১২:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫
 গুগল প্লে ও ইউটিউবের নতুন কেনা সিনেমা আর পড়বে না মুভিজ অ্যানিওয়্যারে সাহিত্য প্রচারে শারজাহের ভূমিকা: সংস্কৃতি ও জ্ঞানের সেতুবন্ধন ‘আমাদের কণ্ঠ কেউ বন্ধ করতে পারবে না’—মিস ইউনিভার্স মেক্সিকোর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণে বিশ্বজুড়ে ক্ষোভ উত্তর জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা ও রেল চলাচলে বিঘ্ন” জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিল আবুল খায়ের গ্রুপ “ওরা করলে, আমরা প্রস্তুত”: পাকিস্তানের পারমাণবিক পরীক্ষা ইস্যুতে রাজনাথ সিংয়ের হুঁশিয়ারি বেঙ্গালুরুর জেলে আইএস জঙ্গি ও সিরিয়াল ধর্ষকের মোবাইল ব্যবহার ফাঁস, তদন্তে নেমেছে কর্ণাটক সরকার পাকিস্তানে সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের অভূতপূর্ব পদোন্নতি — এখন দেশের প্রথম ‘চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস’ বর্তমানের সব জাতীয় সংকটই সরকারের সাজানো নাটক: মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশের সঙ্গে টাকা ও ট্যারিফ বিরোধে আন্তর্জাতিক সালিশিতে আদানি পাওয়ার”

রণক্ষেত্রে (পর্ব-৪৬)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫
  • 143

আর্কাদি গাইদার

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

ফেদিয়া চুপ করে রইল বটে, কিন্তু ওর ধরনধারণে অবজ্ঞার ভাব ফুটে উঠল। দাঁড়িয়ে-দাঁড়িয়ে চোখ নিচু করে বুটের মাথাটা ও চাবুক দিয়ে ঠুকতে লাগল।

তরোয়ালের হাতলে-বাঁধা বাহারি লাল সূতোর গোছা হাত দিয়ে লুফতে লুফতে শেবালভ তখনও বলে চলেছেন, ‘তোমারে এই শেষবারের মতো কচ্চি কিন্তু, ফিয়োদর।

আমি মহামহিম নই, জুতো সেলাই করি, শাদামাটা নোক আমি। কিন্তু যতক্ষণ আমারে কম্যান্ডার করি রাখা হয়েচে ততক্ষণ তুমি আমার হুকুম মান্য করতি বাধ্য।

সবার সামনে এই তোমারে সাবধান করি দিচ্চি কিন্তু, ফের যদি এ জিনিস হয় তো তোমারে ফেরত পাঠিয়ে দেব। হাঁ! তা যতই ভালো লড়নেওয়ালা কমরেড হও না কেন তুমি!’

উদ্ধত ভঙ্গিতে শেবালভের দিকে তাকাল ফেদিয়া, তারপর ওর চারপাশে দাঁড়ানো লাল ফৌজের লোকজনের দিকে এক নজর দেখল। কিন্তু মাত্র তিন-চার জন ঘোড়সওয়ার হেসে ওকে উৎসাহ দিল, আর কেউ সমর্থন করল না দেখে ও পিঠটা আরও টানটান করে তুলল। তারপর শেবালভের প্রতি বিদ্বেষ লুকোনোর চেষ্টা পর্যন্ত না করে জবাব দিল:

‘যা করচ হাশিয়ার হয়ে কর কিন্তু, শেবালভ। আজকালকার দিনে ভালো নোক সহজে মেলে না, কয়ে দিচ্চি।’

‘দূর করি দেব তোমারে,’ শান্তভাবে কথা কটা বলে, মাথা নিচু করে শেবালভআস্তে-আস্তে খামারবাড়ির বারান্দার দিকে চললেন।

ঘটনাটায় আমার মনটা কেমন খারাপ হয়ে গেল। আমি বুঝেছিলুম শেবালভঠিকই করেছেন, তবু আমি ফেদিয়ার পক্ষ নিলুম। ভাবলুম, ‘একেবারে তাড়িয়ে দেয়ার ভয় না দেখিয়ে ছেলেটাকে কি কথাগুলো বলা যেত না?’

ফেদিয়া ছিল আমাদের বাহিনীতে সবচেয়ে সেরা লোকেদের একজন। সব সময়ে হাসিখুশি, অফুরান প্রাণে ভরপুর ছিল ও। যখনই দরকার পড়ত কোনো কিছুর খোঁজ করে আসার, শত্রুর ঘোড়ার দানাপানি সংগ্রহের দলের ওপর আচমকা হামলা করার, কিংবা শ্বেতরক্ষীরা পাহারা দিচ্ছে এমন কোনো জমিদারের জায়গাজমির মধ্যে সে’ধোনোর, তখনই ফেদিয়া ঠিক একটা সুবিধেজনক পথ বের করে ফেলত আর আঁকাবাঁকা খাদের মধ্যে দিয়ে কিংবা গাঁয়ের পেছনের বাগবাগিচার মধ্যে দিয়ে যথাস্থানে চুপিচুপি ঢুকে পড়ত।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

 গুগল প্লে ও ইউটিউবের নতুন কেনা সিনেমা আর পড়বে না মুভিজ অ্যানিওয়্যারে

রণক্ষেত্রে (পর্ব-৪৬)

০৮:০০:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫

আর্কাদি গাইদার

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

ফেদিয়া চুপ করে রইল বটে, কিন্তু ওর ধরনধারণে অবজ্ঞার ভাব ফুটে উঠল। দাঁড়িয়ে-দাঁড়িয়ে চোখ নিচু করে বুটের মাথাটা ও চাবুক দিয়ে ঠুকতে লাগল।

তরোয়ালের হাতলে-বাঁধা বাহারি লাল সূতোর গোছা হাত দিয়ে লুফতে লুফতে শেবালভ তখনও বলে চলেছেন, ‘তোমারে এই শেষবারের মতো কচ্চি কিন্তু, ফিয়োদর।

আমি মহামহিম নই, জুতো সেলাই করি, শাদামাটা নোক আমি। কিন্তু যতক্ষণ আমারে কম্যান্ডার করি রাখা হয়েচে ততক্ষণ তুমি আমার হুকুম মান্য করতি বাধ্য।

সবার সামনে এই তোমারে সাবধান করি দিচ্চি কিন্তু, ফের যদি এ জিনিস হয় তো তোমারে ফেরত পাঠিয়ে দেব। হাঁ! তা যতই ভালো লড়নেওয়ালা কমরেড হও না কেন তুমি!’

উদ্ধত ভঙ্গিতে শেবালভের দিকে তাকাল ফেদিয়া, তারপর ওর চারপাশে দাঁড়ানো লাল ফৌজের লোকজনের দিকে এক নজর দেখল। কিন্তু মাত্র তিন-চার জন ঘোড়সওয়ার হেসে ওকে উৎসাহ দিল, আর কেউ সমর্থন করল না দেখে ও পিঠটা আরও টানটান করে তুলল। তারপর শেবালভের প্রতি বিদ্বেষ লুকোনোর চেষ্টা পর্যন্ত না করে জবাব দিল:

‘যা করচ হাশিয়ার হয়ে কর কিন্তু, শেবালভ। আজকালকার দিনে ভালো নোক সহজে মেলে না, কয়ে দিচ্চি।’

‘দূর করি দেব তোমারে,’ শান্তভাবে কথা কটা বলে, মাথা নিচু করে শেবালভআস্তে-আস্তে খামারবাড়ির বারান্দার দিকে চললেন।

ঘটনাটায় আমার মনটা কেমন খারাপ হয়ে গেল। আমি বুঝেছিলুম শেবালভঠিকই করেছেন, তবু আমি ফেদিয়ার পক্ষ নিলুম। ভাবলুম, ‘একেবারে তাড়িয়ে দেয়ার ভয় না দেখিয়ে ছেলেটাকে কি কথাগুলো বলা যেত না?’

ফেদিয়া ছিল আমাদের বাহিনীতে সবচেয়ে সেরা লোকেদের একজন। সব সময়ে হাসিখুশি, অফুরান প্রাণে ভরপুর ছিল ও। যখনই দরকার পড়ত কোনো কিছুর খোঁজ করে আসার, শত্রুর ঘোড়ার দানাপানি সংগ্রহের দলের ওপর আচমকা হামলা করার, কিংবা শ্বেতরক্ষীরা পাহারা দিচ্ছে এমন কোনো জমিদারের জায়গাজমির মধ্যে সে’ধোনোর, তখনই ফেদিয়া ঠিক একটা সুবিধেজনক পথ বের করে ফেলত আর আঁকাবাঁকা খাদের মধ্যে দিয়ে কিংবা গাঁয়ের পেছনের বাগবাগিচার মধ্যে দিয়ে যথাস্থানে চুপিচুপি ঢুকে পড়ত।