সারাক্ষণ রিপোর্ট
- সভার লক্ষ্য:
মোড়কজাত খাদ্যের ফ্রন্ট প্যাকেটে লেবেলিং নিশ্চিত করা, যাতে খাদ্যে অতিরিক্ত চিনি, লবন, ট্রান্সফ্যাটের পরিমাণ সহজে শনাক্ত করা যায়। এই পদক্ষেপটি অসংক্রামক রোগ – যেমন হৃদরোগ, স্ট্রোক ও ক্যান্সার – প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
- অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্যগত প্রেক্ষাপট:
এসডিজি-র লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ২০৩০ সালের মধ্যে অসংক্রামক রোগজনিত মৃত্যুর হার ৩০ শতাংশ কমানোর লক্ষ্যে, সরকার খাদ্যের উপাদান প্রদর্শনের বিষয়ে নতুন নীতিমালা গ্রহণ করেছে।

সভার মূল আলোচনা ও সিদ্ধান্ত
- ফ্রন্ট-প্যাক লেবেলিং:
খাদ্যের মোড়কে স্পষ্টভাবে চিনি, লবন, ট্রান্সফ্যাট ও স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ উল্লেখ করা অত্যন্ত জরুরি। এতে অক্ষরশ্রেণীভুক্ত ক্রেতরাও সহজে ক্ষতিকর উপাদান চিনতে পারবেন।
- আইনি ও নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা:
খাদ্যের উপাদান নির্ধারণ, অনুমোদন এবং বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোন কর্তৃপক্ষ কীভাবে নিয়ন্ত্রণ রাখবে তা সুস্পষ্ট করতে হবে। নিয়মিত মনিটরিং ও সমন্বয়ের মাধ্যমে বিধিমালা কার্যকর করার ওপর জোর দেয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞ ও অংশগ্রহণকারীদের বক্তব্য
- প্রধান অতিথির বক্তব্য:
বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যানসেলর, অধ্যাপক ডা. মোঃ মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন,
“খাবারের নামে বিষ কিনে খাচ্ছি কিনা তা ভেবে দেখতে হবে।”
তিনি সুস্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণের গুরুত্ব ও রোগ নিয়ন্ত্রণে সতর্কতার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জোর দিয়ে উল্লেখ করেন।

- অন্যান্য বক্তব্য:
- গবেষণা ও বিজ্ঞাপন:
সেন্টার ফর ল’ এন্ড পলিসি এফেয়ার্স-এর গবেষণায় দেখা যায় অতিরিক্ত চিনিযুক্ত পানীয় ও চিপসে কোন স্বাস্থ্য সতর্কবাণী নেই, বরং প্রচারমূলক বিভিন্ন শব্দ ব্যবহৃত হচ্ছে।
- সরকারি পদক্ষেপ:
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব ডা. শিব্বির আহমেদ ওসমানী জানান, মোড়কজাত খাদ্যে উপাদানের তথ্য যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয়ে কাজ করা হচ্ছে।
- নিয়ন্ত্রণ ও আইন প্রয়োগ:
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ সোয়েব ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়ে দিয়েছেন, নিরাপদ খাদ্য আইন শক্তিশালী হলেও অনেক ব্যবসায়ী বিধিমালা মেনে চলছে না।
- সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান:
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও গবেষকরা বলেন, নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধি ও কঠোর মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা প্রয়োজন।
উপসংহার ও পরবর্তী পদক্ষেপ
- নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণ:
দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার হিসেবে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে, আইনি পদক্ষেপের পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধির গুরুত্ব আবারো তুলে ধরা হয়েছে।
- সমন্বিত প্রয়াস:
বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা মিলিতভাবে সুপারিশ করেছেন যে, খাদ্য মান নিয়ন্ত্রণ ও মোড়কজাত খাদ্যের লেবেলিং বাস্তবায়নে সুষ্ঠু সমন্বয় ও নিয়মিত মনিটরিং অপরিহার্য।

অংশগ্রহণকারী সংস্থাসমূহ
সভায় অংশগ্রহণ করেছিলেন:
- বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়
- সেন্টার ফর ল’ এন্ড পলিসি এফেয়ার্স (সিএলপিএ)
- স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়
- নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ
- গ্লোবাল হেলথ এডভোকেসী ইনকিউভেটর
- ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর
- পাবলিক হেলথ ল ইয়ার্স নেটওয়ার্ক
- বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সাইন্স
- ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন
- কনজুমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ
- পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- পাবলিক হেলথ নিউজ ২৪
- ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট
- ভাইটার স্ট্রাটেজিস, সিয়াম, ডাস, পদ্মা, গ্রাম বাংলা, মৌমাছি, এবং কসমস
Leave a Reply