০৩:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫
আমাদের হঠাৎ ঘুম পেয়ে যায় কেন: মাইটোকন্ড্রিয়ার ভেতরের সতর্ক সংকেত অভিনেত্রী কবরীর জন্মদিন: স্মৃতির পর্দায় উজ্জ্বল কিছু অসাধারণ দৃশ্য উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলের ক্যাম্পাসে মাঝরাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ – কী ঘটেছে? হিউএনচাঙ (পর্ব-১৫৩) হোলি আর্টিজান অভিযানে মেরিন কমান্ডো: একটি নির্ভীক অভিযানের পূর্ণচিত্র স্মার্টফোনের নোটিফিকেশন: মনোযোগের বড় বাধা নাকি প্রযুক্তির সঙ্গে সহাবস্থান? বিমান বিধ্বস্তের কারণ খুঁজতে উচ্চ পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের আদেশ শিক্ষার্থীর আইডি কার্ডে রক্তের গ্রুপ ও অভিভাবকের ফোন নাম্বার উল্লেখের নির্দেশ গোপালগঞ্জে দু’ উপদেষ্টার পরিদর্শন: বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের ঘোষণা হাসির রাজার জীবনগাঁথা দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট প্রতিবেদন: বাংলাদেশে একটি স্কুলে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত

স্মার্টফোনের নোটিফিকেশন: মনোযোগের বড় বাধা নাকি প্রযুক্তির সঙ্গে সহাবস্থান?

স্মার্টফোন ও নোটিফিকেশনের আধিপত্য

বর্তমান যুগে স্মার্টফোন মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ঘুম থেকে জেগে ওঠার পর থেকেই দিনের শেষে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত মানুষ তাদের হাতে থাকা ছোট এই ডিভাইসটির ওপর নির্ভর করে। ফোনে কলমেসেজসোশ্যাল মিডিয়াইমেইলখবর কিংবা বিভিন্ন অ্যাপ থেকে প্রতিনিয়ত আসা নোটিফিকেশন যেন এক মুহূর্তের জন্যও মনকে বিশ্রাম নিতে দেয় না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই নোটিফিকেশনগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি হয়যা কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন ছাড়াই ব্যবহারকারীর মনোযোগ আকর্ষণ করে।

মনোযোগের উপর বিরূপ প্রভাব

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছেঘন ঘন নোটিফিকেশন পাওয়া আমাদের মনোযোগকে টুকরো টুকরো করে দেয়। পড়াশোনাকাজ বা চিন্তাভাবনার সময় হঠাৎ করে ভেসে ওঠা কোনো নোটিফিকেশন আমাদের মনকে অন্য দিকে টেনে নিয়ে যায়। এমনকি নোটিফিকেশন না এলেও ফোনটি পাশে থাকলে মানুষ প্রায়শই চেক করার” তাগিদ অনুভব করেযাকে বলে ফ্যান্টম ভাইব্রেশন সিনড্রোম। মনোযোগের এই বারবার ভাঙন আমাদের কাজের গুণমান ও দক্ষতাকে প্রভাবিত করেযার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়ে মস্তিষ্কের গভীর মনোনিবেশের ক্ষমতার উপর।

How to Send Automated Notifications that Actually Work

অটো-জেনারেটেড নোটিফিকেশন: এক বিষাক্ত প্রলোভন

স্মার্টফোন অ্যাপ নির্মাতারা উদ্দেশ্যমূলকভাবেই অটো-নোটিফিকেশন চালু করে রাখেন যাতে ব্যবহারকারী বারবার অ্যাপটি খোলেন। কখনো আপনার বন্ধু ছবি পোস্ট করেছে”, আবার কখনো আজকের ডিল মিস করবেন না”—এই ধরনের বার্তা আমাদের কৌতূহল ও আগ্রহকে উসকে দেয়যা মানসিক শান্তির অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। এই অনবরত বিভ্রান্তি কেবল সময় অপচয়ই নয়এক ধরনের ডিজিটাল আসক্তিও তৈরি করে।

প্রযুক্তির সঙ্গে সহাবস্থানের উপায়

তবে একবিংশ শতাব্দীতে প্রযুক্তিকে একেবারে এড়িয়ে চলা সম্ভব নয়। বরং প্রযুক্তির সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রেখে জীবনযাপন করাটাই আধুনিক বুদ্ধিমানের পরিচয়। নিচে কিছু কার্যকর পন্থা তুলে ধরা হলোযেগুলোর মাধ্যমে স্মার্টফোন ব্যবহারের পাশাপাশি মনোযোগও ধরে রাখা সম্ভব:

নোটিফিকেশন ব্যবস্থাপনা করুন

প্রথম ধাপেফোনের সেটিংসে গিয়ে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপগুলোর নোটিফিকেশন বন্ধ করে দিন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমনিউজ অ্যাপকেনাকাটার অ্যাপএসবের তাৎক্ষণিক আপডেট প্রয়োজন না থাকলে এগুলোর পুশ নোটিফিকেশন’ নিষ্ক্রিয় রাখুন।

DND Message: What It Is and How to Use It

 ডু নট ডিস্টার্ব’ মোডের ব্যবহার

কাজের সময়পড়াশোনার সময় বা ঘুমের আগে ডু নট ডিস্টার্ব’ মোড চালু রাখলে ফোন কোনো ধরনের শব্দ বা আলো দিয়ে মনোযোগ ভঙ্গ করবে না। এটি সহজেই ফোনের কন্ট্রোল প্যানেল থেকে চালু করা যায়।

স্ক্রিন টাইম নির্ধারণ করুন

ফোনের স্ক্রিন টাইম কতটা হচ্ছে সেটি নিরীক্ষণ করুন। প্রতিদিন কত ঘণ্টা কোন অ্যাপে সময় ব্যয় করছেন তা জানা থাকলে নিজের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হয় এবং ব্যবহার কমানোর উদ্যোগ নেওয়া যায়।

নির্দিষ্ট সময়ে ফোন ব্যবহার

সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথম ৩০ মিনিট ও রাতে ঘুমানোর আগে ১ ঘণ্টা ফোন থেকে দূরে থাকা উচিত। একইভাবেকাজের সময় ফোন অন্য ঘরে রেখে দিলে মনোযোগ ধরে রাখা সহজ হয়।

Why the Holiday Season Is the Perfect Time for a Digital Detox

ডিজিটাল ডিটক্স করুন

সপ্তাহে অন্তত একদিন ডিজিটাল ডিটক্স’ পালন করুনযেদিন ফোনট্যাবলেট বা কম্পিউটার থেকে দূরে থাকবেন। প্রকৃতিবই পড়া বা ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে সময় কাটানোএই সময় মনকে শান্ত করে ও একাগ্রতা বাড়ায়।

মনোযোগ বৃদ্ধির অনুশীলন করুন

মেডিটেশন বা ধ্যানগভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন কিংবা একাগ্র চর্চার জন্য ব্রেইন গেমস খেলাএসব পদ্ধতিতে মস্তিষ্কের মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা উন্নত হয়। প্রতিদিন অন্তত ১০ মিনিট এই ধরনের অনুশীলন করলে ফল পাওয়া যায়।

ভারসাম্যই মূল চাবিকাঠি

স্মার্টফোন আমাদের জীবনের অনেক কাজ সহজ করেছেকিন্তু এর অতিরিক্ত ও অযাচিত ব্যবহারে মনোযোগের অপচয় ঘটছে। বাস্তবতা হলোস্মার্টফোন ছাড়া জীবন কল্পনা করাও কঠিন। তাই দরকার স্মার্টফোনকে নিয়ন্ত্রণ করে ব্যবহার করাস্মার্টফোন যেন আমাদের নিয়ন্ত্রণ না করে। প্রযুক্তির সঙ্গে সহাবস্থান ও সচেতন ব্যবহারে মনোযোগ ও উৎপাদনশীলতা আবারও ফিরে পাওয়া সম্ভব।

আমাদের হঠাৎ ঘুম পেয়ে যায় কেন: মাইটোকন্ড্রিয়ার ভেতরের সতর্ক সংকেত

স্মার্টফোনের নোটিফিকেশন: মনোযোগের বড় বাধা নাকি প্রযুক্তির সঙ্গে সহাবস্থান?

০৭:৩৭:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫

স্মার্টফোন ও নোটিফিকেশনের আধিপত্য

বর্তমান যুগে স্মার্টফোন মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ঘুম থেকে জেগে ওঠার পর থেকেই দিনের শেষে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত মানুষ তাদের হাতে থাকা ছোট এই ডিভাইসটির ওপর নির্ভর করে। ফোনে কলমেসেজসোশ্যাল মিডিয়াইমেইলখবর কিংবা বিভিন্ন অ্যাপ থেকে প্রতিনিয়ত আসা নোটিফিকেশন যেন এক মুহূর্তের জন্যও মনকে বিশ্রাম নিতে দেয় না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই নোটিফিকেশনগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি হয়যা কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন ছাড়াই ব্যবহারকারীর মনোযোগ আকর্ষণ করে।

মনোযোগের উপর বিরূপ প্রভাব

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছেঘন ঘন নোটিফিকেশন পাওয়া আমাদের মনোযোগকে টুকরো টুকরো করে দেয়। পড়াশোনাকাজ বা চিন্তাভাবনার সময় হঠাৎ করে ভেসে ওঠা কোনো নোটিফিকেশন আমাদের মনকে অন্য দিকে টেনে নিয়ে যায়। এমনকি নোটিফিকেশন না এলেও ফোনটি পাশে থাকলে মানুষ প্রায়শই চেক করার” তাগিদ অনুভব করেযাকে বলে ফ্যান্টম ভাইব্রেশন সিনড্রোম। মনোযোগের এই বারবার ভাঙন আমাদের কাজের গুণমান ও দক্ষতাকে প্রভাবিত করেযার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়ে মস্তিষ্কের গভীর মনোনিবেশের ক্ষমতার উপর।

How to Send Automated Notifications that Actually Work

অটো-জেনারেটেড নোটিফিকেশন: এক বিষাক্ত প্রলোভন

স্মার্টফোন অ্যাপ নির্মাতারা উদ্দেশ্যমূলকভাবেই অটো-নোটিফিকেশন চালু করে রাখেন যাতে ব্যবহারকারী বারবার অ্যাপটি খোলেন। কখনো আপনার বন্ধু ছবি পোস্ট করেছে”, আবার কখনো আজকের ডিল মিস করবেন না”—এই ধরনের বার্তা আমাদের কৌতূহল ও আগ্রহকে উসকে দেয়যা মানসিক শান্তির অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। এই অনবরত বিভ্রান্তি কেবল সময় অপচয়ই নয়এক ধরনের ডিজিটাল আসক্তিও তৈরি করে।

প্রযুক্তির সঙ্গে সহাবস্থানের উপায়

তবে একবিংশ শতাব্দীতে প্রযুক্তিকে একেবারে এড়িয়ে চলা সম্ভব নয়। বরং প্রযুক্তির সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রেখে জীবনযাপন করাটাই আধুনিক বুদ্ধিমানের পরিচয়। নিচে কিছু কার্যকর পন্থা তুলে ধরা হলোযেগুলোর মাধ্যমে স্মার্টফোন ব্যবহারের পাশাপাশি মনোযোগও ধরে রাখা সম্ভব:

নোটিফিকেশন ব্যবস্থাপনা করুন

প্রথম ধাপেফোনের সেটিংসে গিয়ে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপগুলোর নোটিফিকেশন বন্ধ করে দিন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমনিউজ অ্যাপকেনাকাটার অ্যাপএসবের তাৎক্ষণিক আপডেট প্রয়োজন না থাকলে এগুলোর পুশ নোটিফিকেশন’ নিষ্ক্রিয় রাখুন।

DND Message: What It Is and How to Use It

 ডু নট ডিস্টার্ব’ মোডের ব্যবহার

কাজের সময়পড়াশোনার সময় বা ঘুমের আগে ডু নট ডিস্টার্ব’ মোড চালু রাখলে ফোন কোনো ধরনের শব্দ বা আলো দিয়ে মনোযোগ ভঙ্গ করবে না। এটি সহজেই ফোনের কন্ট্রোল প্যানেল থেকে চালু করা যায়।

স্ক্রিন টাইম নির্ধারণ করুন

ফোনের স্ক্রিন টাইম কতটা হচ্ছে সেটি নিরীক্ষণ করুন। প্রতিদিন কত ঘণ্টা কোন অ্যাপে সময় ব্যয় করছেন তা জানা থাকলে নিজের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হয় এবং ব্যবহার কমানোর উদ্যোগ নেওয়া যায়।

নির্দিষ্ট সময়ে ফোন ব্যবহার

সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথম ৩০ মিনিট ও রাতে ঘুমানোর আগে ১ ঘণ্টা ফোন থেকে দূরে থাকা উচিত। একইভাবেকাজের সময় ফোন অন্য ঘরে রেখে দিলে মনোযোগ ধরে রাখা সহজ হয়।

Why the Holiday Season Is the Perfect Time for a Digital Detox

ডিজিটাল ডিটক্স করুন

সপ্তাহে অন্তত একদিন ডিজিটাল ডিটক্স’ পালন করুনযেদিন ফোনট্যাবলেট বা কম্পিউটার থেকে দূরে থাকবেন। প্রকৃতিবই পড়া বা ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে সময় কাটানোএই সময় মনকে শান্ত করে ও একাগ্রতা বাড়ায়।

মনোযোগ বৃদ্ধির অনুশীলন করুন

মেডিটেশন বা ধ্যানগভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন কিংবা একাগ্র চর্চার জন্য ব্রেইন গেমস খেলাএসব পদ্ধতিতে মস্তিষ্কের মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা উন্নত হয়। প্রতিদিন অন্তত ১০ মিনিট এই ধরনের অনুশীলন করলে ফল পাওয়া যায়।

ভারসাম্যই মূল চাবিকাঠি

স্মার্টফোন আমাদের জীবনের অনেক কাজ সহজ করেছেকিন্তু এর অতিরিক্ত ও অযাচিত ব্যবহারে মনোযোগের অপচয় ঘটছে। বাস্তবতা হলোস্মার্টফোন ছাড়া জীবন কল্পনা করাও কঠিন। তাই দরকার স্মার্টফোনকে নিয়ন্ত্রণ করে ব্যবহার করাস্মার্টফোন যেন আমাদের নিয়ন্ত্রণ না করে। প্রযুক্তির সঙ্গে সহাবস্থান ও সচেতন ব্যবহারে মনোযোগ ও উৎপাদনশীলতা আবারও ফিরে পাওয়া সম্ভব।