০৫:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
ইরান ইউরেনিয়াম সরিয়ে নিয়েছে এমন কোনো গোয়েন্দা তথ্য নেই: মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জগন্নাথ মন্দির আর প্রসাদ বিতরণ নিয়ে কেন রাজনৈতিক বিতর্ক পশ্চিমবঙ্গে? মন্দির ভাঙচুরের ঘটনা ও গঙ্গা জলচুক্তি নবায়ন নিয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন: বাংলাদেশের বড় একটি ভুল, প্রতিশোধ বনাম সংস্কার সাকিব আল হাসান: বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের এক অমর কিংবদন্তি বাংলা নাটকের সুপারস্টার অপূর্বের জন্মদিন আজ শিবসা নদী: শতবর্ষী এক প্রাণপ্রবাহ ও তার সুন্দরবনের প্রভাব ইরান যুদ্ধ ও ‘ট্রাম্প নীতি’ চীনের বহুমুখী বিশ্ব দৃষ্টিভঙ্গিকে ঘোলাটে করে দিচ্ছে আসিয়ান এখন আর কেবল বৈশ্বিক পুঁজির নীরব গ্রাহক নয় প্রতিদিন একটি রুমাল (পর্ব-১৯)

রণক্ষেত্রে (পর্ব-৪৪)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫
  • 32

আর্কাদি গাইদার

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

‘আরে ও তো স্বপন সত্যি না!’ একগাল হেসে বলল ফেদিয়া সির্ত্সভ। ‘তাইলে একটা সত্যি গপ্পো কব? আমারে আর এক কাউন্টেসরে জড়িয়ে লিয়ে?

বলতে পার, ওই ঘটনা ঘটার পরেই আমি বিপ্লবের পথে পা বাড়াই। গস্পোটা যদি শোন-নাতো নিজের কানরে পয্যন্ত পেতায় যাবে না কাউর।’

গল্প শুরু করার আগে একরাশ চুলে ঝাঁকুনি দিয়ে সুখের ঘোরে চোখ দুটো কোঁচকাল ফেদিয়া। দেখে মনে হল যেন ভাঁড়ারঘরে ঢুকে চুরি করে একপেট খেয়ে বেড়াল বেরোল।

একই সঙ্গে কৌতূহল আর অবিশ্বাস-মেশানো গলায় ভাস্কা শাকভ বলল, ‘ফের মিছে কথার জাল বুচিস, ফেদিয়া?’ কিন্তু কথাটা বললেও ঘে’ষে ঘে’ষে এগিয়ে এসে বসল ও।

‘পেতায় যাবি কি যাবি নে, সে তোর খুশি। পেরমান দেবার জন্যি তো আর দলিলপত্তর দেখাতি পারব না।’

ফেদিয়া আড় ভাঙল। তারপর মাথাটা ঝাঁকাল, যেন গল্পটা বলবে কি বলবে না তাই নিয়ে মনে মনে তোলাপাড়া করল। পরে মনস্থির করেই যেন মুখে একটা শব্দ করে শুরু করল গল্প।

‘তিন বছর আগের ঘটনা। দেখতি-যে সোন্দরই ছেলাম তা না বললেও চলে।

এখনকার থেকে আরও ভালো দেখতি ছেলাম তখন। অবস্থার ফেরে এক কাউন্টের জমিদারিতে গোরুর রাখালির কাম লিতে বাধ্য হইচি তখন। কাউন্টের ইস্তিরি ছিল, তার নাম ছিল এমিলিয়া। আর এক মাস্টারনি থাকত বাড়িতে, তার নাম ছিল আন্না। সবাই তারে জানেত্ বলে ডাকত।

‘এখন, একদিন আমি পুকুরপাড়ে গোরুর পাল লিয়ে বসে আচি। তা দেখি, কাউন্টের সেই ইস্তিরি আর মাস্টারনি দু-জনে ছাতা মাথায় দিয়ে আসচে। কাউন্টেসের মাথায় ছিল শাদা ছাতা আর জানেতের মাথায় লাল ছাতা। জানেত্রে দেখতে ছিল শুকনো হেরিং মাছের মতো হাড্ডিসার, তার ওপর নাকে এট্রা চশমা চড়ানো। আবার গাঁয়ের রাস্তা দিয়ে যখন সেই মেয়েছেলে চলে ফিরে বেড়াত তখন সব সময় নাকে রোমাল চাপা দিয়ে রাখত, নইলে গোবরের গন্ধে নাকি মাথা ধরত তার। হ্যাঁ, ভালো কথা, আমার গোরুর পালে একটা ষাঁড় ছিল খাঁটি সিমেন্থাল জাতের একেবারে, ইয়া মস্ত বাহারে ষাঁড়। তা আমার সেই ষাঁড়টা যেই লাল ছাতা দেখতে পেলে অমনি সিধে গোত্তা খেয়ে ছুটল জানেতের দিকে।

আমিও পাগলের মতো আড়াআড়ি ছুটলাম ওরে আটকাতি। মেয়েলোক দুজনাও চিল্লোতে লাগল। কাউন্টেস ঢুকে পড়ল ঝোপের মধ্যি, কিন্তু জানেত জ্ঞানহারা হয়ে সিধে ঝাঁপিয়ে পড়ল পুকুরের জলে। সিমেন্‌ত্থাল-ব্যাটাও তার পিছু পিছ পুকুরে নামল। তা হাতের ছাতাটা ষাঁড়টা তখন পাগলের মতো তেড়ে এল আমার দিকি। আমি সাঁতরে পুকুরের মাঝমধ্যিখানে চলে গেলাম, তারপর ছাতাটা ছুড়ে ফেলে দিয়ে সাঁতার দিয়ে গিয়ে পুকুরের অপর পাড়ে উঠে ঝোপের মধ্যি ঢুকিয়ে পড়লাম। এর মধ্যি অন্য রাখালরা সবাই ছুটে এসে দারুণ হৈ-হল্লা শুরু করে দিলে। ষাঁড়টারে চারধার দিয়ে ঘিরে ধরলে উরা। জানেতন্ত্রেও জল থেকে টেনে তুললে। পাড়ে উঠে মেয়েলোকটা অজ্ঞানই হয়ে গেল।’

 

 

ইরান ইউরেনিয়াম সরিয়ে নিয়েছে এমন কোনো গোয়েন্দা তথ্য নেই: মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী

রণক্ষেত্রে (পর্ব-৪৪)

০৮:০০:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫

আর্কাদি গাইদার

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

‘আরে ও তো স্বপন সত্যি না!’ একগাল হেসে বলল ফেদিয়া সির্ত্সভ। ‘তাইলে একটা সত্যি গপ্পো কব? আমারে আর এক কাউন্টেসরে জড়িয়ে লিয়ে?

বলতে পার, ওই ঘটনা ঘটার পরেই আমি বিপ্লবের পথে পা বাড়াই। গস্পোটা যদি শোন-নাতো নিজের কানরে পয্যন্ত পেতায় যাবে না কাউর।’

গল্প শুরু করার আগে একরাশ চুলে ঝাঁকুনি দিয়ে সুখের ঘোরে চোখ দুটো কোঁচকাল ফেদিয়া। দেখে মনে হল যেন ভাঁড়ারঘরে ঢুকে চুরি করে একপেট খেয়ে বেড়াল বেরোল।

একই সঙ্গে কৌতূহল আর অবিশ্বাস-মেশানো গলায় ভাস্কা শাকভ বলল, ‘ফের মিছে কথার জাল বুচিস, ফেদিয়া?’ কিন্তু কথাটা বললেও ঘে’ষে ঘে’ষে এগিয়ে এসে বসল ও।

‘পেতায় যাবি কি যাবি নে, সে তোর খুশি। পেরমান দেবার জন্যি তো আর দলিলপত্তর দেখাতি পারব না।’

ফেদিয়া আড় ভাঙল। তারপর মাথাটা ঝাঁকাল, যেন গল্পটা বলবে কি বলবে না তাই নিয়ে মনে মনে তোলাপাড়া করল। পরে মনস্থির করেই যেন মুখে একটা শব্দ করে শুরু করল গল্প।

‘তিন বছর আগের ঘটনা। দেখতি-যে সোন্দরই ছেলাম তা না বললেও চলে।

এখনকার থেকে আরও ভালো দেখতি ছেলাম তখন। অবস্থার ফেরে এক কাউন্টের জমিদারিতে গোরুর রাখালির কাম লিতে বাধ্য হইচি তখন। কাউন্টের ইস্তিরি ছিল, তার নাম ছিল এমিলিয়া। আর এক মাস্টারনি থাকত বাড়িতে, তার নাম ছিল আন্না। সবাই তারে জানেত্ বলে ডাকত।

‘এখন, একদিন আমি পুকুরপাড়ে গোরুর পাল লিয়ে বসে আচি। তা দেখি, কাউন্টের সেই ইস্তিরি আর মাস্টারনি দু-জনে ছাতা মাথায় দিয়ে আসচে। কাউন্টেসের মাথায় ছিল শাদা ছাতা আর জানেতের মাথায় লাল ছাতা। জানেত্রে দেখতে ছিল শুকনো হেরিং মাছের মতো হাড্ডিসার, তার ওপর নাকে এট্রা চশমা চড়ানো। আবার গাঁয়ের রাস্তা দিয়ে যখন সেই মেয়েছেলে চলে ফিরে বেড়াত তখন সব সময় নাকে রোমাল চাপা দিয়ে রাখত, নইলে গোবরের গন্ধে নাকি মাথা ধরত তার। হ্যাঁ, ভালো কথা, আমার গোরুর পালে একটা ষাঁড় ছিল খাঁটি সিমেন্থাল জাতের একেবারে, ইয়া মস্ত বাহারে ষাঁড়। তা আমার সেই ষাঁড়টা যেই লাল ছাতা দেখতে পেলে অমনি সিধে গোত্তা খেয়ে ছুটল জানেতের দিকে।

আমিও পাগলের মতো আড়াআড়ি ছুটলাম ওরে আটকাতি। মেয়েলোক দুজনাও চিল্লোতে লাগল। কাউন্টেস ঢুকে পড়ল ঝোপের মধ্যি, কিন্তু জানেত জ্ঞানহারা হয়ে সিধে ঝাঁপিয়ে পড়ল পুকুরের জলে। সিমেন্‌ত্থাল-ব্যাটাও তার পিছু পিছ পুকুরে নামল। তা হাতের ছাতাটা ষাঁড়টা তখন পাগলের মতো তেড়ে এল আমার দিকি। আমি সাঁতরে পুকুরের মাঝমধ্যিখানে চলে গেলাম, তারপর ছাতাটা ছুড়ে ফেলে দিয়ে সাঁতার দিয়ে গিয়ে পুকুরের অপর পাড়ে উঠে ঝোপের মধ্যি ঢুকিয়ে পড়লাম। এর মধ্যি অন্য রাখালরা সবাই ছুটে এসে দারুণ হৈ-হল্লা শুরু করে দিলে। ষাঁড়টারে চারধার দিয়ে ঘিরে ধরলে উরা। জানেতন্ত্রেও জল থেকে টেনে তুললে। পাড়ে উঠে মেয়েলোকটা অজ্ঞানই হয়ে গেল।’