০৩:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
ডলার দুর্বলতার দীর্ঘতম ছায়া, দুই হাজার সতেরোর পর সবচেয়ে খারাপ বছরের পথে মার্কিন মুদ্রা দুই হাজার ছাব্বিশে যুদ্ধ শেষের আশা, রুশ জনমত জরিপে শান্তির ইঙ্গিত বিমানযাত্রার মতো স্বাভাবিক হবে মহাকাশ ভ্রমণ, ইউএইকে বৈশ্বিক কেন্দ্র বানাতে চান বিজ্ঞানী মহাকাশচারী ইউক্রেন শান্তি প্রস্তাবে ছাড় আদায় করল, রাশিয়ার সিদ্ধান্তের অপেক্ষা ইসরায়েলি বসতি সম্প্রসারণে সংগঠিত সহিংসতা, পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের উৎখাতের অভিযোগ হন্ডুরাসে বিতর্কিত ভোটের পর ক্ষমতায় ট্রাম্প–সমর্থিত আসফুরা মোগাদিশুতে ভোটের লাইনে ইতিহাস, সরাসরি নির্বাচনের পথে সোমালিয়া ওজন কমানোর বড়ি আসছে, খাদ্যশিল্পে বদলের হাওয়া তিতাসের আওতাভুক্ত এলাকায় ১৮ ঘণ্টা গ্যাসের চাপ কম থাকতে পারে ইনকিলাব মঞ্চের ডাকে সারাদেশে দোয়া ও প্রতিবাদ কর্মসূচি

রণক্ষেত্রে (পর্ব-৪৬)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫
  • 173

আর্কাদি গাইদার

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

ফেদিয়া চুপ করে রইল বটে, কিন্তু ওর ধরনধারণে অবজ্ঞার ভাব ফুটে উঠল। দাঁড়িয়ে-দাঁড়িয়ে চোখ নিচু করে বুটের মাথাটা ও চাবুক দিয়ে ঠুকতে লাগল।

তরোয়ালের হাতলে-বাঁধা বাহারি লাল সূতোর গোছা হাত দিয়ে লুফতে লুফতে শেবালভ তখনও বলে চলেছেন, ‘তোমারে এই শেষবারের মতো কচ্চি কিন্তু, ফিয়োদর।

আমি মহামহিম নই, জুতো সেলাই করি, শাদামাটা নোক আমি। কিন্তু যতক্ষণ আমারে কম্যান্ডার করি রাখা হয়েচে ততক্ষণ তুমি আমার হুকুম মান্য করতি বাধ্য।

সবার সামনে এই তোমারে সাবধান করি দিচ্চি কিন্তু, ফের যদি এ জিনিস হয় তো তোমারে ফেরত পাঠিয়ে দেব। হাঁ! তা যতই ভালো লড়নেওয়ালা কমরেড হও না কেন তুমি!’

উদ্ধত ভঙ্গিতে শেবালভের দিকে তাকাল ফেদিয়া, তারপর ওর চারপাশে দাঁড়ানো লাল ফৌজের লোকজনের দিকে এক নজর দেখল। কিন্তু মাত্র তিন-চার জন ঘোড়সওয়ার হেসে ওকে উৎসাহ দিল, আর কেউ সমর্থন করল না দেখে ও পিঠটা আরও টানটান করে তুলল। তারপর শেবালভের প্রতি বিদ্বেষ লুকোনোর চেষ্টা পর্যন্ত না করে জবাব দিল:

‘যা করচ হাশিয়ার হয়ে কর কিন্তু, শেবালভ। আজকালকার দিনে ভালো নোক সহজে মেলে না, কয়ে দিচ্চি।’

‘দূর করি দেব তোমারে,’ শান্তভাবে কথা কটা বলে, মাথা নিচু করে শেবালভআস্তে-আস্তে খামারবাড়ির বারান্দার দিকে চললেন।

ঘটনাটায় আমার মনটা কেমন খারাপ হয়ে গেল। আমি বুঝেছিলুম শেবালভঠিকই করেছেন, তবু আমি ফেদিয়ার পক্ষ নিলুম। ভাবলুম, ‘একেবারে তাড়িয়ে দেয়ার ভয় না দেখিয়ে ছেলেটাকে কি কথাগুলো বলা যেত না?’

ফেদিয়া ছিল আমাদের বাহিনীতে সবচেয়ে সেরা লোকেদের একজন। সব সময়ে হাসিখুশি, অফুরান প্রাণে ভরপুর ছিল ও। যখনই দরকার পড়ত কোনো কিছুর খোঁজ করে আসার, শত্রুর ঘোড়ার দানাপানি সংগ্রহের দলের ওপর আচমকা হামলা করার, কিংবা শ্বেতরক্ষীরা পাহারা দিচ্ছে এমন কোনো জমিদারের জায়গাজমির মধ্যে সে’ধোনোর, তখনই ফেদিয়া ঠিক একটা সুবিধেজনক পথ বের করে ফেলত আর আঁকাবাঁকা খাদের মধ্যে দিয়ে কিংবা গাঁয়ের পেছনের বাগবাগিচার মধ্যে দিয়ে যথাস্থানে চুপিচুপি ঢুকে পড়ত।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

ডলার দুর্বলতার দীর্ঘতম ছায়া, দুই হাজার সতেরোর পর সবচেয়ে খারাপ বছরের পথে মার্কিন মুদ্রা

রণক্ষেত্রে (পর্ব-৪৬)

০৮:০০:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫

আর্কাদি গাইদার

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

ফেদিয়া চুপ করে রইল বটে, কিন্তু ওর ধরনধারণে অবজ্ঞার ভাব ফুটে উঠল। দাঁড়িয়ে-দাঁড়িয়ে চোখ নিচু করে বুটের মাথাটা ও চাবুক দিয়ে ঠুকতে লাগল।

তরোয়ালের হাতলে-বাঁধা বাহারি লাল সূতোর গোছা হাত দিয়ে লুফতে লুফতে শেবালভ তখনও বলে চলেছেন, ‘তোমারে এই শেষবারের মতো কচ্চি কিন্তু, ফিয়োদর।

আমি মহামহিম নই, জুতো সেলাই করি, শাদামাটা নোক আমি। কিন্তু যতক্ষণ আমারে কম্যান্ডার করি রাখা হয়েচে ততক্ষণ তুমি আমার হুকুম মান্য করতি বাধ্য।

সবার সামনে এই তোমারে সাবধান করি দিচ্চি কিন্তু, ফের যদি এ জিনিস হয় তো তোমারে ফেরত পাঠিয়ে দেব। হাঁ! তা যতই ভালো লড়নেওয়ালা কমরেড হও না কেন তুমি!’

উদ্ধত ভঙ্গিতে শেবালভের দিকে তাকাল ফেদিয়া, তারপর ওর চারপাশে দাঁড়ানো লাল ফৌজের লোকজনের দিকে এক নজর দেখল। কিন্তু মাত্র তিন-চার জন ঘোড়সওয়ার হেসে ওকে উৎসাহ দিল, আর কেউ সমর্থন করল না দেখে ও পিঠটা আরও টানটান করে তুলল। তারপর শেবালভের প্রতি বিদ্বেষ লুকোনোর চেষ্টা পর্যন্ত না করে জবাব দিল:

‘যা করচ হাশিয়ার হয়ে কর কিন্তু, শেবালভ। আজকালকার দিনে ভালো নোক সহজে মেলে না, কয়ে দিচ্চি।’

‘দূর করি দেব তোমারে,’ শান্তভাবে কথা কটা বলে, মাথা নিচু করে শেবালভআস্তে-আস্তে খামারবাড়ির বারান্দার দিকে চললেন।

ঘটনাটায় আমার মনটা কেমন খারাপ হয়ে গেল। আমি বুঝেছিলুম শেবালভঠিকই করেছেন, তবু আমি ফেদিয়ার পক্ষ নিলুম। ভাবলুম, ‘একেবারে তাড়িয়ে দেয়ার ভয় না দেখিয়ে ছেলেটাকে কি কথাগুলো বলা যেত না?’

ফেদিয়া ছিল আমাদের বাহিনীতে সবচেয়ে সেরা লোকেদের একজন। সব সময়ে হাসিখুশি, অফুরান প্রাণে ভরপুর ছিল ও। যখনই দরকার পড়ত কোনো কিছুর খোঁজ করে আসার, শত্রুর ঘোড়ার দানাপানি সংগ্রহের দলের ওপর আচমকা হামলা করার, কিংবা শ্বেতরক্ষীরা পাহারা দিচ্ছে এমন কোনো জমিদারের জায়গাজমির মধ্যে সে’ধোনোর, তখনই ফেদিয়া ঠিক একটা সুবিধেজনক পথ বের করে ফেলত আর আঁকাবাঁকা খাদের মধ্যে দিয়ে কিংবা গাঁয়ের পেছনের বাগবাগিচার মধ্যে দিয়ে যথাস্থানে চুপিচুপি ঢুকে পড়ত।