০৫:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
চীনে অবিবাহিত সন্তানদের জন্য পাত্র-পাত্রীর খোঁজে প্রবীণদের ভিড়—‘বিবাহবাজার’ হয়ে উঠেছে পার্ক নাসার সঙ্গে স্পেসএক্সের চাঁদ মিশনে অনিশ্চয়তা—এলন মাস্কের তীব্র আক্রমণ শন ডাফির বিরুদ্ধে কেভিন পার্কারের নতুন অ্যালবাম ‘ডেডবিট’: প্রযুক্তিগত পরিপূর্ণতায় হারিয়ে যাওয়া মানবিক স্পর্শ বিএনপি, জামায়াতের চোখে বিতর্কিত উপদেষ্টা কারা মোহাম্মদপুরে ভয় ও অনিশ্চয়তার ছায়া—এক বছরে বেড়েছে বোমা বিস্ফোরণ, গ্যাং সহিংসতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ধানের শীষে ভোট দিন’ -তালিমুদ্দিন মাদ্রাসা মাঠে জনসভায় বিএনপি নেতা কাজী গনি চৌধুরীর বক্তব্য দুর্যোগ ও জরুরি পরিস্থিতিতে সহজলভ্য মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা নিশ্চিতের তাগিদ বিশেষজ্ঞদের বাংলাদেশে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন জরুরি—জার্মান রাষ্ট্রদূত রুডিগার লোটজ জুলাই সনদকে নির্বাহী আদেশে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান—সালাহউদ্দিনের বক্তব্যে আইনি প্রক্রিয়ার গুরুত্বের ওপর জোর মেধাভিত্তিক ইনক্রিমেন্ট ফের চালু—যোগ্য কর্মকর্তাদের প্রণোদনা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক

এশিয়ায় আইপিও বাজারে ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব

  • Sarakhon Report
  • ০৬:০০:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
  • 149

সারাক্ষণ রিপোর্ট

বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য যুদ্ধের ফলে এশিয়ার আইপিও বাজারে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক অনিশ্চয়তা। বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্প্রতি আরোপিত শুল্কনীতি ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ে উত্তেজনার কারণে বিনিয়োগকারীরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এর প্রভাবে এশিয়ার বহু কোম্পানি শেয়ারবাজারে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) ছাড়ার পরিকল্পনা স্থগিত করেছে বা ধীরগতিতে এগোচ্ছে।

বাজারের অনিশ্চয়তায় বিনিয়োগকারীদের আগ্রহে ভাটা
এ বছরের প্রথম তিন মাসে এশিয়ার আইপিও বাজার মোটামুটি স্থিতিশীল থাকলেও এপ্রিল থেকে পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টে যায়। ট্রাম্প প্রশাসন পারস্পরিক‘ শুল্কনীতি ঘোষণা করলে বাজারে ভয় ছড়িয়ে পড়ে। হংকংয়ের এমার ক্যাপিটাল পার্টনার্সের প্রধান নির্বাহী মনীষী রায়চৌধুরী বলেন, “বছরের প্রথম প্রান্তিকে আইপিও নিয়ে উৎসাহ ছিলকিন্তু বাজার ট্রাম্প প্রশাসনের পরিকল্পনার গভীরতা বুঝতে পারেনি। এখন বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকি নিতে চাইছেন নাফলে কোম্পানিগুলোও আইপিও ছাড়তে আগ্রহী হচ্ছে না।”

আঞ্চলিক তারতম্য ও বিভিন্ন দেশের পরিস্থিতি
এশিয়া-প্যাসিফিকে প্রথম প্রান্তিকে সবচেয়ে বেশি আইপিও হয়েছিল হংকং ও দক্ষিণ কোরিয়ায়। কিন্তু জাপানভারত এবং আসিয়ান অঞ্চলে আইপিও কমেছিল। বর্তমানে মালয়েশিয়াভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডে উচ্চ শুল্কের (২৪%) আশঙ্কায় কোম্পানিগুলো বেশি চাপের মুখে রয়েছে। সিঙ্গাপুর তুলনামূলক ভালো অবস্থানে রয়েছেকারণ দেশটিতে মাত্র ১০% শুল্ক আরোপের কথা রয়েছে।

ডেলয়েট মালয়েশিয়ার পার্টনার ওং কার চুন বলেন, “মালয়েশিয়ায় বিনিয়োগকারীরা উচ্চ ঝুঁকির পরিবর্তে নিরাপদ বিনিয়োগে ঝুঁকছেন। বিশেষত রপ্তানি নির্ভর কোম্পানিগুলো সরবরাহ শৃঙ্খল ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কায় আইপিও পরিকল্পনা পিছিয়ে দিচ্ছে।”

হংকংয়ের সম্ভাবনা: প্রযুক্তি খাতের সম্ভাব্য পুনরুদ্ধার
এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় হংকংয়ে আইপিও বাজার কিছুটা আশাব্যঞ্জক। কেপিএমজির লুইস লাউ জানানবর্তমানে হংকংয়ে আইপিওর জন্য আবেদনকারী কোম্পানির সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় ৩৮ শতাংশ বেড়েছে। চীনের সরকারি ফান্ডের সমর্থনে প্রযুক্তি খাতের কোম্পানিগুলো হংকংয়ের বাজারকে চাঙ্গা রাখতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি।

সম্প্রতি বেইজিংও বেসরকারি ও প্রযুক্তি খাতের কোম্পানিগুলোকে সহায়তার জন্য নীতিমালা ঘোষণা করেছে। হংকং স্টক এক্সচেঞ্জ আইপিওর নিয়মাবলি কিছুটা শিথিল করেছে এবং প্রযুক্তিভিত্তিক কোম্পানিগুলোকে আলাদা সুবিধা দিচ্ছে। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে মার্কিন-চীন বাণিজ্য যুদ্ধের সময়ও হংকংয়ে আইপিও বৃদ্ধি পেয়েছিলযার মধ্যে আলিবাবার মতো বড় কোম্পানিরাও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা ও বিনিয়োগকারীদের অবস্থান
বিশ্লেষকরা বলছেনসাময়িক অস্থিরতা থাকলেও দীর্ঘমেয়াদে আইপিও বাজার আবারও চাঙ্গা হবে। ডেলয়েট দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নেতা টে হুই লিং জানান, “ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ও ভেঞ্চার ক্যাপিটালগুলো কোম্পানিগুলোকে অর্থায়ন করলেও তারা শেষ পর্যন্ত বাজারে প্রবেশের মাধ্যমে লাভ নিশ্চিত করতে চাইবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আইপিও বাজার পুনরায় সক্রিয় হবে।”

সামগ্রিকভাবে দেখা যাচ্ছেমার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট অস্থিরতা বর্তমানে এশিয়ার আইপিও বাজারে চাপ সৃষ্টি করলেওহংকং ও সিঙ্গাপুরের মতো কয়েকটি দেশ পরিস্থিতি সামলে উঠতে সক্ষম হতে পারে। অন্যদিকে মালয়েশিয়া ও ভিয়েতনামের মতো দেশে চাপ আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

চীনে অবিবাহিত সন্তানদের জন্য পাত্র-পাত্রীর খোঁজে প্রবীণদের ভিড়—‘বিবাহবাজার’ হয়ে উঠেছে পার্ক

এশিয়ায় আইপিও বাজারে ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব

০৬:০০:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য যুদ্ধের ফলে এশিয়ার আইপিও বাজারে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক অনিশ্চয়তা। বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্প্রতি আরোপিত শুল্কনীতি ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ে উত্তেজনার কারণে বিনিয়োগকারীরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এর প্রভাবে এশিয়ার বহু কোম্পানি শেয়ারবাজারে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) ছাড়ার পরিকল্পনা স্থগিত করেছে বা ধীরগতিতে এগোচ্ছে।

বাজারের অনিশ্চয়তায় বিনিয়োগকারীদের আগ্রহে ভাটা
এ বছরের প্রথম তিন মাসে এশিয়ার আইপিও বাজার মোটামুটি স্থিতিশীল থাকলেও এপ্রিল থেকে পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টে যায়। ট্রাম্প প্রশাসন পারস্পরিক‘ শুল্কনীতি ঘোষণা করলে বাজারে ভয় ছড়িয়ে পড়ে। হংকংয়ের এমার ক্যাপিটাল পার্টনার্সের প্রধান নির্বাহী মনীষী রায়চৌধুরী বলেন, “বছরের প্রথম প্রান্তিকে আইপিও নিয়ে উৎসাহ ছিলকিন্তু বাজার ট্রাম্প প্রশাসনের পরিকল্পনার গভীরতা বুঝতে পারেনি। এখন বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকি নিতে চাইছেন নাফলে কোম্পানিগুলোও আইপিও ছাড়তে আগ্রহী হচ্ছে না।”

আঞ্চলিক তারতম্য ও বিভিন্ন দেশের পরিস্থিতি
এশিয়া-প্যাসিফিকে প্রথম প্রান্তিকে সবচেয়ে বেশি আইপিও হয়েছিল হংকং ও দক্ষিণ কোরিয়ায়। কিন্তু জাপানভারত এবং আসিয়ান অঞ্চলে আইপিও কমেছিল। বর্তমানে মালয়েশিয়াভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডে উচ্চ শুল্কের (২৪%) আশঙ্কায় কোম্পানিগুলো বেশি চাপের মুখে রয়েছে। সিঙ্গাপুর তুলনামূলক ভালো অবস্থানে রয়েছেকারণ দেশটিতে মাত্র ১০% শুল্ক আরোপের কথা রয়েছে।

ডেলয়েট মালয়েশিয়ার পার্টনার ওং কার চুন বলেন, “মালয়েশিয়ায় বিনিয়োগকারীরা উচ্চ ঝুঁকির পরিবর্তে নিরাপদ বিনিয়োগে ঝুঁকছেন। বিশেষত রপ্তানি নির্ভর কোম্পানিগুলো সরবরাহ শৃঙ্খল ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কায় আইপিও পরিকল্পনা পিছিয়ে দিচ্ছে।”

হংকংয়ের সম্ভাবনা: প্রযুক্তি খাতের সম্ভাব্য পুনরুদ্ধার
এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় হংকংয়ে আইপিও বাজার কিছুটা আশাব্যঞ্জক। কেপিএমজির লুইস লাউ জানানবর্তমানে হংকংয়ে আইপিওর জন্য আবেদনকারী কোম্পানির সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় ৩৮ শতাংশ বেড়েছে। চীনের সরকারি ফান্ডের সমর্থনে প্রযুক্তি খাতের কোম্পানিগুলো হংকংয়ের বাজারকে চাঙ্গা রাখতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি।

সম্প্রতি বেইজিংও বেসরকারি ও প্রযুক্তি খাতের কোম্পানিগুলোকে সহায়তার জন্য নীতিমালা ঘোষণা করেছে। হংকং স্টক এক্সচেঞ্জ আইপিওর নিয়মাবলি কিছুটা শিথিল করেছে এবং প্রযুক্তিভিত্তিক কোম্পানিগুলোকে আলাদা সুবিধা দিচ্ছে। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে মার্কিন-চীন বাণিজ্য যুদ্ধের সময়ও হংকংয়ে আইপিও বৃদ্ধি পেয়েছিলযার মধ্যে আলিবাবার মতো বড় কোম্পানিরাও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা ও বিনিয়োগকারীদের অবস্থান
বিশ্লেষকরা বলছেনসাময়িক অস্থিরতা থাকলেও দীর্ঘমেয়াদে আইপিও বাজার আবারও চাঙ্গা হবে। ডেলয়েট দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নেতা টে হুই লিং জানান, “ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ও ভেঞ্চার ক্যাপিটালগুলো কোম্পানিগুলোকে অর্থায়ন করলেও তারা শেষ পর্যন্ত বাজারে প্রবেশের মাধ্যমে লাভ নিশ্চিত করতে চাইবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আইপিও বাজার পুনরায় সক্রিয় হবে।”

সামগ্রিকভাবে দেখা যাচ্ছেমার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট অস্থিরতা বর্তমানে এশিয়ার আইপিও বাজারে চাপ সৃষ্টি করলেওহংকং ও সিঙ্গাপুরের মতো কয়েকটি দেশ পরিস্থিতি সামলে উঠতে সক্ষম হতে পারে। অন্যদিকে মালয়েশিয়া ও ভিয়েতনামের মতো দেশে চাপ আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।