০৮:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫

তুরস্ক ও আজারবাইজান নিয়ে ভারতীয় অসন্তোষ

  • Sarakhon Report
  • ০১:২৪:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫
  • 61

সারাক্ষণ রিপোর্ট

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান “অপারেশন সিন্দুর” পর ভারত ও তুরস্ক-আজারবাইজানের সম্পর্ক দ্রুত অবনতি হয়েছে। ইসলামাবাদের পুরোনো মিত্র হিসেবে পরিচিত এই দুই দেশ প্রকাশ্যে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ানোয় দিল্লিতে ক্ষোভ দানা বেঁধেছে।

বয়কটের ডাক ও একাডেমিক চুক্তি বাতিল

গত এক সপ্তাহে ভারতীয় সামাজিক মাধ্যমে আজারবাইজান ও তুরস্ক ভ্রমণ পরিহারের আহ্বান জোরালো হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তার যুক্তি দেখিয়ে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ) তুরস্কের ইনোনু বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে থাকা শিক্ষা-বিনিময় চুক্তিও স্থগিত করেছে।

অপারেশন সিন্দুর: বাকু ও আঙ্কারার অবস্থান

৭ মে ভারতীয় হামলার পর আজারবাইজানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বেসামরিক হতাহত নিয়ে উদ্বেগ জানায় এবং পাকিস্তানের জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে। তুরস্কও একই সুরে অভিযানকে নিন্দা জানায়।

তুরস্কের ড্রোন বিতর্ক

ভারতীয় সামরিক বাহিনী পরে জানায়, আকাশ প্রতিরক্ষায় চাপ সৃষ্টি করতে পাকিস্তান তুরস্কের তৈরি আসিসগার্ড সঙগার ড্রোন ব্যবহার করেছে—যা দিল্লির ক্ষোভ আরও বাড়ায়।

দীর্ঘদিনের ভ্রু-কুঁচকানি

ওবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক কবীর তনেজা মনে করেন, এই টানাপোড়েন একদিনে তৈরি হয়নি। কাশ্মীর ইস্যুতে তুরস্ক-আজারবাইজান বহু বছর ধরেই পাকিস্তানের পক্ষে সওয়াল করছে। ফেব্রুয়ারিতে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোয়ানের কাশ্মীর-সংক্রান্ত মন্তব্য ভারত সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছিল।

থ্রি ব্রাদার্স’ সামরিক মহড়া

২০২১ সালে পাকিস্তান-তুরস্ক-আজারবাইজান যৌথ সামরিক মহড়া “থ্রি ব্রাদার্স” শুরু করে, যা তাদের কৌশলগত ঘনিষ্ঠতা বাড়ায়। যদিও অর্থনৈতিক বিনিয়োগে এই সম্পর্ক তেমন গভীর নয়, রাজনৈতিক সমর্থনই ভারতের জন্য প্রধান উদ্বেগ—মনে করেন তনেজা।

কূটনৈতিক পাল্টা পদক্ষেপ: ইরান ও আর্মেনিয়া

দিল্লি ইতোমধ্যেই ইরান ও আর্মেনিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে। আর্মেনিয়া-আজারবাইজান সীমান্ত সংঘাতের প্রেক্ষাপটে ২০২২-এ ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং ও আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর বৈঠক দ্বিপাক্ষিক সামরিক সহযোগিতা জোরদার করেছে।

তুরস্ক ও আজারবাইজানের প্রকাশ্য পাকিস্তান-সমর্থন ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ককেশাস কূটনীতিতে নতুন জটিলতা তৈরি করছে। দিল্লি এখন কৌশলগত ভারসাম্য আনতে আঞ্চলিক মিত্রদের সঙ্গে সমন্বয় বাড়ানোর পথ নিচ্ছে, আর সমান্তরালভাবে আঙ্কারা-বাকু জোটকে চাপ সামলাতে বিচক্ষণ কূটনীতি চালিয়ে যেতে চাইছে।

তুরস্ক ও আজারবাইজান নিয়ে ভারতীয় অসন্তোষ

০১:২৪:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান “অপারেশন সিন্দুর” পর ভারত ও তুরস্ক-আজারবাইজানের সম্পর্ক দ্রুত অবনতি হয়েছে। ইসলামাবাদের পুরোনো মিত্র হিসেবে পরিচিত এই দুই দেশ প্রকাশ্যে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ানোয় দিল্লিতে ক্ষোভ দানা বেঁধেছে।

বয়কটের ডাক ও একাডেমিক চুক্তি বাতিল

গত এক সপ্তাহে ভারতীয় সামাজিক মাধ্যমে আজারবাইজান ও তুরস্ক ভ্রমণ পরিহারের আহ্বান জোরালো হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তার যুক্তি দেখিয়ে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ) তুরস্কের ইনোনু বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে থাকা শিক্ষা-বিনিময় চুক্তিও স্থগিত করেছে।

অপারেশন সিন্দুর: বাকু ও আঙ্কারার অবস্থান

৭ মে ভারতীয় হামলার পর আজারবাইজানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বেসামরিক হতাহত নিয়ে উদ্বেগ জানায় এবং পাকিস্তানের জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে। তুরস্কও একই সুরে অভিযানকে নিন্দা জানায়।

তুরস্কের ড্রোন বিতর্ক

ভারতীয় সামরিক বাহিনী পরে জানায়, আকাশ প্রতিরক্ষায় চাপ সৃষ্টি করতে পাকিস্তান তুরস্কের তৈরি আসিসগার্ড সঙগার ড্রোন ব্যবহার করেছে—যা দিল্লির ক্ষোভ আরও বাড়ায়।

দীর্ঘদিনের ভ্রু-কুঁচকানি

ওবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক কবীর তনেজা মনে করেন, এই টানাপোড়েন একদিনে তৈরি হয়নি। কাশ্মীর ইস্যুতে তুরস্ক-আজারবাইজান বহু বছর ধরেই পাকিস্তানের পক্ষে সওয়াল করছে। ফেব্রুয়ারিতে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোয়ানের কাশ্মীর-সংক্রান্ত মন্তব্য ভারত সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছিল।

থ্রি ব্রাদার্স’ সামরিক মহড়া

২০২১ সালে পাকিস্তান-তুরস্ক-আজারবাইজান যৌথ সামরিক মহড়া “থ্রি ব্রাদার্স” শুরু করে, যা তাদের কৌশলগত ঘনিষ্ঠতা বাড়ায়। যদিও অর্থনৈতিক বিনিয়োগে এই সম্পর্ক তেমন গভীর নয়, রাজনৈতিক সমর্থনই ভারতের জন্য প্রধান উদ্বেগ—মনে করেন তনেজা।

কূটনৈতিক পাল্টা পদক্ষেপ: ইরান ও আর্মেনিয়া

দিল্লি ইতোমধ্যেই ইরান ও আর্মেনিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে। আর্মেনিয়া-আজারবাইজান সীমান্ত সংঘাতের প্রেক্ষাপটে ২০২২-এ ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং ও আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর বৈঠক দ্বিপাক্ষিক সামরিক সহযোগিতা জোরদার করেছে।

তুরস্ক ও আজারবাইজানের প্রকাশ্য পাকিস্তান-সমর্থন ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ককেশাস কূটনীতিতে নতুন জটিলতা তৈরি করছে। দিল্লি এখন কৌশলগত ভারসাম্য আনতে আঞ্চলিক মিত্রদের সঙ্গে সমন্বয় বাড়ানোর পথ নিচ্ছে, আর সমান্তরালভাবে আঙ্কারা-বাকু জোটকে চাপ সামলাতে বিচক্ষণ কূটনীতি চালিয়ে যেতে চাইছে।