর সামনে চলবে, তার জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় জীবনে হাজার রকমের ভালো মন্দ পরিবর্তন আসবে। তবে সব সময়ই বাঙালি যেন তার নিজের চরিত্র তৈরির জন্যে, সমাজের আলো জ্বালিয়ে রাখার জন্যে- এই সত্যটুকু মনে রাখে, বঙ্গবন্ধুর জীবনে লভিয়া জীবন জাগে যেন বাঙালির প্রাণের আলো, বাঙালির জীবন।

জনপ্রিয় সংবাদ

সপ্তাহের প্রথম দিনে পুঁজিবাজারে মিশ্র চিত্র, ডিএসইতে সূচক কমেছে, সিএসইতে বেড়েছে

আজ বাংলাদেশ স্রষ্টার জম্মদিন

০৫:৪৮:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ যমজ শব্দ। পৃথিবীর আরো হাজারটি চিরন্তন সত্য’র মতো এই সত্য চিরকালই বাঙালির ইতিহাসে বহমান থাকবে।পান্ডব বর্জিত এদেশ, বারো ভূইয়ার দেশ নামে খ্যাত একটি দেশ ও একটি নরগোষ্টিকে প্রথমবারের মতো একত্র করে, একটি স্বাধীন আধুনিক রাষ্ট্র যেমন সৃষ্টি করেছিলেন বঙ্গবন্ধু তেমনি এ ভূখন্ডের সংস্কৃতিকে অখন্ডভাবে বেড়ে ওঠার সুযোগ তৈরি করেন তিনি।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব সম্পর্কে ঐতিহাসিক সাইদুর রহমান তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছেন, “ ইতিহাসের ছাত্র হিসেবে বলতে পারি, হাজার বছরে এ্ বাঙালি জাতিকে শেখ মুজিব ছাড়া আর কেউ এক করতে পারেনি”। সাইদুর রহমানের এ কথা যে কতটা নিখাদ সত্য তা বাঙালির ইতিহাসে একটু পেছন ফিরে তাকালে বোঝা যায়। রূপকথার হিরোর থেকেও দু:সাহসী হিরো বাঙালি ঘরে জম্মেছিলেন, তিনি সুভাষ চন্দ্র বোস। দেশ মাতৃকার মুক্তিপথে তার সংগ্রাম যে কোন কল্পকাহিনীকেও হার মানায়। তার পরেও ইতিহাসের দিক তাকালে পাওয়া যায়, সুভাষ বোসের নেতৃত্ব প্রশ্নে পাঞ্জাব থেকে মনিপুর অবধি এক হয়েছিলো, বাঙালি ছিলো চারভাগে বিভক্ত। এমনই চরিত্রের এই বাঙালি জাতিকে একত্র করে স্বাধীনতা সংগ্রামে নামিয়েছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। আজ এমন অনেক মানুষ দেখা যাচ্ছে, যারা স্বাধীনতার আদর্শগুলো ভাঙার জন্যে হাতুড়ি হাতে বৃদ্ধ বয়সেও ছুটে বেড়াচ্ছেন। অথচ আশ্চর্য হতে হয়, এই মানুষগুলোও ১৯৭১ সালে সমস্ত লোভ লালসার উর্ধে উঠে বঙ্গবন্ধুর ডাকে দেশ-মাতৃকার মুক্তির সংগ্রামে সামিল হয়েছিলেন।

বাস্তবে এই গাঙ্গেয় বঙ্গে, এই কৃষি নির্ভর পূর্ববঙ্গে শেখ মুজিবুর রহমানের মতো এক অসম্ভবকে সম্ভব করার স্বপ্নচারী শুধু নয়, বাস্তবে সমর্থ বীরের জম্ম না হলে আমাদের কোন পরিচয় হতো না। ষাটের দশকের পূর্ব পাকিস্তানেও আমরা দেখেছি,  নাম গ্রোত্রহীন অন্য অনেক দরিদ্র জনগোষ্টির মতো মতোই আমরা একটি জনগোষ্টি। অথচ সেই জনগোষ্টির এখন নিজস্ব ভূমি, নিজস্ব পতাকা, নিজস্ব পাসপোর্ট সর্বোপরি, উচ্চারণ করতে পারি “আই এম ফোরাম বাংলাদেশ” এই শব্দটি পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে গিয়ে। এমনকি এই দেশ সৃষ্টির ইতিহাস এমন বীরত্বের ভেতর দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৈরি করে দিয়ে গেছেন  যে এদেশে বসে মরতেও ভালো লাগে। সহস্র বিপদের মাঝে বসেও যেন মনে হয়, সেই দেশ মাতার কোলে বসে আছি -যা আমার লক্ষ ভাইও বোনের রক্তে সৃষ্টি। যা আমাদের সেই পিতার সৃষ্টি,  যার আহবানকে কবি আল মাহমুদ এর ভাষায় এমনি- তুমি ভাইয়েরা আমার বলতেই আকাশের এলো মেলো পাখির ঝাক সারিবদ্ধ হয়ে গেলো। জঙ্গলের গাছ গুলো সারি সারি দাঁড়িয়ে গেলো। কবিরা বন্দুক আর কলমের পার্থক্য ভুলে গেলো।

তাই জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর ১০৫তম জম্মদিনে শুধু এটুকুই বলা যায়, বাঙালি জাতি চিরকালই তার জম্মদিন পালন করবে তার আপন অন্তরে। আর সে পালন হবে, আল মামুদের এই কবিতার বক্তব্যগুলোই মনে রেখে, বঙ্গবন্ধুকে প্রকৃত স্মরণ করতে হলে, বাঙালিকে সারিবদ্ধ পাখির মতো, সারি সারি দাঁড়ানো গাছের মতো ঐক্যবদ্ধ হতে হবে বাঙালিত্ব’র প্রশ্নে। কবিকে ভুলে যেতে হবে কলম আর বন্দুকে পার্থক্য।

 

সর্বোপরি মনে রাখতে হবে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধুমাত্র একজন রাজনৈতিক নেতা নন, শুধু একটি দেশের স্রষ্টা নন। তিনি একটি নরগোষ্টির গেইম চেঞ্জার। তাই সেই নরগোষ্টি অর্থাত বাঙালিকে রবীন্দ্রনাথের সেই অমোঘ উক্তিকে প্রাণে ধারণ করতে হবে, আমার জীবনে লভিয়া জীবন জাগরে সকল দেশ। অথাত্‌ বাঙালিকে সব সময়ই মনে রাখতে হবে, সে হাজার হাজার বছর সামনে চলবে, তার জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় জীবনে হাজার রকমের ভালো মন্দ পরিবর্তন আসবে। তবে সব সময়ই বাঙালি যেন তার নিজের চরিত্র তৈরির জন্যে, সমাজের আলো জ্বালিয়ে রাখার জন্যে- এই সত্যটুকু মনে রাখে, বঙ্গবন্ধুর জীবনে লভিয়া জীবন জাগে যেন বাঙালির প্রাণের আলো, বাঙালির জীবন।