০৬:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
ইরান ইউরেনিয়াম সরিয়ে নিয়েছে এমন কোনো গোয়েন্দা তথ্য নেই: মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জগন্নাথ মন্দির আর প্রসাদ বিতরণ নিয়ে কেন রাজনৈতিক বিতর্ক পশ্চিমবঙ্গে? মন্দির ভাঙচুরের ঘটনা ও গঙ্গা জলচুক্তি নবায়ন নিয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন: বাংলাদেশের বড় একটি ভুল, প্রতিশোধ বনাম সংস্কার সাকিব আল হাসান: বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের এক অমর কিংবদন্তি বাংলা নাটকের সুপারস্টার অপূর্বের জন্মদিন আজ শিবসা নদী: শতবর্ষী এক প্রাণপ্রবাহ ও তার সুন্দরবনের প্রভাব ইরান যুদ্ধ ও ‘ট্রাম্প নীতি’ চীনের বহুমুখী বিশ্ব দৃষ্টিভঙ্গিকে ঘোলাটে করে দিচ্ছে আসিয়ান এখন আর কেবল বৈশ্বিক পুঁজির নীরব গ্রাহক নয় প্রতিদিন একটি রুমাল (পর্ব-১৯)

রণক্ষেত্রে (পর্ব-৩৮)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫
  • 25

আর্কাদি গাইদার

পঞ্চম পরিচ্ছেদ

এক সময় চুবুক থামলেন। তারপর তামাকের থলি বের করে পাইপটায় মাখোরকা ভরতে শুরু করলেন। লক্ষ্য করলুম, ওঁর আঙুলগুলোও অল্প-অল্প কাঁপছিল। অসম্ভব তেষ্টা নিয়ে প্রাণভরে যেন পেট ভরে জল খাচ্ছেন এমনিভাবে – তামাক টানতে লাগলেন উনি। পরে তামাকের থলিটা ফের পকেটে পুরে আমার কাঁধে কয়েকটা চাপড় দিলেন। তারপর খুব সরলভাবে হাসিখুশি-ভরা গলায় বললেন:

‘খুব অল্পের জন্যি বে’চে যাওয়া গ্যাচে, কী বল, ইয়ার? হাঁহাঁ, বরিস, কাজটা নেহাত মন্দ কর নি! যেমন করি নোকটার হাতে দাঁত বসিয়ে দিলে-না!’ ঘটনাটা মনে পড়ায় মুখ টিপে হাসলেন চুবুক। ‘সাবাস, এক্কেবারে নেকড়ের বাচ্চা! ঠিক করেচ, নড়াইয়ে রাইফেলই একমাত্তর হাতিয়ার লয়, অন্য হাতিয়ারও ব্যাভার করা চলে, বুইলে ইয়ার? তা, দাঁতও কখনো-সখনো কাজে নাগে বইকি!!

‘কিন্তু বোমাটা যে…’ অপরাধীর সুরে আমি বিড়বিড় করে বললুম, ‘সেফটি ক্যাচ লাগানো থাকতেই ছুড়তে গিয়েছিলুম।’

‘বোমটা?’ চুবুক হাসলেন। ‘আরে, ইয়ার, একা তোমারই যে ওই ভুল হয়েছিল তা কে কইল? যারা আগে কখনও বোম ছোড়ে নি এমন পেত্যেকটি নোকে পেরথম ছড়তে গেলেই গণ্ডগোল করে হয় সে সেফটি ক্যাচ নাগানো থাকতিই ছুড়ে বসে, আর লয়তো ছুড়তে গিয়ে আসল খোলটাই পলুতে থেকে খুলে পেরুখক হয়ে পড়ে। আরে, আমিও যখন ছোট ছিলাম অমন ভুল কত বার করেছি। কাজের সময়তে এমন ধোঁকায় পড়ে যেতি হয় যে বোঝাই যায় না ছাই কী করচি আর না-করচি। তখন ইটপাটকেলের মতো ধরেই ছুড়ে বসে থাকে নোকে। আরে, চলি এস। অনেকটা পথ যেতি হবে আমাদের।’

আমাদের বাহিনীর কাছে পৌঁছনো পর্যন্ত বাকি পথটা এবার আমি বেশ হালকা মন নিয়ে দুলকি চালে হে’টে গেলুম। আমার মনের অবস্থা তখন পরীক্ষার পর ইশকুলের ছাত্রের যে-অবস্থা হয় তেমনই।

যাক, সুখারেভ আর আমার সম্বন্ধে কখনও খারাপ মন্তব্য করতে পারবেন না।

বাহিনীর আশ্রয়শিবিরে পৌঁছে ভাস্কা তার অচৈতন্য বন্দীকে কম্যান্ডারের হাতে তুলে দিল। পরদিন সকালে শ্বেতরক্ষীটার জ্ঞান ফিরে এল। ওকে প্রশ্ন করে জানা গেল যে একখানা সাঁজোয়া ট্রেন সামনের রেললাইন পাহারা দিচ্ছে। ওই রেললাইনই আবার আমাদের পার হওয়ার কথা। যাক, বন্দী আরও জানাল, সামনের ছোট্ট ফ্ল্যাগস্টেশনে একটা জার্মান ব্যাটালিয়ন ঘাঁটি গেড়েছে, আর গুখোড়কায় আছে ক্যাপ্টেন জিখারেভের নেতৃত্বে একটা শ্বেতরক্ষী বাহিনীর ঘাঁটি।

 

ইরান ইউরেনিয়াম সরিয়ে নিয়েছে এমন কোনো গোয়েন্দা তথ্য নেই: মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী

রণক্ষেত্রে (পর্ব-৩৮)

০৮:০০:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

আর্কাদি গাইদার

পঞ্চম পরিচ্ছেদ

এক সময় চুবুক থামলেন। তারপর তামাকের থলি বের করে পাইপটায় মাখোরকা ভরতে শুরু করলেন। লক্ষ্য করলুম, ওঁর আঙুলগুলোও অল্প-অল্প কাঁপছিল। অসম্ভব তেষ্টা নিয়ে প্রাণভরে যেন পেট ভরে জল খাচ্ছেন এমনিভাবে – তামাক টানতে লাগলেন উনি। পরে তামাকের থলিটা ফের পকেটে পুরে আমার কাঁধে কয়েকটা চাপড় দিলেন। তারপর খুব সরলভাবে হাসিখুশি-ভরা গলায় বললেন:

‘খুব অল্পের জন্যি বে’চে যাওয়া গ্যাচে, কী বল, ইয়ার? হাঁহাঁ, বরিস, কাজটা নেহাত মন্দ কর নি! যেমন করি নোকটার হাতে দাঁত বসিয়ে দিলে-না!’ ঘটনাটা মনে পড়ায় মুখ টিপে হাসলেন চুবুক। ‘সাবাস, এক্কেবারে নেকড়ের বাচ্চা! ঠিক করেচ, নড়াইয়ে রাইফেলই একমাত্তর হাতিয়ার লয়, অন্য হাতিয়ারও ব্যাভার করা চলে, বুইলে ইয়ার? তা, দাঁতও কখনো-সখনো কাজে নাগে বইকি!!

‘কিন্তু বোমাটা যে…’ অপরাধীর সুরে আমি বিড়বিড় করে বললুম, ‘সেফটি ক্যাচ লাগানো থাকতেই ছুড়তে গিয়েছিলুম।’

‘বোমটা?’ চুবুক হাসলেন। ‘আরে, ইয়ার, একা তোমারই যে ওই ভুল হয়েছিল তা কে কইল? যারা আগে কখনও বোম ছোড়ে নি এমন পেত্যেকটি নোকে পেরথম ছড়তে গেলেই গণ্ডগোল করে হয় সে সেফটি ক্যাচ নাগানো থাকতিই ছুড়ে বসে, আর লয়তো ছুড়তে গিয়ে আসল খোলটাই পলুতে থেকে খুলে পেরুখক হয়ে পড়ে। আরে, আমিও যখন ছোট ছিলাম অমন ভুল কত বার করেছি। কাজের সময়তে এমন ধোঁকায় পড়ে যেতি হয় যে বোঝাই যায় না ছাই কী করচি আর না-করচি। তখন ইটপাটকেলের মতো ধরেই ছুড়ে বসে থাকে নোকে। আরে, চলি এস। অনেকটা পথ যেতি হবে আমাদের।’

আমাদের বাহিনীর কাছে পৌঁছনো পর্যন্ত বাকি পথটা এবার আমি বেশ হালকা মন নিয়ে দুলকি চালে হে’টে গেলুম। আমার মনের অবস্থা তখন পরীক্ষার পর ইশকুলের ছাত্রের যে-অবস্থা হয় তেমনই।

যাক, সুখারেভ আর আমার সম্বন্ধে কখনও খারাপ মন্তব্য করতে পারবেন না।

বাহিনীর আশ্রয়শিবিরে পৌঁছে ভাস্কা তার অচৈতন্য বন্দীকে কম্যান্ডারের হাতে তুলে দিল। পরদিন সকালে শ্বেতরক্ষীটার জ্ঞান ফিরে এল। ওকে প্রশ্ন করে জানা গেল যে একখানা সাঁজোয়া ট্রেন সামনের রেললাইন পাহারা দিচ্ছে। ওই রেললাইনই আবার আমাদের পার হওয়ার কথা। যাক, বন্দী আরও জানাল, সামনের ছোট্ট ফ্ল্যাগস্টেশনে একটা জার্মান ব্যাটালিয়ন ঘাঁটি গেড়েছে, আর গুখোড়কায় আছে ক্যাপ্টেন জিখারেভের নেতৃত্বে একটা শ্বেতরক্ষী বাহিনীর ঘাঁটি।