সারাক্ষণ রিপোর্ট
পরিচিতি
সোনালী ব্যাংক তাদের অপরিশোধিত চিনি মিল ও বাংলাদেশ সুগার এন্ড ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (BSFIC) ঋণের পরিবর্তে ৬৩.৩৩ বিলিয়ন টাকার সমমান সরকারের বন্ড প্রাপ্তির প্রস্তাব দিয়েছে। এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য অননুমোদিত ঋণ, সংরক্ষণ ত্রুটি এবং পুঁজির ঘাটতি কমানো।
ব্যাংকের দাবি ও পদক্ষেপ
ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার মোঃ শওকাত আলী খান সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে একটি আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন। আবেদনপত্রে তিনি উল্লেখ করেন:
- সোনালী ব্যাংকের বকেয়া ঋণ মেটাতে সরকারের বন্ড ইস্যুর অনুরোধ জানানো হয়েছে।
- এই পদক্ষেপ ব্যাংকের তরলতা বৃদ্ধি ও সামগ্রিক কার্যক্রমকে সহজ করবে।
- নীতিমালা অনুযায়ী, BSFIC ও চিনি মিল পক্ষ থেকে আবেদন এলে সুদের ছাড়ের বিষয়েও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঋণের অবস্থা ও প্রভাব
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো বর্তমানে মেয়াদ উত্তীর্ণ ঋণের কারণে বিশাল পরিমাণে সংরক্ষণের খরচ বহন করছে, যা পুঁজিতে গুরুতর ঘাটতি এবং মুনাফার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ঋণের ভাঙন নিম্নরূপ:
- চিনি মিলের কৃষি ঋণ: ৩৬.১২বিলিয়ন টাকা
- BSFIC এর ঋণ: ২৪ বিলিয়ন টাকা
- নয়টি চিনি মিলের অন্যান্য ঋণ: ২.৮১ বিলিয়ন টাকা
যদিও এই ঋণগুলো মেয়াদ উত্তীর্ণ, সরকারী গ্যারান্টি ও ত্রিপাক্ষিক চুক্তির কারণে এগুলো ‘অনক্লাসিফাইড’ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। ব্যাংক ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো (CIB)-তে এভাবে রিপোর্ট করার ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বিস্তারিত ব্যাখ্যার অনুরোধ এসেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের পর্যবেক্ষণ
অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন সিনিয়র কর্মকর্তার মতে, সোনালী ব্যাংকের প্রস্তাব বর্তমানে পর্যবেক্ষণের আওতায় আছে, তবে এখনও এর উপর কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি।
ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা
বর্তমানে সোনালী ব্যাংকের আর্থিক পরিসংখ্যান নিম্নরূপ:
- পেইড-আপ ক্যাপিটাল: ৪৫.৩০বিলিয়ন টাকা
- অনুমোদিত ক্যাপিটাল: ৬০বিলিয়ন টাকা
দেশ এবং বিদেশে ১১২২ শাখার মাধ্যমে ব্যাংকটি গ্রাহকদের সেবা প্রদান করছে।
উপসংহার
সোনালী ব্যাংকের এই পদক্ষেপ ঋণের পুনর্গঠন ও ব্যাংকের আর্থিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তবে, আর্থিক নীতিমালা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পর্যবেক্ষণ ও সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করা হচ্ছে।