১২:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫
 গুগল প্লে ও ইউটিউবের নতুন কেনা সিনেমা আর পড়বে না মুভিজ অ্যানিওয়্যারে সাহিত্য প্রচারে শারজাহের ভূমিকা: সংস্কৃতি ও জ্ঞানের সেতুবন্ধন ‘আমাদের কণ্ঠ কেউ বন্ধ করতে পারবে না’—মিস ইউনিভার্স মেক্সিকোর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণে বিশ্বজুড়ে ক্ষোভ উত্তর জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা ও রেল চলাচলে বিঘ্ন” জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিল আবুল খায়ের গ্রুপ “ওরা করলে, আমরা প্রস্তুত”: পাকিস্তানের পারমাণবিক পরীক্ষা ইস্যুতে রাজনাথ সিংয়ের হুঁশিয়ারি বেঙ্গালুরুর জেলে আইএস জঙ্গি ও সিরিয়াল ধর্ষকের মোবাইল ব্যবহার ফাঁস, তদন্তে নেমেছে কর্ণাটক সরকার পাকিস্তানে সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের অভূতপূর্ব পদোন্নতি — এখন দেশের প্রথম ‘চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস’ বর্তমানের সব জাতীয় সংকটই সরকারের সাজানো নাটক: মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশের সঙ্গে টাকা ও ট্যারিফ বিরোধে আন্তর্জাতিক সালিশিতে আদানি পাওয়ার”

রণক্ষেত্রে (পর্ব-৪৮)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫
  • 181

আর্কাদি গাইদার

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

আর তারপর, বোমাগুলো ফের বেলুটের নিচে আটকে নিয়ে, পিঠের ওপর কোণাকুণিভাবে রাইফেলগুলো ঝুলিয়ে ফেদিয়ার স্কাউটরা তাদের এই সাফল্যে আটখানা হয়ে নিঃশব্দে তাদের ঠান্ডা, ক্ষুরধার তরোয়ালগুলোর সাহায্যে কাজ শুরু করে দেবে। আমাদের ফেদিয়া সিসভের ধারাই ছিল ওইরকম। তাই সেদিন আমার মনে হয়েছিল, ‘এমন একটা লোককে কিনা আমাদের বাহিনী থেকে অকারণে তাড়িয়ে দেয়ার কথা হচ্ছে! কী জন্যে, না তুচ্ছ কতকগুলো মুরগি আর খানিকটা ননী চুরি করার দায়ে! ভাবো একবার কাণ্ডটা!’

ফেদিয়া আর শেবালভের মধ্যে ঝগড়ার ব্যাপারটা নিয়ে তখনও আমি মনে-মনে তোলাপাড়ায় মশগুল হয়ে আছি, এমন সময় খামারবাড়ির ছাদের ওপর থেকে চুবুক চিৎকার করে নিচে সবাইকে জানিয়ে দিলেন যে শত্রুর প্রকাণ্ড একদল পদাতিক সৈন্য রাস্তা ধরে ওই খামারের দিকেই আসছে। চুবুকের ওপর ভার ছিল ওই ছাদের ওপর থেকে চারিদিকে নজর রাখার। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের লাল ফৌজের লোকজনের মধ্যে প্রচণ্ড ছুটোছুটি আর তাড়াহুড়ো পড়ে গেল। দেখেশুনে মনে হল, কোনো কম্যান্ডারের পক্ষেই ওই উত্তেজিত জনতাকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনা বোধহয় সম্ভব নয়। কেউই তখন হুকুমের জন্যে অপেক্ষা করছিল না, আগে থেকেই সকলে জানত এ-সময়ে কাকে কী করতে হবে বা না-হবে।

প্রত্যেকে দৌড়তে-দৌড়তেই একে একে পরীক্ষা করতে লাগল প্রত্যেকের রাইফেলের ম্যাগাজিনে কটা করে কার্তুজ আছে। প্রাতরাশে বাধা পড়ায় প্রত্যেকে বাকি খাবারটুকু গোগ্রাসে গিলে কিংবা চিবোতে চিবোতেই ছুট লাগাল। গাল্দার অধীনে এক-নম্বর কোম্পানির লোকজন নিচু হয়ে ছুটতে-ছুটতে গ্রামটার একেবারে প্রান্তে গেল চলে, আর সেখানে মাটিতে শুয়ে পড়ে রক্ষা ব্যূহটাকে অনেক লম্বা করে বাড়িয়ে নিলে। ঘোড়ার পিঠের জিনগুলোকে শক্ত করে বেধে ফেলে ঘোড়ার মুখে লাগাম পরিয়ে নিল স্কাউটরা। তারপর ঘোড়ার পায়ের বাঁধন খুলে নিতে লাগল, খুলতে অসুবিধে বোধ করলে তরোয়ালের এক-এক কোপে

বাঁধুনিগুলো কেটেও দিতে লাগল। মেশিনগান-চালকরা তাদের অস্ত্রশস্য আর গুলির ফিতেগুলো গাড়ি থেকে নামাতে লাগল টেনে-টেনে। লাল হয়ে উঠে ঘামতে-ঘামতে সুখারেভ তাঁর দু-নম্বর কোম্পানির লোকজন নিয়ে বনের ধারটায় ছুটে চলে গেলেন। এরপর মিনিট-খানেক মিনিট-দুয়েকের মধ্যে সব চুপচাপ হয়ে গেল।

খামারবাড়ির সি’ড়ি দিয়ে নেমে এসে শেবালভ ‘ফেদিয়াকে কী-যেন একটা হকুম দিলেন। ফেদিয়াও ‘ঠিক আছে, করে ফেলচি’-গোছের একটা ভঙ্গি করে মাথা নাড়ল। তারপর বাড়ির জানলা-দরজা গেল দুমদাম বন্ধ হয়ে আর খামারের মালিক চাষীটি বাড়ির মেয়ে আর কাচ্চা-বাচ্চাদের নিয়ে মাটির নিচে ভাঁড়ারঘরে নেমে গেলেন।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

 গুগল প্লে ও ইউটিউবের নতুন কেনা সিনেমা আর পড়বে না মুভিজ অ্যানিওয়্যারে

রণক্ষেত্রে (পর্ব-৪৮)

০৮:০০:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

আর্কাদি গাইদার

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

আর তারপর, বোমাগুলো ফের বেলুটের নিচে আটকে নিয়ে, পিঠের ওপর কোণাকুণিভাবে রাইফেলগুলো ঝুলিয়ে ফেদিয়ার স্কাউটরা তাদের এই সাফল্যে আটখানা হয়ে নিঃশব্দে তাদের ঠান্ডা, ক্ষুরধার তরোয়ালগুলোর সাহায্যে কাজ শুরু করে দেবে। আমাদের ফেদিয়া সিসভের ধারাই ছিল ওইরকম। তাই সেদিন আমার মনে হয়েছিল, ‘এমন একটা লোককে কিনা আমাদের বাহিনী থেকে অকারণে তাড়িয়ে দেয়ার কথা হচ্ছে! কী জন্যে, না তুচ্ছ কতকগুলো মুরগি আর খানিকটা ননী চুরি করার দায়ে! ভাবো একবার কাণ্ডটা!’

ফেদিয়া আর শেবালভের মধ্যে ঝগড়ার ব্যাপারটা নিয়ে তখনও আমি মনে-মনে তোলাপাড়ায় মশগুল হয়ে আছি, এমন সময় খামারবাড়ির ছাদের ওপর থেকে চুবুক চিৎকার করে নিচে সবাইকে জানিয়ে দিলেন যে শত্রুর প্রকাণ্ড একদল পদাতিক সৈন্য রাস্তা ধরে ওই খামারের দিকেই আসছে। চুবুকের ওপর ভার ছিল ওই ছাদের ওপর থেকে চারিদিকে নজর রাখার। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের লাল ফৌজের লোকজনের মধ্যে প্রচণ্ড ছুটোছুটি আর তাড়াহুড়ো পড়ে গেল। দেখেশুনে মনে হল, কোনো কম্যান্ডারের পক্ষেই ওই উত্তেজিত জনতাকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনা বোধহয় সম্ভব নয়। কেউই তখন হুকুমের জন্যে অপেক্ষা করছিল না, আগে থেকেই সকলে জানত এ-সময়ে কাকে কী করতে হবে বা না-হবে।

প্রত্যেকে দৌড়তে-দৌড়তেই একে একে পরীক্ষা করতে লাগল প্রত্যেকের রাইফেলের ম্যাগাজিনে কটা করে কার্তুজ আছে। প্রাতরাশে বাধা পড়ায় প্রত্যেকে বাকি খাবারটুকু গোগ্রাসে গিলে কিংবা চিবোতে চিবোতেই ছুট লাগাল। গাল্দার অধীনে এক-নম্বর কোম্পানির লোকজন নিচু হয়ে ছুটতে-ছুটতে গ্রামটার একেবারে প্রান্তে গেল চলে, আর সেখানে মাটিতে শুয়ে পড়ে রক্ষা ব্যূহটাকে অনেক লম্বা করে বাড়িয়ে নিলে। ঘোড়ার পিঠের জিনগুলোকে শক্ত করে বেধে ফেলে ঘোড়ার মুখে লাগাম পরিয়ে নিল স্কাউটরা। তারপর ঘোড়ার পায়ের বাঁধন খুলে নিতে লাগল, খুলতে অসুবিধে বোধ করলে তরোয়ালের এক-এক কোপে

বাঁধুনিগুলো কেটেও দিতে লাগল। মেশিনগান-চালকরা তাদের অস্ত্রশস্য আর গুলির ফিতেগুলো গাড়ি থেকে নামাতে লাগল টেনে-টেনে। লাল হয়ে উঠে ঘামতে-ঘামতে সুখারেভ তাঁর দু-নম্বর কোম্পানির লোকজন নিয়ে বনের ধারটায় ছুটে চলে গেলেন। এরপর মিনিট-খানেক মিনিট-দুয়েকের মধ্যে সব চুপচাপ হয়ে গেল।

খামারবাড়ির সি’ড়ি দিয়ে নেমে এসে শেবালভ ‘ফেদিয়াকে কী-যেন একটা হকুম দিলেন। ফেদিয়াও ‘ঠিক আছে, করে ফেলচি’-গোছের একটা ভঙ্গি করে মাথা নাড়ল। তারপর বাড়ির জানলা-দরজা গেল দুমদাম বন্ধ হয়ে আর খামারের মালিক চাষীটি বাড়ির মেয়ে আর কাচ্চা-বাচ্চাদের নিয়ে মাটির নিচে ভাঁড়ারঘরে নেমে গেলেন।