সত্যেন্দ্রকুমার বসু
নগরহার থেকে চার-পাঁচ মাইল দূরে একটা গুহা ছিল, যেখানে বুদ্ধ নাগরাজ গোপালকে পরাজয় ক’রে নিজের ছায়া রেখে গিয়েছিলেন। ধর্মগুরু এটা দেখবার ইচ্ছা করলেন।
এই গুহায় যাওয়া বিপজ্জনক ছিল। পথে নৃশংস দস্থ্যর হাতে প্রাণহানির ভয় ছিল। সঙ্গীরা বৃথাই হিউএনচাঙকে নিরস্ত করতে চেষ্টা করলেন। তিনি বললেন, ‘লক্ষ কল্পেও একবার বুদ্ধের ছায়া দর্শন দুর্লভ। এতদূর এসে এ না দেখে কি আমি থাকতে পারি? আপনারা আস্তে আস্তে অগ্রসর হোন। আমি শীঘ্রই ফিরে আসছি।’
পথে কেবল এক বৃদ্ধ তাঁর পথপ্রদর্শক হতে রাজী হয়। অল্প কিছু দূর যাবার পর পাঁচ জন দন্য খড়গহস্তে পথরোধ করল। ধর্মগুরু মাথার টুপিখুলে তাঁর তীর্থযাত্রীর পরিচ্ছদ দেখালেন। একজন দস্য বললে, ‘গুরুদেব! আপনি কোথায় যাবেন?’
ধর্মগুরু উত্তর দিলেন, ‘আমি বুদ্ধের ছায়া দর্শন আর পূজা করতে যেতে চাই।’ দস্থ্য বলল, ‘শোনেন নি কি যে এদিকে দস্যুভয় আছে?’ সাধু জবাব দিলেন, ‘দস্যরাও তো মানুষই। আমি বুদ্ধের আরাধনা করতে যাচ্ছি। পথে যদি হিংস্র পশুও থাকে, তবু আমি নির্ভয়ে যাব। তোমাদের তো কথাই নেই। তোমাদের মনে তো দয়ার বৃত্তি আছে।’
(চলবে)
হিউএনচাঙ (পর্ব-৬০)