০৩:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫
ব্ল্যাক ফ্রাইডের আগেই এম৪ ম্যাকবুক এয়ারে রেকর্ড ছাড় বিশ্বের সেরা ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার স্বীকৃতি পেল সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফাকিহ হাসপাতাল সংখ্যালঘু কলেজছাত্রী শমরিয়া রানী নিখোঁজের ১৫ দিন: পরিবার ও মানবাধিকার কর্মীদের রহস্যজনক আচরণের অভিযোগ তারকাখচিত রক অ্যান্ড রোল হল অব ফেম ২০২৫, একযোগে ডিসনি প্লাসে সম্প্রচার  গুগল প্লে ও ইউটিউবের নতুন কেনা সিনেমা আর পড়বে না মুভিজ অ্যানিওয়্যারে সাহিত্য প্রচারে শারজাহের ভূমিকা: সংস্কৃতি ও জ্ঞানের সেতুবন্ধন ‘আমাদের কণ্ঠ কেউ বন্ধ করতে পারবে না’—মিস ইউনিভার্স মেক্সিকোর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণে বিশ্বজুড়ে ক্ষোভ উত্তর জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা ও রেল চলাচলে বিঘ্ন” জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিল আবুল খায়ের গ্রুপ “ওরা করলে, আমরা প্রস্তুত”: পাকিস্তানের পারমাণবিক পরীক্ষা ইস্যুতে রাজনাথ সিংয়ের হুঁশিয়ারি

রণক্ষেত্রে (পর্ব-৪৪)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫
  • 107

আর্কাদি গাইদার

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

‘আরে ও তো স্বপন সত্যি না!’ একগাল হেসে বলল ফেদিয়া সির্ত্সভ। ‘তাইলে একটা সত্যি গপ্পো কব? আমারে আর এক কাউন্টেসরে জড়িয়ে লিয়ে?

বলতে পার, ওই ঘটনা ঘটার পরেই আমি বিপ্লবের পথে পা বাড়াই। গস্পোটা যদি শোন-নাতো নিজের কানরে পয্যন্ত পেতায় যাবে না কাউর।’

গল্প শুরু করার আগে একরাশ চুলে ঝাঁকুনি দিয়ে সুখের ঘোরে চোখ দুটো কোঁচকাল ফেদিয়া। দেখে মনে হল যেন ভাঁড়ারঘরে ঢুকে চুরি করে একপেট খেয়ে বেড়াল বেরোল।

একই সঙ্গে কৌতূহল আর অবিশ্বাস-মেশানো গলায় ভাস্কা শাকভ বলল, ‘ফের মিছে কথার জাল বুচিস, ফেদিয়া?’ কিন্তু কথাটা বললেও ঘে’ষে ঘে’ষে এগিয়ে এসে বসল ও।

‘পেতায় যাবি কি যাবি নে, সে তোর খুশি। পেরমান দেবার জন্যি তো আর দলিলপত্তর দেখাতি পারব না।’

ফেদিয়া আড় ভাঙল। তারপর মাথাটা ঝাঁকাল, যেন গল্পটা বলবে কি বলবে না তাই নিয়ে মনে মনে তোলাপাড়া করল। পরে মনস্থির করেই যেন মুখে একটা শব্দ করে শুরু করল গল্প।

‘তিন বছর আগের ঘটনা। দেখতি-যে সোন্দরই ছেলাম তা না বললেও চলে।

এখনকার থেকে আরও ভালো দেখতি ছেলাম তখন। অবস্থার ফেরে এক কাউন্টের জমিদারিতে গোরুর রাখালির কাম লিতে বাধ্য হইচি তখন। কাউন্টের ইস্তিরি ছিল, তার নাম ছিল এমিলিয়া। আর এক মাস্টারনি থাকত বাড়িতে, তার নাম ছিল আন্না। সবাই তারে জানেত্ বলে ডাকত।

‘এখন, একদিন আমি পুকুরপাড়ে গোরুর পাল লিয়ে বসে আচি। তা দেখি, কাউন্টের সেই ইস্তিরি আর মাস্টারনি দু-জনে ছাতা মাথায় দিয়ে আসচে। কাউন্টেসের মাথায় ছিল শাদা ছাতা আর জানেতের মাথায় লাল ছাতা। জানেত্রে দেখতে ছিল শুকনো হেরিং মাছের মতো হাড্ডিসার, তার ওপর নাকে এট্রা চশমা চড়ানো। আবার গাঁয়ের রাস্তা দিয়ে যখন সেই মেয়েছেলে চলে ফিরে বেড়াত তখন সব সময় নাকে রোমাল চাপা দিয়ে রাখত, নইলে গোবরের গন্ধে নাকি মাথা ধরত তার। হ্যাঁ, ভালো কথা, আমার গোরুর পালে একটা ষাঁড় ছিল খাঁটি সিমেন্থাল জাতের একেবারে, ইয়া মস্ত বাহারে ষাঁড়। তা আমার সেই ষাঁড়টা যেই লাল ছাতা দেখতে পেলে অমনি সিধে গোত্তা খেয়ে ছুটল জানেতের দিকে।

আমিও পাগলের মতো আড়াআড়ি ছুটলাম ওরে আটকাতি। মেয়েলোক দুজনাও চিল্লোতে লাগল। কাউন্টেস ঢুকে পড়ল ঝোপের মধ্যি, কিন্তু জানেত জ্ঞানহারা হয়ে সিধে ঝাঁপিয়ে পড়ল পুকুরের জলে। সিমেন্‌ত্থাল-ব্যাটাও তার পিছু পিছ পুকুরে নামল। তা হাতের ছাতাটা ষাঁড়টা তখন পাগলের মতো তেড়ে এল আমার দিকি। আমি সাঁতরে পুকুরের মাঝমধ্যিখানে চলে গেলাম, তারপর ছাতাটা ছুড়ে ফেলে দিয়ে সাঁতার দিয়ে গিয়ে পুকুরের অপর পাড়ে উঠে ঝোপের মধ্যি ঢুকিয়ে পড়লাম। এর মধ্যি অন্য রাখালরা সবাই ছুটে এসে দারুণ হৈ-হল্লা শুরু করে দিলে। ষাঁড়টারে চারধার দিয়ে ঘিরে ধরলে উরা। জানেতন্ত্রেও জল থেকে টেনে তুললে। পাড়ে উঠে মেয়েলোকটা অজ্ঞানই হয়ে গেল।’

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

ব্ল্যাক ফ্রাইডের আগেই এম৪ ম্যাকবুক এয়ারে রেকর্ড ছাড়

রণক্ষেত্রে (পর্ব-৪৪)

০৮:০০:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫

আর্কাদি গাইদার

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

‘আরে ও তো স্বপন সত্যি না!’ একগাল হেসে বলল ফেদিয়া সির্ত্সভ। ‘তাইলে একটা সত্যি গপ্পো কব? আমারে আর এক কাউন্টেসরে জড়িয়ে লিয়ে?

বলতে পার, ওই ঘটনা ঘটার পরেই আমি বিপ্লবের পথে পা বাড়াই। গস্পোটা যদি শোন-নাতো নিজের কানরে পয্যন্ত পেতায় যাবে না কাউর।’

গল্প শুরু করার আগে একরাশ চুলে ঝাঁকুনি দিয়ে সুখের ঘোরে চোখ দুটো কোঁচকাল ফেদিয়া। দেখে মনে হল যেন ভাঁড়ারঘরে ঢুকে চুরি করে একপেট খেয়ে বেড়াল বেরোল।

একই সঙ্গে কৌতূহল আর অবিশ্বাস-মেশানো গলায় ভাস্কা শাকভ বলল, ‘ফের মিছে কথার জাল বুচিস, ফেদিয়া?’ কিন্তু কথাটা বললেও ঘে’ষে ঘে’ষে এগিয়ে এসে বসল ও।

‘পেতায় যাবি কি যাবি নে, সে তোর খুশি। পেরমান দেবার জন্যি তো আর দলিলপত্তর দেখাতি পারব না।’

ফেদিয়া আড় ভাঙল। তারপর মাথাটা ঝাঁকাল, যেন গল্পটা বলবে কি বলবে না তাই নিয়ে মনে মনে তোলাপাড়া করল। পরে মনস্থির করেই যেন মুখে একটা শব্দ করে শুরু করল গল্প।

‘তিন বছর আগের ঘটনা। দেখতি-যে সোন্দরই ছেলাম তা না বললেও চলে।

এখনকার থেকে আরও ভালো দেখতি ছেলাম তখন। অবস্থার ফেরে এক কাউন্টের জমিদারিতে গোরুর রাখালির কাম লিতে বাধ্য হইচি তখন। কাউন্টের ইস্তিরি ছিল, তার নাম ছিল এমিলিয়া। আর এক মাস্টারনি থাকত বাড়িতে, তার নাম ছিল আন্না। সবাই তারে জানেত্ বলে ডাকত।

‘এখন, একদিন আমি পুকুরপাড়ে গোরুর পাল লিয়ে বসে আচি। তা দেখি, কাউন্টের সেই ইস্তিরি আর মাস্টারনি দু-জনে ছাতা মাথায় দিয়ে আসচে। কাউন্টেসের মাথায় ছিল শাদা ছাতা আর জানেতের মাথায় লাল ছাতা। জানেত্রে দেখতে ছিল শুকনো হেরিং মাছের মতো হাড্ডিসার, তার ওপর নাকে এট্রা চশমা চড়ানো। আবার গাঁয়ের রাস্তা দিয়ে যখন সেই মেয়েছেলে চলে ফিরে বেড়াত তখন সব সময় নাকে রোমাল চাপা দিয়ে রাখত, নইলে গোবরের গন্ধে নাকি মাথা ধরত তার। হ্যাঁ, ভালো কথা, আমার গোরুর পালে একটা ষাঁড় ছিল খাঁটি সিমেন্থাল জাতের একেবারে, ইয়া মস্ত বাহারে ষাঁড়। তা আমার সেই ষাঁড়টা যেই লাল ছাতা দেখতে পেলে অমনি সিধে গোত্তা খেয়ে ছুটল জানেতের দিকে।

আমিও পাগলের মতো আড়াআড়ি ছুটলাম ওরে আটকাতি। মেয়েলোক দুজনাও চিল্লোতে লাগল। কাউন্টেস ঢুকে পড়ল ঝোপের মধ্যি, কিন্তু জানেত জ্ঞানহারা হয়ে সিধে ঝাঁপিয়ে পড়ল পুকুরের জলে। সিমেন্‌ত্থাল-ব্যাটাও তার পিছু পিছ পুকুরে নামল। তা হাতের ছাতাটা ষাঁড়টা তখন পাগলের মতো তেড়ে এল আমার দিকি। আমি সাঁতরে পুকুরের মাঝমধ্যিখানে চলে গেলাম, তারপর ছাতাটা ছুড়ে ফেলে দিয়ে সাঁতার দিয়ে গিয়ে পুকুরের অপর পাড়ে উঠে ঝোপের মধ্যি ঢুকিয়ে পড়লাম। এর মধ্যি অন্য রাখালরা সবাই ছুটে এসে দারুণ হৈ-হল্লা শুরু করে দিলে। ষাঁড়টারে চারধার দিয়ে ঘিরে ধরলে উরা। জানেতন্ত্রেও জল থেকে টেনে তুললে। পাড়ে উঠে মেয়েলোকটা অজ্ঞানই হয়ে গেল।’