সমকালের একটি শিরোনাম “বাজেট সহায়তাসহ ৭ সমঝোতা সইয়ের প্রস্তুতি”
জুলাই অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে দায়িত্ব নিয়ে দেশের অর্থনীতি সামলাতে ঋণ ও বাজেট সহায়তা খুঁজছে অন্তর্বর্তী সরকার। এরই প্রেক্ষাপটে টোকিওর কাছ থেকে বাজেট সহায়তা চাইবে ঢাকা।
২৮ মে ভোরে জাপান যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সফরে নিক্কেই ফোরামে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন তিনি। শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক সামনে রেখে ৬-৭টি সমঝোতা স্মারক সইয়ের প্রস্তুতি রাখছে দুই দেশ।
নিক্কেই ফোরামে ২৯ ও ৩০ মে ‘ফিউচার অব এশিয়া’ শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে জাপান যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা। সম্মেলনে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি ৩০ মে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে করবেন দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন তিনি। ৩১ মে তাঁর ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক কৌশলগত অংশীদারিত্বে রয়েছে। আসন্ন শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকে দুই দেশের সার্বিক বিষয়গুলোর ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা ঠিক করা হবে। বৈঠকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং বিভিন্ন খাতভিত্তিক সহযোগিতা বিশেষ করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক বিনিময়, রোহিঙ্গা ইস্যু আলোচনায় থাকবে। চুক্তি বা সমঝোতা নিয়ে তিনি বলেন, সফরকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু সমঝোতা নিয়ে দুই দেশ কাজ করছে।
এর মধ্যে বাজেট সহযোগিতা, প্রকল্পগুলোতে অফিসিয়াল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট (ওডিএ), বিদ্যুৎ খাতে কৌশলগত সমঝোতা, নারায়ণগঞ্জে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চলের (এসইজে) ভূমি নিয়ে সমঝোতা, মানবসম্পদ উন্নয়নবিষয়ক প্রবাসী কল্যাণে সমঝোতা, বিনিয়োগ উন্নয়ন সমঝোতা এবং অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) নিয়ে আলোচনা চলছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) থেকে জানা গেছে, এবারের সফরে ১০০ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তা আশা করছে ঢাকা। ২০২৩ সালে বাংলাদেশকে সাড়ে ২২ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা দিয়েছে জাপান। আগেরবার ঋণের সুদহার ১ দশমিক ৬ শতাংশ, এককালীন ফ্রন্টঅ্যান্ড ফি দশমিক ১ শতাংশ ছিল। ঋণটি ১০ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছরে পরিশোধযোগ্য। ২০২০ ও ২০২১ সালে জাপান সরকার বাংলাদেশকে সাড়ে ৬৮ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তার ঋণ দিয়েছিল।
আজকের পত্রিকার একটি শিরোনাম “সরকারের পদক্ষেপের অপেক্ষায় দলগুলো”
দায়িত্ব পালনে নানা দিক থেকে বাধা আসায় বিরক্ত প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগের কথা ভাবছেন—এমন কথা চাউর হওয়ার পর থেকেই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ নড়াচড়া শুরু হয়েছে। গত শনিবার থেকে একের পর এক রাজনৈতিক দলের নেতারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন। তাঁদের প্রায় সবাই প্রধান উপদেষ্টাকে পদত্যাগের মতো সিদ্ধান্ত না নিতে অনুরোধ করেছেন। সেই সঙ্গে জুলাই হত্যাযজ্ঞের বিচার ও সংস্কার কার্যক্রম চালানোর পাশাপাশি জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সুস্পষ্ট একটি রোডম্যাপ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এখন সরকার কী পদক্ষেপ নেয়, সে দিকে দৃষ্টি সবার।
বিরাজমান অস্থিরতার মধ্যে গত শনিবার বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল রোববারও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছেন তিনি। এসব বৈঠক থেকে সরকারপ্রধানের কাছে নিজেদের বক্তব্য উত্থাপন করেছে দলগুলো। বৈঠকে ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন দাবি করেছে বিএনপি। শনিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দলের নেতাদের বৈঠকের পর গতকাল রোববার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে।
জামায়াতে ইসলামী প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে সরকারের প্রতিশ্রুত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন চেয়েছে। এক্ষেত্রে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় উল্লেখসহ রোডম্যাপ চেয়েছে দলটি। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে শনিবারের বৈঠক শেষে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ দিলেই সব অনিশ্চয়তা কেটে যাবে। আমরা দুটি বিষয় স্পষ্ট করার কথা বলেছি।
বণিকবার্তার একটি শিরোনাম “৩ থেকে এখন ৬ শতাংশের কাছাকাছি ব্যাংক স্প্রেড”
সুদহার বাজারভিত্তিক করার পর থেকেই দেশে ব্যাংক খাতের স্প্রেড ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। দুই বছর আগে অর্থাৎ ২০২৩ সালের মার্চেও গড় স্প্রেড ছিল ২ দশমিক ৯৬ শতাংশ। ধারাবাহিকভাবে বেড়ে এখন ৫ দশমিক ৮৭ শতাংশে ঠেকেছে। আর কিছু ব্যাংকের স্প্রেড ছুঁয়েছে ১০ শতাংশে। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে তা ৪ শতাংশে সীমাবদ্ধ রাখার বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে।
গ্রাহকদের জমা রাখা আমানত থেকে ঋণ বিতরণ করে ব্যাংক। আমানতের বিপরীতে নির্দিষ্ট হারে গ্রাহকদের সুদ পরিশোধ করা হয়, যা ব্যাংকের ‘কস্ট অব ফান্ড’ বা ‘তহবিল সংগ্রহ ব্যয়’ নামে পরিচিত। আবার ঋণের বিপরীতে গ্রাহকদের কাছ থেকে সুদ আদায় করা হয়। ব্যাংকের ঋণ ও আমানতের সুদহারের ব্যবধানই হলো ‘স্প্রেড’। যে ব্যাংকের স্প্রেড যত বেশি, ওই ব্যাংকের মুনাফার সম্ভাবনাও তত বেশি। বর্তমানে ব্যাংকগুলো আমানতকারীদের যে হারে সুদ দিচ্ছে, ঋণগ্রহীতাদের কাছ থেকে নিচ্ছে তার চেয়েও অনেক বেশি হারে। ফলে আমানত ও ঋণের মধ্যকার সুদহারের ব্যবধান বা স্প্রেড ক্রমেই বাড়ছে। এতে ব্যাংক উপকৃত হলেও গ্রাহকরা বঞ্চিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, দেশের ব্যাংক খাতের বিদ্যমান গড় স্প্রেড গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে ২০২০ সালের এপ্রিলে ব্যাংক ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ৯ শতাংশে বেঁধে দিয়েছিল সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পরই স্প্রেড কমতে শুরু করে। ২০২০ সালের মার্চে ব্যাংক খাতের গড় স্প্রেড ছিল ৪ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। সুদহার বেঁধে দেয়ায় পরের বছরের একই সময়ে এসে তা ৩ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশে নেমে আসে। ২০২২ সালের মার্চে এসে গড় স্প্রেড দাঁড়ায় ৩ দশমিক ১০ শতাংশে। আর ২০২৩ সালের মার্চে আরো কমে ব্যাংকের ঋণ ও আমানতের সুদহারের ব্যবধান ২ দশমিক ৯৬ শতাংশে নেমে যায়।
মানবজমিনের একটি শিরোনাম “সচিবালয়, এনবিআর, নগর ভবন অচল”
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিল দাবিতে আন্দোলনে গতকাল দিনভর প্রায় অচল ছিল প্রশাসনের কেন্দ্র সচিবালয়। সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫-কে কালাকানুন উল্লেখ করে তা বাতিলের দাবিতে এই আন্দোলন করছেন সচিবালয় কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। তাদের চলা আন্দোলনের মধ্যেই গতকাল রাতে অধ্যাদেশটির গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার। ওদিকে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে কর্মবিরতির কারণে অচলাবস্থা বিরাজ করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর-এ। গতকাল দিনভর কর্মবিরতি শেষে বিকালে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমও বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়া হয় এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে। নতুন কর্মসূচি ঘোষণার পর সন্ধ্যায় অর্থ মন্ত্রণালয় ৩১শে জুলাইয়ের মধ্যে এনবিআর ভাগ করার অধ্যাদেশ সংশোধন করার প্রতিশ্রুতি দেয়। এরপরই ঐক্য পরিষদ তাদের কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেয়। তবে অসহযোগ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। এনবিআর-এ প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে কর্মবিরতি ও অসহযোগ চলায় এই প্রতিষ্ঠানে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনের অচলাবস্থাও কাটেনি। ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ দেয়ার দাবিতে গতকালও নগর ভবন অবরুদ্ধ করে কর্মসূচি পালন করেন তার সমর্থকরা।
সচিবালয়ে দিনভর বিক্ষোভ, অচলাবস্থা
সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া অনুমোদনের প্রতিবাদে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে দিনভর বিক্ষোভ করেছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা। সচিবালয়ের ভেতরে দ্বিতীয় দিনের মতো তারা এই বিক্ষোভ-মিছিল করেন। এতে কাজে স্থবিরতা দেখা দেয় সচিবালয়ে। কর্মচারীরা এই অনুমোদিত খসড়াটিকে ‘নিবর্তনমূলক ও কালাকানুন’ আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। তা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের ব্যানারে আন্দোলন হচ্ছে। বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ সংশোধন করে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়।