সারাক্ষণ রিপোর্ট
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ১৬ মার্চের ম্যাচগুলোতে নজরকাড়া পারফরম্যান্স করেছেন নুরুল হাসান সোহান ও শাদমান ইসলাম। সোহানের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাব পেয়েছে বড় জয়, আর শাদমানের দীর্ঘ প্রায় সাত বছর পর ফেরা লিস্ট ‘এ’ সেঞ্চুরি নিশ্চিত করেছে অগ্রণী ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব -এর টানা তৃতীয় জয়। পাশাপাশি, গুলশান স্পোর্টিং ক্লাব তাদের দ্বিতীয় টানা জয়ে আরো আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে।
সোহানের সেঞ্চুরিতে ধানমন্ডির বড় ব্যবধানে জয়
• দুই ম্যাচ হারের পর ঘুরে দাঁড়িয়ে ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাব ৯৭ রানে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব -কে হারায়।
• ধানমন্ডি প্রথমে ব্যাট করে ২৭৮ রানের টার্গেট দেয়, পরে শাইনপুকুর -কে ১৮০ রানে গুটিয়ে দেয়। পাঁচ ম্যাচে ধানমন্ডির এটা তৃতীয় জয়।
• শাইনপুকুর এখন পর্যন্ত একবারই জয় পেয়েছে।
• ধানমন্ডির ইনিংসে শুরুতে তিনটি উইকেট দ্রুত পড়ে গেলেও নুরুল হাসান সোহানের (১৩২*) সাথে সঞ্জামুল ইসলামের (৪০) ১১৩ রানের পার্টনারশিপ বড় সংগ্রহ গড়তে সহায়তা করে।
• সোহান ১৩১ বলে ১৩২ রানে অপরাজিত থাকেন, যেখানে ১৩টি চার ও ৪টি ছক্কা রয়েছে। এটি তার লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে পঞ্চম সেঞ্চুরি।
• লক্ষ্যে নেমে শাইনপুকুর -এর পক্ষে রহিম আহমেদ ৪২ ও মিনহাজুল আবেদীন ৩৫ রান করলেও সঞ্জামুলের ৪ উইকেট ও কামরুল ইসলামের ৩ উইকেটে তাদের ইনিংস ১৮০ রানে থেমে যায়।
শাদমানের সেঞ্চুরিতে অগ্রণী ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব এর টানা তৃতীয় জয়
•বিকেএসপি -তে রূপগঞ্জ টাইগার ক্রিকেট ক্লাব -এর দেওয়া ২৬১ রানের লক্ষ্য মাত্র ৪৬.৫ ওভারে ৭ উইকেট হাতে রেখে টপকে যায় অগ্রণী ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ।
• প্রায় সাত বছর পর লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে সেঞ্চুরি করেন শাদমান ইসলাম (১১৫*), যা দলের টানা তৃতীয় জয় নিশ্চিত করে।
• রূপগঞ্জ টাইগার ক্রিকেট ক্লাব -এর ইনিংস শুরু থেকেই কিছুটা মন্থর ছিল। আমিত মজুমদার (৮১) ও আসাদুল্লাহ আল গালিব (৫৭) মিলে ১২৪ রানের জুটি গড়লেও রান তোলার গতি কম ছিল।
• শেষদিকে আল আমিন জুনিয়র (৩২) ও আরিফুল হক (৪০) দ্রুত রান তুলতে চাইলেও দল ২২৬-৪ থেকে ২৬১ রানে অলআউট হয়ে যায়। বাঁহাতি পেসার রুয়েল মিয়া তিনটি উইকেট নেন।
• রান তাড়া করতে নেমে শাদমান ও ইমরানুজ্জামান দ্রুত ৫০ রান তোলে। ইমরানুজ্জামান ২০ বলে ২৮ রান করে ফিরলেও শাদমান ইমরুল কায়েসের (৬২) সঙ্গে ৮৬ রানের জুটি গড়েন।
• ইমরুল বিদায় নিলেও শাদমান লড়াই চালিয়ে যান। ৯৫ বলে সেঞ্চুরি পূরণ করে তিনি শেষ পর্যন্ত ১০৮ বলে অপরাজিত ১১৫ রান করেন (১১টি বাউন্ডারি ও ২টি ছক্কা)।
গুলশানের টানা দ্বিতীয় জয়
• শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গুলশান স্পোর্টি ক্লাব পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবকে ৫৭ রানে পরাজিত করে টানা দ্বিতীয় জয় আদায় করে।
• আগে ব্যাট করে গুলশান ২২১ রান করে, যেখানে আজিজুল হাকিম সর্বোচ্চ ৬২ (৭৯ বলে), লিটন কুমার দাস ২২ এবং ইফতিখার হোসেন ৩২ রান করেন। শেষদিকে মেহেদি হাসান (২৩) ও ইলিয়াস সানি (২১) গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
• জবাবে পারটেক্সের ইনিংসে শুরু থেকেই উইকেট পতন দেখা যায়। রবিউল ইসলাম ৩০ রান করলেও সাব্বির রহমান মাত্র ৪ রানে আউট হন।
• গুলশানের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে পারটেক্স ১৬৪ রানে অলআউট হয়ে যায়। আসাদুজ্জামান পায়েল, নিহাদ উজ জামান ও নাঈম ইসলাম প্রত্যেকে দুটি করে উইকেট দখল করেন।
উপসংহার
এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ব্যক্তিগত নৈপুণ্য ও দলীয় সমন্বয়ের চমৎকার সংমিশ্রণ দেখা যাচ্ছে। সোহান ও শাদমানের সেঞ্চুরি তাদের দলকে বড় জয় উপহার দিয়েছে, অন্যদিকে গুলশান ও ধানমন্ডির ধারাবাহিক সাফল্য দলগুলোর আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তুলেছে। আসন্ন ম্যাচগুলোতেও জমজমাট লড়াই অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা যায়, যা ঢাকার ক্রিকেটপ্রেমীদের দেয় দারুণ আনন্দ ও উত্তেজনা।
Leave a Reply