মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৫৬ অপরাহ্ন

বৈধ ভিসা নিয়েও যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত হলে তাকে বহিস্কার করা হবে

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ, ২০২৫, ১২.৩০ এএম

সারাক্ষণ রিপোর্ট

(ওয়াশিংটন ডিসি) স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস মিডিয়াকে স্বাগত জানিয়ে বলেনসাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র শক্তির মাধ্যমে শান্তি” প্রতিষ্ঠার নীতিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। তিনি উল্লেখ করেনপ্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও তাদের সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপের মাধ্যমে বৈশ্বিক বিভিন্ন সংকট সমাধানে তৎপর। প্রেস ব্রিফিংয়ে স্পষ্ট হয়েছে যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিওর নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতের ৩০ দিনের অস্ত্রবিরতি প্রস্তাবদক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত বহিষ্কারইরানের উপর নিষেধাজ্ঞাহুথি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানসব ক্ষেত্রেই যুক্তরাষ্ট্র তার জাতীয় স্বার্থ ও বিশ্বের নিরাপত্তার স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গেই প্রশাসন বিভিন্ন দেশে চলমান সংকট নিরসনে কূটনৈতিকভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠার কথাও বারবার তুলে ধরেছে। এছাড়া আরো বলা হয়েছেযারা বৈধভাবে ভিসা নিয়ে এসেও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বা উগ্রবাদী সহিংসতাকে প্রভাবিত করছেতাদের ভিসা বাতিল করা হতে পারে।

্রধান গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা ও পরিস্থিতি

১) রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও ৩০ দিনের অন্তর্বর্তীকালীন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব
• সৌদি আরবের জেদ্দায় ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজের বৈঠক সফল হয়েছে।
• ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব মেনে ৩০ দিনের একটি অন্তর্বর্তীকালীন যুদ্ধবিরতি মানতে রাজি হয়েছে।
• এখন রাশিয়ার জবাবের ওপর নির্ভর করছে পরবর্তী অগ্রগতি।

২) জি-৭ সম্মেলন ও দ্রুত শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আলোচনা

• কানাডায় অনুষ্ঠিত জি-৭ বৈঠকে মিত্রদেশগুলো দ্রুত ও স্থায়ীভাবে এই যুদ্ধের অবসান চায়।
• সংলাপ-আলোচনার মাধ্যমে শান্তি উদ্যোগকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়টিও গুরুত্ব পায়।

৩) ট্রেন দে আরাগুয়া’ নামক বিদেশি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

• ১৭৯৮ সালের এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট’ আইনের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সংঘবদ্ধ ও বিপজ্জনক এই চক্রের বিপুলসংখ্যক সদস্যকে অপসারণের উদ্যোগ নিয়েছেন।
• এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট বুকেলেকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলা হয়তাদের সহায়তায় স্থানান্তর প্রক্রিয়া সহজ হয়েছে।
• পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিওর মতেমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা রক্ষায় প্রেসিডেন্ট বুকেলে আবারও অসামান্য অবদান রেখেছেন।

৪) হুথি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সামরিক হামলা

• ইরান-সমর্থিত হুথিরা ইয়েমেনে মার্কিন ও বেসরকারি জাহাজে একের পর এক হামলা চালিয়ে আসছে।
• প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্র শক্তিশালী সামরিক প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।
• পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও বলেন, “বারে বারে সতর্কতার পরও হামলা বন্ধ না হলেতাদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতেই হবে। সমুদ্রপথের নিরাপত্তা ও আমাদের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।

৫) ইরানের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতি

• ইরানের তেলমন্ত্রী ও একটি ছায়া-তেলবহরে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেযেগুলো অবৈধভাবে ইরানের অপরিশোধিত তেল রপ্তানি ও অর্থ সংগ্রহে জড়িত ছিল।
• এই রাজস্ব ইরান মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা ছড়াতেপরমাণু কর্মসূচি চালাতে এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে সাহায্য করতে ব্যবহার করছে।
• আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হামাসকে সমর্থন বা ইহুদি-বিদ্বেষী কর্মকাণ্ডে জড়িত বিদেশি নাগরিকদের ভিসা বাতিলের কথাও বিবেচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও বলেন, “সন্ত্রাসী সংগঠনকে সমর্থন দেওয়া জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিযথোপযুক্ত আইনি ভিত্তিতে তাদের ভিসা বাতিল করা হবে।

৬) দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার

• সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত যুক্তরাষ্ট্র ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে শ্বেত-সর্বস্ববাদকে মদদ দেয়এমন অভিযোগ তোলেন।
• যুক্তরাষ্ট্র এই বক্তব্যকে অশোভনীয় ও অবমাননাকর” বলে ঘোষণা করে রাষ্ট্রদূতকে পার্সোনা নন গ্রাটা” ঘোষণা করেছে।
• এ বিষয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সম্পর্কোন্নয়নের আগ্রহ দেখালেওযুক্তরাষ্ট্র জানায় যে দক্ষিণ আফ্রিকার ভূমি-দখল আইন”, রাশিয়া ও ইরানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতাএবং ইসরায়েল-বিরোধী অবস্থান সম্পর্কের ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি করছে।

৭) মার্কিন ভিসা-বিধি ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের অবস্থান

• প্রশ্নোত্তর পর্বে ট্যামি ব্রুস জানান যেযারা বৈধভাবে ভিসা নিয়ে এসেও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বা উগ্রবাদী সহিংসতাকে প্রভাবিত করছেতাদের ভিসা বাতিল করা হতে পারে।
• সাধারণ মতপ্রকাশ বা মতামত প্রকাশের জন্য নয়বরং সহিংস কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ থাকলে এই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

৮) মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি: ইয়েমেন ও গাজা

• ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের কার্যকলাপকে নৌ-ডাকাতি ও আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী” হিসাবে বর্ণনা করা হয়।
• গাজায় খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহে বাধা প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান হলো, “হামাসের বিভীষিকা ও সন্ত্রাসী নীতি” গাজাবাসীর দুর্ভোগের জন্য দায়ী। স্থায়ীভাবে সহিংসতা বন্ধ না হলে দীর্ঘমেয়াদী কোনো সমাধান সম্ভব নয়।

৯) আফগানিস্তান ও এসআইভি (স্পেশাল ইমিগ্রান্ট ভিসা)

• যারা যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে কাজ করেছেন এবং অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ভিসার যোগ্যতাদের ব্যাপারে আলাদা প্রক্রিয়া বজায় রাখা হবে বলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
• তবে এখনো কোনো তালিকা” বা বৈষম্যসূচক নীতি” নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

১০) ইউএসএজিএম (মার্কিন গ্লোবাল মিডিয়া) ও রেডিও ফ্রি এশিয়া বন্ধ হওয়ার প্রসঙ্গ
• বাজেট-সংকট বা প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাসের জেরে কিছু গণমাধ্যম পরিষেবা সাময়িকভাবে বন্ধ বা স্থগিত হয়েছে।
• এ বিষয়ে চূড়ান্ত কী হবে তা এখনো অনিশ্চিতসরকার বলছে এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।

প্রশ্নোত্তর পর্বের সারাংশ

• ম্যাট লি ও অন্যান্য সাংবাদিকরা দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত বহিষ্কার থেকে শুরু করে এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্টইমিগ্রেশনহুথি হামলাইরান বিষয়ক নীতিগাজায় মানবিক সহায়তাএবং বিভিন্ন অঞ্চলের মার্কিন নীতি নিয়ে প্রশ্ন করেন।
মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিওর সুস্পষ্ট অবস্থান তুলে ধরেন: যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থআঞ্চলিক শান্তি এবং শক্তির মাধ্যমে শান্তি” ফিরিয়ে আনা।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024