১১:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
ছুটিতে পরিবারের প্রযুক্তি ঝামেলা কমানোর সহজ কৌশল চীনের প্রযুক্তি উত্থান, অর্থনীতির ভেতরে গভীর ফাটল বাংলাদেশ ব্যাংকে অগ্নি নিরাপত্তা জোরদার, ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবিগঞ্জের মাধবপুরে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু পরিবারের জমি দখলের অভিযোগ নতুন ড্রোন মডেলে নিষেধাজ্ঞা আরও কড়াকড়ি যুক্তরাষ্ট্রে, তালিকায় ডিজেআইসহ সব বিদেশি ড্রোন জবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন: নারী-বান্ধব ক্যাম্পাস গড়তে জেসিডির ১৩ দফা ইশতেহার ক্রীড়াপ্রেমী প্রকৌশলী মাসুদ হাসান জামালীর ইন্তেকাল বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্কে রাজনীতির ঊর্ধ্বে বাণিজ্যকে গুরুত্ব দিচ্ছে ঢাকা: ড. সালেহউদ্দিন হাতিয়ায় চর দখল নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, প্রাণ গেল পাঁচজনের রমজান সামনে রেখে ভারত ও পাকিস্তান থেকে এক লাখ টন চাল আমদানির অনুমোদন সরকারের

যুদ্ধ থামাও

  • Sarakhon Report
  • ০৫:০০:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫
  • 196

সারাক্ষণ রিপোর্ট

ইসরায়েলের নতুন গাজা পরিকল্পনা
ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা ৫মে গাজার জন্য একটি চূড়ান্ত” সামরিক রূপরেখা অনুমোদন করেছে। এতে লক্ষাধিক রিজার্ভ সেনা মোতায়েনঅংশভূমি পুনর্দখল এবং ভবন ধ্বংসের ঘোষণা রয়েছে। ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণের একটি সরু অংশে ঠেলে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে ২মার্চ থেকে চলা অবরোধের মধ্যে সীমিত ত্রাণ প্রবেশ করবেমার্কিন ভাড়াটে নিরাপত্তারক্ষীর পাহারায় স্থাপিত কেন্দ্রে পরিবারগুলো পাক্ষিক খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সংগ্রহ করবে।

মোট বিজয়’—বিনিয়ামিন নেতানিয়াহুর এই ১৮মাসের অঙ্গীকার পূরণে পরিকল্পনার প্রবক্তাদের দাবিমাত্র কয়েক মাসেই হামাসের শেষ চিহ্ন মুছে যাবেজঙ্গিরা জমি ও খাদ্য হারাবেগাজাবাসীও তাদের ভয় করবে না।

কেন সমালোচনা বাড়ছে
প্রথমতপরিকল্পনা জিম্মিদের ফেরাতে সহায়ক নয়। বহু রিজার্ভ সেনাই হাজির হচ্ছেন নাজরিপে ৬০শতাংশ ইসরায়েলি গাজা পুনর্দখলের বিপক্ষে। হামাসের কেন্দ্র ও রকেট শক্তি আগেই ভেঙে পড়েছেবেঁচে আছে বিক্ষিপ্ত গেরিলাযাদের দমন কঠিন ও লাভজনক নয়।

মানবিক বিপর্যয় ও নৈতিক প্রশ্ন
মার্চের পর থেকে আরও দুহাজারের বেশি গাজাবাসী প্রাণ হারিয়েছেনমোট মৃতের সংখ্যা ৫২হাজার। অবরোধে খাদ্যাভাব চরমেনতুন ত্রাণ ব্যবস্থায় অসুস্থ বা চলাফেরা‑অক্ষম মানুষের জন্য কোনো সরাসরি সহায়তা নেই। উপকৃত কেবল নেতানিয়াহু সরকারজোট টিকছেআর কট্টর ডানপন্থীর স্বপ্ন গাজা খালি করে সেখানে ইহুদি বসতি গড়া। ২৫শতাংশ জমিতে ২০লক্ষ মানুষকে ঠেলে দেওয়া এক প্রকার জাতিগত নির্মূলের আশঙ্কা উস্কে দেয়।

খাদ্যকে হাতিয়ার না করার আহ্বান
খাদ্য-ত্রাণ কখনোই চাপ সৃষ্টির অস্ত্র হতে পারে না। ইসরায়েলের উচিত পূর্ণাঙ্গ ত্রাণ প্রবেশ ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পরিচালনায় বাধা না দেওয়া। কিছু মালামাল হামাসের হাতে গেলে তা দুর্ভাগ্যজনকতবে বিকল্প হলো দুর্ভিক্ষ।

যুক্তরাষ্ট্রের দায়িত্ব ও সম্ভাব্য পদক্ষেপ
স্থায়ী যুদ্ধবিরতির সময় এসেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পকে উচিতসমস্ত জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে নেতানিয়াহুকে যুদ্ধবিরতিতে বাধ্য করা। বিদেশনীতি‑জয়ের খোঁজে থাকা ট্রাম্প আগামী সপ্তাহে উপসাগর সফরে আরব নেতাদের কাছ থেকে সমর্থন পেতে পারেন।

দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের রূপরেখা
এর পর আমেরিকা হামাসের ওপর চাপ বাড়াতে পারে পুনর্গঠন‑তহবিল আটকে রেখে। জাতিসংঘের হিসাব: দশ বছরে গাজা পুনর্গঠনে ৫৩বিলিয়ন ডলার লাগবে। শর্ত স্পষ্টহামাস ক্ষমতা ছাড়বে ও নিরস্ত্র হবেনইলে একটি ডলারও জুটবে না। দাতারা প্রায় সবাই এই অবস্থানে একমত। হামাস আপত্তি জানালে তারই জনগণ প্রতিবাদে রাস্তায় নামবেইতিমধ্যে হাজারো গাজাবাসী তাদের বিদায় দাবিতে মিছিল করছে। হামাস আবার বড় হুমকি হয়ে উঠলেইসরায়েলের স্বরাষ্ট্রীয় প্রতিরক্ষার অধিকার অক্ষুণ্ন থাকবে।

চলমান যুদ্ধের ফলাফলের ঝুঁকি
বর্তমান পথে অগ্রসর হওয়া আরও ভয়াবহ: গোলায় ও অনাহারে গাজাবাসীর মৃত্যু বাড়বেজিম্মিরাও বাঁচবে নাইসরায়েলে অভ্যন্তরীণ বিভাজন গভীর হবেবৈশ্বিক সমর্থন ক্ষয় হবে। গাজা পুনর্দখল ও জনশূন্য করার প্রয়াস সামরিক ভুলের পাশাপাশি নৈতিক কলঙ্কও ডেকে আনবে। এখনই যুদ্ধ থামানোর মধ্যেই ইসরায়েলফিলিস্তিন এবং অঞ্চলের দীর্ঘমেয়াদী স্বার্থ নিহিত।

জনপ্রিয় সংবাদ

ছুটিতে পরিবারের প্রযুক্তি ঝামেলা কমানোর সহজ কৌশল

যুদ্ধ থামাও

০৫:০০:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

ইসরায়েলের নতুন গাজা পরিকল্পনা
ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা ৫মে গাজার জন্য একটি চূড়ান্ত” সামরিক রূপরেখা অনুমোদন করেছে। এতে লক্ষাধিক রিজার্ভ সেনা মোতায়েনঅংশভূমি পুনর্দখল এবং ভবন ধ্বংসের ঘোষণা রয়েছে। ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণের একটি সরু অংশে ঠেলে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে ২মার্চ থেকে চলা অবরোধের মধ্যে সীমিত ত্রাণ প্রবেশ করবেমার্কিন ভাড়াটে নিরাপত্তারক্ষীর পাহারায় স্থাপিত কেন্দ্রে পরিবারগুলো পাক্ষিক খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সংগ্রহ করবে।

মোট বিজয়’—বিনিয়ামিন নেতানিয়াহুর এই ১৮মাসের অঙ্গীকার পূরণে পরিকল্পনার প্রবক্তাদের দাবিমাত্র কয়েক মাসেই হামাসের শেষ চিহ্ন মুছে যাবেজঙ্গিরা জমি ও খাদ্য হারাবেগাজাবাসীও তাদের ভয় করবে না।

কেন সমালোচনা বাড়ছে
প্রথমতপরিকল্পনা জিম্মিদের ফেরাতে সহায়ক নয়। বহু রিজার্ভ সেনাই হাজির হচ্ছেন নাজরিপে ৬০শতাংশ ইসরায়েলি গাজা পুনর্দখলের বিপক্ষে। হামাসের কেন্দ্র ও রকেট শক্তি আগেই ভেঙে পড়েছেবেঁচে আছে বিক্ষিপ্ত গেরিলাযাদের দমন কঠিন ও লাভজনক নয়।

মানবিক বিপর্যয় ও নৈতিক প্রশ্ন
মার্চের পর থেকে আরও দুহাজারের বেশি গাজাবাসী প্রাণ হারিয়েছেনমোট মৃতের সংখ্যা ৫২হাজার। অবরোধে খাদ্যাভাব চরমেনতুন ত্রাণ ব্যবস্থায় অসুস্থ বা চলাফেরা‑অক্ষম মানুষের জন্য কোনো সরাসরি সহায়তা নেই। উপকৃত কেবল নেতানিয়াহু সরকারজোট টিকছেআর কট্টর ডানপন্থীর স্বপ্ন গাজা খালি করে সেখানে ইহুদি বসতি গড়া। ২৫শতাংশ জমিতে ২০লক্ষ মানুষকে ঠেলে দেওয়া এক প্রকার জাতিগত নির্মূলের আশঙ্কা উস্কে দেয়।

খাদ্যকে হাতিয়ার না করার আহ্বান
খাদ্য-ত্রাণ কখনোই চাপ সৃষ্টির অস্ত্র হতে পারে না। ইসরায়েলের উচিত পূর্ণাঙ্গ ত্রাণ প্রবেশ ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পরিচালনায় বাধা না দেওয়া। কিছু মালামাল হামাসের হাতে গেলে তা দুর্ভাগ্যজনকতবে বিকল্প হলো দুর্ভিক্ষ।

যুক্তরাষ্ট্রের দায়িত্ব ও সম্ভাব্য পদক্ষেপ
স্থায়ী যুদ্ধবিরতির সময় এসেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পকে উচিতসমস্ত জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে নেতানিয়াহুকে যুদ্ধবিরতিতে বাধ্য করা। বিদেশনীতি‑জয়ের খোঁজে থাকা ট্রাম্প আগামী সপ্তাহে উপসাগর সফরে আরব নেতাদের কাছ থেকে সমর্থন পেতে পারেন।

দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের রূপরেখা
এর পর আমেরিকা হামাসের ওপর চাপ বাড়াতে পারে পুনর্গঠন‑তহবিল আটকে রেখে। জাতিসংঘের হিসাব: দশ বছরে গাজা পুনর্গঠনে ৫৩বিলিয়ন ডলার লাগবে। শর্ত স্পষ্টহামাস ক্ষমতা ছাড়বে ও নিরস্ত্র হবেনইলে একটি ডলারও জুটবে না। দাতারা প্রায় সবাই এই অবস্থানে একমত। হামাস আপত্তি জানালে তারই জনগণ প্রতিবাদে রাস্তায় নামবেইতিমধ্যে হাজারো গাজাবাসী তাদের বিদায় দাবিতে মিছিল করছে। হামাস আবার বড় হুমকি হয়ে উঠলেইসরায়েলের স্বরাষ্ট্রীয় প্রতিরক্ষার অধিকার অক্ষুণ্ন থাকবে।

চলমান যুদ্ধের ফলাফলের ঝুঁকি
বর্তমান পথে অগ্রসর হওয়া আরও ভয়াবহ: গোলায় ও অনাহারে গাজাবাসীর মৃত্যু বাড়বেজিম্মিরাও বাঁচবে নাইসরায়েলে অভ্যন্তরীণ বিভাজন গভীর হবেবৈশ্বিক সমর্থন ক্ষয় হবে। গাজা পুনর্দখল ও জনশূন্য করার প্রয়াস সামরিক ভুলের পাশাপাশি নৈতিক কলঙ্কও ডেকে আনবে। এখনই যুদ্ধ থামানোর মধ্যেই ইসরায়েলফিলিস্তিন এবং অঞ্চলের দীর্ঘমেয়াদী স্বার্থ নিহিত।