মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৫৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

সীমান্ত ছুঁয়ে থাকা লাইব্রেরিতে কানাডিয়ানদের প্রবেশাধিকার সীমিত করার মার্কিন সিদ্ধান্তে

  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫, ১২.৫৯ এএম

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ

  • নিরাপত্তার কারণে মার্কিন কর্তৃপক্ষ লাইব্রেরিতে অবাধ প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে
  • ১৯০১ সালে প্রতিষ্ঠিত এই লাইব্রেরি কানাডা ও আমেরিকার মধ্যে আন্তঃদেশীয় বন্ধুত্বের প্রতীক ছিল
  • কানাডিয়ান দর্শকদের জন্য লাইব্রেরির পিছনে একটি নতুন প্রবেশপথ তৈরি করা হচ্ছে

স্ট্যানস্টেডকুইবেক এবং ডার্বি লাইনভ্যারমন্টএর মধ্যবর্তী সেতুবন্ধনের মত একটি ঐতিহাসিক স্থানযেখানে শত বছরেরও অধিক সময় ধরে বিনা পাসপোর্টে দুদেশের মানুষ হ্যাস্কেল ফ্রি লাইব্রেরি এবং অপেরা হাউসে প্রবেশ করতেন।

প্রাচীন ঐতিহ্য

এই লাইব্রেরিযা ১৯০১ সালে প্রতিষ্ঠিতদুই দেশের মধ্যে আন্তঃজাতীয় বন্ধুত্বের চিহ্ন হিসেবে বিবেচিত। কানাডা ও আমেরিকার নাগরিকরা একটি মেঝেতে টেপ দিয়ে চিহ্নিত সীমান্তরেখা পার হয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে একে অপরের সাথে মিশে যেতেন। তখনকার সময়ে এমন ধারণা ছিল, “আমরা দুদেশ হলেও একত্রে এক বড় পরিবার” – কথাটি তুলে ধরে সেই ঐতিহ্যের গুরুত্ব।

সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের নতুন বিধিনিষেধ

কিন্তু সম্প্রতি মার্কিন কর্তৃপক্ষ একপাক্ষিকভাবে এই অমৌখিক চুক্তি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী দিনগুলো থেকেকেবল লাইব্রেরি সদস্য এবং কর্মচারীদেরই মার্কিন পার্শ্বের প্রধান প্রবেশদ্বার দিয়ে কানাডা থেকে লাইব্রেরিতে প্রবেশের অনুমতি থাকবে। অক্টোবর ১ থেকে কোন কানাডিয়ানআইনী ব্যতিক্রম ছাড়ামার্কিন সীমান্তচেকপয়েন্ট ছাড়াই লাইব্রেরিতে প্রবেশ করতে পারবে না।

নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বিষয়ক কারণ

যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস ও বর্ডার প্রটেকশন (CBP) কর্মকর্তারা জানানলাইব্রেরির আশপাশে দীর্ঘ সময় ধরে অনিয়মিত সীমান্ত পারাপারের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে – এমনকি সাম্প্রতিককালে এক ব্যক্তি অশান্তিকর অস্ত্র পাচার করার চেষ্টা করলেও তা নজরে আসে। নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় নিয়ে এই কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছেযদিও লাইব্রেরিটিকে অদ্বিতীয় নিদর্শন” হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

নাগরিক ও সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া

লাইব্রেরির অভ্যন্তরে কানাডিয়ান পলিন লুসিয়ের ও আমেরিকান ক্রিস ব্লাইসদুদেশের পতাকা হাতেসীমান্তরেখার দুই পাশে দাঁড়িয়ে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ আলিঙ্গন ভাগাভাগি করেন। তারা বিশ্বাস করেন, “একটি রেখা আমাদের আলাদা করে না” – এমন কথা বার্তা হয়ে ওঠে। স্ট্যানস্টেডের মেয়র জোডি স্টোনও বলেছেনএই সিদ্ধান্ত অবোধগম্য” হলেও কমিউনিটির অটুট বন্ধন ভাঙতে পারবে না। প্রায়ই কিছু নাগরিক আবেগ প্রকাশ করতে সীমান্তে জমায়েত হন ও বিভিন্ন সাইনবোর্ড তুলে সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তাদের মত প্রকাশ করেন।

পরিকল্পিত উন্নয়ন প্রকল্প

নতুন বিধিনিষেধের ফলে লাইব্রেরিতে প্রবেশে অসুবিধার সৃষ্টি হওয়ায়কানাডিয়ান দর্শনার্থীদের জন্য অন্য একটি প্রবেশপথ নির্ধারণ করা হচ্ছে – যা লাইব্রেরির পিছনের দিক থেকেকাদামাটিতে ঢাকা একটি মাঠ পার হয়ে যেতে হবে। লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষ বর্তমানে আনুমানিক ১,০০,০০০ কানাডিয়ান ডলার (প্রায় ৬৯,০০০ মার্কিন ডলার) খরচের জন্য একটি গো ফাউন্ড মি ক্যাম্পেইন চালু করেছেযার মাধ্যমে একটি নতুন সাইডওয়াকপার্কিং লট ও হুইলচেয়ার প্রবেশাধিকার সুবিধা তৈরি করা হবে।

উপসংহার

দুই দেশের ঐতিহাসিক বন্ধন ও স্বাভাবিক পারস্পরিক মেলামেশার ধারা বদলে যাওয়ার ফলে স্থানীয় মানুষরা গভীর বিষণ্ণতায় মেতে উঠেছে। তবেসম্প্রদায়ের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বন্ধন ও পারস্পরিক সহায়তার মনোভাব অটুট থেকে যাবে – তা নিশ্চিত করেছে স্ট্যানস্টেডের স্থানীয় প্রশাসন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024