সারাক্ষণ ডেস্ক
দুপুরের ঝিম ধরা সময়ের পেছনের বিজ্ঞান
দুপুর গড়িয়েছে। চোখ ভারী হয়ে আসছে, মনোযোগ ঝাপসা—এবং ঘুম যেন একমাত্র মুক্তির পথ। কিন্তু যদি এই ঝটপট ঘুম রাত ১২টা পর্যন্ত আপনাকে জেগে রাখে, তবে তা উপকারের চেয়ে বেশি ক্ষতি করছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ঘুমানোর আসল কৌশল হলো কখন এবং কীভাবে আপনি ঘুমান।
পাওয়ার ন্যাপ নাকি ঘুমের শত্রু?
সংক্ষিপ্ত ঘুম বহুদিন ধরেই পরিচিত মনোযোগ বাড়ানো, মেজাজ ভালো রাখা এবং স্মৃতিশক্তি উন্নত করার জন্য। তবে এটি একটি দ্বিমুখী তরবারি। ৩০ মিনিটের কম সময়ের ঘুম মস্তিষ্ককে চাঙ্গা করে তোলে, কিন্তু এর বেশি হলেই আপনি গভীর ঘুমে চলে যেতে পারেন, যার ফলাফল হতে পারে ‘স্লিপ ইনর্শিয়া’—অর্থাৎ ঘুম ভেঙে উঠে আপনি বিভ্রান্ত ও ক্লান্ত বোধ করবেন।
ঘুমানোর সময়টি এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আদর্শ সময় হলো দুপুর ১টা থেকে ২টার মধ্যে, যা আমাদের দেহঘড়ির প্রাকৃতিক সচেতনতার নিম্ন পর্যায়ের সঙ্গে মিলে যায়। এই সময়ে একটুখানি ঘুম এবং পরে উজ্জ্বল আলোতে থাকা—এই দুই মিলিয়ে আপনি পুনরায় সজাগ হতে পারেন, রাতের ঘুমে ব্যাঘাত না ঘটিয়েই।
কেন কারো কারো জন্য ঘুমানো অপরিহার্য
শিফট ডিউটি করা কর্মী, ঘুমবঞ্চিত অভিভাবক এবং ক্রীড়াবিদদের জন্য স্বল্প সময়ের ঘুম এক রকম প্রয়োজন। নাসার এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২৬ মিনিটের একটি পাওয়ার ন্যাপ দীর্ঘ ফ্লাইটে কর্মরত ক্রুদের সতর্কতা ৫৪% এবং কর্মদক্ষতা ৩৪% পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়। তবে যাদের দীর্ঘমেয়াদী অনিদ্রার সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে দিনের ঘুম রাতে ঘুম আসার প্রাকৃতিক চাহিদাকে ব্যাহত করতে পারে।
যেভাবে ঘুমালে উপকার পাবেন
সবচেয়ে উপকার পেতে চাইলে, ঘুমের সময় ছোট রাখুন—আদর্শ ১০ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে—এবং দুপুর ২টার আগেই ঘুমিয়ে নিন। একটি শীতল, অন্ধকার এবং নীরব পরিবেশ রাতের ঘুমের মতো পরিবেশ সৃষ্টি করে এবং বিশ্রামের মান উন্নত করে। ব্যস্ত পরিবেশে চোখ ঢাকার মাস্ক এবং নয়েজ-ক্যান্সেলিং হেডফোন সাহায্য করতে পারে।
সব ঘুম এক নয়। সেরা ঘুম হলো সেই যা আপনাকে চাঙ্গা করে তোলে, অস্থির নয়। সঠিকভাবে হলে, একটি মধ্যাহ্নের ঘুম আপনার দিনটিকে বদলে দিতে পারে। ভুলভাবে ঘুমালে, সেটাই হতে পারে আপনি কেন রাত তিনটায়ও ঘুমাতে পারছেন না, তার কারণ।