রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তে আহত শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং অভিভাবকদের দেশে-বিদেশে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ মঙ্গলবার এই আদেশ দেন। একই সঙ্গে, বিমান বিধ্বস্তের কারণ খুঁজতে সাত দিনের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে এর ৪৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া দেশের সব স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ডে তাদের রক্তের গ্রুপ ও অভিভাবকের মোবাইল নম্বর লেখার বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন- সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, এডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল ও এডভোকেট ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন- ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির ও মো. ঈসা। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের প্রেক্ষাপটে জনস্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ আর রায়হানের আনা এক রিটের শুনানি শেষে হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ রুলসহ এই নির্দেশনা দেন বলে জানিয়েছেন রিটের পক্ষের আইনজীবীরা। হাইকোর্ট তার আদেশে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিধ্বস্ত হয়ে ছাত্র-ছাত্রীসহ বহু হতাহতের ঘটনায় কারণ অনুসন্ধানে সাত দিনের মধ্যে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সাথে এই কমিটিকে আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
অন্তবর্তীকালীন এসব আদেশের পাশাপাশি হাইকোর্ট ক্ষতিপূরণ বিষয়ে রুল জারি করেছেন। রুলে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের নিহতদের ৫ কোটি টাকা ও আহতদের ১ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার প্রশ্নে রুল জারি করেছেন এবং আহতদের দেশে কিংবা প্রয়োজনে বিদেশে পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে বলেও জানান রিটের পক্ষের আইনজীবীরা। এর আগে মঙ্গলবার জনস্বার্থে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখার বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন এ রিট দায়ের করেন। তাকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী এ আর রায়হান।
ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়। একই সঙ্গে মাইলস্টোন স্কুলের আগুনে পুড়ে যাওয়া নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবারকে ৫ কোটি টাকা ও আহত শিক্ষার্থীদের ১ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। রিটে জনবহুল এলাকায় ত্রুটিপূর্ণ বিমান উড়ানোতে নিষেধাজ্ঞাও চাওয়া হয়েছে।
এছাড়াও যেসব বিষয়ে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে তা হলো-১. ট্রেনিং বিমান দুর্ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত । বিমানবাহিনীর অধীনে ত্রুটিপূর্ণ বিমানের সংখ্যা কত এবং তাদের রক্ষণাবেক্ষণের কি কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। ২. রাজধানীসহ দেশের সব জনবহুল এলাকায় ত্রুটিপূর্ণ বিমান ও ট্রেনিং বিমানের উড্ডয়নের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া। ৩. মাইলস্টোন স্কুলের আহত শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো। ৪. মাইলস্টোন স্কুলের আগুনের পুড়ে যাওয়া নিহত শিক্ষার্থীদের ৫ কোটি টাকা ও আহত শিক্ষার্থীদের ১ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া। ৫. দেশে সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে বিমান বাহিনীর উন্নতি কারণে নতুন বিমান ক্রয়ের জন্য আর্জি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে ঢাকাসহ দেশের সব জনবহুল এলাকায় ত্রুটিপূর্ণ বিমান ও যুদ্ধ বিমান উড্ডয়নের নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। রিটে বিমানবাহিনীর অধীনে ত্রুটিপূর্ণ বিমানের সংখ্যা কত এবং তাদের রক্ষণাবেক্ষণের কি কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে তা জানতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।