সারাক্ষণ ডেস্ক
প্রথম আলোর একটি শিরোনাম “ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে আগ্রহী বেইজিং”
ঢাকা-বেইজিং সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফরে চীনে রয়েছেন। গতকাল শুক্রবার সকালে বেইজিংয়ে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনায় চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে পরের ধাপে নিতে কাজ করার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছেন।
গতকাল বেইজিংয়ে দুই শীর্ষ নেতার আলোচনা প্রসঙ্গে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিও তাঁর এক্সে এমন মন্তব্য করেছেন। বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলে দুই নেতার মধ্যে ঘণ্টাখানেক দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় চীনের জোরালো ভূমিকা কামনা করেছেন। অন্যদিকে সি চিন পিং বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ এবং চীনের উৎপাদন প্রতিষ্ঠান স্থানান্তরে সে দেশের উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করার আশ্বাস দিয়েছেন।
দুই শীর্ষ নেতার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে সহযোগিতার নানা বিষয়ে একটি চুক্তি ও আটটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। পাশাপাশি সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে পাঁচটি ঘোষণা এসেছে।
তিস্তা প্রকল্পে চীনের প্রতিষ্ঠানকে স্বাগত
অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে চীন স্বাগত জানিয়ে গত বছরের আগস্ট থেকে সরকারের গৃহীত সংস্কার কর্মসূচি ও অগ্রগতির প্রশংসা করেছে। একই সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এগিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানে গভীর আগ্রহ দেখিয়েছে। উভয় পক্ষ সমগ্র কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারত্ব আরও সুসংহত ও গভীর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলে যৌথ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশ ও চীন জলবিদ্যুৎ, পূর্বাভাস, বন্যা প্রতিরোধ ও দুর্যোগ হ্রাস, নদী খনন, পানিসম্পদের সমন্বিত ব্যবস্থাপনা, পানিসম্পদ উন্নয়ন এবং সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি বিনিময়ের ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করতে সম্মত হয়েছে। বেইজিংয়ের আলোচনায় দুই পক্ষ ইয়ারলুং জাংবো-যমুনা নদীর জলবিদ্যুৎ তথ্য বিনিময়সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক বাস্তবায়ন পরিকল্পনা স্বাক্ষরকে ইতিবাচকভাবে মূল্যায়ন করেছে।
দৈনিক ইত্তেফাকের একটি শিরোনাম “বড় ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে বাংলাদেশ, পূর্বাভাসের ব্যবস্থা ও প্রস্তুতি নেই”
ভারত, বার্মা ও ইউরেশিয়ান—তিনটি গতিশীল প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত বাংলাদেশ বড় মাত্রার ভূমিকম্প ঝুঁকিতে আছে। গতকাল ৭ দশমিক ৭ মাত্রার বিধ্বংসী ভূমিকম্প আঘাত হেনে লন্ডভন্ড করে দিয়েছে মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডকে। এতে অভাবনীয় ক্ষয়ক্ষতি ও অসংখ্য হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এই ভূপিকম্পের প্রভাবে ঐ দুই দেশ ছাড়াও কেঁপে উঠেছে বাংলাদেশ, ভারত, লাওস এবং চীন। বিধ্বস্ত ব্যাংককে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে একটি ৩০ তলা ভবন। ঘোষণা করা হয়েছে জরুরি অবস্থা।
ভূতত্ত্ববিদরা বলছেন, এই ভূমিকম্প যদি বাংলাদেশমুখী প্লেটে ঘটত তাহলে এমন এক ভয়াবহ পরিস্থিতির উদ্ভব হতো যা অকল্পনীয়। বাংলাদেশসহ ভারত ও মিয়ানমারের কিছু অংশ জুড়ে সুবিশাল চ্যুতি বা ফল্ট থাকায় একটি দেশে ভূমিকম্প হলে তার পাশের দেশে যে কোনো মুহূর্তে বড় ভূমিকম্প হতে পারে—এমন শঙ্কা থেকে যায়। অভিন্ন সময়ে মিয়ানমারের সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ছয়টি দেশে এই ভূমিকম্প প্রমাণ করল—বাংলাদেশ বড় ভূমিকম্প ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে তেমন কোনো পূর্বাভাসের ব্যবস্থা না থাকায় মানুষ রয়েছেন শঙ্কা-উদ্বেগ আর অনিশ্চয়তায়।
ভূতত্ত্ববিদ ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলছেন, সিলেট থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ৮ মাত্রার বেশি ভূমিকম্প সৃষ্টি হওয়া মতো শক্তি জমা হয়ে আছে। যে কোনো সময় সে শক্তি বের হয়ে আসতে পারে। এতে সিলেট ও চট্টগ্রাম ছাড়াও সব থেকে বড় বিপর্যয়ের মুখে পড়বে রাজধানী। তারা বলছেন, সব থেকে বেশি ঝুঁকিতে আছে সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগ। এরপর মাঝারি ঝুঁকিতে রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগ। আর কম ঝুঁকিতে দক্ষিণাঞ্চলের খুলনা ও বরিশাল বিভাগ।
বণিকবার্তার একটি শিরোনাম “লম্বা ছুটিতেও নিরাপত্তা শঙ্কায় ঢাকা ছাড়ছেন না অনেকেই”
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গতকাল ২৮ মার্চ থেকে আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা নয়দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। স্বজনদের সঙ্গে ঈদের লম্বা ছুটি উপভোগ করতে এবার অন্যান্যবারের চেয়ে বেশি মানুষ রাজধানী ছেড়ে যাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছিল। তবে প্রকৃত চিত্র কিছুটা ভিন্ন। এবার নিরাপত্তার শঙ্কায় ঢাকা ছাড়ছেন না অনেকেই। যদিও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ভাষ্য হলো ফাঁকা হয়ে যাওয়া রাজধানীর সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কয়েক স্তরের বলয় তৈরি করা হচ্ছে।
নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির এক হিসাব অনুযায়ী, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আনুমানিক পৌনে দুই কোটি মানুষ বৃহত্তর ঢাকা (রাজধানী, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরসহ আশপাশের এলাকা) ছাড়বে। এ বিপুলসংখ্যক মানুষের ৬০ শতাংশ যাবে সড়কপথে। বাকি ৪০ শতাংশ যাবে নৌ ও রেলপথে। সে হিসাবে, এবার সড়কপথে ঈদযাত্রীর সংখ্যা হতে পারে ১ কোটি ৪ লাখের কাছাকাছি।
তবে বাস্তব চিত্র পুরোপুরি বিপরীত। রাজধানীর অধিকাংশ বাস টার্মিনালে যাত্রীচাপ এবার অন্যান্যবারের চেয়ে কম দেখা যাচ্ছে। বাসের ভেতরে বা ছাদে টিকিটের বাইরে যাত্রী পরিবহনের ঘটনাও এবার তেমন চোখে পড়ছে না। তবে বাসে যাত্রীর চাপ তেমন না থাকলেও কমলাপুরে রেলস্টেশনে ঘরমুখো মানুষের ভিড় দেখা গেছে।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হিসাবে, প্রতিবার ঈদের আগের চারদিনে ঢাকা ছাড়ে ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ। সে অনুযায়ী এ সময় প্রতিদিন গড়ে বাড়ি ফেরে ৩০ লাখ মানুষ। কিন্তু এবার সে চাপ লক্ষ করা যাচ্ছে না। তাছাড়া অতিরিক্ত যাত্রী বহনের জন্য সড়কে ফিটনেসবিহীন ও পুরনো যেসব যানবাহন চলতে দেখা যায়, এবার সেগুলোও দেখা যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে এ ঈদে অন্যান্যবারের তুলনায় যাত্রীচাপ অনেক কম। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মতো পরিবহনসংশ্লিষ্টরাও একই কথা বলছেন। তাদের মতে, অন্যান্যবার ঈদযাত্রায় যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ সামলাতে বাড়তি গাড়ি যুক্ত করা লাগে। তবে এবারের ঈদে তেমন প্রয়োজনীয়তা তৈরি হচ্ছে না। যাত্রীদের চাপ অন্যান্য ঈদের তুলনায় অর্ধেকেরও কম। শেষ মুহূর্তে কিছু যাত্রী ঢাকা ছাড়তে পারে, তবে সে সংখ্যা খুব বেশি না।
মানবজমিনের একটি শিরোনাম “২৫ বিলিয়ন ডলার ফেরানোর মিশনে আহসান মনসুর”
২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার তীব্র বিক্ষোভের মুখে ভারতে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যদিয়ে আওয়ামী লীগের দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনের অবসান হয়। নাটকীয় এই পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে নিযুক্ত হন ড. আহসান এইচ মনসুর। হাসিনার আমলে রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক অভিজাতদের বিদেশে পাচার করা বিপুল অর্থ দেশে ফেরত আনতে জোরালো প্রচেষ্টা শুরু করেছেন তিনি।
২৮শে মার্চ ‘বাংলাদেশ আপ এগেইন্টস টাইম টু ফাইন্ড স্টোলেন বিলিয়নস: সেন্ট্রাল ব্যাংক গভর্নর’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে অনলাইন আল জাজিরা। সংবাদমাধ্যমটির ইনভেস্টিগেটিভ ইউনিটকে (আই-ইউনিট) দেয়া এক সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। সাক্ষাৎকারে আহসান মনসুর বিদেশে পাচার হওয়া বিপুল অর্থ দেশে ফেরত আনার বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য দিয়েছেন।
আল জাজিরা বলছে, বাংলাদেশের ১১টি প্রভাবশালী পরিবারকে টার্গেট করে পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রভাবশালী এসব পরিবারের বিরুদ্ধে গত এক দশক ধরে বৃটেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুরে কোটি কোটি ডলার পাচারের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। যাদের সম্পদের সন্ধানে ১১টি বিশেষজ্ঞ দলও গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রশ্নবিদ্ধ এই সম্পদের পরিমাণ আঁতকে ওঠার মতো। ১১টি পরিবারের মধ্যে একটির বিরুদ্ধেই ১৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সম্পদ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। যার মধ্যে একটি ব্যাংক থেকে প্রায় ৯০ শতাংশ আমানতই তুলে নিয়ে গেছে তারা। ফলত ব্যাংকটি প্রায় ভেঙে পড়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে।
Sarakhon Report 



















