১২:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
কংগ্রেসের বহু নেতা ইন্দিরা জি ও জেপি-র সংলাপ চেয়েছিলেন, তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল তা হতে দেয়নি হিউএনচাঙ (পর্ব-১৩২) ট্রাম্পের বিপরীতে, প্রাচীন চীন এর শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানানোর ঐতিহ্য রণক্ষেত্রে (পর্ব-৭৭) সমুদ্রের ওপার থেকে নতুন স্বপ্ন: তাইওয়ান তরুণদের ফুচিয়ানে নতুন জীবনগাঁথা ব্যর্থ কলম্বো, গলের লড়াই -এ বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার ঘরে জয় কেন ? ‘আকাশ হয়ে যাই’ মিউজিক ভিডিতে প্রশংসিত পূর্ণিমা বৃষ্টি সাউথ চায়নান মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন: ইরান আক্রমনে লাভ ক্ষতি ইউক্রেন দাবি করেছে বাংলাদেশের কিছু সংস্থার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিক ইইউ কলকাতার কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রীকে গণধর্ষণ, গ্রেফতার তিন

বিনিয়োগ স্থবিরতার মূল কারণসমূহ

  • Sarakhon Report
  • ০৬:৪৫:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫
  • 31

সারাক্ষণ ডেস্ক

দেশে বিনিয়োগের পরিমাণ কমে যাওয়ার পিছনে বেশ কিছু কারণ কাজ করছে, যেমন:

  • আইন ও শৃঙ্খলার অবনতিঃ
    শিল্পাঞ্চলে শৃঙ্খলা ও আইন ব্যবস্থার দুর্বলতা বিনিয়োগকারীদের মনোবল কমিয়ে দিচ্ছে।
  • আর্থিক ও জ্বালানি সংকটঃ
    উচ্চ সুদের হার, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকটের ফলে শিল্পক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
  • বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতাঃ
    বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে যাওয়ায় বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ ইতিহাসের নিম্নমুখী স্তরে নামছে।

নতুন ঋণ নীতিমালা ও প্রক্রিয়াগত জটিলতা

ঋণ প্রদান ও পুনঃতফসিল নিয়মাবলী:

  • ব্যাংক এখন কোনো গ্রুপের কোনো প্রতিষ্ঠান খেলাপি হলে, সেই গ্রুপের অন্য প্রতিষ্ঠানের ঋণ প্রদান করতে পারছে না।
  • ঋণ পুনঃতফসিলের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন বাধ্যতামূলক, যা বৃহৎ গ্রুপগুলোর জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

ব্যাংকের পদক্ষেপ:

  • ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর সহায়তার জন্য একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
  • এই কমিটির মূল লক্ষ্য ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্গঠন করে লাভজনক অবস্থায় নিয়ে আসা, যাতে ব্যাংকের ঋণের আদায় নিশ্চিত হয়।
  • ৫০ কোটি টাকার বেশি ঋণের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধার পরিকল্পনা আছে, যদিও তা এখনও কার্যকর করা হয়নি।

শিল্প ও কর্মসংস্থানের উপর প্রভাব

উৎপাদন ও কর্মসংস্থান:

  • বিনিয়োগের হ্রাসের ফলে শিল্প উৎপাদন বন্ধ হচ্ছে এবং নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছেনা।
  • ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর “নতুন বাংলাদেশ” গঠনের লক্ষ্যে তরুণদের ব্যাপক কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা এখনো একটি চ্যালেঞ্জ।

ব্যবসায়িক ক্ষতি ও উদ্বেগ:

  • ডলার সাশ্রয়ের লক্ষ্যে আমদানিতে বিলম্ব এবং সময়মতো এলসি না পাওয়ার কারণে অনেক কারখানার উৎপাদন প্রায় শূন্য হয়ে গেছে।
  • বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সংকটের কারণে উৎপাদন ২৫-৪০ শতাংশের মধ্যে হ্রাস পেয়েছে।
  • শিল্প, পোশাক ও টেক্সটাইল খাতে বিক্ষোভ ও হামলা-মামলার প্রভাবে মারাত্মক সমস্যা দেখা দিয়েছে।

সরকার ও ব্যাংকের পদক্ষেপ

সরকারি আশ্বাস:

  • অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, কোনো ব্যবসায়ী গ্রুপকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যক্রম:

  • ৩১ জানুয়ারি একটি পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্গঠনে নীতি সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।
  • তবে, এই কমিটি এখনো কার্যকরভাবে কাজ শুরু করতে পারেনি।

ঋণ খেলাপি নির্ধারণ ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড

নতুন নির্দেশনাসমূহ:

  • ২৭ নভেম্বর ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের একটি সার্কুলার জারি করেছে।
  • নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ঋণ যদি তিন মাসে পরিশোধ না করা হয় তবে তা খেলাপি হিসেবে গণ্য হবে।
  • ঋণকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে:
    • নিম্ন: ৩-৬ মাসে পরিশোধ করা ঋণ
    • সন্দেহজনক: ৬-১২ মাস
    • মন্দ: ১২ মাসের বেশি
  • নিয়মিত ঋণের জন্য ১% এবং খেলাপির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০০% প্রভিশন সংরক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
  • এই নীতিমালা ১ এপ্রিল ২০২৫ থেকে কার্যকর হবে।

ক্রেডিট লিমিট সংক্রান্ত বিতর্ক ও প্রস্তাবনা

ঋণসীমার পরিবর্তন:

  • ২০২২ সালে পূর্ববর্তী সরকার একক গ্রাহক ঋণসীমা ৩৫% থেকে কমিয়ে ২৫% (ফান্ডেড ১৫% ও নন-ফান্ডেড ১০%) করেছে।
  • ব্যবসায়ীরা মনে করেন, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে এই সীমা বজায় রাখা উচিত।
  • এ বিষয়ে গভর্নরের সাথে আলোচনার পরও এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি।

আইনের প্রয়োগ ও বিধান:

  • ২০২৩ সালের জুলাইয়ে জাতীয় সংসদে আইনের পরিবর্তনের পর ২০২৪ সালের ৩ এপ্রিল ব্যাংক একটি সার্কুলার জারি করেছে, যার মাধ্যমে গ্রুপভুক্ত খেলাপি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ঋণ প্রদান নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
  • তবে, যদি কোনো প্রতিষ্ঠান অজান্তে খেলাপি না হয় এবং ঋণের ব্যর্থতার পেছনে যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকে, তবে ব্যাংকের অনুমোদনে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেওয়া সম্ভব হবে।
  • শিক্ষার্থীদের অভ্যুত্থানের পর এই বিধান বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কঠোর ভূমিকা পালন করছে।

উপসংহার

বর্তমান আর্থিক ও শিল্পক্ষেত্রের জটিলতা – বিনিয়োগের স্থবিরতা, নতুন ঋণ নীতিমালা এবং ক্রেডিট লিমিটের পরিবর্তন – দেশের বৃহৎ শিল্প গ্রুপ ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সংকট তৈরি করছে। উৎপাদন হ্রাস পেলে কর্মসংস্থানের বৃদ্ধি দেরিতে হচ্ছে, যা সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ব্যবসায়ীরা সরকারের থেকে সহায়ক পদক্ষেপের প্রত্যাশা রাখছেন, যাতে এসব নীতিমালার পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি সুস্থ ও উদ্যমী শিল্পক্ষেত্র নিশ্চিত করা যায়।

কংগ্রেসের বহু নেতা ইন্দিরা জি ও জেপি-র সংলাপ চেয়েছিলেন, তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল তা হতে দেয়নি

বিনিয়োগ স্থবিরতার মূল কারণসমূহ

০৬:৪৫:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫

সারাক্ষণ ডেস্ক

দেশে বিনিয়োগের পরিমাণ কমে যাওয়ার পিছনে বেশ কিছু কারণ কাজ করছে, যেমন:

  • আইন ও শৃঙ্খলার অবনতিঃ
    শিল্পাঞ্চলে শৃঙ্খলা ও আইন ব্যবস্থার দুর্বলতা বিনিয়োগকারীদের মনোবল কমিয়ে দিচ্ছে।
  • আর্থিক ও জ্বালানি সংকটঃ
    উচ্চ সুদের হার, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকটের ফলে শিল্পক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
  • বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতাঃ
    বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে যাওয়ায় বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ ইতিহাসের নিম্নমুখী স্তরে নামছে।

নতুন ঋণ নীতিমালা ও প্রক্রিয়াগত জটিলতা

ঋণ প্রদান ও পুনঃতফসিল নিয়মাবলী:

  • ব্যাংক এখন কোনো গ্রুপের কোনো প্রতিষ্ঠান খেলাপি হলে, সেই গ্রুপের অন্য প্রতিষ্ঠানের ঋণ প্রদান করতে পারছে না।
  • ঋণ পুনঃতফসিলের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন বাধ্যতামূলক, যা বৃহৎ গ্রুপগুলোর জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

ব্যাংকের পদক্ষেপ:

  • ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর সহায়তার জন্য একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
  • এই কমিটির মূল লক্ষ্য ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্গঠন করে লাভজনক অবস্থায় নিয়ে আসা, যাতে ব্যাংকের ঋণের আদায় নিশ্চিত হয়।
  • ৫০ কোটি টাকার বেশি ঋণের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধার পরিকল্পনা আছে, যদিও তা এখনও কার্যকর করা হয়নি।

শিল্প ও কর্মসংস্থানের উপর প্রভাব

উৎপাদন ও কর্মসংস্থান:

  • বিনিয়োগের হ্রাসের ফলে শিল্প উৎপাদন বন্ধ হচ্ছে এবং নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছেনা।
  • ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর “নতুন বাংলাদেশ” গঠনের লক্ষ্যে তরুণদের ব্যাপক কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা এখনো একটি চ্যালেঞ্জ।

ব্যবসায়িক ক্ষতি ও উদ্বেগ:

  • ডলার সাশ্রয়ের লক্ষ্যে আমদানিতে বিলম্ব এবং সময়মতো এলসি না পাওয়ার কারণে অনেক কারখানার উৎপাদন প্রায় শূন্য হয়ে গেছে।
  • বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সংকটের কারণে উৎপাদন ২৫-৪০ শতাংশের মধ্যে হ্রাস পেয়েছে।
  • শিল্প, পোশাক ও টেক্সটাইল খাতে বিক্ষোভ ও হামলা-মামলার প্রভাবে মারাত্মক সমস্যা দেখা দিয়েছে।

সরকার ও ব্যাংকের পদক্ষেপ

সরকারি আশ্বাস:

  • অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, কোনো ব্যবসায়ী গ্রুপকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যক্রম:

  • ৩১ জানুয়ারি একটি পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্গঠনে নীতি সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।
  • তবে, এই কমিটি এখনো কার্যকরভাবে কাজ শুরু করতে পারেনি।

ঋণ খেলাপি নির্ধারণ ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড

নতুন নির্দেশনাসমূহ:

  • ২৭ নভেম্বর ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের একটি সার্কুলার জারি করেছে।
  • নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ঋণ যদি তিন মাসে পরিশোধ না করা হয় তবে তা খেলাপি হিসেবে গণ্য হবে।
  • ঋণকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে:
    • নিম্ন: ৩-৬ মাসে পরিশোধ করা ঋণ
    • সন্দেহজনক: ৬-১২ মাস
    • মন্দ: ১২ মাসের বেশি
  • নিয়মিত ঋণের জন্য ১% এবং খেলাপির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০০% প্রভিশন সংরক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
  • এই নীতিমালা ১ এপ্রিল ২০২৫ থেকে কার্যকর হবে।

ক্রেডিট লিমিট সংক্রান্ত বিতর্ক ও প্রস্তাবনা

ঋণসীমার পরিবর্তন:

  • ২০২২ সালে পূর্ববর্তী সরকার একক গ্রাহক ঋণসীমা ৩৫% থেকে কমিয়ে ২৫% (ফান্ডেড ১৫% ও নন-ফান্ডেড ১০%) করেছে।
  • ব্যবসায়ীরা মনে করেন, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে এই সীমা বজায় রাখা উচিত।
  • এ বিষয়ে গভর্নরের সাথে আলোচনার পরও এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি।

আইনের প্রয়োগ ও বিধান:

  • ২০২৩ সালের জুলাইয়ে জাতীয় সংসদে আইনের পরিবর্তনের পর ২০২৪ সালের ৩ এপ্রিল ব্যাংক একটি সার্কুলার জারি করেছে, যার মাধ্যমে গ্রুপভুক্ত খেলাপি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ঋণ প্রদান নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
  • তবে, যদি কোনো প্রতিষ্ঠান অজান্তে খেলাপি না হয় এবং ঋণের ব্যর্থতার পেছনে যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকে, তবে ব্যাংকের অনুমোদনে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেওয়া সম্ভব হবে।
  • শিক্ষার্থীদের অভ্যুত্থানের পর এই বিধান বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কঠোর ভূমিকা পালন করছে।

উপসংহার

বর্তমান আর্থিক ও শিল্পক্ষেত্রের জটিলতা – বিনিয়োগের স্থবিরতা, নতুন ঋণ নীতিমালা এবং ক্রেডিট লিমিটের পরিবর্তন – দেশের বৃহৎ শিল্প গ্রুপ ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সংকট তৈরি করছে। উৎপাদন হ্রাস পেলে কর্মসংস্থানের বৃদ্ধি দেরিতে হচ্ছে, যা সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ব্যবসায়ীরা সরকারের থেকে সহায়ক পদক্ষেপের প্রত্যাশা রাখছেন, যাতে এসব নীতিমালার পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি সুস্থ ও উদ্যমী শিল্পক্ষেত্র নিশ্চিত করা যায়।