০২:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
ইনকিলাব মঞ্চের ডাকে সারাদেশে দোয়া ও প্রতিবাদ কর্মসূচি গাজীপুরে ট্রেনের ধাক্কায় দুই নারী ও এক কিশোরীর মৃত্যু মেঘনা নদীতে ঘন কুয়াশায় দুই লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত চার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৭৮) রাশিয়া, চীন ও ইরানের মাঝের অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাবর্তন দেশবাসীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানালেন তারেক রহমান নরওয়ের বড়দিনে বিতর্কিত খাবার লুটেফিস্কের প্রত্যাবর্তন, ঐতিহ্যেই ফিরছে স্বাদ প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩৪৫) নিউজিল্যান্ডে গ্যাং প্রতীক নিষিদ্ধ: রাস্তায় শান্তি, কিন্তু অপরাধ কি সত্যিই কমল সৌদিতে বিরল তুষারপাতের পর প্রশ্ন: সংযুক্ত আরব আমিরাতেও কি আবার তুষারপাত সম্ভব?

রণক্ষেত্রে (পর্ব-৪৬)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫
  • 172

আর্কাদি গাইদার

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

ফেদিয়া চুপ করে রইল বটে, কিন্তু ওর ধরনধারণে অবজ্ঞার ভাব ফুটে উঠল। দাঁড়িয়ে-দাঁড়িয়ে চোখ নিচু করে বুটের মাথাটা ও চাবুক দিয়ে ঠুকতে লাগল।

তরোয়ালের হাতলে-বাঁধা বাহারি লাল সূতোর গোছা হাত দিয়ে লুফতে লুফতে শেবালভ তখনও বলে চলেছেন, ‘তোমারে এই শেষবারের মতো কচ্চি কিন্তু, ফিয়োদর।

আমি মহামহিম নই, জুতো সেলাই করি, শাদামাটা নোক আমি। কিন্তু যতক্ষণ আমারে কম্যান্ডার করি রাখা হয়েচে ততক্ষণ তুমি আমার হুকুম মান্য করতি বাধ্য।

সবার সামনে এই তোমারে সাবধান করি দিচ্চি কিন্তু, ফের যদি এ জিনিস হয় তো তোমারে ফেরত পাঠিয়ে দেব। হাঁ! তা যতই ভালো লড়নেওয়ালা কমরেড হও না কেন তুমি!’

উদ্ধত ভঙ্গিতে শেবালভের দিকে তাকাল ফেদিয়া, তারপর ওর চারপাশে দাঁড়ানো লাল ফৌজের লোকজনের দিকে এক নজর দেখল। কিন্তু মাত্র তিন-চার জন ঘোড়সওয়ার হেসে ওকে উৎসাহ দিল, আর কেউ সমর্থন করল না দেখে ও পিঠটা আরও টানটান করে তুলল। তারপর শেবালভের প্রতি বিদ্বেষ লুকোনোর চেষ্টা পর্যন্ত না করে জবাব দিল:

‘যা করচ হাশিয়ার হয়ে কর কিন্তু, শেবালভ। আজকালকার দিনে ভালো নোক সহজে মেলে না, কয়ে দিচ্চি।’

‘দূর করি দেব তোমারে,’ শান্তভাবে কথা কটা বলে, মাথা নিচু করে শেবালভআস্তে-আস্তে খামারবাড়ির বারান্দার দিকে চললেন।

ঘটনাটায় আমার মনটা কেমন খারাপ হয়ে গেল। আমি বুঝেছিলুম শেবালভঠিকই করেছেন, তবু আমি ফেদিয়ার পক্ষ নিলুম। ভাবলুম, ‘একেবারে তাড়িয়ে দেয়ার ভয় না দেখিয়ে ছেলেটাকে কি কথাগুলো বলা যেত না?’

ফেদিয়া ছিল আমাদের বাহিনীতে সবচেয়ে সেরা লোকেদের একজন। সব সময়ে হাসিখুশি, অফুরান প্রাণে ভরপুর ছিল ও। যখনই দরকার পড়ত কোনো কিছুর খোঁজ করে আসার, শত্রুর ঘোড়ার দানাপানি সংগ্রহের দলের ওপর আচমকা হামলা করার, কিংবা শ্বেতরক্ষীরা পাহারা দিচ্ছে এমন কোনো জমিদারের জায়গাজমির মধ্যে সে’ধোনোর, তখনই ফেদিয়া ঠিক একটা সুবিধেজনক পথ বের করে ফেলত আর আঁকাবাঁকা খাদের মধ্যে দিয়ে কিংবা গাঁয়ের পেছনের বাগবাগিচার মধ্যে দিয়ে যথাস্থানে চুপিচুপি ঢুকে পড়ত।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

ইনকিলাব মঞ্চের ডাকে সারাদেশে দোয়া ও প্রতিবাদ কর্মসূচি

রণক্ষেত্রে (পর্ব-৪৬)

০৮:০০:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫

আর্কাদি গাইদার

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

ফেদিয়া চুপ করে রইল বটে, কিন্তু ওর ধরনধারণে অবজ্ঞার ভাব ফুটে উঠল। দাঁড়িয়ে-দাঁড়িয়ে চোখ নিচু করে বুটের মাথাটা ও চাবুক দিয়ে ঠুকতে লাগল।

তরোয়ালের হাতলে-বাঁধা বাহারি লাল সূতোর গোছা হাত দিয়ে লুফতে লুফতে শেবালভ তখনও বলে চলেছেন, ‘তোমারে এই শেষবারের মতো কচ্চি কিন্তু, ফিয়োদর।

আমি মহামহিম নই, জুতো সেলাই করি, শাদামাটা নোক আমি। কিন্তু যতক্ষণ আমারে কম্যান্ডার করি রাখা হয়েচে ততক্ষণ তুমি আমার হুকুম মান্য করতি বাধ্য।

সবার সামনে এই তোমারে সাবধান করি দিচ্চি কিন্তু, ফের যদি এ জিনিস হয় তো তোমারে ফেরত পাঠিয়ে দেব। হাঁ! তা যতই ভালো লড়নেওয়ালা কমরেড হও না কেন তুমি!’

উদ্ধত ভঙ্গিতে শেবালভের দিকে তাকাল ফেদিয়া, তারপর ওর চারপাশে দাঁড়ানো লাল ফৌজের লোকজনের দিকে এক নজর দেখল। কিন্তু মাত্র তিন-চার জন ঘোড়সওয়ার হেসে ওকে উৎসাহ দিল, আর কেউ সমর্থন করল না দেখে ও পিঠটা আরও টানটান করে তুলল। তারপর শেবালভের প্রতি বিদ্বেষ লুকোনোর চেষ্টা পর্যন্ত না করে জবাব দিল:

‘যা করচ হাশিয়ার হয়ে কর কিন্তু, শেবালভ। আজকালকার দিনে ভালো নোক সহজে মেলে না, কয়ে দিচ্চি।’

‘দূর করি দেব তোমারে,’ শান্তভাবে কথা কটা বলে, মাথা নিচু করে শেবালভআস্তে-আস্তে খামারবাড়ির বারান্দার দিকে চললেন।

ঘটনাটায় আমার মনটা কেমন খারাপ হয়ে গেল। আমি বুঝেছিলুম শেবালভঠিকই করেছেন, তবু আমি ফেদিয়ার পক্ষ নিলুম। ভাবলুম, ‘একেবারে তাড়িয়ে দেয়ার ভয় না দেখিয়ে ছেলেটাকে কি কথাগুলো বলা যেত না?’

ফেদিয়া ছিল আমাদের বাহিনীতে সবচেয়ে সেরা লোকেদের একজন। সব সময়ে হাসিখুশি, অফুরান প্রাণে ভরপুর ছিল ও। যখনই দরকার পড়ত কোনো কিছুর খোঁজ করে আসার, শত্রুর ঘোড়ার দানাপানি সংগ্রহের দলের ওপর আচমকা হামলা করার, কিংবা শ্বেতরক্ষীরা পাহারা দিচ্ছে এমন কোনো জমিদারের জায়গাজমির মধ্যে সে’ধোনোর, তখনই ফেদিয়া ঠিক একটা সুবিধেজনক পথ বের করে ফেলত আর আঁকাবাঁকা খাদের মধ্যে দিয়ে কিংবা গাঁয়ের পেছনের বাগবাগিচার মধ্যে দিয়ে যথাস্থানে চুপিচুপি ঢুকে পড়ত।